• ছোটবেলার-ইদ-ও-আমি
    সাহিত্য,  স্মৃতিচারণ

    ছোটবেলার ইদ ও আমি

    ছোটবেলার ইদ ও আমি মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান   ছোট্টবেলায় ইদ বলতে -আমার গ্রামে আর দশজন ছেলের মত আমার ইদ ছিল না। আমি খুব সুখের এবং দুঃখের দুই ধরনের অনুভূতি লাভ করেছি। সুখের অনুভূতি এমন যা আজও অনুভবে নিজেকে হারিয়ে যাই। আমাদের গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামে। তখন আমি খুব ছোট্টো। এ টুকুই বলতে পারবো, আমার বাবা পরিবারের সবার জন্যই নতুন জামা-কাপড় কিনতেন। আমার পরিবার গ্রামের ধনী পরিবারের মধ্যে একটি ছিলো। আমার বাবা পরিবারের বড় ছেলে। তিনি দাদা-দাদী, দুই চাচা-চাচী, চাচাতো ভাইবোন, একমাত্র ফুফু, ফুফাতো ভাইবোন সবার জন্যই জামাকাপড় কিনতেন। ফুফু’র বাড়িতে আগেই নতুন কাপড় পাঠিয়ে দিতেন।…

  • ঈদুল-ফিতর
    কবিতা,  তাহমিনা খাতুন,  সাহিত্য

    ঈদুল ফিতর

    ঈদুল ফিতর তাহমিনা খাতুন   সাঁঝের আকাশে এক ফালি চাঁদ উঠেছে ফের হেসে ছুটিছে সবাই দেখিতে তাহারে, বড়ই ভালোবেসে। নিত্য দিন একই চাঁদ ওঠে, একই আকাশ কোলে সবার অলক্ষে ডুবে যায় ফের, মন কি সদাই দোলে? ঈদের খুশী এনেছে সে বহিয়া, বিশ্ব মুসলিম তরে আকাশ বাতাস তার বারতা জানায়, মহা আড়ম্বরেক। সাগর নদী সে কথা জানায়, ছলাৎ ছলাৎ গানে পাখ-পাখালি জানায় সে খুশী, তাদের কলতানে। হরেক রঙের পোশাক পরিবে খোকা খুকুর দল ফিরনী পোলাও পায়েস খাবে, হবে তারা উচ্ছ্বল। কিশোরী তরুনী মেহেদীর রঙে, রাঙাবে হস্ত খানি খুশী আনন্দ আর উচ্ছ্বলতায়, ভাসিবে তাহারা জান। আতর গোলাপ খুশবু ছড়াবে, সারাটি দুনিয়া জুড়ে…

  • সুকৃতি-এবং-বৈরীকাল-শেষ-পর্ব
    খলিফা আশরাফ (গল্প),  গল্প,  সাহিত্য

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (শেষ পর্ব)

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (শেষ পর্ব) খলিফা আশরাফ   ইদানিং সুকৃতির কিছু নতুন বন্ধু জুটেছে। ওরা গান গায়, গিটার বাজায়, ব্যান্ড দল করে। তারা এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সুকৃতির রুমে আড্ডা মারে। ওর মা বলছিল, আজকাল সুকৃতি সিগারেট খাওয়া শুরু করেছে। প্রায়শই ওর রুম থেকে গন্ধ পাওয়া যায়। কখনো কখনো নাকি বেশ কটু গন্ধ আসে। খুবই দুশ্চিন্তায় পড়লেন বাবা। বাউলদের মজমা-আসরের সাথে গাঁজার একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আছে। বেশির ভাগ বাউলই গাঁজায় বুঁদ হয়ে বিশেষ উন্মাদনায় নিজেদের সমর্পণ করে ভাবের জগতে। তাই বাউলদের আসরে যাবার তথ্য যখন বাবা পেয়েছিলেন, তখন থেকেই এক অজানা আশঙ্কা তাকে তাড়া করে ফিরছিল। সেটাই বুঝি সত্য হলো!…

  • সুকৃতি-এবং-বৈরীকাল-২য়-পর্ব
    খলিফা আশরাফ (গল্প),  গল্প,  সাহিত্য

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (২য় পর্ব)

