যৌবন-এখন
কবিতা,  পূর্ণিমা হক,  সাহিত্য

যৌবন এখন, দেখে নিও তুমি

যৌবন এখন

পূর্ণিমা হক

বড়ো হয়ে গেছি আমি
শৈশবের স্মৃতিগুলো কেঁদে ফিরছে
আহত যৌবনকে দেখে।
জীবনকে উপহার দিয়েছে যৌবন
বিষময় একটা নীলাভ পার্সে,
জীবনের সব অস্থিরতাগুলো
এখন আমি পার্সে ভরেছি,
সেটা আমার চলার সঙ্গী।

বড়ো হয়ে গেছি আমি
এখন যৌবন আমার কাছে জ্বলন্ত সিগারেট
জীবনের ছাই, নোংরা এ্যাস্ট্রে।
শৈশবের স্মৃতিগুলো তাই কেঁদে ফিরছে
যৌবন এখন আমার তারুণ্যের উচ্ছৃঙ্খলতা
মনের নানান জটিলতা
বিষিয়ে ওঠা নিরস প্রাণ।

বড়ো হয়ে গেছি আমি-
যৌবন এখন আমার কাছে
ভালোলাগা-ভালোবাসার ক্রমাগত দ্বন্দ্ব
বিষাদের জীবন্তিকা
খাম খেয়ালির বর্ধিত বছর
পাওয়া না পাওয়ার বেদনার সাগরে
উলঙ্গ স্মৃতিগুলোর অবাধ সাঁতার।
আমার শৈশবের সবুজ মেঠোপথে
যৌবন ফেলেছে বিষাক্ত কাঁটা,
আমার চলা যৌবনের আঁকাবাঁকা পথে
শ্রান্তির অবসরে এক পেয়ালা
ধুতরার বিষ অথবা
এলোমেলো অসহ্য স্মৃতিচারণ।
বড়ো হয়ে গেছি আমি
ভালো না থাকার অবিরাম চেষ্টায়
যৌবন মত্ত এখন।
শৈশবের স্মৃতিগুলো তাই কেঁদে ফিরছে
প্রাপ্তির কামনায় আরও বেশি,
জীবনের ক্যাম্পাসে
বেদনার নীল চাষ।

আরও পড়ুন কবি পূর্ণিমা হকের কবিতা-
অষ্টাদশী মন
সম্পর্ক
ভেতরবাড়ির মাঠ

 

দেখে নিও তুমি

যদি আমাকে দেখতে মন চায়
দেখে নিও আকাশের নীলিমায়
একঝাঁক বলাকা উড়ছে-
সেখানেই রবো আমি।
দেখে নিও বিলের মাঝে ফোটা লাল শাপলায়
আর পথে-প্রান্তরে ছুঁয়ে যাওয়া
সবুজ শস্যের মেলায়।

লুকিয়ে রবো আমি প্রতিটি সবুজের গোড়ায়
খুঁজে নিও তুমি তা সরায়ে সরায়ে।
কখনো বসন্তের দখিনা মলয়ে
উড়ে যাওয়া যত ধুলোবালি,
কখনো বা স্নিগ্ধ চাঁদনী রাতে
আকাশে তারার সারি
দেখবে তুমি সেখানেই রয়েছি আমি–
অথবা দেখে নিও আমায় আকাশের এক কোণে
জমে আছি মেঘ হয়ে
নামব বৃষ্টির কণা হয়ে জমিনে–
তখন দেখে নিও তুমি দুচোখ ভরে।

আরও পড়ুন কবিতা-   
তৃষ্ণাদুপুর
প্রশ্ন নারী দিবসে
সুদীর্ঘ নয় মাস

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও  ইউটিউব চ্যানেলে

Facebook Comments Box

পূর্ণিমা হক, একজন জনপ্রিয় কবি হিসেবে কবিতা প্রেমিদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: কষ্ট নৈঃশব্দ্য, নীলান্তে নীল, কালের বেদিতে লাল কৃষ্ণচূড়া। তিনি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের পুত্রবধু।

error: Content is protected !!