-
অভিযান, জীবনে মরণে তুমি বাংলাদেশ
অভিযান মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম অশান্ত আমি চঞ্চল আমি মানি না বাধার পাহাড়; সত্যের তরে লড়িব আমি ভাঙ্গিব অন্যায়ের দুয়ার। এসো সঙ্গী সবে এসো মম সাথে এসো উৎসাহ নিয়ে এসো ন্যায়েরই পথে। পৃথিবীতে কেন এত হিংসা হানাহানি? ভালো লাগে না এত খুন রাহাজানি। এসো তোমরা ঐ নিশির অন্ধকারে এসো তোমরা দু’হাতে আলোর মশাল জ্বেলে। সত্যের তরে মোদের হোক অভিযান মিথ্যাকে করব মোরা পদস্খলন। ওহে; তরুণের দল- তোমরাই দেশের শক্তি সাহস তোমরাই মোদের স্বপ্ন ও বল সত্যের অভিযানে তোমরা থেকো অবিচল। কেন প্রতিবাদে চলবে গুলি? কেন রাজপথে লাশের ছড়াছড়ি? না না, আমরা দেখতে চাই না আমরা দেখব না এই নরপিশাচের হোলি। পৃথিবীর…
-
কৃষকের ধান, ভালো লাগে এই দেশ, স্মরণ
কৃষকের ধান মো. শরিফুল ইসলাম যত দূরে মোর দৃষ্টি মেলে দেখি যে সোনার ধান মাথার উপরে বিশাল আকাশ গাঁয়ে মানুষের তান। কাঁচা নাড়ার সুবাস ভাসে কাস্তের পোঁচে পোঁচে ধানের আগায় সোনার বাইল দক্ষিণা বাতাসে নাচে। পতিত ভূমিতে ঘাম ঝরিয়ে ফলিছে ভূমিতে সোনা কৃষক নাচে দেখিয়া আজ ধানের সোনার দানা। রোদ্রে সোনা বাইল চক চক করে কৃষকের মনে হাস এই সোনা লয়ে যত্নে রাখিয়া খাইবে বারো মাস। শরীর পোড়া গন্ধ যে আজ ধানের সুবাসে ম্লান দুঃখ যাতনা ভুলিয়া আজ কণ্ঠে মধুর গান। কাটিয়া ধান সিন্নি বিলাবে মন্দিরে দিবে প্রসাদ স্রষ্টার খুশিতে ভুলবে যাতনা মনে কৃষকের স্বাদ। সবারে অন্ন জুটিতে আজ সুখের…
-
প্রজ্বলিত স্মৃতি
প্রজ্বলিত স্মৃতি জাহাঙ্গীর পানু আজ এই পড়ন্ত অবেলায় কৃষ্ণচূড়ার তলায় দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করি কোথাও কী একটু অবসর ছিল না? একান্তে নিজেকে জানিবার, বুঝিবার। এইতো সেদিন – গোলাপের পাপড়ি আর শিউলি ফুলের মালা হাতে নিয়ে এসে বলেছিল- “প্রিয়তমেসু, অল্প সময়ের জীবনে আমাদের চাওয়াগুলো অফুরন্ত, নিটোল। জানি তোমাকে পাব না! কিন্তু আজ এই পড়ন্ত বিকেলে নীলাকাশকে স্বাক্ষী রেখে বলে গেলুম, তোমাকে জীবনে হারাতেও চাই না আমি রব নিরবে তোমার শয়নে, স্বপনে, তোমার হৃদয়ের প্রতিটি স্পন্দনে।” শাব্দিক কথা শেষ হয়েছিল পুস্পিতার । কিন্তু! তার প্রতিটি নিশ্বাসের হা-হুতাশের উচ্চারিত বাক্যগুলো ছিল খুবই স্পষ্ট এবং আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। তার কথার গভীরতা সেদিন বুঝিনি। কিন্ত আজ…
-
পাহাড়ি ললনা, অবাঞ্চিত কবিতা
