-
বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বংশ পরিচয়
বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বংশ পরিচয় পাবনার সুজানগর উপজেলায় দুইজন বড় জমিদারের দেখা মেলে। তার মধ্যে একজন তাঁতিবন্দের চৌধুরী জমিদার এবং অপরজন দুলাইয়ের জমিদার আজিম চৌধুরী। তাঁতিবন্দ চৌধুরী জমিদাররা শুধু সুজানগর উপজেলার মধ্যে নয়, পাবনা জেলার মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন। এরা ছিলেন বারেন্দ্র শ্রোত্রীয় ব্রাহ্মণ; এদের পূর্ব উপাধি সান্যাল। এদের আদি নিবাস ছিল চাটমোহর উপজেলার বোঁথর গ্রামে। এ জমিদার বংশের পূর্বপুরুষ রাজবল্লভ চৌধুরী তার মায়ের সঙ্গে শৈশবে এসে তাঁতিবন্দের অদূরে চণ্ডীপুর গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন। পূর্বে তাঁতিবন্দে কুলিন ব্রাহ্মণ ছিল না। পরবর্তীতে উপেন্দ্রনারায়ণ ও তার বংশধরদের সময়ে কুলিন ব্রাহ্মণদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দান করে তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করলে, তারা…
-
উপজেলার ইতিহাস, জমিদার, তাঁতিবন্দ (গ্রাম), তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য, তাঁতিবন্ধ, সুজানগর উপজেলা
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী
জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী ছিলেন ইতিহাসখ্যাত এক হিন্দু জমিদার ও প্রখ্যাত শিকারি। জন্ম: বিজয়গোবিন্দ চৌধুরী আনুমানিক ১৮২৪ সালে, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতিবন্দ ইউনিয়নের তাঁতিবন্দ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম গুরুগোবিন্দ চৌধুরী। তৎকালীন নাটোর কালেক্টরির সেরেস্তাদার উপেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী তাঁতিবন্দের জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেও তার উত্তসূরী বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর শাসনামলেই তাঁতিবন্দসহ আশপাশের এলাকায় তাদের জমিদারিত্বের প্রভাব প্রতিপত্তি ছড়িয়ে পড়ে। জমিদারী: অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রতিভাবান বিজয় গোবিন্দ চৌধুরী অতি অল্প সময়ে জমিদারিত্বের হাল ধরে তাঁতিবন্দসহ আশেপাশের এলাকায় হাজার হাজার বিঘা জমি ক্রয় করে তাঁর জমিদারিত্বের বিস্তৃতি এবং প্রসার ঘটান। মূলত বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর…
-
অধ্যাপক ডা. রুহুল আবিদ এর সাথে সাক্ষাৎ
অধ্যাপক ডা. রুহুল আবিদ এর সাথে সাক্ষাৎ সুজানগর উপজেলা তথা পাবনার কৃতি সন্তান অধ্যাপক ডা. রুহুল আবিদ এর সাথে সাহিত্য সংস্কৃতি এবং সমাজ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নিবেদিত অলাভজনক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিনের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আলতাব হোসেন এর বিশেষ সাক্ষাৎ হয়েছে। আজ (২৪ জুন, ২০২২) ঢাকার গুলশানে পাবনার সুজানগর উপজেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য বিষয়ে এক দীর্ঘ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। “আমাদের সুজানগর” ওয়েব ম্যাগাজিনের সম্মানিত উপদেষ্টা পর্ষদকে সাথে নিয়ে সুজানগর উপজেলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া এবং দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ডা.আবিদ। ডা. রুহুল আবিদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের…
-
পক্ষিরাজের ডানা (১ম পর্ব)
পক্ষিরাজের ডানা (১ম পর্ব) সাইফুর রহমান চৈত্র মাস প্রায় শেষের দিকে। সুজানগরের গাজনার বিলের বিস্তীর্ণ নাবাল অঞ্চল এ সময়টাতে সাহারা মরুভূমির মত শুষ্ক ও উষ্ণ। অথচ ভরা বর্ষায় এই গাজনা বিলের প্রমত্ত উত্তাল ঢেউ ও জলরাশি দেখে কেউ হয়তো বিশ্বাসই করতে চাইবে না যে, গ্রীষ্মে এই বিলের কী এক করুণ পরণতি দৃশ্যমান হয়। যদিও চৈত্র-বৈশাখের খরতাপে অনেক প্রান্তিক কৃষক গভীর নলকূপ গেঁড়ে বোরো ধান জন্মানোর জন্যে সেচ ব্যবস্থাটি চালু রাখেন। কিন্তু তারপরও পেঁয়াজ ও অন্যান্য রবি শষ্যের জমিগুলো বেশিরভাগই বিরান, আবাদহীন ও পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে থাকে বর্ষা নামার পূর্ব পর্যন্ত। তবে এটা দেখে আশান্বিত হতে হয় যে বিরান এই…
-
আমাদের সুজানগর
আমাদের সুজানগর পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের লক্ষ্যে ২০২১ সালে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন “আমাদের সুজানগর” প্রতিষ্ঠিত হয়। এক নজরে আমাদের সুজানগর: প্রতিষ্ঠাকাল: ৪ জুন, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ প্রতিষ্ঠাতা: ইঞ্জিনিয়ার মো. আলতাব হোসেন ওয়েবসাইট: www.amadersujanagar.com ফেসবুক আইডি: www.facebook.com/amadersujanagar2021 ফেসবুক গ্রুপ: www.facebook.com/group/amadersujanagar ফেসবুক পেইজ: www.facebook.com/info.sujanagar ইউটিউব চ্যানেল: www.youtube.com/@amadersujanagar ইনস্ট্রাগ্রাম: www.instagram.com/amadersujanagar টুইটার: www.twitter.com/AmaderSujanagar ই-মেইল: editor.amadersujanagar@gmail.com লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে আদর্শিক ঐশ্বর্যে বিকশিত করা; সুস্থির সমাজ বিনির্মাণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা। সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও শিক্ষা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, প্রচার ও সংরক্ষণ করা; গুণিজনের জীবনী সংগ্রহ, সম্প্রচার…
