-
রোদেলা দুপুর কাঁদে (শেষ পর্ব)
রোদেলা দুপুর কাঁদে (শেষ পর্ব) খলিফা আশরাফ অনিকের অসুস্থতার মধ্যেই মাস্টার্সের রেজাল্ট হয়ে গেলো। রেকর্ড নম্বর পেয়ে অনিমা ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। কিছুদিনের মধ্যেই ভার্সিটির ডাক পেলো শিক্ষকতার জন্য। যোগদান করলো সে। কিন্তু এই অর্জনে তাঁর কোন উচ্ছ্বাস নেই, বরং সারাক্ষণ অন্তর্দহনে পুড়ছিলো অনিমা। তার সঙ্গে আর এক সহপাঠী, যে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছে, অনিক থাকলে সেই-ই আসতো সেখানে। প্রতি মুহূর্তে অনিকের শূন্যতা কুরে কুরে খায় তাকে। বাবা বারবার বিয়ের কথা বললেও উচ্চতর ডিগ্রীর অজুহাতে এড়িয়ে যায় সে। সে ভালো করেই জানে, তাঁর হৃদয়ে অনিকের জন্য যে জায়গা, অন্য কাউকে দিয়েই তা পূর্ণ হবে না। হয়তো আজীবন এই শুন্যতাই বয়ে বেড়াতে…
-
রোদেলা দুপুর কাঁদে (৩য় পর্ব)
রোদেলা দুপুর কাঁদে (৩য় পর্ব) খলিফা আশরাফ সেদিন লাইব্রেরীতে বসে নোট করছিলো অনিমা। হঠাৎ অনিক এসে পাশে বসলো। অবিন্যস্ত চুল, উসকোখুসকো চেহারা, পারিপাট্যহীন পোশাক, কেমন যেন অচেনা লাগছে তাকে। চোখে মুখে অযাচিত অস্থিরতা। তার দিকে তাকিয়ে অনিক বললো, “তুমি কি আমাকে একটু সময় দিতে পারো অনিমা?’ তার কণ্ঠে মিনতি ঝরে পড়ছে। বই খাতা বন্ধ করলো অনিমা। ‘বলো’। “এখানে নয় অনিমা, চলো গাছের ছায়ায় বসি।’ অনিমার বাম হাতটা ধরল অনিক। এমন অস্থির অগোছালো অনিককে আগে কখনো দেখেনি সে। ওকে এমন দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিলো তার। অনিমা উঠে দাঁড়ালো। হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, “চলো’। অপেক্ষাকৃত একটু নির্জন জায়গায় বসলো তারা। কিছুক্ষণ…
-
রোদেলা দুপুর কাঁদে (২য় পর্ব)
রোদেলা দুপুর কাঁদে (২য় পর্ব) খলিফা আশরাফ চিঠিটা পড়ে অনেক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে থাকলো অনিমা। হায়রে ভালোবাসা! সেও যে তিলে তিলে কখন অনিকের নিবিড় ভালবাসায় বাঁধা পড়েছে, তাই-ই কি সে বলতে পেরেছে? অনিকের ভালোবাসা প্রতিটি প্রহর তাকে জড়িয়েছে অচ্ছেদ্য করে। কিন্তু কিছুই বলতে পারেনি অনিমা। অতীত তাকে বারবার টেনে ধরেছে, বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজও সেই অতীত দুর্লঙ্ঘ পাহাড় হয়ে দণ্ডায়মান। কি করে বলবে সে, ‘একাত্তরের নভেম্বরের এক রাতে, যখন তার মায়ের গর্ভে মাত্র তিন মাস বয়স তার, তার বাবাকে বেঁধে তার সন্মুখেই এক পাঞ্জাবী পাকি অফিসার মাকে ধর্ষণ করেছিলো। সে রাতেই মা আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পেটের সন্তানের দোহাই…
-
রোদেলা দুপুর কাঁদে (১ম পর্ব)
রোদেলা দুপুর কাঁদে (১ম পর্ব) খলিফা আশরাফ বিকেলের কফি হাতে বারান্দায় বসেছে অনিমা। সপ্তাহ দুয়েক আগে PhD সেরে আবার ভার্সিটিতে যোগদান করেছে সে। বাসায় দূর সম্পর্কের এক খালা আর একটা ছোট কাজের মেয়ে থাকে তার সঙ্গে। ভার্সিটির একই বিল্ডিংয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষক থাকেন। অনিমা থাকে তিন তলায়। কোলাহলমুক্ত ছিমছাম এলাকা। বিকেলে বারান্দায় বসে কফি খেতে বেশ ভালোই লাগে। হঠাৎ একটা ইগড গাড়ি এসে নিচে দাঁড়ালো। ড্রাইভার ত্বরিত দরজা খুলে দিতেই একজন সৌমশ্রী প্রোঢ় ভদ্রলোক নামলেন। অনিমা জানে, তার কোন গেস্ট আসার কথা নয়। কফিতে চুমুক দিলো সে। কিন্তু বেল বাজছে তার ফ্লাটেই। এগিয়ে গেলো অনিমা। কাজের মেয়েটা দরজা খুলে…