-
চোখের ইশারায়, কদম ফুলের হাসি, সাত দিন, পরান-পাখি
চোখের ইশারায় খোন্দকার আমিনুজ্জামান হঠাৎ বৃষ্টি দারুণ সৃষ্টি বন্ধু ভিজে যায় হৃদয় আমার ছবি আঁকে চোখের ইশারায়। চমকে চমকিত হই পুলকে আচ্ছাদিত চিত্ত নৃত্য করে ওঠে চলে অবিরত ভিজে ভিজে বন্ধু এ কোন আলো ছড়ায়? এ যে আগুনের জলছাপ হৃদয় উথলিয়া ওঠে কিছুতেই থামে না উত্তাপ। ঝর-ঝর-ঝরছে বৃষ্টি সে তো থামছে না বন্ধুকে লাগছে দারুণ মিষ্টি মন তো মানছে না ভিজে ভিজে প্রিয় এ কোন আগুন ছড়ায়। আরও পড়ুন খোন্দকার আমিনুজ্জামানের কবিতা- মানবিকতা অপেক্ষা সাদা মন কদম ফুলে হাসি বাদল বসন্তে হৃদ আকাশে দোলা দেয় গো কদম ফুলের হাসি বন্ধুর বাড়ির কদম ফুল আমি কতো ভালোবাসি। বন্ধুর বাড়ির…
-
নতুন সূর্যের অপেক্ষায় (১ম পর্ব)
নতুন সূর্যের অপেক্ষায় (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল শীতের বিকেল। একটা দামী পাজেরা গাড়ি এসে থামলো কাজী বাড়ির আঙ্গিনায়। কাজী বাড়ির সামনে দিয়ে ডিস্ট্রিক বোর্ডের পুরাতন রাস্তাটা বাজারের দিকে আঁকাবাঁকা হয়ে চলে গিয়েছে। রাস্তার উত্তর পাশে কাজীদের সেই আমলের পাকা দালান ওয়ালা একতলায় বেশ কটা রুম বিশিষ্ট একটা পুরাতন বাড়ি। এটাই তাদের জমিদারী আর আভিজাত্যের উত্তরসূরী। বাড়িটি বয়স কত কেউ তা অনুমান করে বলতে পারে না। গ্রামের সবচেয়ে বায়োজ্যেষ্ঠ প্রবীণ রহমত শেখের ভাষ্যানুযায়ী, বাড়িটির বয়স একশত বছরের উপরে। দুই পুরুষ পর্যন্ত এ বাড়িতে বসবাস করার পর পরবর্তী পুরুষ শহরবাসী। কাজী একারামুল্লাহ এই বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা। তার নামানুসারে সবাই কাজী…
-
আত্মতৃপ্তি, ভালোবাসা ভুল নয়, সাময়িক হতাশা শেষে
আত্মতৃপ্তি পূর্ণিমা হক ধরেছি হাত তোমার দিনের দ্যুতি, রাতের তারায় ভালো থাকার আশায়। পার হয়ে এসেছি কতো পথ অন্ধকার বিষাদের কষ্টের- নির্ভরতার আশে। কতো যে কেটেছে রাত নির্ঘুম নয়নের বিদগ্ধতায় যোজন যোজন পথের সীমানা পেরিয়ে শ্রান্ত দেহ-মনে ধরেছি হাত তোমার। শুদ্ধ শিকলে অটুট আপনে বেঁধেছো আমায় জলসা ঘরে তোমার আলিঙ্গনে। তোমার প্রেরণায় চলেছি আজও ভ্রান্তিবিদ্ধ এ আবাসে আপন করে, ভালো রেখেছো বলে – আত্মতৃপ্ত হয়েছে বিবেক পাওয়ার পরিসীমায় আপন আত্মার ভুবনে। আরও পড়ুন কবি পূর্ণিমা হকের কবিতা- হৃদয়পটে সন্ধ্যা অনুভবে ভালোবাসা ভুল নয় তোমায় পেয়েছিলাম বর্ষার এক ভোরে দেখেছিলাম বর্ষার বারিধারায় অস্পষ্ট করে শরতের মেঘে ঢাকা চাঁদ যেমন,…
-
বিসর্গ বর্ণের ব্যবহার
