প্রেমের পদ্য-০৪
প্রেমের পদ্য-০৪
রেজাউল করিম শেখ
আঠারো
আর আমি বেদনাকে ভালোবাসি;
বেদনা আমার কাব্য
বেদনা আমার গান
বেদনা আমার বন্ধু
বেদনা আমার প্রেম
বেদনা আমার কান্না
বেদনা আমার হাসি।
(এমনকি) তুমিও আমার বেদনা হবে।
‘তাই আশৈশব শুধু বেদনাকেই ভালোবেসেছি।’
ঊনিশ
[সাঁথিয়ায় দীর্ঘ ২৩ দিন আটক থেকে ধর্ষিত এক হিন্দু সতীর্থের প্রতি]
শবদেহের সৎকারে এসে ভাবছো নেহায়েৎ ছেলে মানুষী,
দু’দশটা কুকুর কামড়ালো— দু’দশ দিন ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকারে,
কিছু জল পান করলো—কিছু ফেলে গেলো,
অমনি আকাশের সব নক্ষত্র চ’লে গেল কৃষ্ণ গর্ভে?
কৃষ্ণের বাঁশি ভেঙে গেল, রাধিকা হারালো পথ বৃন্দাবনের?
তোমরা শুধু বিদায় নিবে—আর বিদায় নিবে!
চলো না, একবার কোমর সোজা করে দাঁড়াই—
একবার হাত তুলি—একবার বলি—
বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক
সমতার বুকে আশ্রয় পাক সমস্ত নারী-পুরুষ।
কুড়ি
নি:সীম শূন্য হৃদয়
আর কত ফুল—পাখি—
জোছনা, নদী—নারী—নক্ষত্র ব’লে
বেদনাদীর্ণ সমুদ্রকে—
আঁকড়ে ধরবে—
গভীর মমতায়?
একুশ
অতোটা নিষ্ঠুর নই আমি
যতোটা ভাবো।
অতোটা উদার নই আমি
যতোটা কামনা করো।
তোমার ভাবনা—কামনার মাঝামাঝি
আমি নিশ্চুপ বাস করি।
বাইশ
অথচ জানি আমি—
তোমাদের ঘরে সব সোনার ছেলে
সোনার ডিমে তা দেয়
কুঁড়ায় সোনার মোহর।
তোমাদের ঘরে সব মদ্যপের উল্লাস—
উল্লসিত নৃত্য ময়ূরীর।
আর আমি কাঁদি, আমার আঙুল
নিমগ্ন ঝুঁকে থাকে—
তোমাদের সোনার ছেলেদের হল্লায়—
সম্ভ্রম হারানো মায়ের—মেয়ের,
পৌরুষ হারানো পিতার
বেদনার্ত কন্ঠস্বরকে সাজাতে শব্দে।
তেইশ
কোথায় বসে আছো?
ঘুমাও কোথায়?
নগ্ন সময়ের কোলে মাথা রেখে খোঁজো
আ”ছাদিত—আহ্লাদিত প্রেমের আকাশ !
বন্ধ্যা ভূমিতে পূর্ব পুরুষের লাঙল খুলে দাও
অনুর্বর জমিতে বোনো ফসলের বীজ!
ও … কবিতা অন্তঃপ্রাণ মানুষ—
ও … প্রেম দূত—ভালোবাসার অবতার!
ঘুরে দাঁড়াও ফিরে তাকাও—
পেছনের—সামনের অথবা
ডানের—বামের ফসলী মাঠে
বীজেরা শস্য হবে
পতিত হবে সন্তান সম্ভবা!
বন্ধ্যা সময়—ভূমি ছেড়ে উঠে দাঁড়াও—
ও … কবিতা অন্তঃপ্রাণ মানুষ !
ও … প্রেমদূত—ভালোবাসার অবতার!!
চব্বিশ
আর তোমরা হাত গুজে রাখো প্রেমিকার হাতে
ঠোঁট গুঁজে রাখো প্রেমিকার ঠোঁটে!
সামনে প্রবাহমান নদী ফুরায় জীবন
দিনমান হারিয়ে যায়—
সবুজ অরণ্যের পেছনে
জ্বলন্ত সিগরেট পুড়িয়ে যায় যৌবন
অনিঃশেষ কথারা ফেলে যায় দীর্ঘশ্বাস…
আর তোমরা হাত গুঁজে রাখো প্রেমিকার হাতে
ঠোঁট গুজে রাখো প্রেমিকার ঠোঁটে !
পঁচিশ
এই দেখো না—এইখানে বুকের ভেতরে—
কী এক গভীর ক্ষত! সারাক্ষণ জ্বালা করে!
মধ্য নিশীথ-রজনী—কাক ডাকা ভোর
ক্লান্তিহীন দুপুর—শ্রান্ত বিকেল এ কেমন ঘোর!
এই দেখো না—এইখানে বুকের ভেতরে—
কী এক গভীর ক্ষত! সারাক্ষণ জ্বালা করে!
আরও পড়ুন
প্রেমের পদ্য-০১
প্রেমের পদ্য-০২
প্রেমের পদ্য-০৩
প্রেমের পদ্য-০৫
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
প্রেমের পদ্য-০৪