-
জারজ (শেষ পর্ব)
জারজ (শেষ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল একনাগারে নিজের কষ্টের এবং অপরাধের কথা বলে, সে যেন মানসিকভাবে শান্ত। বেশ কিছুক্ষণ নীচের দিকে চেয়ে কি যেন বিড়বিড় করে বলছে। ফৌজদারী মামলার অভিজ্ঞ আইনজীবী হাসমত আলীকে মনে হচ্ছে তিনি মানসিকভাবে কিছুটা ক্লান্ত। তবুও বাদীর পক্ষে নিযুক্ত উকিল। আসামীকে তো কিছু প্রশ্ন করা দরকার। উঠে দাঁড়িয়ে অনুমতি প্রার্থনা করলে, মাননীয় আদালত অনুমতি দিলেন। উকিল সাহেব ধীর গতিতে আসামীর সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন এবং আসামীর চোখের দিকে তাকালেন, -তুমি এত সময় ধরে যা বললে, তা কি বানানো গল্প? না-কি কোর্টের কাছে সহানুভূতি চাইছো? দৃঢ়তার সাথে আসামী বলল, -না। -জানো তোমার ফাঁসি হতে পারে? -আদালত…
-
জারজ (৩য় পর্ব)
জারজ (৩য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল বিচারক নাসরিন জাহান হেনা তার দীর্ঘ কর্মজীবনে এমন বিস্ময়কর ঘটনার সম্মুখীন হননি। মনটা কেমন যেন বিচলিত হয়ে উঠেছে। স্বাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়া তো কোন মামলার বায় ঘোষণা করা যায় না। এখানে স্বাক্ষ্য নেই কিন্তু জবানবন্দিতে স্বীকার করেছে। যে অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে, তাতে তার আঙ্গুলের ছাপা প্রমাণিত হয়েছে। শুধু তাই নয় এটা তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা। ঘৃণার বর্হিঃপ্রকাশ। মানুষ কতটা কষ্ট পেলে, এ রকম জঘন্য কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে। তবে ছেলেটি কেন উকিল নিয়োগ করতে অনিহা প্রকাশ করেছে, এর পিছনে নিশ্চয় কোন যুক্তি আছে। প্রায় নয়টা বেজে গেছে। এখনই বের হতে হবে। আদালত কোন আবেগের…
-
জারজ (২য় পর্ব)
জারজ (২য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল ঠিক দুদিন পর যথাসময় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুলিশ ইচ্ছে করলে যে কোনো অপরাধীকে আটক করতে পারে। তবে এই মহিলা অপরাধী কিনা আজকেই জানা যাবে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আদৌ জড়িত কিনা তাও জানা যাবে। মাননীয় বিচারক তার আসনে বসে কথিত মহিলাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে নির্দেশ দিলেন। দুজন মহিলা পুলিশ কথিত মহিলাকে কাঠগড়ায় উঠতে বলে নিজেরা একটি দূরে গিয়ে দাঁড়ালো। কথিত মহিলা একেবারেই অতি সাধারণ। অপরিস্কার একখানা সবুজ রঙের শাড়ী পরিহিতা। শাড়ীর গায়ে কতকাল পানি-সাবান লাগেনি! পায়ে কোন সেন্ডেল আছে কিনা বুঝার উপায় নেই। মুখখানা আলাদা একখণ্ড কালো কাপড়ে আবৃত। পুলিশের ভাষ্য মতে,…
-
জারজ (১ম পর্ব)
জারজ (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল জজকোর্টের তিন নম্বর এজলাসের সামনে বেশ কিছু সাধারণ লোকের সমাগম। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই বস্তির অধিবাসী। তারা স্থানীয় একটা গার্মেন্টসের কর্মী। মাসখানেক আগে গার্মেন্টসের সুপারভাইজার ইদ্রিশ আলী নৃশংসভাবে খুন হয়েছিল। কেন হয়েছিল তার কুলকেনারা পুলিশ আজ পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি। পুলিশের ভাষ্যানুযায়ী এলাকায় অল্প পরিচিত একজন যুবক নিজে জঘন্য হত্যাকারী পরিচয় দিয়ে থানায় ধরা দিয়েছিল। এ সংক্রান্ত কথিত যুবকের স্বীকারোক্তি এবং প্রমাণস্বরপ একখানা রক্তমাখা খুর আর তার ব্যবহৃত পোশাক। এছাড়া আর কোন সাক্ষী পুলিশ সংগ্রহ করতে পারেনি। হত্যাকারীর সঠিক পরিচয় জানা যায়নি। যুবকটির স্বীকারোক্তি থেকে এটুকু জানা গেছে, সে একটা মোটর গ্যারেজে…