বিসর্গ বর্ণের ব্যবহার মো. আলতাব হোসেন বিসর্গ একটি বাংলা বর্ণ; এটি কোনো চিহ্ন নয়। বর্ণ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। বিসর্গ বর্ণটি পরাশ্রয়ী, অনুস্বার ও চন্দ্রবিন্দুর মতোই অন্য বর্ণের সাথে যুক্ত হওয়া ছাড়া এটির কোনও কার্যকারিতা নেই। ১. শব্দ-সংক্ষেপে বিসর্গ ভাষার গতিবৃদ্ধির জন্য শব্দসংক্ষেপ অপরিহার্য। তাই শব্দ সংক্ষেপ করার জন্যও প্রত্যেক ভাষারই থাকা চাই সর্বজনবিদিত সুনির্দিষ্ট নিয়ম। আমাদের বাংলা ভাষায়ও আছে তেমন কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু সে নিয়ম আমরা অনেকেই অনুসরণ করছি না, প্রয়োগ করছি না। শব্দ-সংক্ষেপ করার জন্য আগে বিসর্গ এবং অনুস্বার ব্যবহার করা হতো। আমরা এখনো নামের আগে উত্তরাধিকার সূত্রে মোহাম্মদ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে ব্যবহার করে আসছি…
-
কবি নজরুল
কবি নজরুল তাহমিনা খাতুন সাম্যের কবি তুমি, তাই গাহিয়াছ সদা সাম্যের গান তোমার গানেতে উঠিয়াছে বাজি, মানবতার জয়গান। ধর্ম, বর্ণ, স্থান, কাল, পাত্র অভেদ করি তুমি উড়ায়েছ বিজয় কেতন, আহা! অপরুপ মরি। বিদ্রোহী কবি তুমি তোমার লেখনী হয়েছে শাণিত, প্রনমি আপন ভূমি। দ্রোহের মন্ত্রে জাগিয়াছিলো, নিদ্রাতুর জাতি উৎসাহিলে তাদেরে পাড়ি দিতে, কঠিন ভয়াল রাতি। যেথা দেখিয়াছ অন্যায়, আর যেথায় অবিচার গর্জিয়া উঠেছে লেখনী তোমার, হইয়াছে ক্ষুরধার বিদ্রোহী তুমি, কবিতায় তব জ্বালালে অগ্নি শিখা বাংলা কাব্যের ভালে পরায়েছ, জলন্ত রাজটীকা। কি দুর্মর বাজি ধরিয়াছ তুমি, ভয় শূন্য চিতে ‘শৃঙ্খল ভাঙার’ গান শুনায়েছো, তোমার অভয় গীতে। ‘শিকল পরা’ পায়ে বেজেছিল, শিকল ভাঙ্গার…
-
স্নেহশীল কজন
স্নেহশীল কজন তাহমিনা খাতুন কয়েকজন স্নেহশীল মানুষের কথা মনের গভীরে আজও ছায়া ফেলে যায়। যাদের কথা মন হলে আজও মনের গহীনে চিনচিনে একটা ব্যথা অনুভব করি। যারা আমার রক্ত সম্পর্কীয় না হয়েও আমার শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে এমন একাকার হয়ে মিশে আছেন যে, তাঁদেরকে বাদ দিয়ে স্মৃতিচারণ করাটা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। আমাদের শৈশবে দেখেছি, যাদেরকে আমাদের গৃহস্থালী কাজে বা কৃষি কাজে নিয়োজিত করা হত, তাদেরকে পরিবারের একজন সদস্য হিসাবেই গণনা করা হত। আমার মা, চাচি অথবা ফুফুকে বায়োজ্যষ্ঠ কাউকে কখনো নাম ধরে ডাকতে বা অসন্মান করে কথা বলতে শুনিনি। তাদের অমুকের মা অথবা বাপ এমন সম্বোধন করতে শুনেছি। আমরাও ওনাদেরকে…
-
রঙিন খামে চিঠি, তোমার জন্য তারার ফুল, অগ্নি স্রোত
রঙিন খামে চিঠি জিন্নাত আরা রোজী বুকটা দুরু দুরু কাঁপছে,বাইরে চোখ পড়তেইখোলা রাস্তায় জোড়া শালিকমাথার উপর আকাশটাওমেঘে মেঘে ভেসে যাচ্ছে।সকাল থেকেই ভাবনাগুলোকেন যেন এলোমেলো। মনে হয় কিছু একটার জন্য অপেক্ষা করছি।হঠাৎ বাহির থেকে জোরে আওয়াজ এলো,মনটা কেন যেন আঁতকে উঠলো,এমনটাতো কখনো হয় না।আবার চিৎকার; চিঠি আছে, চিঠি।মা বললো, কার চিঠি?দেখতো মা, কার চিঠি, কে পাঠিয়েছে?হলুদ খাম, বড় বড় অক্ষরে লিখা খামের উপরে,খান বাড়ি, নওয়াগ্রাম নাজিরগঞ্জ, পাবনা। ভয়ে ভয়ে খুব আস্তে আস্তেখামের উপরের অংশটুকু ছিড়লাম।ভিতরে গাঢ় নীল কাগজ;ভাঁজ খুলতেই, ‘প্রিয় রজন শুধু তোমার জন্য।তোমার জন্য একটুকরো রঙিন কাগজ,ভালোবাসা তোমার জন্য।ভালোবাসা নিও, ভালো থেকো। আরও পড়ুন জিন্নাত আরা রোজীর কবিতা- কবির…
