-
বই ও বইমেলা
বই ও বইমেলা খ ম আব্দুল আউয়াল শৈশবে মায়ের কোল নিরাপদ আশ্রয়। এমন তুলনীয় আশ্রয় মানুষের জীবনে আর কি হতে পারে; আমার তো মনে হয় বই। বইয়ের মতো এমন সাথী মানুষের জীবনে আর কিছুই হতে পারে না। সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায়, জীবনে চলার পথে সব সময়ে এমন নীরব অন্তরঙ্গ হিতৈষী বন্ধু দ্বিতীয়টি নেই। বই এমন সঙ্গী যে কখনও প্রতারণা করে না। মতের মিল না হলেও জবরদস্তি করে না। সঙ্গ তো দেয়ই, উপরন্তু এমন আরও কিছু দেয়; এ সংসারে আর কেউই দিতে পারে না। এই দুনিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় হলো বই। বইয়ের জগতে একবার ঢুকতে পারলে মনে হবে পরপারের সাথীও যেন বই-ই হয়।…
-
রবীন্দ্রনাথের গ্রন্থাগার চিন্তা
রবীন্দ্রনাথের গ্রন্থাগার চিন্তা খ ম আব্দুল আউয়াল রবীন্দ্রনাথ যুগস্রষ্টা চিন্তাবিদ। তাঁর চিন্তায় তাঁর সমকালের সকল দিকই অনবদ্য ভঙ্গিতে প্রকাশ পেয়েছে। গ্রন্থাগার ভাবনাও তাঁর সচেতন মনে রেখাপাত করেছে এবং তাঁর রচনার মধ্যে তা ছড়ানো রয়েছে। উনিশ শতকের শেষ দশকে (১৮৮৬ সালে) ১২৯২ বঙ্গাব্দে তিনি ‘লাইব্রেরি’ প্রবন্ধটি লেখেন। (১৯২৮ সালে) ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে নিখিল ভারত গ্রন্থাগার সম্মেলনে প্রদত্ত সভাপতির ভাষণে তিনি যা বলেন তা ‘লাইব্রেরির মুখ্য কর্তব্য’ নামে পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। এ দুটি প্রবন্ধে বরীন্দ্রনাথের যে চিন্তা চেতনা প্রকাশিত হয় তা ১৯৩১ সালে ভারতীয় গ্রন্থাগার বিজ্ঞানী এস আর রঙ্গনাথনের পঞ্চনীতি (Five Laus of library Science) প্রকাশের আগে। উপমহাদেশের শিক্ষা সংস্কৃতির জগতে গ্রন্থাগার নিয়ে…
-
ব্রিটিশ লাইব্রেরির কথা
ব্রিটিশ লাইব্রেরির কথা খ ম আব্দুল আউয়াল ব্রিটিশ কাউন্সিল ভিজিটরশিপে ইংল্যান্ডের কয়েকটি গ্রন্থাগার আমার দেখার সুযোগ হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের এ ভিজিটরশিপের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্যায়ন ও তথ্য সরবরাহ প্রক্রিয়ায় গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা কী ভাবে কাজ করে তা সরেজমিনে দেখা। এই কর্মসূচিতে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান দেখার সুযোগ হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ‘দি এসোসিয়েশন অফ কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিজ’, ‘কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট’, ‘ডিপার্টমেন্ট অব লাইব্রেরি, আর্কাইভ এন্ড ইনফরমেশন স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি কলেজ, লন্ডন, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড এফ্রিকান স্টাডিজ, লন্ডন ইউনিভার্সিটি, ‘দি ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন স্টাডিজ, ইউনিভার্সিটি অব সাররে’, জর্জ এডওয়ার্ডস লাইব্রেরি, ইউনিভার্সিটি অব সাররে’, ‘দি ব্রিটিশ লাইব্রেরি, “ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরি এ্যান্ড…
-
উচ্চশিক্ষা পরিকল্পনায় গ্রন্থাগার
উচ্চশিক্ষা পরিকল্পনায় গ্রন্থাগার খ ম আব্দুল আউয়াল স্বাধীনতাকামী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ফসল স্বাধীন গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠালাভ করে ১৯৭১ সালে। বাঙালির জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঙালির অমিত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায়। ১৯৭২ সালের নভেম্বরে মাত্র এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ স্বশাসনের সংবিধান জাতীয় সংসদের মাধ্যমে অর্জন করে। ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখে জারি হয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আইন (১৯৭৩ সালের রাষ্ট্রপতি আদেশ নং ১০ Presidential Order No.10 of 1973)। ১৯৭৩ সালে দেশের উচ্চশিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে পাঁচটি আইন জারি হয় তার মধ্যে প্রথমটিই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন আইন এবং বাকী চারটি দেশের সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় যথাক্রমে…
-
তথ্যসেবা ও তথ্য অধিকার আইন
তথ্যসেবা ও তথ্য অধিকার আইন খ ম আব্দুল আউয়াল একুশ শতকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নব নব উদ্ভাবনার ঢেউ মানব জাতিকে অতীতের সকল সীমারেখা থেকে ভাসিয়ে নিয়ে এমন এক নতুন দুয়ারে পৌঁছে দিয়েছে যে তাকে প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের স্রোতধারায় স্নাত হতে হচ্ছে। নতুন চিন্তায়, নতুন উদ্ভাবনায় মানব জাতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানুষ এখন এক নতুন বিশ্বে নতুন মননে ভাস্বর হয়ে উঠেছে। দৈহিক, মানসিক, নান্দনিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নতুন ধারা আজ মানুষের সামনে উত্থিত হচ্ছে। এ যুগকে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের যুগ । মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে মানুষের সমাজ সংগঠন এক শ্রেষ্ঠ কীর্তি। সমাজের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হচ্ছে গ্রন্থাগার । গ্রন্থাগারে মানব…