-
উপজেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে সুজানগর, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সাতবাড়িয়া, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
সাতবাড়িয়া গণহত্যা
সাতবাড়িয়া গণহত্যা সাতবাড়িয়া গণহত্যা পাবনার জেলার প্রথম গণহত্যা। নিহতের সংখ্যার দিক থেকে এটি পাবনার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১২ মে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামবাসীর ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও লুটপাট চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীরা ১২ মে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আক্রমণের কারণ: সাতবাড়িয়া এলাকাটি পদ্মা নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় পাবনা ও রাজবাড়ি জেলা শহরের অসংখ্য মানুষ সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। এমন সংবাদ সেনা ক্যাম্পে দেওয়া হলে পাবনা থেকে বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি সৈন্যরা সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় চৌদ্দটি গ্রামে অভিযান চালায়। বিভিন্ন সূত্র…
-
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস সুজানগর থানা দখল এবং আমার আহত হওয়া ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর। রাতে বকুল ভাই আর ইকবাল ভাই সুজানগর এলেন, সঙ্গে আরো ১৫ জন মুজিব বাহিনী এবং মকবুল হোসেন সন্টুসহ কয়েকজন এফএফ মুক্তিযোদ্ধা। থানা আক্রমণের জন্য আমি আর দুলাল ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসার পর থেকেই পরিকল্পনা করছিলাম। সেই পরিকল্পনার সব বিষয় যেমন, ক’টার সময় আক্রমণ করলে ভালো হবে, বাঙ্কার থেকে শত্রুরা কখন বের হয়, হাতে আঁকা ম্যাপে দেখিয়ে কোথায় কোথায় পজিশন নিতে হবে সব বকুল ভাইকে দেখালাম। সুজানগর থানা এবং তার পাশে সুজানগর হাইস্কুলে তখন অবস্থান করছে রাজাকার ও মিলিশিয়া মিলে প্রায় দু’শত শত্রু। সবকিছু…
-
চরদুলাই ফাউন্ডেশন
চরদুলাই ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনটি চরদুলাই গ্রামের ঐতিহ্য রক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ অবক্ষয় রোধ, বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচী প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কাজ করে আসছে। ২০২০ সালে চরদুলাই ফাউন্ডেশনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। প্রতিষ্ঠাতা: সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মো. রাকিবুল ইসলাম জনি। প্রধান কার্যালয়: চরদুলাই, দুলাই, সুজানগর, পাবনা। পটভূমি: সংগঠনটি গড়ার জন্য মো. রাকিবুল ইসলাম জনি প্রথমে সজল আহসান সৌরভ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান এবং অনিক হোসেন এর সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পরে দুলাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জনাব মো গোলাম রসুল এবং ড. জহুরুল কামাল ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক জনাব কে এম ফজলুল হক এর সাথে আলোচনা করে…
-
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ আশরাফ খান কিছুদিন আগেই হাতে পেয়েছি ড. আশরাফ পিন্টু ও মিজান খন্দকার রচিত ২০২১ সালের বই মেলায় পাললিক সৌরভ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘‘সুজানগরের ইতিহাস’’ বইটি। পড়ি পড়ি করে পড়া হয় না। পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠে না। একটু একটু করে পড়ি। ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে। ভালো লাগা বিষয়গুলো আন্ডার লাইন করি। কোনটি নোট নিই। অনেকটা সৌখিন পাঠক আমি। লেখার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। পড়াটা জরুরী। জানার জন্য। না জানলেও ক্ষতি নেই। শিক্ষার প্রধানত দুটি প্রক্রিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক। আমরা অপ্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়নে বেশি ব্যস্ত। অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দায়বদ্ধতায় বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা সুবিধা হলো নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে। সিলেবাস শেষ করতে পারলেই…
-
তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ
তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ পাবনার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের খয়রান গ্রামটি একটি প্রসিদ্ধ ও ঐহিত্যবাহী গ্রাম। গ্রামের তালুকদাররা ছিল বেশ প্রভাবশালী ও বিত্তশালী। প্রায় ২০০ বছর পূর্বে তালুকদারদের পূর্বপুরুষ খয়রান তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠাতা: তালুকদার বংশের হাজি মো. মহসিন উদ্দিন তালুকদার (মহসিন মুন্সি) এলাকার ইসলাম ধর্মের লোকদের ইবাদতের জন্য খয়রান তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন খয়রান গ্রামের আশেপাশে উলাট, কাদোয়া, গাবগাছি গ্রামে কোনো মসজিদ ছিল না। তাই নামাজ পড়ার জন্য মুসল্লিরা এই মসজিদে আসতেন। পটভূমি: খয়রান মসজিদ স্থাপনের পূর্বে এই এলাকার মুসলমানরা শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য দুলাইয়ের জমিদার আজিম…