-
দূরবর্তী তুমি একাত্তর
দূরবর্তী তুমি একাত্তর খলিফা আশরাফ তোমাকে এখন আর ছুঁতেই পারি না একাত্তর আমার নাগাল থেকে ক্রমাগত দূরবর্তী তুমি শপথের পাঠ ভুলে আজ আমি হয়েছি পাতক লজ্জায় অতি সংকুচিত কত আর উচ্চতায় যেতে পারি আমি? বামনের হাত আমার পারে না স্পন্দিত-স্পর্শ করতে বিপুল অবয়ব তোমার কেবলই ফিরে আসি ব্যর্থতার গ্লানিতে ভেসে ভেসে, আমার অস্তিত্বের সাথে প্রাণময় বাঁধা আছো তুমি সেই কবে থেকে তোমার মুক্তিলগ্নে অগ্নিঝরা রণাঙ্গন হতে, তখন স্থির প্রতিজ্ঞায় প্রত্যেয়ী কথা ছিলো স্বাধীনতা-স্বাদ আদিগন্ত প্রতিঘরে পৌঁছে দেবো সোনার বাংলার প্রশান্ত সৌরভ সহাস্য বিলাবো চৌদিকে, ধানের মৌ মৌ ঘ্রানে জুড়াবে কিষাণের প্রাণ সৌভাগ্যের অমল হাসি উৎকীর্ণ হবে শ্রমিকের ঠোঁটে মেহনতি মানুষের…
-
সাদা মেঘের তুলো (১ম পর্ব)
সাদা মেঘের তুলো (১ম পর্ব) শাহানাজ মিজান বৃষ্টির দিনে কোনো কাজ যদি না থাকতো, কতই না ভালো হতো। গ্রামের বাড়িতে টিনের ঘরের চালের উপর ঝমঝম বৃষ্টির; রিমঝিম রিমঝিম শব্দ শুনতে দারুণ লাগে। মনে হয়, প্রেয়সী যেন আলতা রাঙা পায়ে নূপুর পরে ছন্দে ছন্দে আনন্দে নৃত্য করছে। আর সে নৃত্য দেখতে দেখতে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতে মন চায়। অলসতা এসে ভর করে সমস্ত শরীরে,মনে। বিছানাও যেন আপন করে, আদরে জড়িয়ে রাখে। শহরের মানুষ প্রকৃতির এই রোমাঞ্চকর স্বর্গীয় অনুভূতি থেকে বঞ্চিত, তবে বৃষ্টি বিলাসী মন যার, সে সব জায়গাতেই প্রকৃতির রোমাঞ্চ খুজে পায়। বৃষ্টির আজ অভিমানের পালা চলছে, অঝোরে কেদেঁই যাচ্ছে,…
-
ভালোবাসি যারে, কবি ওমর আলী
ভালোবাসি যারে পথিক জামান ভালোবাসি যারে পাইনিকো তারে এই পৃথিবীর মাঝে, তাই ঘুরি ফিরি এখানে-সেখানে মন বসে নাকো কাজে। জানি আমি কি যে করিয়াছি ভুল, তাই বাগিচায় ফুটিল না ফুল, গাহিল না গান পাখি না পেয়ে তোমায় কী করে ঘুমায় আমার তৃষিত আঁখি? তুমি ছিলে মোর নয়নের মনি তোমার কথা ভাবি যখনি মন কাঁদে বারে বার, মানে না বারণ, কাঁদে সারাক্ষণ কী করিব আমি তার? জান না তোমাকে কত ভালোবাসি, তাই শত বার ফিরে ফিরে আসি, তোমাকে দেখার ছলে, তোমার বিহনে বিরহ অনল ধিকি-ধিকি বুকে জ্বলে। কিভাবে বল থাকিব দাঁড়ায়ে? পাগল হয়েছি তোমাকে হারায়ে একুশ বছর আগে, আজও নিশিদিন…
-
তৎকালীন গ্রামের চিত্র
তৎকালীন গ্রামের চিত্র ও শৈশবের পালা-পার্বন তাহমিনা খাতুন তৎকালীন গ্রামের চিত্র আমাদের ছেলেবেলার দ্বারিয়াপুরের সাথে বর্তমানের দ্বারিয়াপুরের এখন আর কোন মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর বা তার আগের দ্বারিয়াপুর ছিল ঘন বন-জঙ্গল, বিশাল বিশাল তেঁতুল গাছ, বিশাল আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, জামরুল ইত্যাদি গাছ-গাছালিতে ভরপুর। ছিল তাল, খেজুর, নারকেল, সুপারি। এক শান্ত গ্রাম। ভোর হওয়ার সাথে সাথেই পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠত চারিদিক। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শোনা যেত শেয়ালের হুক্কাহুয়া রব। বনবিড়াল, মেছো বাঘ (স্থানীয়ভাবে বলা হত বাঘ ডাঁশ) ঘরের আশেপাশে উঁকি-ঝুঁকি দিত। বাড়ির আশেপাশে ঝোপ জঙ্গলে সজারু, বেজী, বুনো খরগোশের (যাকে স্থানীয় ভাষায়…
