-
দীপ্তিদের দেবতা (২য় পর্ব)
দীপ্তিদের দেবতা (২য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল প্রায় মাসখানেক হলো নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেছি। নতুন বাসা নেয়া হয়েছে। গিন্নী তার সংসার গোছগাছ নিয়ে ব্যস্ত। বাচ্চা দুটো নতুন জায়গায় এসে নিঃসঙ্গবোধ করছে। এখনো বন্ধু-বান্ধব জোটেনি। তবে গিন্নীর সাথে পরশিদের আলাপচারিতা চলছে। আমিও কলেজে যাওয়া-আসা করছি আর পাশাপাশি আসাদের ঠিকানাটা মনে করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ড্রয়িং রুমে বসে ভাবছি কোথায় লেখা আছে ঠিকানা। হঠাৎ গিন্নী এসে পাশে বসে টেলিভিশন অন করল। এ প্রজন্মের তরুণ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী অদিতি মহসিনের কণ্ঠে ভেসে এলো রবীন্দ্রনাথের জনপ্রিয় গান- ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে’। গানটি শুনতেই গোরা উপন্যাসের কথা মনে পড়ে গেল। আসাদ আমাকে স্মৃতিস্বরূপ এই…
-
দীপ্তিদের দেবতা (১ম পর্ব)
দীপ্তিদের দেবতা (১ম পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল এ বছরে ভাগ্যটা সত্যিই সুপ্রসন্ন। অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পদে পদোন্নতি আর পদায়ন জেলা শহরে নামকরা কলেজে। প্রমোশন এবং পদায়ন দুটোই আমার জন্য একটা সাফল্য। কিন্তু গিন্নী আর বাচ্চারা মনঃক্ষুণ্ন। এত দিনের পুরনো বন্ধুদের ছেড়ে যেতে হবে। বদলী ঠেকানোর কোন উপায় নেই। উপায় একটাই প্রমোশনটা যদি না নেই। গিন্নীকে অবগতি করতেই একবাক্যে বাতিল করে দিলেন। হাজার হলেও প্রফেসরের জীবনসঙ্গিনী। সমাজে আলাদা একটা পরিচয় আছে। কিন্তু বিপত্তি অন্য জায়গায়। বিপদ তো বলে কয়ে আসে না। ওৎপেতে বসে থাকে। শুধু সময় মত কাজে লাগানো যায় কিভাবে। মফস্বল শহর হতে জেলা শহরে বাসান্তর। প্রায় পাঁচ বছর…
-
সোনালী (৪র্থ পর্ব)
সোনালী (৪র্থ পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল অনেক দিন কেটে গেছে হিজড়া পরিবারের সাথে। সুখ-দুঃখ মিলে একাকার হয়ে গেছে। বয়স বিশ পার হয়ে গেছে কখন, জানি না। কিন্তু একটা জিনিস মনের ভেতর উপলব্ধি হতো। শরীরে যৌন আকাঙ্খা বলে কিছু আছে। কিন্তু প্রকাশ করা মানেই সবার কাছে উপহাসের পাত্র হওয়া। মনের ভেতর তুষের অনল জ্বলে আবার ধপ করে নিভে যেতো। দিন বেশ কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ একদিন রাতে আঁধারে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে গেলাম নিষিদ্ধ পল্লীতে। এখানেও তাকে নিয়ে হিজড়াদের সর্দারনী ছলচাতুরী করতে ছাড়ে নি। এবার নিকৃষ্টতম নরকে স্থান হলো আমার। মৃত্যুর পর পাপীষ্ঠ লোকদের নরকে জায়গা হবে শুনেছি। সে…
-
সোনালী (৩য় পর্ব)
সোনালী (৩য় পর্ব) এ কে আজাদ দুলাল সোনালী কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। কি বলে শান্ত্বনা দেব বুঝে উঠতে পারছি না। আবার চোখ মুছে বললো। -মুহুর্তের মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে আমার মুখের ওপর একগাল থুথু দিয়ে বলে গেল। -কি বলে গেল? জানতে চাইলাম। -স্যার, আমি নাকি হিজড়া। কথাটা শুনে আমার মাথায় যেন বাজ পরলো। -শুধু এখানেই শেষ নয়। শাসিয়ে গেল, মাকে বললে সকালে সারা গ্রামে প্রচার করে দিবে সোনালী হিজড়া। -বলেন কি? আরও পড়ুন গল্প কাঠগোলাপ ও প্রেম ঠিক তাই। কিন্তু সকালে যাওয়ার আগে মাকে সব বলে গিয়েছিল। আর সে দিন হতে আমার কপাল ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। পৃথিবী আমার কাছে অচেনা…
-
শেষ শ্রাবণ
শেষ শ্রাবণ এ কে আজাদ দুলাল নির্ভয় নির্ভীক নির্ভুল নির্ভেজাল সাহসী বংশীবাদক হাতে তার মোহনী বাঁশী মনের গগনে গহনে বাঁজিয়ে তার সুর আড়ালে চোখের ইশারায় বলে মাতৃভূমি তোমায় ডাকে। মেঘের আড়ালে ছিলো মনে হাজার স্বপ্ন অজানা সোনালী ভবিষ্যত তার অপেক্ষায় ঘুমন্ত ছিল হাজার আলো কে জাগাবে কোথায় সেই বংশীবাদক। রবীন্দ্র জীবনান্দ আর নজরুল কার কন্ঠে বাজে তাদের মাতৃভূমির গান মোহনী বাঁশীর সুরে নতুন প্রভাতে সোনালী আলো মাখা অপেক্ষা নতুন সূর্যের আগমনে। ছয়টি গোলাপ করতলে তার বজ্রকন্ঠে তর্জনী আঙ্গুলের ইশারায় ইঙ্গিত দিয়ে যায় ঘুমন্ত বাঙলার শহর জনপদ মাঠ প্রান্তরে একটাই উচ্চারণ – “সোনার বাংলা শ্মশান কেন…
-
রোদ-আঁধার খেলা
রোদ-আঁধার খেলা এ কে আজাদ দুলাল রোদে হেঁটেছি, হেঁটেছি বৃষ্টিতে ঝরা পাতায় সাজানো মাঠেতে নীল আকাশ এখন মনে হয় না আর সবুজ মাঠে ভরে গেছে কালো অন্ধকার। মনের কোনে জেগে উঠে সাহসী যুবকের মুখ তারার আলোয় ভরা ছিল কঠিন তার মুখ বৃষ্টিতে ভেজে ধুর্ত শিয়ালের মত চাহনি ছিলো তার বাজপাখী চোখের মত মলিন হয়নি কখনো তার মুখ বুকে জ্বলতো অগ্নিশিখা হাতে হাতিয়ার শত্রুর বুকে রক্ত ঝরবে পললভূমিতে কঠিন মন্ত্র মন- প্রান জুড়ে ছিল একদা হায়রে অগ্নি ঝরা দিনগুলো এখন কোথায়। মেঘের পর মেঘ সময় বয়ে যায় স্রোতের গতি নিমিষে হারায় পথ কখন যেন দখল হয়ে যায় সোনালী…