পাহাড়ি ললনা কে এম আশরাফুল ইসলাম সবুজের মিতালি শাওড়াতলী অদূরেই পাহাড়ের মায়া, নিত্য কলকাকলি উড়ায়ে আঁচল ডেকেছিল প্রশান্তির ছায়া। মায়াময় আঁখি প্রশান্তির পাখি বিস্তার করিয়া ডানা, বাঁধিয়া রাখি পরাণে পশিয়া দিয়েছিল ঠিকানা। জীবনের আশা নিরঙ্কুশ ভরসা প্রত্যয়ের বাতিঘর, তৃষিত ভালোবাসা প্রণয় বাঁধনে কেউ হবে না তো পর! লালমাই পাহাড় আকর্ষণ দুর্নিবার ময়নামতির আঁচল, কোটবাড়ি তার হৃদয়ে ‘BARD’ ঐতিহাসিক কমল, সর্পিল পথ লালমতি কিছমত পার হয়ে সেই প্রাণ, করিয়া শপথ বেলতলী স্কুলে সতীর্থ হৃদয়ের টান, মুক্ত হিয়া ডাকিয়া প্রিয়-প্রিয়া চির রাখি বন্ধন, বিরহিয়া খোঁজে সান্ত্বনা মিলনে প্রস্ফুটিত নয়ন! সেই সাথী দানিয়া প্রীতি আপন পিত্রালয়ে রাখি, দিবস-রাতি রাখিত যতনে প্রণয়ের ময়না পাখি!…
-
যৌবন এখন, দেখে নিও তুমি
যৌবন এখন পূর্ণিমা হক বড়ো হয়ে গেছি আমি শৈশবের স্মৃতিগুলো কেঁদে ফিরছে আহত যৌবনকে দেখে। জীবনকে উপহার দিয়েছে যৌবন বিষময় একটা নীলাভ পার্সে, জীবনের সব অস্থিরতাগুলো এখন আমি পার্সে ভরেছি, সেটা আমার চলার সঙ্গী। বড়ো হয়ে গেছি আমি এখন যৌবন আমার কাছে জ্বলন্ত সিগারেট জীবনের ছাই, নোংরা এ্যাস্ট্রে। শৈশবের স্মৃতিগুলো তাই কেঁদে ফিরছে যৌবন এখন আমার তারুণ্যের উচ্ছৃঙ্খলতা মনের নানান জটিলতা বিষিয়ে ওঠা নিরস প্রাণ। বড়ো হয়ে গেছি আমি- যৌবন এখন আমার কাছে ভালোলাগা-ভালোবাসার ক্রমাগত দ্বন্দ্ব বিষাদের জীবন্তিকা খাম খেয়ালির বর্ধিত বছর পাওয়া না পাওয়ার বেদনার সাগরে উলঙ্গ স্মৃতিগুলোর অবাধ সাঁতার। আমার শৈশবের সবুজ মেঠোপথে যৌবন ফেলেছে বিষাক্ত কাঁটা, আমার…
-
রবি কবির জন্মদিনে শুভেচ্ছা
রবি কবির জন্মদিনে শুভেচ্ছা তাহমিনা খাতুন পঁচিশ বৈশাখ বিশ্বে হলো এক নতুন সূর্যোদয় সে রবির আলোয় উদ্ভাসিত সকল লোকালয়। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ি আলোকোজ্জল হলো সে আলোয় বুঝি জগৎ খানি হলো ঝলমলো। দিনে দিনে বাড়ল আলো, রঙিন হলো ধরনী নতুন মাঝি কলম বৈঠায়, বাইলো ভাবের তরণী। গল্প, কবিতা, নাটক, নভেল কিছুই রয়নি পিছে রবির হাতের যাদুর ছোঁয়ায়, মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। কত কাব্য হলো লেখা নাই তো কোনো সীমা বিশ্ব পদক, যশ আর খ্যাতি রবির ঝুলিতে জমা। গান কবিতা পেল প্রাণ রবির হাতের ছোঁয়ায় রবির গানের সুরের যাদু, ছড়াল বিশ্বময়। রবির গানেই আশ্রয় নিই, হলে উদাসীন গান শেষ হলেও মনে বাজে নানা ছন্দের…
-
বোশেখ বন্দনা
বোশেখ বন্দনা তাহমিনা খাতুন চৈত্রের অগ্নিবান হলো সবে শেষ বোশেখ এলো যেন নিবারিতে সব ক্লেশ। চৈত্রের রোদ্দুরে মাঠ-ঘাট চৌচির কোথাও মেলে না দেখা শান্তির নীড়। জনশূন্য ফাঁকা নিস্তব্ধ চারিধার ভুলেছিল প্রাণীকূল শোনাতে কলস্বর। ঘুঘুর ক্লান্ত সুর ভরাত দুপুর মনের তারে বাজাতো শুধু বিষাদের সুর। বন-বনানী হয়েছিল কাতর পিপাসায় চাতকের মতো গুনছিল দিন বোশেখের প্রতীক্ষায়। চৈত্রের ভয়াল তাপে ওষ্ঠাগত সব প্রাণ রুদ্র কালবৈশাখী গাইল যেন নতুন দিনের গান। রুদ্র বোশেখের আজ হলো আগমন নতুন দিনের তরে জানাল আমন্ত্রণ। ঈশানকোণে শুনি মেঘের গুরু গুরু সোনালি দিনের বুঝি হলো আজ শুরু। দুরন্ত দূর্বার ঝড়ের হাওয়ায় পুরনো দিন সে তো উড়ে চলে যায়। উন্মাতাল…
