-
আহম্মদপুর, কৃতি ব্যক্তিবর্গ, তাঁতিবন্ধ, দুলাই, নাজিরগঞ্জ, ভায়না, মানিকহাট, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, রানিনগর, সাগরকান্দি, সাতবাড়িয়া, হাটখালি
সুজানগর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা
সুজানগর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার পৌরসভা এবং ইউনিয়নভিত্তিক গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: সুজানগর পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা: শহিদ আ. আউয়াল শহিদ ইব্রাহিম মোস্তফা কামাল দুলাল মো. তোফাজ্জল হোসেন (যুদ্ধাহত ) মো. শাহজাহান আলী মন্টু (যুদ্ধাহত ) শ্রী সুনিল কুমার সাহা মো. আব্দুস ছামাদ মো. আব্দুল হাই মো. আব্দুল কাদের মো. আব্দুল হামিদ মো. সুলতান মাহমুদ মো. আবুল কালাম আজাদ মো. মসলেম উদ্দিন মো. মোজাম্মেল হক চুন্নু মৃত আকবর আলী মো. আববাস আলী আব্দুল বাতেন শ্রী পরেশ চন্দ্র সাহা লিয়াকত আলী খন্দকার আবুল কালাম মো. সেলিম বদর মৃত হাবিবুর রহমান মো. ইয়াছিন উদ্দিন মো. আ. গণি মো. মনসুর রহমান…
-
মধুর স্মৃতি
মধুর স্মৃতি তাহমিনা খাতুন অল্প বয়সের স্মৃতি হয়তো মানুষ কখনো ভোলে না। তেমনি একটি স্মৃতি এখনও মনে পড়ে। আমার বড় ভাবী ও ওনার মায়ের টাইফয়েড বা ম্যালেরিয়া জাতীয় কোন জ্বর হয়েছিল। আমার ভাবী ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ভাবীর বাবার একার পক্ষে দুই জন অসুস্থ মানুষকে সুশ্রুষা করা কঠিন হয়ে উঠেছিল। খবর পেয়ে মা ওনাদের সেবা করার জন্য আমাকে আর ছোট দুই ভাই-বোন বাসার আর তুষারকে নিয়ে ভাবীর বাবার বাড়ি সৈয়দপুর গেলেন। কয়েকদিন পর আব্বা আমাকে আনতে গেলেন। কয়দিনেই ভাবীর চাচাত বোনদের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। আমি ফিরে আসার আগে আমার বন্ধুটি আমাকে ভালবেসে তার কিছু পুতুলের কাপড় আমাকে…
-
ছেলেবেলার ষড়ঋতু
ছেলেবেলার ষড়ঋতু তাহমিনা খাতুন চৈত্রের খর তাপের দাবদাহের পর বৈশাখ আসতো ভয়ঙ্করী রূপে। প্রায়ই কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা উপরে, ঘর- বাড়ি ভেঙ্গে মানুষের দুর্দশার সীমা থাকত না। আর আমাদের চলতো কাঁচা আম কুড়ানোর ধুম। ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙ্গে মাথায় পড়বে কিনা-তাতে কোন ভ্রুক্ষেপও করতাম না। আমি তখন খুবই ছোট। একদিন দুপুরের পর পরই আকাশের ঈষান কোন ঘন কাল মেঘে ছেয়ে গেল। আব্বা, মা সহ বেশীর ভাগ ভাই-বোন বাড়ির বড় চৌচালা ঘরটায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। কেবল মাত্র মেজ ভাই অপেক্ষাকৃত ছোট ঘরটায় অবস্থান করছিলেন। প্রচন্ড বেগে ঝড় শুরু হল। আব্বা চিৎকার করে মেজভাইকে বড় ঘরটিতে চলে আসতে বললেন। মেজভাই দৌড়ে বড় ঘরটিতে…
-
আলাদীপুর, গল্প, তালিমনগর, নাজিরগঞ্জ, নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ, সাইফুর রহমান, সাতবাড়িয়া, সাহিত্য
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (২য় পর্ব)