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (২য় পর্ব) খলিফা আশরাফ   অনেক বাবা-মা এক সাথে থেকেও হাজার কাজের চাপে সন্তানদের একেবারেই সময় দিতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা বুঝতেও পারেন না নিজের অজান্তে কত বড় ক্ষতি করছেন সন্তানের। যে সন্তানের জন্যে বাবা-মা’র হাড়ভাঙ্গা শ্রম, সার্বিক চেষ্টা-প্ৰয়াস, সেই পিতা-মাতাই যদি সন্তানের সুন্দর মানসিক গঠনে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়, তবে অনুশোচনার আর জায়গা থাকে না। সুকৃতি তার বঞ্চনা নিয়ে কোনোদিন মুখে অনুযোগ না করলেও ভেতরের উষ্মা থেকে তার মধ্যে এক ধরনের নিভৃতচারিতা গড়ে উঠেছিল। সে হয়ে উঠেছিল ভীষণ রকম অন্তর্মুখী। ছুটি-ছাটায় বাড়িতে এলেও সারাক্ষণ ডেক্সটপ আর বই নিয়েই ব্যস্ত থাকত সে। আচরণেও তেমন কোনো চপলতা নেই, বয়সের…

  • নবতান
    কবিতা,  তাহমিনা খাতুন,  সাহিত্য

    নবতান

    নবতান তাহমিনা খাতুন   একটি বছর পার করে আবার এসেছে বৈশাখ, চারদিকেতে বাজছে বুঝি তাই, আনন্দেরই শাঁখ। ঢোল বাজে, সানাই বাজে, বাজে মোহন বাঁশি সেই সঙ্গে আরো বাজে, সবার হাতের কাঁসি। বছরের আজ প্রথম ক্ষণে, এই কামনা করি, শান্তি বারি ঝরে পড়ুক, সারা ভুবন ভরি। বছরের সব পঙ্কিলতা ধুয়ে মুছে যাক অমিয় ধারা দিয়ে আবার, জগতকে ভরাক। আসুক নেমে ধরনীতে, সোনালী এক ভোর, ঘরে ঘরে বাঁধুক সবাই ভালবাসার ডোর। দূর করে দিক আবর্জনা, দূর হোক সব পাঁক, পাহাড়, নদী, বন-বনানী জীবন ফিরে পাক। কালবোশেখীর রুদ্র রোষে অশান্তি হোক দূর, মধুর মায়ায় সবার জীবন করুক সে ভরপুর। জগতে আজ হয় যেন…

  • আজি-বৈশাখে
    কবিতা,  ফকির শরিফুল হক,  সাহিত্য

    আজি বৈশাখে

    আজি বৈশাখে ফকির শরিফুল হক   এলো বৈশাখ অবশেষে চৈত্র শেষে চৈত্রের পুরো মাস পার্বণে আগমনী বৈশাখী নবান্নে, শিব পূজা আর প্রতি হিন্দু পাড়ায় অষ্ট গানে চৈত্র সংক্রান্তির দিনে আামাদের গাঁয়ে জদ্দারদের উঁঠোনে। যুগ যুগান্তরের উৎসব, আজি অনুভবে শৈশব দূর গ্রাম হতে আসা ভিন্ন বেসে সন্যাসী চালানে, নেঁচে গেয়ে সন্যাসী দল ঢাক ঢোল কাসার তালে গভীর রাত হতে শেষ চৈত্র সকালে। আজি বৈশাখে মুছে যাক ব্যর্থ গ্লানি বিষাদের বাঁক বৈশাখ স্বপ্ন সাহসে নবরুপে তুমি সবুজ উর্বর ভূমি, প্রিয় মুখ সুখ বলে কানে চুপি চুপি থাকুক বাঙলা প্রাণে উদাস বাউল নব জাগ্রত প্রাণে গেয়ে বৈশাখী গানে। খরতাপ সূর্যের হাঁসিতে জেগে সুবজ…

  • প্রবন্ধ,  সাইফুর রহমান,  সাহিত্য

    সাহিত্য চর্চার একাল ও সেকাল

    সাহিত্য চর্চার একাল ও সেকাল সাইফুর রহমান সেটা সম্ভবত ১৯৮৮ কিংবা ৮৯ সালের কথা। আমার বাবা চাকরি করতেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। তিনি ছিলেন শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সরকারি পরিদর্শক হিসেবে একবার বাবাকে পাঠানো হল চট্টগ্রাম জেলার কয়েকটি উপজেলায়। এ ধরনের সরকারি ট্যুরগুলোতে বাবা সাধারণত আমাকেও সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। বাবার সফর সঙ্গী হয়ে সেবার আমিও ঘুরে বেড়িয়েছিলাম চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, বাঁশখালি, লোহাগড়া, পটিয়া ইত্যাদি উপজেলাগুলো। বাঁশখালি উপজেলায় গিয়ে একটি ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা হল। প্রত্যেক উপজেলাতেই আমাদের রাত্রিবাস হতো সাধারণত সরকারি সার্কিট হাউসে। কিন্তু বাঁশখালিতেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করলেন ওই অধিদফতরের একজন সহকারী প্রকৌশলী। অনেক পীড়াপীড়িতে বাবা তার আতিথেয়তা গ্রহণ করলেন।…

