-
কে এম এস শফিকুল ইসলাম
জন্ম ও পারিবারিক জীবন কে এম এস শফিকুল ইসলাম ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই জুলাই পাবনার বেড়া উপজেলার দয়রামপুর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস পাবনার সুজানগর উপজেলার রানিনগর ইউনিয়নের শারীরভিটা গ্রাম। তাঁর বাবা মোসলেম উদ্দিন খান একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষাজীবন কে এম এস শফিকুল ইসলাম ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে দুলাই উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে মাধ্যমিক এবং ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে রসায়নশাস্ত্রে স্নাতক সম্মানে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে সম্মান এবং ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবন তিনি শিক্ষাজীবনেই, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২রা জুন সুজানগর…
-
জয়িতা শিল্পী
কবি, সাহিত্যিক ও পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও করে যাচ্ছেন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা। লিখছেন গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ। কাজ করছেন মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের নিয়েও। ইতোমধ্যে লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। জন্ম : জয়িতা শিল্পী ১৯৭৭ খিষ্টাব্দের ২৫শে মে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের অন্তর্গত চরদুলাই গ্রামের পুত্রবধূ তিনি। পারিবারিক জীবন : স্বামী এটিএন বাংলার সিনিয়র নিউজ প্রডিউসর এএইচএম কামরুজ্জামান কামরুল। পুত্র ইথান রাইয়ানকে নিয়ে তাদের সংসার জীবন। শিক্ষাজীবন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে পুলিশ সাইন্সে উচ্চতর (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে…
-
তৎকালীন গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থা
তৎকালীন গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থা তাহমিনা খাতুন আমাদের ছোটবেলায় দেখেছি, গ্রামের মানুষের রোগবালাই তেমন একটা ছিল না!। ভেজাল মুক্ত খাবার, কায়িক পরিশ্রম, অনেক বেশি হাঁটা-হাঁটি করার অভ্যাসের কারণে গ্রামের মানুষের মধ্যে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বিস্ময়করভাবে কম ছিল। কোথাও যেতে হলে কোনো যানবাহনের সহজ লভ্যতা বর্তমান সময়ের মত ছিল না। স্বভাবতই লোকজনকে মাইলের পর মাইল হাঁটতে হতো। সাধারণত বর্ষাকালে বা শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত কারণে জ্বরে ভুগতো মানুষ। আমরা ভাই-বোনেরা জ্বরে আক্রান্ত হলে মাথায় অনেকক্ষণ ধরে পানি ঢালতেন মা। কখনও কখনও দ্রুত জ্বর কমানোর জন্য পুকুর থেকে ভেজা কাদা তুলে এনে কাপড়ে জড়িয়ে পেটের উপর দিয়ে রাখতেন! বড় জোর আব্বা আমাদের গ্রামের ডা.…
-
মধুর স্মৃতি
মধুর স্মৃতি তাহমিনা খাতুন অল্প বয়সের স্মৃতি হয়তো মানুষ কখনো ভোলে না। তেমনি একটি স্মৃতি এখনও মনে পড়ে। আমার বড় ভাবী ও ওনার মায়ের টাইফয়েড বা ম্যালেরিয়া জাতীয় কোন জ্বর হয়েছিল। আমার ভাবী ছিলেন বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। ভাবীর বাবার একার পক্ষে দুই জন অসুস্থ মানুষকে সুশ্রুষা করা কঠিন হয়ে উঠেছিল। খবর পেয়ে মা ওনাদের সেবা করার জন্য আমাকে আর ছোট দুই ভাই-বোন বাসার আর তুষারকে নিয়ে ভাবীর বাবার বাড়ি সৈয়দপুর গেলেন। কয়েকদিন পর আব্বা আমাকে আনতে গেলেন। কয়দিনেই ভাবীর চাচাত বোনদের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। আমি ফিরে আসার আগে আমার বন্ধুটি আমাকে ভালবেসে তার কিছু পুতুলের কাপড় আমাকে…
-
কৃতি ব্যক্তিবর্গ, গবেষক, গোপালপুর (ভায়না), পড়াশোনা, বই পর্যালোচনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বিজ্ঞানী, ভায়না, লেখক পরিচিতি, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, সাহিত্য
অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার (শেষ পর্ব)
অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার (শেষ পর্ব) মোহাম্মদ আব্দুল মতিন প্রকাশনা (৩য় অংশ): ১০। বিশ্ব ও সৌরজগৎ (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮৬ খ্রি.) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য ড. আব্দুল মতিন পাটোয়ারী লিখেছেন (১৬ জুন, ১৯৮৬), “ড. রশীদ চেয়ারে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন প্রফেসর আব্দুল জব্বার এই মূল্যবান গ্রন্থখানি রচনা করে ইপ্সিত উদ্দেশ্য সাধনে যে বহুলাংশে সফল হয়েছেন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এই গ্রন্থে বিধৃত হয়েছে পৃথিবীর তথা মহাবিশ্বের জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে নানা ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে কি ভাবে বর্তমান রূপ পরিগ্রহ করেছে। সৌরজগতের সৃষ্টি রহস্য মানব জাতির কাছে এখনও বিরাট কৌতূহলের বিষয়। গণিত ও জোতির্বিজ্ঞানের গবেষকদের কাছে এই বই যেমন সহায়ক হবে তেমনি…