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (২য় পর্ব) সাইফুর রহমান প্রত্যুষে উঠে পেটের ধান্দাটাই আগে করতে হয় রেজেকের। তাকে যেতে হয় রসু মিয়ার বাড়ি। রসু মিয়ার কাছে তিন মাস আগের পেঁয়াজ বিক্রির কিছু পাওনা বাকি পড়ে আছে। বেশ কয়েক মাস ধরে টাকাটা আটকে রেখেছে রসু মিয়া। চাইলেই শুধু গাইগুই করে। সাথে নানা রকম টালবাহানা, ওজর-আপত্তি ও ভাঁওতাবাজি প্রতিজ্ঞা। টাকাটা তুলতে পারলে কয়েক দিনের সংসার খরচটা আপাতত সামাল দেওয়া যায়। এরপর তাকে যেতে হবে লালডাঙ্গী বটতলায়। যেখানে হুজুর আস্তানা গেড়েছে, সেখানটায়। হুজুরের নাম শাহ সুফি কুতুব উদ্দিন জালালাবাদী। রসু মিয়ার বাড়িতে যাওয়ার পথে কুতুব উদ্দিন জালালাবাদী সম্পর্কে লোকমুখে অনেক কথাই শুনতে পায় রেজেক।…
-
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (১ম পর্ব)
একশত ছিদ্রযুক্ত জামা (১ম পর্ব) সাইফুর রহমান কাশিনাথপুর থেকে যে প্রধান পাকা সড়কটি পাবনা শহরে গিয়ে মিশেছে, তারই মাঝে একটি জায়গার নাম আলাদিপুর। আলাদিপুর থেকে একেবারে দক্ষিণ বরাবর আরেকটি কাঁচা রাস্তা নদীর মতো এঁকেবেঁকে নেমে গেছে লালডাঙ্গী হয়ে গাজনার বিলে। নদী ও মানুষের মন দুটোই আঁকাবাঁকা হবে, এটাই মনে হয় প্রকৃতির এক অমোঘ নিয়ম। রেজেক আলী সদাইপাতি ভর্তি চটের থলেটি শক্ত করে ধরে কুমিরের পিঠের মতো কর্দমাক্ত রাস্তাটিতে ছোট ছেলে-মেয়েদের এক্কাদোক্কা খেলার মতো করে পা টিপে টিপে এগোতে থাকে লালডাঙ্গী বরাবর। আলাদিপুর থেকে লালডাঙ্গীর দূরত্ব মাইল দেড়েক। শুধু নামেই গ্রামের নাম লালডাঙ্গী। বর্ষা মৌসুমে যখন গাজনার বিল উপচে লালডাঙ্গীতেও…
-
তৎকালীন গ্রামের চিত্র
তৎকালীন গ্রামের চিত্র ও শৈশবের পালা-পার্বন তাহমিনা খাতুন তৎকালীন গ্রামের চিত্র আমাদের ছেলেবেলার দ্বারিয়াপুরের সাথে বর্তমানের দ্বারিয়াপুরের এখন আর কোন মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর বা তার আগের দ্বারিয়াপুর ছিল ঘন বন-জঙ্গল, বিশাল বিশাল তেঁতুল গাছ, বিশাল আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, জামরুল ইত্যাদি গাছ-গাছালিতে ভরপুর। ছিল তাল, খেজুর, নারকেল, সুপারি। এক শান্ত গ্রাম। ভোর হওয়ার সাথে সাথেই পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠত চারিদিক। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শোনা যেত শেয়ালের হুক্কাহুয়া রব। বনবিড়াল, মেছো বাঘ (স্থানীয়ভাবে বলা হত বাঘ ডাঁশ) ঘরের আশেপাশে উঁকি-ঝুঁকি দিত। বাড়ির আশেপাশে ঝোপ জঙ্গলে সজারু, বেজী, বুনো খরগোশের (যাকে স্থানীয় ভাষায়…
-
ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম
পাবনার বরেণ্য সন্তান ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ এবং শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলামের প্রত্যক্ষ প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার যে কয়জন ব্যক্তিকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি তাদের মধ্যে তিনি নিঃসন্দেহে অন্যতম একজন। জন্ম: ড. এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ১৯৪১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত আহম্মদপুর ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আলহাজ্জ্ব মির্জা আব্দুর রশীদ। তাঁরা চার ভাই ও তিন বোন। শিক্ষা জীবন:…