-
গ্রন্থাগার আইন
গ্রন্থাগার আইন খ ম আব্দুল আউয়াল মানব সমাজে ইউরোপীয় রেনেসাঁ পরবর্তীকালে বিশেষত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র (Nation State) প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করে। মানব বিবর্তনের পরিবর্তনের ধারায় রাষ্ট্রীয় সভ্যতায় এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে জনকল্যাণের জন্য নানাবিধ আইন ও নীতিমালা প্রণীত হতে থাকে। বর্তমান বিশ্বে যে সকল দেশ তথ্যের মহাসরণীতে অবস্থান করছে তাদের তো কথাই নেই, উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও গ্রন্থাগার আইন চালু হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর সভ্যতার শুরুতে প্রথমে ফরাসি সমাজ ও রাষ্ট্র পাবলিক লাইব্রেরিকে সমাজের মৌলিক চাহিদা হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। ১৫৩৭ সালে তারা লাইব্রেরি বিষয়ে আইন প্রণয়ন করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৮৪৫ সালে নিউইয়র্কে করারোপের মাধ্যমে পাবলিক লাইব্রেরি…
-
গ্রন্থ ও গ্রন্থাগার
গ্রন্থ ও গ্রন্থাগার খ ম আব্দুল আউয়াল এমন একদিন ছিল যখন এই পৃথিবীতে মানুষ ছিল না। মানুষ যখন সৃষ্টি হলো, তখন থেকেই শুরু হলো এই পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। কষ্ট ছাড়া, শ্রম ছাড়া প্রকৃতির কাছ থেকে মানুষের বেঁচে থাকার কোনো উপকরণই পাওয়া যায়নি। আদিম কালে মানুষ ছিলো অসহায়। আত্মরক্ষার তাগিদে, বেঁচে থাকার সংগ্রামে সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করতে করতেই মানুষ সমাজ সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে মানুষ সংঘবদ্ধভাবে বসবাস করতে শিখেছে আত্মরক্ষার তাগিদে। বেঁচে থাকার সংগ্রামে জয়ী হয়েছে মানুষ সমাজ সৃষ্টি করে। নৃবি জ্ঞানীদের মতে মানব সভ্যতার সূচনা হয়েছে সমাজ সংগঠনের মধ্য দিয়ে। প্রকৃতির বৈরিতার সাথে একক সংগ্রামে মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়।…
-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, তালিমনগর, মুরারীপুর, লেখক পরিচিতি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, শ্যামসুন্দরপুর, সমাজসেবক, সাগরকান্দি, সাগরকান্দি ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সাহিত্য
অধ্যাপক মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (২য় পর্ব)
অধ্যাপক মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (২য় পর্ব) খ ম আবদুল আউয়াল ধর্ম সাধনা ও সমাজ সেবা: অধ্যাপক মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন নিজে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন যাকে বলে self made man. তিনি ছিলেন প্রকৃত ধর্মপ্রাণ, সত্যনিষ্ঠ, আদর্শবাদী মানুষ। ধর্মবোধ থেকেই পিতামাতার প্রতি ছিলেন পরম ভক্ত ও কর্তব্যনিষ্ঠ। তাই পিতার ইচ্ছানুযায়ী ধর্মীয় জ্ঞানেই আধুনিক উচ্চ শিক্ষা লাভ করেছিলেন, যদিও তাঁর মেধা ও আকাঙ্ক্ষার বিষয় ছিল গণিতশাস্ত্র। শিক্ষা লাভের শুরু থেকেই তিনি আদর্শ মানব হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন হযরত মুহম্মদ (সা.) কে। তাই সচেতনভাবে তরুণ বয়স থেকেই মহানবীর মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্বনবীকে গভীর ভালোবেসে অনুসরণ করে আমরণ জীবন যাপন করে গিয়েছেন। তিনি একাধারে যেমন ছিলেন পরম…
-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, তালিমনগর, লেখক পরিচিতি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, শ্যামসুন্দরপুর, সমাজসেবক, সাগরকান্দি, সাগরকান্দি ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সাহিত্য
অধ্যাপক মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (১ম পর্ব)
অধ্যাপক মুহম্মদ খোয়াজউদ্দিন (১ম পর্ব) খ ম আবদুল আউয়াল ঊনিশ শতকের শেষে কেউ কেউ নিজেকে গড়ে তুলে সমাজকে এগিয়ে নেয়ার অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছিলেন। মুহাম্মদ খোয়াজউদ্দিন তাঁদেরই একজন। বিশ শতকের শুরুতে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় ও উগ্র জাতীয়তাবাদের বিকাশে ইউরোপে যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে। এই যুদ্ধ প্রথম মহাযুদ্ধ বা বিশ্বযুদ্ধ নামে ইতিহাসে খ্যাত । প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে মুহম্মদ খোয়জউদ্দিন (১৯১১-১৯৮৫ খ্রি.) ছিলেন শিশু। আকাশে তখন দু’একটি নব আবিষ্কৃত যুদ্ধের উড়োজাহাজ দেখা দিলে মানুষ বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে ভাবতো মানুষ উড়তে শিখেছে। এটি তাঁর শৈশবের যুদ্ধ স্মৃতি। তিনি তখন স্থানীয় মক্তবে পড়াশুনা করেন। এ মক্তবটি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়, তাই এর নামকরণ…