-
শূন্যতা ।। ছোটোগল্প ।। শফিক নহোর
শূন্যতা শফিক নহোর সীমান্তের মনে আজও গেঁথে আছে সেই প্রথম দেখা—এক অস্থির মেঘবৃষ্টির দুপুরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার দিনে। সুতি, এক দৃষ্টিতে আকর্ষণ করবার মতো মেয়ে, তার চোখে ছিল উদ্বেগের ছাপ। নতুন ক্যাম্পাস, চারপাশের বিশৃঙ্খলা—সব মিলিয়ে একটু বিভ্রান্তই লাগছিল তাকে। ঠিক তখনই সীমান্ত পাশে গিয়ে দাঁড়াল। “তুমি নতুন?” সুতি অবাক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাল। মাথা নাড়িয়ে বলল, “হ্যাঁ, হলে ভর্তি হব, কিন্তু কীভাবে কী করতে হবে বুঝতে পারছি না।” সীমান্ত হেসে বলল, “চলো, আমি দেখিয়ে দিচ্ছি।” সেদিন থেকেই বন্ধুত্বের শুরু। সীমান্ত আর সুতি দিনে দিনে একে অপরের ছায়া হয়ে উঠল। সীমান্ত পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটোখাটো কাজ করত, আর সেখান থেকেই কিছু টাকা…
-
কাছে দূরে ।। ছোটোগল্প ।। শফিক নহোর
কাছে দূরে শফিক নহোর নীলার সঙ্গে আমার পরিচয় প্রায় তিন মাস। ওর শিশুসুলভ আচরণ আমাকে খুব কাছে টানে কারণে-অকারণে। ও আমাকে ফোন দেয়। আমিও মাঝেমধ্যে ওকে ফোন করি। আমার আর নীলার মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে অল্প ক’দিনে। আমি অনেক বার বলেছি, তোমার ফেসবুক আইডি আমাকে দাও। ফেসবুকে আমরা কথা বলি। নীলা আমাকে বলেছে, তার ফেসবুক আইডি নেই। আমি একটা ফেসবুক আইডি তৈরি করে দিতে চেয়েছি; সে আমাকে বলল, ভালো একটা ফোন কিনে নেই তারপর দিও। হঠাৎ করে নীলার ফোন নম্বর বন্ধ। আমি আর নীলার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমি রাজবাড়ি হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট পার হয়ে ঢাকা যাচ্ছি; খুব…
-
শেষ অপেক্ষা
শেষ অপেক্ষা আলতাব হোসেন রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। নিস্তব্ধতা যেন সারা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে। বিছানায় শুয়ে থাকা তাহিরার চোখে ঘুম নেই। মনের ভেতর এক অজানা অস্থিরতা তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি শ্বাসে, প্রতিটি মুহূর্তে সে অনুভব করছে যেন কিছু একটা অপূর্ণ রয়ে গেছে, কিছু একটা বলার বাকি আছে। ঘরের আলো নিভিয়ে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায় সে। বাইরে আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন, কোথাও কোথাও চাঁদের ক্ষীণ আলো দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্যের মতোই তার মনের ভেতরেও যেন কিছুটা আলো, কিছুটা অন্ধকার মিশে আছে—অন্ধকারে ঢেকে থাকা, তবু কোথাও এক ফালি আলোর আশা। জীবনের শেষ সময়ে এসে এসব ভাবা উচিত নয়, কিন্তু স্মৃতিরা তাকে…