সন্ধ্যা নামার আগে, মা
সন্ধ্যা নামার আগে
দিক ভোলা সেই পথের বাঁকে উদাস মনে
বসে আছে ছোট্ট খোকা একলা জনে পথটা ভূলে
ইচ্ছে করে নয় তো সে, ভুলেই গেছে পথের দিশা।
আঁকা বাঁক পথের ধারে পানকৌড়ি আর ভরত পাখি
করছে শুধু ডাকাডাকি, দেখছে খোকা চুপটি করে।
মায়ের কাছে যাবে সে সন্ধ্যা হয়ে এলো যে,
একটু পড়ে আসবে ধেয়ে বনবিড়াল আর শিয়ালে
এটা ভেবে কাঁদছে খোকা থেকে থেকে করুণ সুরে!
এমন সময় এলো সেথায় বুড়ো এ- দরবেশ যে,
বললো বাবা কাঁদছো কেন একলা বসে নিরজনে?
ভয় পেয় না আমি আছি তোমার সনে।
ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে খোকা হাতটা দিল বাড়িয়ে,
দাও না আমার পথের দিশা, পেয়ারা দেব ডাঁসা ডাঁসা
দিক ভোলা ঐ পথের বাঁকে আর যাবো ভুলে বাবা;
অন্ধকারের অন্তরালে হারিয়ে গেলে কাঁদবে মা একা বসে।
ফোকলা দাঁতে চাঁদের বুড়ি বলবে হেসে হেসে
আসবে আর না খোকন সোনা কেমন মজা হবে?
জ্ঞান হারাবে মা তখন আমার না পেলে,
যে করেই হোক মায়ের কাছে ফিরতে হবে সন্ধ্যা নামার আগে।
আরও পড়ুন জিন্নাত আরা রোজীর কবিতা-
নীলাম্বরী শাড়ি
চলে যাব বহু দূর
কেন আমায় জন্ম দিলে
মা
মা তুমি যাচ্ছো কেন আমায় ফেলে ছোট্ট মাটির ঘরে?
যেথায় তোমার খোকা-খুকী কেউ রবে না সাথে!
কেমন করে থাকবে মাগো বন্ধ দুয়ার অন্ধ ঘরে?
সেথায় রাতের আঁধার দিনের আলো সবই এক মাগো।
তোমার খোকা ডাকলে মাগো কেমন করে চুপটি করে রবে?
সাঁঝের প্রদীপ কে জ্বালাবে ঘরে, মাগো বল আমারে?
মাগো বুকের মাঝে তুফান ছোটে তোমার অভাবে!
তখন আমি কোথায় গিয়ে খুঁজবো তোমারে?
আমার এখন আকাশ জুড়ে দুঃস্বপ্ন উলোট পালোট করে।
জোয়ার ভাঁটার মতই এখন দিবানিশি চোখের জলে ভাসি।
এখনো আমার দিন যায় মা তোমার নিয়মে, তোমার বিহনে।
অনন্ত দিনের কান্না দিয়ে কেন হারিয়ে গেলে চিরতরে?
আমার চোখে অবিরত বেদনার মেঘ জমে থাকে!
ঐ দেখ মা বিলে ধারে মিটিমিটি জোনাক জ্বলে,
লাউয়ের ডগায় ফুরফরিয়ে প্রজাপতি উড়ে বসে,
চালতা গাছে দোয়েল পাখি মিষ্টি সুরে গান করে,
সেই যে আমার সোনায় মোড়া দিন গুলো
হারিয়ে গেল এক নিমিষে চিরতরে।
এখন আমার একলা থাকার খুব দুপুরে সময় কাটে।
আশিষ করি তবুও তুমি ভাল থেকো ছোট্ট মাটির ঘরে।
আরও পড়ুন কবিতা-
ভালোবাসা
রূপকন্যা
গাজনা বিলের ধান
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
সন্ধ্যা নামার আগে