-
ইউনিয়নসমূহ, উপজেলার ইতিহাস, উলাট, কিন্ডার গার্টেন, খয়রান, গাবগাছি, দর্শনীয় স্থান, দাশপাড়া, প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিক্রমাদিত্য, মাদ্রাসা, মানিকহাট, মানিকহাট ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
উলাট গ্রামের ইতিহাস
উলাট গ্রামের ইতিহাস জাহাঙ্গীর পানু উলাট, আবহমান বাংলার আর পাঁচ-দশটা গ্রামের মতোই একটি গ্রাম। ছায়া সুনিবিড় শান্ত নীড়, পাখির কলকাকলিতে মুখর, বিল গাজনার পলিবিধৌত সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলায় ভরপুর একটি উর্বর জনপদ। কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়া, ইন্টারনেট আর শহুরে জীবনযাত্রার প্রভাবে প্রভাবিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি গ্রাম। ভৌগলিক অবস্থান পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের সর্বউত্তরে বিল গাজনার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত । উলাট মৌজা ও উলাটের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত বিক্রমাদিত্য মৌজার অর্ধাংশ নিয়ে উলাট গ্রামর অবস্থান। উলাট গ্রাম ২৩.৩৪ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩.৫৬ উত্তর অক্ষাংশ ২৩.৭৮ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ ২৩.৪৫ পর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। পাবনা শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার এবং সুজানগর উপজেলা সদর থেকে…
-
আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকে শুভেচ্ছা বাণী
আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকে শুভেচ্ছা বাণী আমি জেনে আনন্দিত যে, ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চতুর্থ বছরে পদার্পণ করেছে। সংগঠনটি সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারসহ নতুন প্রজন্ম সাহিত্যপ্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রে ও সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অনন্য ভূমিকা রেখে সকলের নন্দিত দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সুজানগর সংগঠনের এই কল্যাণকর ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সংগঠনটির আরও ঐশ্বর্যময় বিস্তার ঘটবে। বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশ করছে; আমি তার প্রশংসনীয় সাফল্য কামনা করছি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সর্বোপরি, আমি সংগঠনটির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি…
-
আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিক
আজ ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠন চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে আদর্শিক ঐশ্বর্যে বিকশিত করা; সুস্থির সমাজ বিনির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা; শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে মানবিকবোধসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম সৃষ্টিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখার প্রত্যয় নিয়ে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জুন ‘আমাদের সুজানগর’যাত্রা শুরু করে। ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিন (amadersujanagar.com) প্রতিনিয়ত সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। গুণিজনদের জীবন-আদর্শ প্রচার ও প্রকাশের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে। নবীন লেখকদের জন্য এটি একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে তারা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে…
-
বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বংশ পরিচয়
বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বংশ পরিচয় পাবনার সুজানগর উপজেলায় দুইজন বড় জমিদারের দেখা মেলে। তার মধ্যে একজন তাঁতিবন্দের চৌধুরী জমিদার এবং অপরজন দুলাইয়ের জমিদার আজিম চৌধুরী। তাঁতিবন্দ চৌধুরী জমিদাররা শুধু সুজানগর উপজেলার মধ্যে নয়, পাবনা জেলার মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন। এরা ছিলেন বারেন্দ্র শ্রোত্রীয় ব্রাহ্মণ; এদের পূর্ব উপাধি সান্যাল। এদের আদি নিবাস ছিল চাটমোহর উপজেলার বোঁথর গ্রামে। এ জমিদার বংশের পূর্বপুরুষ রাজবল্লভ চৌধুরী তার মায়ের সঙ্গে শৈশবে এসে তাঁতিবন্দের অদূরে চণ্ডীপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তাঁতিবন্দে কুলিন ব্রাহ্মণ ছিল না। পরবর্তীতে উপেন্দ্রনারায়ণ ও তার বংশধরদের সময়ে কুলিন ব্রাহ্মণদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দান করে তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করলে, তারা…
-
উপজেলার ইতিহাস, জমিদার, তাঁতিবন্দ (গ্রাম), তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, তাঁতিবন্ধ, সুজানগর উপজেলা
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন ইতিহাসখ্যাত এক হিন্দু জমিদার ও প্রখ্যাত শিকারি। জন্ম: বিজয়গোবিন্দ চৌধুরী আনুমানিক ১৮২৪ সালে, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের তাঁতিবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম গুরুগোবিন্দ চৌধুরী। তৎকালীন নাটোর কালেক্টরির সেরেস্তাদার উপেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী তাঁতিবন্দের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তার উত্তসূরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর শাসনামলেই তাঁতিবন্দসহ আশপাশের এলাকায় তাদের জমিদারিত্বের প্রভাব প্রতিপত্তি ছড়িয়ে পড়ে। জমিদারী: অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রতিভাবান বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী অতি অল্প সময়ে জমিদারিত্বের হাল ধরে তাঁতিবন্দসহ আশেপাশের এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমি ক্রয় করে তাঁর জমিদারিত্বের বিস্তৃতি এবং প্রসার ঘটান। মূলত বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর…
