-
সন্ধ্যা নামার আগে, মা
সন্ধ্যা নামার আগে জিন্নাত আরা রোজী দিক ভোলা সেই পথের বাঁকে উদাস মনে বসে আছে ছোট্ট খোকা একলা জনে পথটা ভূলে ইচ্ছে করে নয় তো সে, ভুলেই গেছে পথের দিশা। আঁকা বাঁক পথের ধারে পানকৌড়ি আর ভরত পাখি করছে শুধু ডাকাডাকি, দেখছে খোকা চুপটি করে। মায়ের কাছে যাবে সে সন্ধ্যা হয়ে এলো যে, একটু পড়ে আসবে ধেয়ে বনবিড়াল আর শিয়ালে এটা ভেবে কাঁদছে খোকা থেকে থেকে করুণ সুরে! এমন সময় এলো সেথায় বুড়ো এ- দরবেশ যে, বললো বাবা কাঁদছো কেন একলা বসে নিরজনে? ভয় পেয় না আমি আছি তোমার সনে। ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে খোকা হাতটা দিল বাড়িয়ে, দাও না আমার…
-
ভালোবাসা রঙ বদলায়, কিছু লিখব
ভালোবাসা রঙ বদলায় জিন্না আরা রোজী যদি একদিন আমার খোঁপায় ফুল গুঁজে দিয়ে বলতেচল না বৃষ্টিতে ভিজি দু’জন মিলে,বৃষ্টিতে ভিজে যতটা না সুখ অনুভব করতামতার চেয়ে বেশী সুখ পেতাম তোমার এই চাওয়াতে। গোধুলির লগ্নে আমার হাত দু’টি ধরে যদি বলতেচল না নদীর পাড়ে বসে গল্পের ডালি সাজাই দু’জনেআমার হাত ধরাতে যতটা না খুশী হতামতার চেয়ে আরো অধিক খুশী হতাম তোমার আবেগ দেখে। সকালের শিশির ভেজা ঘাসের উপরএকসাথে যদি কিছুটা পথ হাঁটতে বলতেশিশিরে আমার পা যতটা না ভিজতোএর চেয়ে অনেকটা বেশী আমার মন ভিজতো তোমার ভালবাসায়। সুতির গোলাপি রঙের একটা শাড়ি এনেসাথে সদ্য ফোটা গোলাপ ফুলের মুকুট পরিয়ে যদি…
-
ভালোবাসার ঋণ, চলে যাব বহু দূরে
ভালোবাসার ঋণ জিন্না আরা রোজী ডাকছে আমার নদীর বান,ডাকছে সবুজ ছায়া ;ডাকছে যত গ্রাম্য পথেরফেরারি সব কায়া। শিমুল রাঙা গ্রাম্যপথেকিশোর বেলা খেলেছি কত খেলা,ওদের সাথে ভাব বিনিময়করেই যেত বেলা!এখন ওরা ঈশারাতে ডাকছে আমায়,কেমন করে ফেরাবো ওদেরভালবাসার ঋণ? ক্ষণিক দেখার ইচ্ছে হলেতাইতো ছুটে আসি,মরা ঘাসে পা ছড়িয়েওদের কাছেই বসি।জড়িয়ে আছি পিতৃঋনেশিকড়েরা নেয় যে চিনে,কেমন করে ভুলবো আমিওদের যত স্মৃতি? এখন আমার হলদে সময়পাতা ঝরার দিন,কেমন করে ফেরাবো আমিভালবাসার ঋণ?চুপটি করে কষ্ট চেপে,খুচরো মেঘে উড়িয়ে দেবওদের যত ঋণ। ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে ভালোবাসার ঋণ
-
সোনামনি, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে
সোনামনি জিন্না আরা রোজী কোন সে দূরে চলে গেছিস আমায় একা ফেলে? বেশ তো আছিস, ভালোই আছিস, আমায় না দেখে। ছিন্ন আমার বুকের পাজর, ঘুণে ধরা দেহ, চোখে আমার শ্রাবণের জল থাকে অবিরত, দিন কাটে না, রাত কাটে না, তোকে না দেখে, অন্ধকারে ডুবে আছি, মরণ জ্বালায় জ্বলে ইচ্ছেগুলো দিচ্ছি ফাঁকি, আর লাগে না ভালো;যতই ভাবি ভুলবো তোকে, ভুলতে পারি নাকো! কেমন করে ভুলবো তোকে বলতে পারিস মাকে? হাত-পা আমার সদাই কাঁপে তোকে না ছুঁয়ে। পরাণ আমার কেঁদে ওঠে তোকে না পেয়ে পুতুলের মতো মুখখানি তোর ভুলি কি করে? কোথা থেকে ভেসে এলি, আবার কোথায় গেলি? মন যে…
-
নীলাম্বরী শাড়ি, সাধ
