-
ভালোবাসার সুখ, ভালোবাসার রঙিন খামে, হারানোকে খুঁজি
ভালোবাসার সুখ কে এম আশরাফুল ইসলাম ভালোবাসার সুখ বেশিই দুখ; সুখ অতি অল্প সফলতায়, ভালোবাসার দুখ জীবন ব্যাপিয়া স্মৃতিময় বিফলতায়! আসে পাশে ভালোবাসে কথা কয় উজারিয়া মন, মিষ্ট হাসে কপট,অন্তরালে মরীচিকাময় আনন! হলে সফল করে গণ্ডগোল তিল পরিমাণ ভুল, ঢালে অনল হয় ভস্মীভূত যতনে ফুটানো ফুল। করে ক্রন্দন বিমর্ষ বদন ভুলের মাশুল গোনে, শান্ত সদন অশান্ত বায়ে তিক্ত হয় শোষণে। বিনিময় হলে পরিচয় বাঁধার প্রাচীর নাশে, করে জয় মন প্রাণ অশান্ত ভালোবাসে। অভিমান পেরেশান কাছেই ডাকে ফের, বিদ্যমান পরাণে পরাণ চিন্তনে পায় টের। এই মন অসুখে গমন ভাঙিলে প্রত্যয়, করে ক্রন্দন তাহারই লাগি জীবন হলে লয়। নাই সুখ পেলে…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৪র্থ পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৪র্থ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল রাত আস্তে আস্তে গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে আর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটের শেষ অংক হিসেব কষে চলেছে। খান্দানি সুলতান পরিবার চায় ক্ষমতাসীনদের কাঁধে ভর দিয়ে আবার সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। আর অন্য দিকে একজন শিক্ষিত যুবক চায় একজন সৎ নিবেদিত এ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে দেশের সঠিক নেতৃত্ব দিতে। মাথায় শত চিন্তা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রাশেদ। ভোরে উঠতে হবে। আগামীকালের ভোটযুদ্ধে তাকে জিতে হবে, তবে নির্বাচনের মাধ্যমে। ভোট কারচুপি কাউকে করতে দেয়া হবে না। সকাল ৮টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে। সব কেন্দ্রে সাহসী নির্লোভ পুলিং এজেন্ট দেয়া হয়েছে।…
-
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (১ম পর্ব)
তিনি একজন মহিলা মুক্তিযোদ্ধা (১ম পর্ব) খলিফা আশরাফ বাসে করে মিরপুর যাচ্ছি। প্রচণ্ড ভিড়। সিট ছাড়াও গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে আছে অনেক যাত্রী। কয়েকজন মহিলা যাত্রীও রড ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। এমনিতেই তিল ধারনের জায়গা নেই, তারপর আরও যাত্রী তুলতে “মিরপুর-১১/১২, মিরপুর-১১/১২” করে চেঁচাচ্ছে হেল্পার। গরমে অতিষ্ঠ কয়েকজন যাত্রী ক্ষেপে উঠলো, “ঐ মিয়া যাত্রী কি তোমার মাথায় লইবা?” কয়েকজন তো রেগে খুব বিশ্রী ভাষায় গাল দিলো হেল্পারকে। কিন্তু হেল্পার ছেলেটা খুবই বেহায়া টাইপের। ওইসব নোংরা গালটাল গায়ে না মেখে দাঁত কেলিয়ে হাসছে সে। আবার গদগদ বিনয় দেখিয়ে বলছে, “রাগ কইরেন না সাব। একটু পিছায়া খাড়ান, কম কইরা আরও ১০ জন লওন…
-
তৃষ্ণাদুপুর, শিল্পলিপি, যমুনার জল, স্বপ্নভঙ্গ
