-
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (শেষ পর্ব)
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (শেষ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল এত সময় ধরে ফাহির কাহিনি শুনে যাচ্ছিলেন। এবার মুখ খুললেন। – আচ্ছা, কী কারণে বিচ্ছেদ হলেন তা বললেন না? – যদি অনুমতি এবং সময় দেন তাহলে বলতে কোনো দ্বিধা করব না। – শুনব। বলুন। আজ অন্তত একজন মানুষ পেয়েছে তাকে তো বলা যাবে। যেসব কারণে সুজিতের সাথে ঘর করা হয়নি তার মধ্যে ছিল মাত্র উনিশ বছর বয়সে দৈহিক মিলন এবং সন্তান জন্ম না দেওয়া। এটাই তো জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না। কিন্তু আমি কখনো চিন্তা করে দেখেনি যে আমি কোন পরিবাবে, কোন পরিবেশ জন্ম নিয়েছি। ভাবনাটা ছিল বিপরীত মেরুর। –…
-
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (২য় পর্ব)
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (২য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল সুজিত রায়হান আশ্চর্য হয়ে শুনে যাচ্ছে সেই উনিশ বছর বয়সি চঞ্চল মেধাবী তরুণীকে। তার ইচ্ছের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ডির্ভোস দিয়েছিল। আজ তার এই পরিণতি কেন। সে যদি নিজে না বলে তবে বলার অনুরোধ করবে না। কারণ এটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। হয়তো ফাহিমিদা ফাহি মনে করবে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছে। তাকে অপেক্ষা করতে হলো না। ফাহি একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বলল, – যদি অনুমতি দেন, বলতে চাই। আপনাকে বলে শেষ বেলায় যদি কিছুটা শান্তি পাই। যদিও আপনার সঙ্গে শুধুই বিয়ে হয়েছিল কিন্তু কোনো দৈহিক মিলন হয়নি। আমাদের সমাজে বিয়ে স্বামী-স্ত্রীর…
-
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (১ম পর্ব)
শেষ বিকেলের ঝরা ফুল (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল এই মাত্র ফাল্গুনের শেষ বিকেলে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। রাজধানী শহর ঢাকার বাইরে গাজীপুরে অবস্থিত একটা দামি রিসোর্টে আয়োজিত একটা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসেছেন সুজিত রায়হান। সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক। বলতে গেলে পঁচিশ বছর চাকুরি মেয়াদ শেষ হতেই স্বইচ্ছায় অবসরে গিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন একটা খ্যাতমানা আন্তর্জাতিক এনজিওতে। একটু নিরিবিলি এবং একাকি থাকতে পছন্দ করেন। জীবনকে একটা নিয়মে বেঁধে নিয়েছেন। শখ বইপড়া এবং ভ্রমণ। নিজ জন্মভূমিতে কোথায় কী আছে তা দেখে বেড়ানো আর বইপড়া। নতুন লেখকদের বই পড়তে বেশি আগ্রহী। একটু আগে অতিথিদের সাথে খাওয়া শেষ করেছেন। খাওয়া…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (শেষ পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (শেষ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল বাড়িওয়ালি খালাম্মা কোনো কথা না বলে শুধু চোখের পানি ফেলে, ছেলে রাজনকে নিয়ে রুম হতে বের হয়ে আসে। জামী কিছু সময় চুপচাপ থেকে খাবার খেতে বসে। তার মনে আজ খুব আনন্দ। একটা পরিবারকে ধ্বংসের কিনারা হতে রক্ষা করতে পেরেছে। যাকে সাহায্য করছে আজ পর্যন্ত তার দেখা মেলেনি। সে কি ভাবছে। আসলে কি মেয়েটির প্রতি করুণা না-কি এই অসহায় পরিবারকে ধ্বংসের হাত রক্ষার মন-মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। হয়ত সময় একদিন বলে দিবে। তবে না দেখে তো কারও প্রেমে পড়া যায় না। এমন কি তার কোনো প্রশংসা শুনেনি। এখন পর্যন্ত তাকে নিয়ে…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৫ম পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৫ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল জামী এখন চাকুরিতে যোগদানের বিষয় নিয়ে ভাবছে না। হাতে বেশ সময় আছে। একবার যোগদান করলে সময় দিতে পারবে না। কিন্তু যার জন্য এত ভাবনা সে কি আদৌ নিয়োগপত্র পেয়েছে। চুপিসারে সব কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু যদি নিয়োগপত্র পেয়ে থাকে তার মতো বেশ কিছু ডকুমেন্টস তেরি করতে হবে। যেমন পুলিশ তদন্ত সংক্রান্ত; তবে অন্যান্য কাগজ হয়তো অফিস থেকে সাহায্য পেয়ে যাবে। তিন দিন অতিবাহিত হতে চলেছে। তিন তলায় আগের মতো ভূতুরে বাড়ির মতোই আছে। রাজন নিয়মিত জামীর কাছে পড়ে