-
পাশের বাড়ির আপনজন
পাশের বাড়ির আপনজন তাহমিনা খাতুন আমাদের ছোট পাড়াটিতে আমরা এবং আমাদের কয়েক জন ঘনিষ্ট আত্মীয়ের বসতি ছিল। আমার আপন চাচা আমাদের পাড়া থেকে সামান্য দূরে বাড়ি করে বসবাস করতেন। চাচারও ছিল আব্বার মত গাছ লাগানোর অভ্যাস। খুব গোছালো সংসারী মানুষ ছিলেন তিনি। ওনার হাতে সব সময় একটা কাস্তে বা নিড়ানি দেখা যেত, যা দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতেন বা গাছ লাগাতেন। চাচীমাও খুব সৌখিন মানুষ ছিলেন। বাড়ি-ঘর সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতেন। চাচিমা ছিলেন সদা হাস্যোজ্জল! ফুলের গাছ লাগানো, হাঁস মুরগী,কবুতর পোষা ইত্যাদি ছিল চাচীমার সখ। অতিথি আপ্যায়নেও চাচীমা ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। যে সময়ে মেয়েদের লেখাপড়ার চর্চা করার কোন সুযোগই ছিল…
-
সংসার ও আইনজীবী জীবন
সংসার ও আইনজীবী জীবন তাহমিনা খাতুন স্বাধীনতা সংগ্রামের শুরুতেই আমাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে আমাদেরকে সর্বস্বান্ত করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। পোড়া ভিটায় একখানা ছাপড়া তুলে কোন ক্রমে দিন গুজরান করছিলেন আমাদের পরিবারের সদস্যরা।আমাদের পরিবার ছিল মূলত কৃষিজীবী। পাক বাহিনীর অত্যাচারের ফলে কৃষি কাজে স্থিত হতে পারছিল না পরিবার। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী আমার তৃতীয় ভাই মরহুম খন্দকার আবুল খায়ের। আমি সহ চার ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচ, সংসারের খরচ যোগানো একজনের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এ কারণে আমার বিদ্যোৎসাহী ভাই আমাকে বিয়ে দিতে বাধ্য হলেন। স্বাধীনতার পর পরই আমার বিয়ে হয়ে গেল। আমার সৌভাগ্য, আমার ভাইয়ের মতো আমার স্বামীও বিদ্যোৎসাহী ছিলেন। বিয়ের পর আমি ম্যাট্টিক…
-
ইতিহাস-ঐতিহ্যে দ্বারিয়াপুর
ইতিহাস-ঐতিহ্যে দ্বারিয়াপুর ~ আজিজুল কায়সার দ্বারিয়াপুর গ্রাম পরিচিতি : পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত আহাম্মদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত দ্বারিয়াপুর গ্রাম। পুরো গ্রামটি রয়েছে ঢাকা-পাবনা মহাসড়কের দক্ষিণে গা ঘেঁষে। হযরত শাহ সুলতানের স্মৃতি বিজড়িত পূণ্যভূমি এই গ্রামের প্রাণকেন্দ্র হলো বাস স্ট্যান্ড, চৌরাস্তা মোড়। পাবনা থেকে দ্বারিয়াপুরে ঢুকতেই প্রথমে চোখে পড়বে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী গ্রামীণ এবং রবি কম্পানির সুউচ্চ দুইটি টাওয়ার। একশত গজ সামনে ঈদগাহ ময়দান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দ্বারিয়াপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও বিশাল খেলার মাঠ, ডান পাশে রয়েছে একটি মসজিদ। গ্রামের ইতিহাস ও নামকরণ : উত্তরে আত্রাই নদী, দক্ষিণে গাজনার বিল সহ এই অঞ্চল ছিল এক সময় যমুনা নদীর সাথে…