-
হৃদয়পটে, আসবো ফিরে, দহন দাবানল
হৃদয়পটে পূর্ণিমা হক এখানে আকাশ নীল জমিনের বিস্তৃত সুবিশাল পরিসরে নির্জনতায়, নিঃশব্দে সাড়ে তিন হাত মাটির হৃদয়ে ঠিকানা হয়েছে তোমার। তোমার রেখে যাওয়া আনন্দ বেদনাগুলো করে বাস অবিচ্ছেদ্য আত্মীয়ের মতো- আমার হৃদয় পিঞ্জরে। ঋতু যায় ঋতু আসে জীবন শুধু যেতে পারে না ফেরার দেশে। তুমি তো নিসর্গের মতো- আপন আত্মার বিচ্ছেদে হয়েছো বিলীন, হাত রেখেছি আমি তোমার নিথর দেহে, শীতল কপালে- শেষ স্পর্শের অনুভূতিটুকু নিয়ে আমিও হয়েছি বিলীন। তবুও ব্যথার নীল বেয়ে জ্বলে ওঠে অন্য এক সুখ। পূর্ণিমার চাঁদ, স্নিগ্ধ হাওয়া, পাখির কলতান আকাশের নীলে তোমার বসতি যেনো নতুন দিনের মতো পুবাকাশে নতুন জীবন। তোমার প্রেরণাগুলো ঘাসফুল হয়ে রয়…
-
তথ্যসেবা ও তথ্য অধিকার আইন
তথ্যসেবা ও তথ্য অধিকার আইন খ ম আব্দুল আউয়াল একুশ শতকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নব নব উদ্ভাবনার ঢেউ মানব জাতিকে অতীতের সকল সীমারেখা থেকে ভাসিয়ে নিয়ে এমন এক নতুন দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে যে তাকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের স্রোতধারায় স্নাত হতে হচ্ছে। নতুন চিন্তায়, নতুন উদ্ভাবনায় মানব জাতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষ এখন এক নতুন বিশ্বে নতুন মননে ভাস্বর হয়ে উঠেছে। দৈহিক, মানসিক, নান্দনিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নতুন ধারা আজ মানুষের সামনে উত্থিত হচ্ছে। এ যুগকে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের যুগ । মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে মানুষের সমাজ সংগঠন এক শ্রেষ্ঠ কীর্তি। সমাজের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে গ্রন্থাগার । গ্রন্থাগারে মানব…
-
তৃষ্ণা, অকাল মরণ, করো দীর্ঘজীবী
তৃষ্ণা অঞ্জলি ভৌমিক পাখ পাখালির তৃষ্ণার ঠোঁট জল নাই নদী তীরে, সব নদী জল বাষ্পে উড়িয়ে মেঘ ফিরে গেছে নীড়ে। জলের সাথে মধু মিলনের দিন গুনে তবু পাখি, ছন্দে ছন্দে জোষ্ঠ্যের কালে আনমনে যায় ডাকি। ভরা পূর্ণিমা ভরা যৌবন মরে মরে ফের বাঁচে, মেঘ ফিরে আর আসে না বুকের বামপাশটার কাছে। রোদেলা দুপুরে ঘুম বেঁচে পাখি আঙিনায় যাচে জল, নদীর গভীরে ক্ষত করে আনে বৃষ্টি ছলাৎ ছল। অকাল মরণ ইচ্ছে করে দরজা খুলে আকাশটাকে লুকাই ঘরে, বাতাসটাকে যত্ন করে হাতের মুঠোয় রাখি ভরে। ইচ্ছে করে স্বপ্ন হাজার বিলিয়ে দিতে তাদের মাঝে, স্বপ্ন যাদের চোখের পাতায় পড়েই থাকে সকাল…
