-
উপজেলার ইতিহাস, জমিদার, তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, তাঁতিবন্ধ, তাঁতীবন্দ (গ্রাম), সুজানগর উপজেলা
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন ইতিহাসখ্যাত এক হিন্দু জমিদার ও প্রখ্যাত শিকারি। জন্ম: বিজয়গোবিন্দ চৌধুরী আনুমানিক ১৮২৪ সালে, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের তাঁতিবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম গুরুগোবিন্দ চৌধুরী। তৎকালীন নাটোর কালেক্টরির সেরেস্তাদার উপেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী তাঁতিবন্দের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তার উত্তসূরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর শাসনামলেই তাঁতিবন্দসহ আশপাশের এলাকায় তাদের জমিদারিত্বের প্রভাব প্রতিপত্তি ছড়িয়ে পড়ে। জমিদারী: অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রতিভাবান বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী অতি অল্প সময়ে জমিদারিত্বের হাল ধরে তাঁতিবন্দসহ আশেপাশের এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমি ক্রয় করে তাঁর জমিদারিত্বের বিস্তৃতি এবং প্রসার ঘটান। মূলত বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর…
-
উপজেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে সুজানগর, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সাতবাড়িয়া, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
সাতবাড়িয়া গণহত্যা
সাতবাড়িয়া গণহত্যা সাতবাড়িয়া গণহত্যা পাবনার জেলার প্রথম গণহত্যা। নিহতের সংখ্যার দিক থেকে এটি পাবনার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১২ মে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামবাসীর ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও লুটপাট চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীরা ১২ মে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আক্রমণের কারণ: সাতবাড়িয়া এলাকাটি পদ্মা নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় পাবনা ও রাজবাড়ি জেলা শহরের অসংখ্য মানুষ সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। এমন সংবাদ সেনা ক্যাম্পে দেওয়া হলে পাবনা থেকে বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি সৈন্যরা সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় চৌদ্দটি গ্রামে অভিযান চালায়। বিভিন্ন সূত্র…
-
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস সুজানগর থানা দখল এবং আমার আহত হওয়া ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর। রাতে বকুল ভাই আর ইকবাল ভাই সুজানগর এলেন, সঙ্গে আরো ১৫ জন মুজিব বাহিনী এবং মকবুল হোসেন সন্টুসহ কয়েকজন এফএফ মুক্তিযোদ্ধা। থানা আক্রমণের জন্য আমি আর দুলাল ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসার পর থেকেই পরিকল্পনা করছিলাম। সেই পরিকল্পনার সব বিষয় যেমন, ক’টার সময় আক্রমণ করলে ভালো হবে, বাঙ্কার থেকে শত্রুরা কখন বের হয়, হাতে আঁকা ম্যাপে দেখিয়ে কোথায় কোথায় পজিশন নিতে হবে সব বকুল ভাইকে দেখালাম। সুজানগর থানা এবং তার পাশে সুজানগর হাইস্কুলে তখন অবস্থান করছে রাজাকার ও মিলিশিয়া মিলে প্রায় দু’শত শত্রু। সবকিছু…
-
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ আশরাফ খান কিছুদিন আগেই হাতে পেয়েছি ড. আশরাফ পিন্টু ও মিজান খন্দকার রচিত ২০২১ সালের বই মেলায় পাললিক সৌরভ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘‘সুজানগরের ইতিহাস’’ বইটি। পড়ি পড়ি করে পড়া হয় না। পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠে না। একটু একটু করে পড়ি। ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে। ভালো লাগা বিষয়গুলো আন্ডার লাইন করি। কোনটি নোট নিই। অনেকটা সৌখিন পাঠক আমি। লেখার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। পড়াটা জরুরী। জানার জন্য। না জানলেও ক্ষতি নেই। শিক্ষার প্রধানত দুটি প্রক্রিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক। আমরা অপ্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়নে বেশি ব্যস্ত। অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দায়বদ্ধতায় বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা সুবিধা হলো নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে। সিলেবাস শেষ করতে পারলেই…
-
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা শাহজাদা সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র। ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শাহজাহান ইসলাম খান শাহ সুজাকে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবাদার নিযুক্ত করেন। ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে ঊড়িষ্যা প্রদেশের দায়িত্বও অর্পণ করা হয়। ১৬৩৯-১৬৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিশ বছরের কিছু অধিক সময় ধরে তিনি প্রদেশ দুটি শাসন করেন। শাহ সুজার নিযুক্তির সময় ঢাকা সুবাহ-বাংলার রাজধানী ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি রাজধানী রাজমহলে স্থানান্তরিত করেন । শাহ সুজার শাসনকালে বাংলা ও ঊড়িষ্যা প্রদেশ দুটিতে মোটামুটি শান্তি বিরাজ করছিল; কোন অংশেই কোন বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়নি। প্রকৃত পক্ষে জমিদার…
-
সুজানগরের নামকরণের ইতিহাস
সুজানগরের নামকরণের ইতিহাস পাবনা জেলার সুজানগরের পূর্বনাম ছিল গোবিন্দগঞ্জ। মোগল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালের শেষভাগে তার পুত্রদের মধ্যে রাজ সিংহাসনের দখল নিয়ে যে বিরোধের সূত্রপাত হয় তার ধারাবাহিকতায় যুবরাজ শাহ সুজা আরাকানে পালিয়ে যান। তিনি আরাকানে গমনকালে সুজানগরে ৩ রাত অবস্থান করেন। যুবরাজ শাহ সুজার এই অবস্থানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য এতদঞ্চলের মানুষ এ জনপদের নামকরণ করেন সুজানগর। রাধারমণ শাহা তার ‘পাবনা জেলার ইতিহাস’ গ্রন্থে লিখেছেন, “মোগল আমলে শাহ সুজা একদা ঢাকা গমন সময়ে পদ্মাতীরে এখানে কিয়ৎদিনের জন্য অবস্থান করেন, তখন হইতে এই স্থানের নাম সুজানগরে পরিণত হইয়াছে।” মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের ইচ্ছায় তার ছোটবেলার বন্ধু, ঘনিষ্ঠ সহচর ও প্রধান সেনাপতি…
-
সুজানগর উপজেলার ইতিহাস
সুজানগর উপজেলার ইতিহাস মোগল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় পুত্র ছিলেন বাংলার সুবেদার শাহ সুজা। শাহ সুজার স্মৃতি বিজড়িত সুজানগর পাবনা জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। এটি পদ্মা নদীর তীরবর্তী পাবনা শহর থেকে ২০ কি.মি. পূর্বে অবস্থিত। পাবনা জেলার অন্যতম বৃহত্তম উপজেলা হলো সুজানগর। অতি প্রাচীনকালে তথা বৌদ্ধযুগে সুজানগর অঞ্চল পৌণ্ড্রবর্ধন বিভাগের অধীনে ছিল। সে সময় অধিকাংশ অঞ্চল ছিল জলমগ্ন। পাল ও সেন আমলে এই অঞ্চল বরেন্দ্র ভূমির আওতাভুক্ত ছিল। পাল শাসনামলে করমজা ও বরাট গ্রামের নাম, যশ ও গৌরব প্রচারিত ছিল। মোগল শাসনামলে এই অঞ্চল সুবা বাংলা সরকার, পরগণার আওতাভুক্ত ছিল। ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর রাজশাহী জেলা থেকে পাবনা, শাহজাদপুর, রায়গঞ্জ,…