-
তৃষ্ণার পৃথিবী ছুঁয়ে
তৃষ্ণার পৃথিবী ছুঁয়ে আদ্যনাথ ঘোষের কবিতার সাহিত্য রস লতিফ জোয়ার্দার বয়স একটা সংখ্যা মাত্র। তারপরও পঞ্চাশ বছর বয়স প্রতিটি মানুষের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই বয়স যদি হয় একজন কবির বয়স, তবে তা সেই কবির কাছে বয়সটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ। তার সংসারের কাছে, তাঁর সমাজের কাছে, তাঁর বন্ধুদের কাছে, পাঠকের কাছে ও আশেপাশের মানুষগুলোর কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমি যে কবির কথা বলছি। সেই কবি বাংলা সাহিত্যের কবি আদ্যনাথ ঘোষ। এক সময় এই কবির সাথে পরিচয় না থাকলেও কবির কবিতার সাথে পরিচয়ের সুযোগ হয়েছিলো আমার। প্রথম কবিতা পড়ে কেমন যেন ঘোরের মধ্যে ছিলাম দীর্ঘসময়। এমন সময় সাহিত্য সম্পাদক অচিন্ত্য চয়ন…
-
ছেলেবেলার ষড়ঋতু
ছেলেবেলার ষড়ঋতু তাহমিনা খাতুন চৈত্রের খর তাপের দাবদাহের পর বৈশাখ আসতো ভয়ঙ্করী রূপে। প্রায়ই কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা উপরে, ঘর- বাড়ি ভেঙ্গে মানুষের দুর্দশার সীমা থাকত না। আর আমাদের চলতো কাঁচা আম কুড়ানোর ধুম। ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙ্গে মাথায় পড়বে কিনা-তাতে কোন ভ্রুক্ষেপও করতাম না। আমি তখন খুবই ছোট। একদিন দুপুরের পর পরই আকাশের ঈষান কোন ঘন কাল মেঘে ছেয়ে গেল। আব্বা, মা সহ বেশীর ভাগ ভাই-বোন বাড়ির বড় চৌচালা ঘরটায় আশ্রয় নিয়েছিলাম। কেবল মাত্র মেজ ভাই অপেক্ষাকৃত ছোট ঘরটায় অবস্থান করছিলেন। প্রচন্ড বেগে ঝড় শুরু হল। আব্বা চিৎকার করে মেজভাইকে বড় ঘরটিতে চলে আসতে বললেন। মেজভাই দৌড়ে বড় ঘরটিতে…
-
খ ম আব্দুল আউয়াল
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সাবেক পরিচালক, কবি ও গবেষক খ ম আব্দুল আউয়াল (মন্টু)। জন্ম: কবি ও গবেষক খ ম আব্দুল আউয়াল ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত সাগরকান্দী ইউনিয়নের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: পিতা অধ্যাপক মুহাম্মদ খোয়াজউদ্দিন ছিলেন ত্রিশের দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র, সর্বোচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত একজন ইসলামি শিক্ষাবিদ ও সরকারি কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের (সাবেক ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ) অধ্যক্ষ (জন্ম: ০১-১১-১৯১১ খ্রি., মৃত্যু: ৩০-০৫-১৯৮৫ খ্রি.) এবং মাতা হাজেরা খাতুন (১৯১৮-২০০০ খ্রি.) ছিলেন গৃহিণী ও রত্নগর্ভা মা। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থতম। চার ভাই অধ্যাপক…
-
আদ্যনাথ ঘোষের কবিতায় প্রান্তিক প্রতিধ্বনি
আদ্যনাথ ঘোষের কবিতায় প্রান্তিক প্রতিধ্বনি জহুরুল ইসলাম কবিদের কোনো সীমারেখা নেই। কবি সব দেশের, সব মানুষের, সব জাতির। কবি মানুষের কথা বলে, মানবতার কথা বলে। কবি তার গোপন আয়নায় দেখতে পান- সমাজের অসঙ্গতি, পতন, ঔদ্ধত্যের বিকৃত রূপ, অনাচার। তিনি কারও সঙ্গে আপস করেন না, করেন না। কোনো গোপন চক্রান্ত। তিনি গোপনে গোপনে ক্রমাগত মোচড় খেতে থাকেন। একদিন তিনি সব গোপন সত্য আয়নায় প্রতিফলিত করেন। তিনি প্রকাশ করেন- কারণ না করে তিনি থাকতে পারেন না। কবি আদ্যনাথ ঘোষও এর ব্যতিক্রম নন। তার ব্যথিত হৃদয় বারবার কেঁপে ওঠে স্বদেশের ভাবনায়- তাতার ঘোড়ার পিঠে ছুটেছে নাগরিক স্থাপত্যবিদ্যার যোদ্ধাকুল পতন হচ্ছে গাঁয়ের পর…
-
তৎকালীন গ্রামের চিত্র
তৎকালীন গ্রামের চিত্র ও শৈশবের পালা-পার্বন তাহমিনা খাতুন তৎকালীন গ্রামের চিত্র আমাদের ছেলেবেলার দ্বারিয়াপুরের সাথে বর্তমানের দ্বারিয়াপুরের এখন আর কোন মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। আজ থেকে পঞ্চাশ বছর বা তার আগের দ্বারিয়াপুর ছিল ঘন বন-জঙ্গল, বিশাল বিশাল তেঁতুল গাছ, বিশাল আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, জামরুল ইত্যাদি গাছ-গাছালিতে ভরপুর। ছিল তাল, খেজুর, নারকেল, সুপারি। এক শান্ত গ্রাম। ভোর হওয়ার সাথে সাথেই পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠত চারিদিক। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই শোনা যেত শেয়ালের হুক্কাহুয়া রব। বনবিড়াল, মেছো বাঘ (স্থানীয়ভাবে বলা হত বাঘ ডাঁশ) ঘরের আশেপাশে উঁকি-ঝুঁকি দিত। বাড়ির আশেপাশে ঝোপ জঙ্গলে সজারু, বেজী, বুনো খরগোশের (যাকে স্থানীয় ভাষায়…