-
আমার চাঁদ, মাটির আলো, অন্তরে সোনালি আলো, দুরুদুরু
আমার চাঁদ খোন্দকার আমিনুজ্জামান তুমি আমার চাঁদ, চাঁদের জ্যোৎস্না আরও আছে কতশত মধুর দ্যোতনা, কতো ভাবনা। তুমি ভালো লাগার অধিক কিছু তাই মন ছুটে যায় তোমার পিছু মনটা আমার প্রাণে রহে না। ভোরের আর্দ্র বাতাস তুমি, তুমি শিউলির সুবাস আরও অনেক বাড়তি কিছু ভাষায় যায় না প্রকাশ সারাটাক্ষণ মন ছুঁয়ে যায় তোমারই কল্পনা। মাটির আলো এক মাটির আলো আমায় করলো এলোমেলো দিবানিশি প্রতিবেশী এমন আলো জ্বালাইলো মনটা আমার ঝলোমলো পাগল বুঝি বানাইলো এক মাটির আলো। অনস্ত অতুল তুলনা তার নাইরে ভুলিতে পারি না ভোলা কি যায়রে কী যে হয়ে গেল হৃদয় করে টলোমলো। সেরা তুমি সুন্দর তুমি সুর-ছন্দের…
-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, গবেষক, গোপালপুর (ভায়না), পড়াশোনা, বই পর্যালোচনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিজ্ঞানী, ভায়না, লেখক পরিচিতি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, সাহিত্য
অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার (৭ম পর্ব)
অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার (৭ম পর্ব) ~ মোহাম্মদ আব্দুল মতিন প্রকাশনা (২য় অংশ): ৪। খগোল পরিচয় (বাংলা একাডেমী, ১৯৬৫ খ্রি.) অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার এর অগ্রজ, বিজ্ঞানে মুসলমানের দান-এর লেখক মোহাম্মদ আকবর আলী, তারা সম্বন্ধে কিছু লিখতে এবং তারার গল্প দিয়ে ছোটদের জন্য একখানা বই লিখতে তাঁকে উৎসাহিত করেন। এই প্রেক্ষিতে তিনি ছোটদের জন্য তারার গল্পের বই লিখবার জন্য পড়াশোনা আরম্ভ করেন। বিভিন্ন দেশে তারা নিয়ে বিভিন্ন গল্প প্রচলিত আছে। এ সমস্ত গল্প সাধারণত পৌরাণিক কাহিনীর সাথে জড়িত। গ্রিস, চীন, মিসর, আরব ও ভারত ইত্যাদি দেশ প্রাচীন জোতির্বিদ্যার জন্য সুপ্রসিদ্ধ। পাশ্চাত্য জগতে যে সমস্ত তারার গল্প প্রচলিত আছে,…
-
প্রেমমৃত্তিকা, নিরাশার মাঝে, মঙ্গল প্রবাহে
প্ৰেমমৃত্তিকা আদ্যনাথ ঘোষ জীর্ণ-শীর্ণ ঝরা পাতাগুলো শুধুই কেঁদে কেঁদে যায় অনন্ত বিরহ বেদনায়- বিকেলের হলুদ-রক্তিম আভার সাথে পশ্চিমে হেলেছে সূর্য সিঁদুরের সাথে দুধে-আলতা মিশানো অই অসহ্য বেদনার সাক্ষী হয়ে। হেমন্তের ধান কাটার পরে রিক্ত মাঠের যে বিপন্ন-বিষণ্ণতা কন্যার বিদায়ের সাথে পিতার যে শূন্যতার আহাজারি কার বুকে কতো কষ্ট-কার বুকে কতো প্রেম- কার বুকে কতো কতো ঝড়- অশান্ত মনের ধূসর মেঘমালা থেকে— শুধুই ঝরে ঝরে পড়ে বৃষ্টির ফোঁটায় ফোঁটায়। হৃদয়ের দুঃসহ ক্ষত-বিক্ষত, শিরায় শিরায় অবিরত বয়ে চলে রক্তস্রোত আর আমি চেয়ে চেয়ে থাকি রিক্ত হাতে প্রেমমৃত্তিকা থেকে অসীম শূন্যতার দিকে অবলীলায় । আরও পড়ুন আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা- কান্নার কৈলাসে কবিতার…