  • নীরব-অসন্তুষ্টি
    কবিতা,  সাহিত্য

    নীরব অসন্তুষ্টি, আমাদের সুজানগর, হুশ ফেরাও মানুষ

    নীরব অসন্তুষ্টি  আজিজুল কায়সার   অনেক রয়েছে তবুও তা যেন নিতান্তই অতি তুচ্ছ, অসন্তুষ্টিতে ভরপুর আজ শ্রেষ্ঠকুলের হৃদয় গুচ্ছ। সুদর্শনা ক্ষতবিক্ষত অভিযোগ করবে কার কাছে, শ্রেষ্ঠ কুলের যুবকেরা ছুটছে মরীচিকার পিছে পিছে। স্বাচ্ছন্দের সান্নিধ্য খুঁজি দিগন্তের প্রকৃতিকে ঘিরে, প্রকৃতিপ্রেমীরা সকলেই হতাশ অসন্তুষ্টির ভিড়ে। শিক্ষাঙ্গনের অনিয়মগুলো চলছে কিসের ইঙ্গিতে, শিক্ষা দীক্ষায় হায় হায় বুঝি ভুলে ভরা সব ভঙ্গিতে। অযোগ্যরা শিক্ষক হয়ে যায় ঘুষ মেশিনের জোরে, মেধাবীরা হয় সুযোগ বঞ্চিত ভালো হবে কি করে? নিয়ম অনিয়মের দৃশ্যগুলো আজ নির্লজ্জ প্রকাশিত, সম্মানের ভয়ে আড়ালে থাকা নয়তো ভালোয় নিহিত। কবিরা লিখবে বসে সুদর্শনার আলোকিত জোসনায়, অশুভ কালো মেঘের গর্জন পড়ে কবির স্বাধীনতায়। আরও পড়ুন…

  • সুকৃতি-এবং-বৈরীকাল-১ম
    খলিফা আশরাফ (গল্প),  গল্প,  সাহিত্য

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (১ম পর্ব)

    সুকৃতি এবং বৈরীকাল (১ম পর্ব) খলিফা আশরাফ   সুকৃতির লাশটা পৌছুতেই এক অভূতপূর্ব বিষাদ আর অন্তহীন কান্না গ্রাস করল পুরো বাড়িটাকে। বেদনার একটা গাঢ় নিকশ কালো চাদর ঢেকে দিলো সবুজ হৃদয়ের সুবর্ণ প্রত্যাশা, হিরণময় সম্ভাবনার মোহন শরীর। তেইশ বছরের টগবগে সুদর্শন সুকৃতি যখন বাড়ি থেকে ‘এই আসছি’ বলে বেরিয়েছিল, তখন কেউ ভাবতেই পারেনি সবাইকে কাঁদিয়ে সে ফিরবে নিঃসার লাশ হয়ে। বহুমুখী প্রতিভাময় সুকৃতিকে ঘিরে বাবা-মায়ের স্বপ্নের এক সুরম্য ভূবন তৈরি হয়েছিল। খুব ছোটবেলায় ওকে দেখেই এক জ্যোতিষী বলেছিল, এ ছেলে অনেক বড় হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। ক্রমাগত ওর বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বতঃস্ফুরন আর জ্যোতিষীর কথায় প্রত্যয়ী হয়ে উঠেছিল বাবা-মা’র মনও।…

  • নীল-রক্ত
    কবিতা,  তাহমিনা খাতুন,  সাহিত্য

    নীল রক্ত

    নীল রক্ত তাহমিনা খাতুন   শ্বেত বর্ণ মানব, রক্তের রং নাকি তার নীল আজব কথা শুনে হাসে বুঝি বিশ্ব নিখিল। রক্তের রং সেকি হয় কভু নীল? শরীর চিড়িয়া দেখাক তবে, উন্মাদ বালখিল। নির্মম আর নিষ্ঠুরতায় যাদের ছিল না কোন জুড়ি, জগত জুড়িয়া আজও কি তারাই ঘোরাবে শক্তির ঘুড়ি? বাদামী, পীত, কাল মানুষেরা ছিল তাদের ক্রীতদাস, তাদেরে দমিতে জগত জুড়িয়া সাদারা চালাতো ত্রাস। ফন্দি ফিকিরে দখল করিল কতশত জনপদ, সব সম্পদ লুটে নিয়ে গেল শ্বেত রঙা হার্মাদ। নীল রক্তের দাবী করে তারা ভাবে নিজেদেরে শ্রেষ্ঠ, তাদের আজব ভাবনাখানি যে ছিল একেবারে ভ্রষ্ট। নীল রক্তের দাবীদার যারা তাদের ইতিহাস বলে, দয়া মায়া…

error: Content is protected !!