তৃষ্ণাদুপুর আদ্যনাথ ঘোষ ও আলো যৌবন দাও, ঢেলে দাও তোমার অতল ফাগুন। পৃথিবীর দুঃখভরা গভীর বিষাদ দূর হয়ে যাক, দ্রুত- শনশন ঝড়ের বেগে ঊর্বরা হাওয়ায়। চরম সত্যের পথে যদি পাহাড়ের বাধা, তবে কীভাবে যে ফুটবে ফুলের কুসুম! ডানা মেলে দেখা দেবে পাখির ঝলক। ছয়টি ঋতু কীভাবে যে গোপনেই গুছিয়ে ফেলে তোমার তৃষ্ণাদুপুর! ভাঙা বাসনায় যদি গ্রাস করে শরীরের জল- তৃষ্ণার পৃথিবী ছুঁয়ে একবার দেহখানি কামনার গন্ধে ভাসে; তবে কী বিলীন হয় সাধ! আরও পড়ুন আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা- নিরাশার মাঝে উৎসব আনন্দের ধারা শিল্পলিপি অর্ধেকটা রেখে দিয়ে বাকি অর্ধেক উনুন জ্বেলে অসমাপ্ত রাখিনি তো জল মাটি হাওয়া। যতই লিখি…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৩য় পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (৩য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল গ্রামের বয়স্ক ছামাদ শেখ এসে শামসুর চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়ায়। কেটলির পানি টগবগ করে ফুঁটছে আর ফুঁটুন্ত পানি বাষ্প হয়ে কেটলির নল দিয়ে বের হয়ে, সামনে বসা বাবুল সরদারের মুখে লাগছে। বাবুল সরদারের মনের ভেতরে কেমন যেন তাপ অনুভব করছে। এটা কিসের অনভূতি বুঝে উঠতে পারছে না। ভাবছে আজকের সকালটা কেমন যাবে। ছামাদ শেখ চারদিকে তাকিয়ে বাবুল সরদারের পাশে গিয়ে বসলো। যদিও বাবুল সরদার বয়সে বেশ ছোট। কিন্তু ছেলেটা সব খবর রাখে। ─ বাবুল, বড় সুলতানের মেজ ছেলে নাকি বাড়ি আয়ছে? ─ হ। হুনচি। তাকে তো কোনদিন চামড়ার চোহে দেহিনি।…
-
প্রশ্ন নারী দিবসে
প্রশ্ন নারী দিবসে তাহমিনা খাতুন নারী, সে নাকি মায়ের জাতি তবে সে কেন নিগ্রহ হতে, পায় না অব্যাহতি? পুত্র, সে জনম লভিল মায়ের উদরে পায় কি সে মা, যোগ্য মান কঠিন এ ভূধরে? কন্যা, সে একদা জ্যান্ত যাইতো আঁধার কবরে নয় তো মরিতো নুনের বিষে, জানে তা জগৎ জুড়ে। নারীরে বানায় দেবী, গড়ে তারে দশভূজা রুপে! ষষ্ঠ উপাচারে পূজা দেয়, তারে পুষ্প আর ধুপে। দেবী মায়ের পূজা দেয় যবে, মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে, শুভ কাজে কেন পতি হারা নারী, দূরে যায় অবহেলে? সেদিন তো নয় অনেক দূরের সময়, পতির আয়ু হলে শেষ জলন্ত চিতায় জীবন্ত নারী, পুড়ে হতো নিঃশেষ! পঞ্চ ব্যঞ্জনে…
-
সাইদ মো. আহসান হাবিব
সাইদ মো. আহসান হাবিব : একজন বীর যোদ্ধার কথকতা ◊ কৃষ্ণ ভৌমিক মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী উত্তরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনসভায়, হালকা পাতলা ঝাকরা চুলের যে যুবকের বক্তৃতা জনতার মনে ঝড় তুলতো, তিনি আর কেউ নন ভাগ্যবিড়ম্বিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবিব। পুরো নাম সাইদ মো. আহসান হাবিব। সাধারণ মানুষের কাছে পাগলা হাবিব বলেই বেশি সমাদৃত। তিনি নিজ যোগ্যতায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নজর কাড়েন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আহসান হাবিবকে অত্যন্ত আদরের সাথে বুকে টেনে নেন। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে ফেব্রুয়ারি নগরবাড়ি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ উদবোধনীতে লাখো জনতার সমাবেশে, আহসান হাবিবের বক্তব্য শুনে আবেগ আপ্লুত বঙ্গবন্ধু তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বর…
