নতুন-প্রজন্ম-এবং-বাংলাদেশ
কবিতা,  খলিফা আশরাফ,  সাহিত্য

নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশ

নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশ

খলিফা আশরাফ

 

নতুন প্রজন্ম এবং অজেয় বাংলাদেশ
বিপন্ন বিস্ময়ে প্রত্যাশায় চেয়ে থাকি তবু
কষ্ট দহন বুকে অপলক চোখে সতর্ক প্রহরা
আজও দেখি একাত্তুরের মোহন স্বত্ত্বায়
উদ্ভাসিত সুবর্ণ জমিনে
নারকীয় বীজ বুনে যায় মদ্যপ পামর
বিষাক্ত নিঃশ্বাস ফেলে অবিরাম ঘাড়ে বৃশ্চিক সব
কদর্য হাত ফেলে মানচিত্রের পবিত্র সীমায়।
আমরা বিস্মৃত হই নিকট অতীত
সহসা ভুলে যাই ঘাতকের নাম
লোলজিহ্বা বিস্তরিত জীঘাংসার কদাকার মুখ
সেই সব কুশীলব নরকের কীট, স্বাধীনতার ঘোর শত্রু যারা
কি নিপুণ খেলেছিলো ষাড়যান্ত্রিক কূট পাশা খেলা,
সহস্র বছরের আরাধ্য অর্জন
লক্ষ প্রাণের রক্তধোয়া চেতনা বৈভব
গৌরবের জয়-স্তম্ভ সব
ছিড়েখুঁড়ে নিঃশেষে চেয়েছিলো খেতে সর্বভুক উদরে তাদের,
নাট্যমঞ্চে ভেক নট-নটি তাণ্ডব নেচেছিল খুব কিছুকাল
ঐন্দ্রজালিক ছড়ায়ে কুয়াশা সুক্ষ্ম কূটচালে
প্রজন্মের মগজে সচেষ্ট প্রয়াস ছিলো গেঁথে দিতে জারজ-প্রতীতি
প্রত্যাশার অনিন্দ কোঠরে লোভাতুর নষ্ট বিলাস,
দু’পায়ে মাড়িয়ে সেই সব অগণন কুটিল প্রয়াস
ছিন্নভিন্ন করে কপট কুটজাল
সগৌরবে বাংলাদেশ জেগেছে আবার,
আমাদের অভয় আশ্রয় প্রজন্ম নতুন
সাগ্রহে নিয়েছে তুলে বাংলার অকৃত্রিম বিশ্বস্ত ইতিহাস
তাহাদের মননে মেধায়,
চিনে গেছে নালায়েক মীর জাফর এবং তাহাদের বংশ পরাম্পরা
সেই সব পরাজিত নরকের কীট
যাহারা অন্তরালে অপেক্ষায় জেগে আছে,
সঙ্গোপনে নিরন্তর তাহাদের পৈশাচিক অশুভ শরীর
বারবার ছায়া ফেলে প্রোজ্জ্বল পবিত্র বাংলায়
সুকৌশলে নারকীয় ষড়যন্ত্র করে ভিতরে বাহিরে
কণ্টক বিছায়ে রাখে মোহন মায়ায়।
শাণিত কৃপাণ হাতে কুশলী ঘাতক
ওঁত পেতে বসে থাকে স্বজনের বেশে
আমাদের প্রিয় জননী জন্মভূমি এই বাংলাদেশে
তাহাদের মুখোশ এখন সবিশেষ উন্মোচিত
আমাদের প্রজন্মের কাছে,
জানি আমি, সুনিশ্চয় জানি
ভৈরবীর অমিয় সঙ্গীতে আসিতেছে আগামী বিজয় বারতা,
সন্তর্পণে গভীর প্রত্যয়ে ভেসে আসে ‘সোনার বাংলার দীপ্ত পদধ্বনি
একাত্তুরের স্বপ্নময় মোহন ঐক্যতান,
এবং তাই সুগভীর প্রবল আস্থায়
নির্নিমেষ চেয়ে থাকি আমি আমাদের প্রদীপ্ত প্রজন্মের দিকে।

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

খলিফা আশরাফ জীবন ঘনিষ্ঠ একজন কবি ও গল্পকার। তাঁর লেখায় মূর্ত হয়ে ওঠে সমসাময়িক কাল, মূল্যবোধের অবক্ষয়, নৈতিকতার বিপর্যয় এবং মানুষের অভাবিত সার্থলোলুপতার ক্লিষ্ট চিত্র। তিনি বৈরী সময়কে গভীর ব্যঞ্জনায় অনুপম রূপায়ন করেন তাঁর লেখায়, সামাজিক অন্যায় অসঙ্গতি এবং নির্মমতার কারুণ্য ফুটিয়ে তোলেন অন্তর্গত তীক্ষ্ম অনুসন্ধিৎসায়। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: বিপরীত করতলে, কালানলে অহর্নিশ, অস্তিত্বে লোবানের ঘ্রাণ; গল্পগ্রন্থ: বিল্লা রাজাকার ও সেই ছেলেটি, অগ্নিঝড়া একাত্তুর, একাত্তরের মোমেনা, পাথরে শৈবাল খেলে; ছড়াগ্ৰন্থ: ভুতুড়ে হাওয়া, কাটুশ-কুটুশ। তিনি  ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। 

error: Content is protected !!