-
রক্তাক্ত স্বাধীনতা
রক্তাক্ত স্বাধীনতা আনিছুর রহমান মিলন ‘৭১-এ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে বাঙালির বিজয়ের স্পৃহা জাগে গিরি, মরু, মাঠ, ঘাট, পথ-প্রান্তর ও নদীর বাঁকে বাঁকে। ৫৬ হাজার বর্গমাইল সমান চওড়া ছিল বঙ্গবন্ধুর বুক আজও তাই লাল সবুজের পতাকার মাঝে ভেসে উঠে প্রিয় সে মুখ। দুইশ বছরের ব্রিটিশ শাসন শেষে ১৯৪০-এ ‘লাহোর প্রস্তাব’ মুসলমান অধ্যুষিত দুটি অঞ্চল হবে দুটি ভাগ। ষড়যন্ত্র ও কূটচালের বীজ হলো বোপন হিন্দুস্তান ও পাকিস্তান গঠন করল মিটিং হলো গোপন। পূর্ব পাকিস্তানকে নিয়ে খেলা হলো শুরু মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ছিলেন সকল নাটের গুরু। ১৯৪৮ সালে জিন্নাহ সাহেব চলে এলেন ঢাকা ঘোষণা দিলেন উর্দু হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ক্ষোভে উত্তাল বীর বাঙালি…
-
আত্মশুদ্ধির মাস
আত্মশুদ্ধির মাস জাহাঙ্গীর পানু স্বাগতম হে মাহে রমাদান। তোমার আগমনে হৃদয় হয় স্পন্দনে উদ্বেলিত। মহান রবের প্রতি চির কৃতজ্ঞতায় হয়েছি মোরা ধন্য। আপন শরীরের অযাচিত আবর্জনা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার হয়ে যাক; আদায় হোক দেহের পরিপূর্ণ যাকাত। মানবতার মুক্তির সনদ কোরআনের আগমনে বেড়েছে তোমার সম্মান; সত্য মিথ্যার পার্থক্য বুঝে আমরা করি মহান স্রষ্টার গুণগান। তোমার মাধ্যমে মহান স্রষ্টা সুযোগ দিয়েছে তাঁর সম্পর্কে জানিবার মানবজাতির সহজে সুযোগ হয়েছে মহান প্রতিপালককে চিনিবার। রহমত, বরকত আর মাগফেরাতের মাস দোযখ হতে মুক্তি যেন অতিরিক্ত বোনাস। ভোররাতে খাদ্য তালিকায় বরকতময় সাহরি, আর সুর্যাস্তের পর দোয়া কবুলের আনন্দময় ইফতারি। মানুষের কল্যাণে রয়েছে নামাজ তারাবিহ, রাতের ইবাদাত যেন…
-
লীলাচোখ, তুমি নেই, ঢেউতলে
লীলাচোখ আদ্যনাথ ঘোষ পাখিভোর আজ লীলাচোখে কুমারীত্ব হারায়। লীলাচোখ দুষ্টুমি জানে, পার ভাঙে, গড়ে পার- জলে জলে জ্বলে উঠে স্রোতস্বিনী নদী। জোছনামুখর গ্রহণে গ্রহণ লাগা কাঁঠালি ভরণথোর, রোদেতে প্লাবন; রোদেতে রোদপোড়া ত্রিবেণী মাতঙ্গিনী সোহাগকলস। তবু তার ভাঙন-গড়ন হয়ে উঠে উৎসব; সৃষ্টিপাগল-জলচোখ- ক্ষরণের দহনজ্বালা জোয়ারের পুণ্যতোয়া নদী। এ কেমন জ্বালায় জ্বলে ওঠো, ওগো মেয়ে দহনে দাহনে পুড়ে সুখ পাও, লীলাচোখ পাড়ায়- উল্লাসে মাতাল চোখ, উৎসব ভোর। সবুজ উৎসব মাতে, নদীর এধার ওধার জলেতে জল চায়; বিনিময়ে হয়ে উঠে উর্বরা জমিন। লীলাচোখ জমিন দেখে; নতুনের সৃষ্টিসুখে, স্বপনের সূর্যসকাল। এ কেমন গান গেয়ে ওঠো, ওগো মেয়ে তোমার সর্বনাশা জলের নেশায় সবুজে ভরে উঠে…