-
রক্তে জ্বলে একাত্তর (২য় পর্ব)
রক্তে জ্বলে একাত্তর (২য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল নির্বাচনী হাওয়ায় মুখরিত এলাকা। নমিনেশন পেয়েছে সরকারি দলের পক্ষে শমসের সুলতান। এ নিয়ে হাওয়ায় ভাসছে নানান গুজব। কেউ বলছে বিশ লক্ষ, আবার কেউ এক ডাকে পঞ্চাশ পর্যন্ত। এ যেন কোরবানি ঈদের গরুর মূল্য। তবে এটা ঠিক টাকার পরিমাণ যাই হোক, শমসের সুলতান মোটা অর্থ খরচ করেছে, তো বটেই। তা না হলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান সৈয়দ রাশেদ হাসান; সুদর্শন,মার্জিত এবং সুশিক্ষিত; উপজেলা পর্যায়ে সরকারি দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক; তাকে নমিনেশন হতে বঞ্চিত করলো। এছাড়াও তিনি একটা বেসরকারি কলেজের শিক্ষক। স্বামী-স্ত্রী দুজনই শিক্ষক। এলাকায় শিক্ষিত পরিবার বলে খ্যাত। বিসিএস পরীক্ষা কৃতকার্য হয়েও,…
-
৭ই মার্চ ১৯৭১, সুদীর্ঘ নয় মাস
৭ই মার্চ ১৯৭১ ফকির শরিফুল হক ৭ই মার্চ ১৯৭১ সেদিনও ফাগুনের বাতাস ছিল কোটি বাঙালির নিশ্বাসে, তবে বসন্তে ছিল পাক কোকিলার জলুম দখলের লালসা ভিতু থিতু ভয়ে বাঙালি অনিশ্চিত বিশ্বাসে, দিশেহারা জাতি, নিস্তব্ধ পথঘাট স্তব্ধতা আকাশে। মনো মেঘাচ্ছন্ন ঘোরে কোটি বাঙালি হঠাৎ জাগ্রত জনতা এপার ওপার, টেকনাফ তেতুলিয়ার আকাশ পাতালে ঐক্য দেশমাতৃকা নিজ সত্বা রক্ষায় বৃদ্ধ আবাল। কবি দেখিয়েছেন দিক, বজ্র হুংকারে তর্জনী নির্দেশ কণ্ঠ স্ফুলিঙ্গ বারুদ লাভায় মাটি রক্ষার আদেশ, আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয় মহামানব সুর স্বাধীনতা স্বত্বার ডাক শুনেছে বাংলা, শুনেছে বিশ্বসমুদ্রর। কবির কণ্ঠে সেদিন দেশাত্মবোধ ছিল ছিল স্বাধীনতার নেশা, দৃঢ় মুক্তিতে ব্রতমুখোবয়ে ছিল কোটি জনতার ভাষা…
-
মতলববাজ, আমি সেই দলে, যুক্তির জোর
মতলববাজ খোন্দকার আমিনুজ্জামান মতলববাজ সর খেয়ে যায় সন্ত্রাসীরা পুষ্টি পায়চলমান ধারা ভাঙতে প্রতিরোধে সবে আয় ছুটে আয়। ত্যাগ-তিতিক্ষা আদর্শ যোগ্যতা মার খাচ্ছেসমাজ সভ্যতা রাজনীতি তাই ক্ষয়ে যাচ্ছেলাখো শহীদের স্বপ্ন ধীরে ধীরে ভেঙে যাচ্ছে হায়। অন্যায় অপকর্ম করে যারা শাস্তি পায় না তারাঅভিযোগ দিলে হয়তো হতে হবে জীবন-হারা। সত্যের শক্তির পথে এসো সবে শাণিত করি শিরদাঁড়াধ্বংসিতে হবে আজ অন্যায় করে যারাসর্ষের ভিতরেও ভূত ঢুকেছে আজ সব তাড়াবোআয় সবে আয় ছুটে আয়। আরও পড়ুন খোন্দকার আমিনুজ্জামানের কবিতা- মাটির আলো শাপলাদিঘির পাড়ে আমাদের গ্রামখানি আমি সেই দলে উজার উজান চলে যে-জন সেই তো সুজনত্যাগ-তিতিক্ষায় হয় যে বড়ো ধন্য সে-জন। ছায়া…