যাচ্ছে তবে প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া বাড়তি কোনো কথা বলে না। দুপুরে খাবার…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৪র্থ পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৪র্থ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল রাজনের সাথে জামীর বেশ জমে উঠেছে। রাজন খোলাখুলি মনে কথা বলে। তবে নিজেদের দুর্ঘটনার কথা মুখ ফুটে এখনো জামীকে বলেনি। জামী অপেক্ষায় আছে একদিন বিস্তারিত ঘটনা সে জানতে পারবে। রাজনের এইচএসসি পরীক্ষা সামনে আবার জামীর যে কোনো সময় লিখিত পরীক্ষার কার্ড পেয়ে যেতে পারে। ছোটো চাচির বড়ো ভাইয়ের ছেলে মিশু। ছোটো চাচুর বিয়ের সময় দেখেছিল। চেহারা মনে নেই। এখন বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের অফিসার। ছোটো চাচির লেখা একটা চিঠি মিশু ভাইকে দিতে হবে। অনেকদিন হলো যাওয়া হয়নি। অফিসের ঠিকানা নিয়েছে। ডিএমপির হেড অফিসে বসেন। মিষ্টি ভাইয়ার কাছ হতে ঠিকানা নিয়েছে। মিষ্টি…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৩য় পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (৩য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল সকালের নাস্তা প্রতিদিন রাজন দিয়ে যায়। টেবিলের ওপর খাবারটা রেখে মৌমাছির মতো ভোঁ করে বের হয়ে যায়। মুখে তো কলুপ আঁটাই আছে। আজ তার ব্যতিক্রম হলো না। জামী একটু সময় নিতে চায়। আগে ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞাপনটা হাতে পেতে হবে। নাস্তা শেষ করে বের হয়ে যায় নিত্যদিনের প্রাইভেট পড়ানোর জন্য। আজ ফেরার পথে মিষ্টি ভাইয়ের অফিস হয়ে আসবে। ইদানীং রুমে তালা দিতে হয় না। চুরি হওয়ার মতো কোনো দামী জিনিসপত্র নেই। প্রায় দেড়টার দিকে মিষ্টি ভাইয়ের অফিসে ঢোকে। মিষ্টি ভাই তার স্বভাব মতো হাসি দিয়ে বলল, — তা কি খবর জনাব মোহাম্মদ…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (২য় পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (২য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল শুক্রবার। আজ ছুটির দিন। প্রয়োজনীয় কাজ সেরে বসে চাকরির গাইড পড়ছে জামি। এমন সময় গৃহকর্তী তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে হাজির। প্রমোদ গুনলো জামী; কোনো অভিযোগ নিয়ে এলেন না-কি। সরাসরি প্রশ্ন, — কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি? জামী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বলল, — না, তেমন কিছু না। — না বলতে তো হবে না। আমার ধারণা হচ্ছে। আপনার অসুবিধার কথা ভেবেই বলছি। এতে আপনার সুবিধা বেশি আমার একটু বাড়তি কাজ। — বেশ, বলুন। আপনার প্রস্তাব কি ভেবে দেখা যেতে পারে। — আমাদের সাথে পেইনগেস্ট হিসেবে খেতে পারেন। সকালের নাস্তা এবং দু’বেলা ভাত। আমরা…
-
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (১ম পর্ব)
চোখের আলোয় দেখেছিলেম (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল শ্রাবণের শেষ বিকেল। রোদের তীব্রতা তখনো কমেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক হতে বের হয়ে সোজা হাঁটা শুরু করে দিয়েছে মোহাম্মদ জামী। উদ্দেশ্য ভালো; ছোটো এক রুমের বাসা। কিন্তু সে যে ব্যাচেলার! তাকে কে ভাড়া দিবে। মিষ্টি ভাইয়ের আদেশ, মেসে থেকে চাকুরির স্বপ্ন না দেখাই ভালো। জামীর ছোটো চাচির বড়ো বোনের ছেলে মিষ্টি। ভালো নাম জারিফ জাহিদ। মিষ্টি চেহারা এবং মুখখানা হাসি ভরা তাই সবাই মিষ্টি বলে ডাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারি পরিচালক পদে চাকরিরত। অমায়িক ব্যবহার। কত বছর আগের কথা। সবেমাত্র ছোটো চাচার বিয়ে হয়েছে। ছোটো চাচির সাথে তার বড়ো বোনের বড়ো ছেলে…
-
নতুন সূর্যের অপেক্ষায় (শেষ পর্ব)
নতুন সূর্যের অপেক্ষায় (শেষ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল পর পর দু’বার মোবাইলে রিং বেজে চলেছে। কোথাও আবার কোন অঘটন ঘটলো কিনা। বাজে সময় যাচ্ছে। মোবাইল হাতে নিতেই চোখে পড়ে তার বাবার নম্বর। মনের ভেতরে কেমন যেন একটা ভয়ের ঢেউ খেলে গেল। তার মা ব্লাড প্রেশার রোগী। – বাবা, সব ঠিক আছে তো? – আমরা সবাই ভালো আছি খোকা। একটা বিপদে পড়ে এত সকালে তোকে বিরক্ত করছি। – বাবা, এমন করে বলছো কেন? কি হয়েছে খুলে বলো। – আনোয়ার কে তো চিনিস? – বারে চিনবো না, তোমার শিক্ষকতা জীবনের সেরা একজন ছাত্র। তাকে নিয়ে গর্ব করো। বল কি হয়েছে?…