-
উপজেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে সুজানগর, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সাতবাড়িয়া, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
সাতবাড়িয়া গণহত্যা
সাতবাড়িয়া গণহত্যা সাতবাড়িয়া গণহত্যা পাবনার জেলার প্রথম গণহত্যা। নিহতের সংখ্যার দিক থেকে এটি পাবনার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১২ মে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামবাসীর ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও লুটপাট চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীরা ১২ মে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আক্রমণের কারণ: সাতবাড়িয়া এলাকাটি পদ্মা নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় পাবনা ও রাজবাড়ি জেলা শহরের অসংখ্য মানুষ সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। এমন সংবাদ সেনা ক্যাম্পে দেওয়া হলে পাবনা থেকে বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি সৈন্যরা সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় চৌদ্দটি গ্রামে অভিযান চালায়। বিভিন্ন সূত্র…
-
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস সুজানগর থানা দখল এবং আমার আহত হওয়া ১৯৭১ সালের ৯ই ডিসেম্বর। রাতে বকুল ভাই আর ইকবাল ভাই সুজানগর এলেন, সঙ্গে আরো ১৫ জন মুজিব বাহিনী এবং মকবুল হোসেন সন্টুসহ কয়েকজন এফএফ মুক্তিযোদ্ধা। থানা আক্রমণের জন্য আমি আর দুলাল ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসার পর থেকেই পরিকল্পনা করছিলাম। সেই পরিকল্পনার সব বিষয় যেমন, ক’টার সময় আক্রমণ করলে ভালো হবে, বাঙ্কার থেকে শত্রুরা কখন বের হয়, হাতে আঁকা ম্যাপে দেখিয়ে কোথায় কোথায় পজিশন নিতে হবে সব বকুল ভাইকে দেখালাম। সুজানগর থানা এবং তার পাশে সুজানগর হাইস্কুলে তখন অবস্থান করছে রাজাকার ও মিলিশিয়া মিলে প্রায় দু’শত শত্রু। সবকিছু…
-
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ আশরাফ খান কিছুদিন আগেই হাতে পেয়েছি ড. আশরাফ পিন্টু ও মিজান খন্দকার রচিত ২০২১ সালের বই মেলায় পাললিক সৌরভ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘‘সুজানগরের ইতিহাস’’ বইটি। পড়ি পড়ি করে পড়া হয় না। পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠে না। একটু একটু করে পড়ি। ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে। ভালো লাগা বিষয়গুলো আন্ডার লাইন করি। কোনটি নোট নিই। অনেকটা সৌখিন পাঠক আমি। লেখার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। পড়াটা জরুরী। জানার জন্য। না জানলেও ক্ষতি নেই। শিক্ষার প্রধানত দুটি প্রক্রিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক। আমরা অপ্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়নে বেশি ব্যস্ত। অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দায়বদ্ধতায় বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা সুবিধা হলো নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে। সিলেবাস শেষ করতে পারলেই…
-
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা শাহজাদা সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র। ১৬১৬ সালের ২৩ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শাহজাহান ইসলাম খান শাহ সুজাকে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ১৬৩৯ সালে বাংলার সুবাদার নিযুক্ত করেন। ১৬৪২ সালে তাঁকে ঊড়িষ্যা প্রদেশের দায়িত্বও অর্পণ করা হয়। ১৬৩৯-১৬৬০ সাল পর্যন্ত বিশ বছরের কিছু অধিক সময় ধরে তিনি প্রদেশ দুটি শাসন করেন। শাহ সুজার নিযুক্তির সময় ঢাকা সুবাহ-বাংলার রাজধানী ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি রাজধানী রাজমহলে স্থানান্তরিত করেন । শাহ সুজার শাসনকালে বাংলা ও ঊড়িষ্যা প্রদেশ দুটিতে মোটামুটি শান্তি বিরাজ করছিল; কোন অংশেই কোন বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়নি। প্রকৃত পক্ষে জমিদার…
-
সুজানগরের নামকরণের ইতিহাস
সুজানগরের নামকরণের ইতিহাস পাবনা জেলার সুজানগরের পূর্বনাম ছিল গোবিন্দগঞ্জ। মোগল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালের শেষভাগে তার পুত্রদের মধ্যে রাজ সিংহাসনের দখল নিয়ে যে বিরোধের সূত্রপাত হয় তার ধারাবাহিকতায় যুবরাজ শাহ সুজা আরাকানে পালিয়ে যান। তিনি আরাকানে গমনকালে সুজানগরে ৩ রাত অবস্থান করেন। যুবরাজ শাহ সুজার এই অবস্থানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য এতদঞ্চলের মানুষ এ জনপদের নামকরণ করেন সুজানগর। রাধারমণ শাহা তার ‘পাবনা জেলার ইতিহাস’ গ্রন্থে লিখেছেন, “মোগল আমলে শাহ সুজা একদা ঢাকা গমন সময়ে পদ্মাতীরে এখানে কিয়ৎদিনের জন্য অবস্থান করেন, তখন হইতে এই স্থানের নাম সুজানগরে পরিণত হইয়াছে।” মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের ইচ্ছায় তার ছোটবেলার বন্ধু, ঘনিষ্ঠ সহচর ও প্রধান সেনাপতি…