-
কালো কঙ্কাল (শেষ পর্ব)
কালো কঙ্কাল (শেষ পর্ব) সাইফুর রহমান পরদিন রাতেই বিয়ে হয়ে গেল লতুর। নিতান্তই অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান। বরপক্ষের লোকজন এসেছিল জনা বিশ-পঁচিশের মতো। পাত্রপক্ষের ইচ্ছা এখন শুধু কাবিন করে রাখা। অগ্রহায়ণের শেষে নতুন ফসল ওঠার পর ধুমধাম করে মেয়েকে তুলে নেবে। বাড়িতে ব্যান্ডপার্টি ও সানাই না বাজলেও আহার-বিহারের কোনো কমতি করেনি তালেব মিয়া। পোলাও রোস্ট থেকে শুরু করে মুগডাল দিয়ে রুই মাছের মাথা। মাছ, রেজালা, দই সবকিছুরই এন্তেজাম করেছিল। বরপক্ষের লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ খাওয়া শেষে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে দেশলাইয়ের কাঠি ভেঙে দাঁত খিলাল করতে করতে বলছিলেন, “তালেব মিয়ার আতিথেয়তার তারিফ না করে পারা যায় না। প্রতিটি ব্যঞ্জনই সুস্বাদু। আহা! অমন…
-
নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশ
নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশ খলিফা আশরাফ নতুন প্রজন্ম এবং অজেয় বাংলাদেশ বিপন্ন বিস্ময়ে প্রত্যাশায় চেয়ে থাকি তবু কষ্ট দহন বুকে অপলক চোখে সতর্ক প্রহরা আজও দেখি একাত্তুরের মোহন স্বত্ত্বায় উদ্ভাসিত সুবর্ণ জমিনে নারকীয় বীজ বুনে যায় মদ্যপ পামর বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলে অবিরাম ঘাড়ে বৃশ্চিক সব কদর্য হাত ফেলে মানচিত্রের পবিত্র সীমায়। আমরা বিস্মৃত হই নিকট অতীত সহসা ভুলে যাই ঘাতকের নাম লোলজিহ্বা বিস্তরিত জীঘাংসার কদাকার মুখ সেই সব কুশীলব নরকের কীট, স্বাধীনতার ঘোর শত্রু যারা কি নিপুণ খেলেছিলো ষাড়যান্ত্রিক কূট পাশা খেলা, সহস্র বছরের আরাধ্য অর্জন লক্ষ প্রাণের রক্তধোয়া চেতনা বৈভব গৌরবের জয়-স্তম্ভ সব ছিড়েখুঁড়ে নিঃশেষে চেয়েছিলো খেতে সর্বভুক…
-
কালো কঙ্কাল (২য় পর্ব)
কালো কঙ্কাল (২য় পর্ব) সাইফুর রহমান সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার আগেই বাড়ি ফেরে তালেব। জোবেদা খাতুন লতুর মাথায় তেল দিচ্ছিলেন। লতুর মাথায় চিরুনি চালাতে চালাতে তালেব মিয়াকে উদ্দেশ করে জোবেদা বললেন, “খাবারের গামলা ও থালাবাসনগুলো ঘরের দাওয়ায় রাইখে আপনি হাতমুখ ধুয়ে নিন। লতুর চুল আছড়ানি শ্যাষ হলি আমি আপনাক গুড়-মুড়ি দিচ্ছি।” মেয়ের পাশে বসলেই এক অজানা কারণে জোবেদা খাতুনের মনটা প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। যদিও লতুর গায়ের রংটা খোসা ছাড়ানো তেঁতুলের মতো কিন্তু মেয়ে তার দেখতে বেশ আকর্ষণীয়া। দীর্ঘাঙ্গী। সব সময় পরিচ্ছন্ন পরিপাটি চলাফেরা। লতুর শরীর থেকে সবসময় জবাকুসুম তেল আর শিউলিফুলের সুবাস মেশানো সুন্দর একটা গন্ধ পাওয়া যায়। জোবেদার ইচ্ছা…