-
জয়িতা শিল্পী
কবি, সাহিত্যিক ও পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী প্রশাসনিক ব্যস্ততার মাঝেও করে যাচ্ছেন শিল্প ও সাহিত্যের চর্চা। লিখছেন গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধ। কাজ করছেন মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনাদের নিয়েও। ইতোমধ্যে লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। জন্ম : জয়িতা শিল্পী ১৯৭৭ খিষ্টাব্দের ২৫শে মে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের অন্তর্গত চরদুলাই গ্রামের পুত্রবধূ তিনি। পারিবারিক জীবন : স্বামী এটিএন বাংলার সিনিয়র নিউজ প্রডিউসর এএইচএম কামরুজ্জামান কামরুল। পুত্র ইথান রাইয়ানকে নিয়ে তাদের সংসার জীবন। শিক্ষাজীবন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে পুলিশ সাইন্সে উচ্চতর (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে…
-
লেখকের মুক্তিযুদ্ধ (শেষ পর্ব)
লেখকের মুক্তিযুদ্ধ (শেষ পর্ব) সাইফুর রহমান হেনরিয়েট কবিরের দিকে তাকিয়ে বলল, — আরেকটা কবিতা হয়ে যাক। কবির আবৃত্তি করতে শুরু করল, “তোমাকে চোখের মধ্যে রেখে কাঁদি, আমার দু’চোখে তুমি বিগলিত ঠান্ডা হিম, তুমি কাঁদছ, দু’চোখের একান্ত ভেতরে গলে যাচ্ছে কালো আঁখিতারা, গলে গলে একটি গাছের মতো সবুজ, তোমার মতোন করুণ হয়ে যাচ্ছে অশ্রুমালা তুমি নিথর নিরীহ দাঁড়িয়ে আছ আঁখিতারার ভেতরে, তুমি, একাকিনী সবুজ পল্লব, কাঁপছ বাতাসে সাদা হিমে…।” অস্ফুট কণ্ঠে হেনরিয়েট বলে উঠল, — অপূর্ব! অপূর্ব! এটা কার কবিতা কবির? কবির সলজ্জ গলায় বলল, — আমার। — তোমার! সম্পূর্ণ আবেগ ধরে রাখতে না পেরে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল হেনরিয়েট। —…
-
খ ম আব্দুল আউয়াল
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সাবেক পরিচালক, কবি ও গবেষক খ ম আব্দুল আউয়াল (মন্টু)। জন্ম: কবি ও গবেষক খ ম আব্দুল আউয়াল ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত সাগরকান্দী ইউনিয়নের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: পিতা অধ্যাপক মুহাম্মদ খোয়াজউদ্দিন ছিলেন ত্রিশের দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র, সর্বোচ্চ ডিগ্রিপ্রাপ্ত একজন ইসলামি শিক্ষাবিদ ও সরকারি কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের (সাবেক ঢাকা ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ) অধ্যক্ষ (জন্ম: ০১-১১-১৯১১ খ্রি., মৃত্যু: ৩০-০৫-১৯৮৫ খ্রি.) এবং মাতা হাজেরা খাতুন (১৯১৮-২০০০ খ্রি.) ছিলেন গৃহিণী ও রত্নগর্ভা মা। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থতম। চার ভাই অধ্যাপক…
-
আদ্যনাথ ঘোষের কবিতায় প্রান্তিক প্রতিধ্বনি
আদ্যনাথ ঘোষের কবিতায় প্রান্তিক প্রতিধ্বনি জহুরুল ইসলাম কবিদের কোনো সীমারেখা নেই। কবি সব দেশের, সব মানুষের, সব জাতির। কবি মানুষের কথা বলে, মানবতার কথা বলে। কবি তার গোপন আয়নায় দেখতে পান- সমাজের অসঙ্গতি, পতন, ঔদ্ধত্যের বিকৃত রূপ, অনাচার। তিনি কারও সঙ্গে আপস করেন না, করেন না। কোনো গোপন চক্রান্ত। তিনি গোপনে গোপনে ক্রমাগত মোচড় খেতে থাকেন। একদিন তিনি সব গোপন সত্য আয়নায় প্রতিফলিত করেন। তিনি প্রকাশ করেন- কারণ না করে তিনি থাকতে পারেন না। কবি আদ্যনাথ ঘোষও এর ব্যতিক্রম নন। তার ব্যথিত হৃদয় বারবার কেঁপে ওঠে স্বদেশের ভাবনায়- তাতার ঘোড়ার পিঠে ছুটেছে নাগরিক স্থাপত্যবিদ্যার যোদ্ধাকুল পতন হচ্ছে গাঁয়ের পর…
-
সুমনা নাজনীন
সুমনা নাজনীন একজন কবি, কথাসাহিত্যিক ও সমাজকর্মী। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, কোট, অণুকবিতা লেখার সমস্ত শাখায় তাঁর বিচরণ। তিনি রাশিয়ান ও আলবানিয়ান ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় কবিতা ও গল্প অনুবাদ করেছেন। ইংরেজি ও বাংলা দুই ভাষাতেই লেখেন। জন্ম: সুমনা নাজনীন ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে সেপ্টেম্বর পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত সাগরকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: সুমনা নাজনীনের বাবা রহমত আলী ফকির, মা নাজমুন নাহার গৃহিনী। তাঁরা দুই ভাইবোন, তিনি ছোটো। স্বামী মিডিয়া কনসালট্যান্ট ও সংগঠক। তাঁদের সংসারে দুই ছেলেমেয়ে। তারা নবম ও দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। আরও পড়ুন কবি ও কথাসাহিত্যিক খলিফা আশরাফ শিক্ষা জীবন: বাবার চাকুরির সুবাদে ছোট থেকেই…
-
মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান
মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান সদালাপী এবং জীবনবাদী কথাশিল্পী মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান। তিনি কবি, কথাশিল্পী ও গবেষক হিসেবে সমাজে সমধিক পরিচিত। বর্তমানে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি (নায়েম) এর পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) হিসেবে কর্মরত আছেন। জন্ম: পদ্মার পলিমাটি বিধৌত শ্যামল বাংলার প্রকৃতির সাথে বেড়ে ওঠা মোহাম্মদ সেলিমুজ্জামান পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামের সন্তান। সম্ভান্ত মুসলিম প্রামাণিক পরিবারে ১৯৬৯ সালের ১ জানুয়ারি-তে তাঁর জন্ম। পারিবারিক জীবন: পিতা মহির উদ্দিন প্রামানিক ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা (শহীদ), মাতা মরহুমা হাজেরা খাতুন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। পিতামহ কফিল উদ্দিন প্রামাণিক ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। স্ত্রী জাফরিন আক্তার,…
-
আত্মকথন (১ম পর্ব)
আত্মকথন (১ম পর্ব) আদ্যনাথ ঘোষ আমি আদ্যনাথ ঘোষ। নেশা লেখালেখি। মানুষের অন্তরে বসবাস। জন্ম পদ্মা নদীর তীরবর্তী হেমরাজপুর গ্রামে। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলায়। আমি যখন ছোটবেলায় সাতবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি, তখন কবিতা লেখা শুরু করি। সেটা ছিল ১৯৮৪ সাল। ছন্দে ছন্দে লিখতাম। হতো কিনা সেটা বলা মুশকিল। আমার পাশের গ্রামের একটি ছেলে পাবনা শহরে মাঝে মধ্যেই আসত। তার নাম এখন আর বললাম না। তার কাছে একটি কবিতা দিলাম পাবনার একটা পত্রিকায় দেওয়ার জন্য। সে কবিতাটি নিজের নামে পাবনার একটি পত্রিকায় ছাপিয়ে ফেলল। আমি দেখে হতাশ, হতবাক। যাহোক, পরবর্তীতে পাবনা শহরে ১৯৯১ সালে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে স্নাতক কোর্সে…
-
ডা. অশোক কুমার বাগচী
ডা. অশোক কুমার বাগচী উপমহাদেশের চিকিৎসাশাস্ত্রের এক অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নিউরোসার্জন। তিনিই সর্বপ্রথম জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অসুস্থ জীবন সম্পর্কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দাখিল করেন। জন্ম: ডা. অশোক কুমার বাগচীর পৈত্রিক নিবাস পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত তাঁতিবন্দ গ্রামে। তিনি ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে নভেম্বর রংপুরে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: ডা. বাগচীর পিতার নাম দ্বিজদাস বাগচি। তাঁর জন্মের সময় পিতা দ্বিজদাস বাগচী পাবনা শহরের ‘বাগচি ফার্মেসি’তে ডাক্তারি করতেন। পিতা ও পিতামহ উভয়েই সেকালের নাম করা ডাক্তার ছিলেন। শিক্ষা জীবন: ডা. বাগচী ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে পাবনা জি.সি আইতে ভর্তি হন। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে…
-
আবু জাফর খান
আবু জাফর খান পেশায় একজন চিকিৎসক। ভাবনায় কবি, কথাশিল্পী ও সংগঠক। তাঁর পুরো নাম কে এম আবু জাফর। বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে বর্তমানে তিনি পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। লেখক হিসেবে আবু জাফর খান এর বিশেষত্ব, তিনি নিবিড় অন্তর অনুভবে প্রত্যহ ঘটে চলা নানান ঘটনা, জীবনের গতি প্রকৃতি, বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি, ব্যক্তিক দহনের সামষ্টিক যন্ত্রণা তুলে আনেন নান্দনিক উপলব্ধির নিপুণ উপস্থাপনায়। তাঁর লেখায় ধ্বনিত হয় বিবেক কথনের অকৃত্রিম প্রতিভাষা। তিনি তাঁর লেখায় প্রতিধ্বনিত করেন নন্দনতাত্ত্বিকতায় জীবন বোধের সমকালীন বাস্তবতা। জন্ম: কবি ও কথাশিল্পী আবু জাফর খান ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩১শে জানুয়ারি পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত আহম্মদপুর ইউনিয়নের…
-
বইমেলা ও সরদার জয়েনউদদীন
বইমেলা ও সরদার জয়েনউদদীন সাহিত্যকৃতি ছাড়াও ইতিহাসে পাবনার সুজানগরের সন্তান সরদার জয়েনউদদীনের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের বইমেলার আন্দোলনের প্রবর্তক, পথ প্রদর্শক ও প্রধান সংগঠক হিসেবে। বইয়ের অসীম শক্তি যা মানুষের মেধা ও মননকে বিকশিত করে। সরদার জয়েনউদদীন যথার্থ উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের মানুষ যত বই পড়বে দেশ ও জাতি তত উন্নত হবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান একটি নিবন্ধে (একুশে বইমেলার গোড়ার কথা, প্রথম আলো, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭) বাংলাদেশের বইমেলা প্রসঙ্গে যে বিবরণ দিয়েছেন, তা যেমন চমকপ্রদ তেমনি কৌতুহলোদ্দীপক। গত শতাব্দীর ষাট দশকের প্রথম দিকে সরদার জয়েনউদদীন বাংলা একাডেমি গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে নিয়োজিত ছিলেন। তখন বাংলা একাডেমিতে…