নীলাম্বরী শাড়ি জিন্নাত আরা রোজী দিনটি ছিলো চৌদ্দই আষাঢ়।কিছু একটা লেখার ভূত চাপলো মাথায় কি লিখবো,কি লিখবো করে দিন শেষে সন্ধ্যায়:সবাই তো আর লিখতে পারে না!তবুও চেষ্টা,হঠাৎ তাকাই গগনপানেচেয়ে দেখি নীল আকাশ তো নয়,নীলাম্বরী শাড়ির আঁচল বিছিয়ে এক রাজকন্যা।চমকে উঠে থমকে দাঁড়ালাম,শরীরে জাগলো এক অচেনা শিহরণ ।কানে ভেসে এলো এক সুমধুর মিষ্টি আওয়াজ।নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে আবারো গগন পানে চাইলাম,কই, কোথায় নীলাম্বরী রাজকন্যা?মনে হয় আগেও কোথায় দেখেছি ওকেখুব চেনা চেনা মনে হয়পার্কে, রেস্টুরেন্টে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোরে।কি উচ্ছৃল হাসিতে বন্ধুদের সাথে নখ নেড়ে নেড়ে কথা বলে!নীল শাড়ি, গোলাপী ঠোঁট, খোঁপায় গোঁজা বাহারীকাঠগোলাপ ফুল ।আহা! কি আবেদন শাড়িতে, বেহায়া হৃদয়ে বিদ্যুৎ…
-
কেন আমাকে জন্ম দিলে
কেন আমাকে জন্ম দিলে জিন্নাত আরা রোজী মা বলতে পারো কেন আমাকে জন্ম দিলে?অপরাধ তো তুমি করেছো,আমাকে জন্ম দিয়ে। আমি তো কোন অপরাধ করিনি,তবে কেন আমাকে প্রাণ দিতে হলো?আমাকে পৃথিবীর আলো কেন দেখালে মাএই নশ্বর জগতে?পারলে নাতো জন্তু জানোয়ারের হাত থেকে রক্ষা করতে।জানো মা; ওরা কোন মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়নি,ওরা কোন বোনের ভাই না,তাহলে কি আমার সম্ভ্রমহানি করে, গলায় ফাঁস দিয়ে মারতে পারতো?বহু চেষ্টা করেছিলাম মা ইজ্জ্বত রক্ষা করার কিন্ত পারিনি,জন্ত জানোয়ারের সাথে কি আমার মততের বছরের কিশোরীরা শক্তিতে পারে? জান মা, মুখে কাপড় গুজে,হাত-পা বেঁধে আমার সব নষ্ট করে দিল।আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম, ওরা আমাকে বাঁচতে দিল না।তোমার কোল…
-
তোমরাই সফল, এ কোন পৃথিবী
তোমরাই সফল জিন্নাত আরা রোজী হে তরুণ, তোমাদের স্বপ্নের মেঘ ভেসে বেড়ায়!সেই স্বপ্নকে কাজে লাগাও,তোমরা কঠোর হাতে ধরতে পারবে এ দেশের হাল।তোমাদের আছে শক্তি, সাহস, দৃঢ় মনোবল,আছে শ্যামল সবুজে ভরা স্বাধীন বাংলাদেশ ;তোমরা আগামীর কর্ণধার,তোমাদের দমিয়ে রাখবে এমন সাধ্য আছে কার? তোমরা এদেশের হাতিয়ার,দেশ গড়ার প্রত্যয়ে তোমরা অনড়,শৃঙ্খল ভেঙ্গে হয়ে উঠো সুতীক্ষ্ণ হাতিয়ার।তোমাদের রক্তাক্ত প্রতিবাদে রাজনীতিরময়দান হয়েছে সফল,তোমাদের আলোয় আলোকিত এদেশ,তোমাদের হাসিতে হাসে যেন এ দেশ। তোমরা মায়ের কোলের সাহসী সূর্য সন্তান,তোমরা বাবার আদর্শের অমলিন হাসি,কৃষকের শস্যপূর্ণ ফসলের মাঠ।তাই মোহময় চশমায় ঢেকে রেখো না দু-চোখ ;চারিদিকে বিলিয়ে দাও তোমাদের অর্জনের খতিয়ান।তোমরা মুখ থুবরে পড়লে চলবে না এদেশ,তোমাদের স্বপ্নের সূচনায়…
-
যে মাটির গন্ধে বেড়ে উঠা, আমার কথামালা
যে মাটির গন্ধে বেড়ে উঠা জিন্না আরা রোজী আমি যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকতে চাই।তোমাদেরই মাঝে,যেখানে কাঁদা মাটির গন্ধ লেপ্টে আছে;সেখানেই আমার শিকড়,সেখানেই আমার নাড়ীর টান।যে পথে সবুজের মেলা সে পথে আমার পদচারণা।মটরশুঁটির ক্ষেতে জড়াজড়ি আর মাখামাখিতে ভরাসেখানেই আমার প্রাণের ভালবাসা,যেখানে মায়ের আদরে দিন যেত হেসেখেলেসেখানেই আমার ভালবাসা জড়িয়ে আছে। আবছা সকালে ঘুম ভেঙে যেতো সুমধুর আযানের ধ্বনিতে।বাবার শাসনে যেখানে দিনের শুরু,সেখানে শুধুই মঙ্গলের বাতিঘর।যেখানে মেঠোপথের বাঁকে বাউলের গান,শিথিল করতো সকল বাঁধন,সেখানেই আমার প্রাণের স্পন্দন। ব্যথাতুর আঁখি এখনও কেঁদে ফিরেসেই শ্যামল সবুজ গাঁয়ের পথে,যেখানে আমার শৈশবের স্মৃতি গাঁথা।বকুলের মালা এখনও জড়িয়ে আমার গায়েভুলতে পারি না তারে, সেখানে আমার স্বপ্ন…