• ছড়া,  সাহিত্য

    মধু মাস, বাদাইর জোলা, মেহের আলী, সব শ্রমিকের গড়া

    মধু মাস মো. শরিফুল ইসলাম   জৈষ্ঠ্য মাস মধু মাস গাছে পাকে আম, সবুজ পাতার ফাঁকে আছে কালো পাকা জাম। কাঁঠাল পেকে সুবাস ছড়ায় মৌ মৌ করে বাড়ি, লিচু পেকে টকটকে লাল গাছে সারি সারি। তালগাছে তাল ধরেছে খাইতে লাগে ভারী, পেয়ারা গাছে বের হয়েছে নতুন নতুন কুড়ি। লেবু,কলা,আতা আনারস খাইতে লাগে বেশ, মধু মাসে ফলে ঘেরা আমার বাংলাদেশ।   বাদাইর জোলা আমাগরে বাদাইর জোলায় আইছে নয়া পানি, রাহাল বেটা পার হচ্ছে গরুর লেজ টানি। নয়া পানি দেখে বিটীরা আইছে জোলার ধারে, ছাওয়ালপাল সব লাচ্ছে দেহো একটু পরে পরে। জালিরা সব মাছ ধরবে করছে নাওয়ের যতন, গাসুরিয়া ঘাস মাথায় করেছে…

  • শূন্য-তরী
    ছড়া,  জাহাঙ্গীর পানু (ছড়া),  সাহিত্য

    শূন্য তরী, বিচ্ছিন্ন পঙক্তিমালা, স্বপ্ন সারথি, ইচ্ছে ঘুড়ি

    শূন্য তরী জাহাঙ্গীর পানু   যাচ্ছে সময় যাচ্ছে দিন মাস পেরিয়ে বছর যায় ভালবাসার শূন্য তরী একলা হাতে বৈঠা বায়। কাল যে মনে রাধার বাস আজ সে মনে সর্বনাশ কৃষ্ণ ডাকে বাশির সুরে দুপুর বেলার তপ্ত রোদে। ফাগুন হাওয়া থমকে যায় কোকিলের সুর বিহনে নদীর বুকে ঢেউ থেমে যায় অবাক চেয়ে দূর গগণে। দেখবো না আর চাঁদের হাসি শরতের নিশিত রাতে। জীবনে আর ফুটবে না ফুল ফাগুনের কোনো প্রাতে।   বিচ্ছিন্ন পঙক্তিমালা গভীর রাতে অন্ধকারে পথচলার বাতি বন্ধুর পথে ছুটে যাওয়া জীবন চলার সাথি। চলেছি পথে একলা মনে তুমিও কিন্তু তাই। সুযোগ পেয়ে সেদিন কেনো করেছিলে বড়াই? এক তরীতে ভাসবো…

  • কতদিন-দেখি-না-মাকে
    ছড়া,  সাহিত্য

    কতদিন দেখি না মাকে, খঞ্জনা, মাকে মনে পড়ে

    কতদিন দেখি না মাকে জিন্নাত আরা রোজী   খোকা কোথায় যাস? এখনই যে সন্ধ্যা নামবে! ঐ নদীর বাঁকে,ঝোপের পারে যেথায় আমার মা ঘুমিয়ে আছে। ও খোকা যাসনে ওখানে তুই গেলে মা কষ্ট পাবে, বলবে, বাবা ঘরে ফিরে যা, আমি আছি তোরই সাথে। মাকে দেখিনি ঢের দিন, বড় ইচ্ছে জাগে, মাকে দেখবো নয়ন ভরে দু’টি কথা বলবো নিরবে, মা কেন পালালো বলবে আমারে? আমাকে রেখে মা কেমনে থাকো আড়ালে? আমি হারিয়ে গেলে তবে কি আসবে ফিরে? না দাদু, ওমন কথা বলো না মোটেই তোর জন্যই যে আছি বেঁচে, পরানে আমার বড় ব্যাথা জাগে তোর মাকে হারিয়ে। তুই যে কত আপনার কেন…

  • বারো-মাসের-পদাবলী
    ছড়া,  সাহিত্য

    বারো মাসের পদাবলী

    বারো মাসের পদাবলী জাহাঙ্গীর পানু   বৈশাখ মাসে ঝড় বৃষ্টিতে আম কুড়ানোর হরষে, কাঁচা আমের আচার হয় টক ঝাল মিষ্টির পরশে।   জৈষ্ঠ্য মাসে দেখা যায় নানান ফলের বাহার, মধু মাসের মিষ্টি ফলে করে সবাই আহার।   আষাঢ় মাসে রিমঝিম শব্দে বৃষ্টি মুখর সারা দিন, শিশু কিশোর নারী পুরুষ ঘরে বন্দী পরাধীন।   শ্রাবণ মাসে ঢল নামে নদী নালা ভরপুর, বন্যার পানি ধেয়ে আসে গ্রাম শহর টইটুম্বুর।   ভাদ্র মাসে ভরা বন্যায় মাছ ধরে জেলেগণ, নানা রকম মাছের স্বাদে রসনা বিলাসে ভরে মন।   আশ্বিন মাসে নদীর তীরে কাশ ফুলের মেলা, মেঘমুক্ত নীলাকাশে ভাসে সাদা মেঘের ভেলা।   কার্তিক মাসে…

  • জগা-ও-পিসি
    ছড়া,  সাহিত্য

    জগা ও পিসি

    জগা ও পিসি জিন্নাত আরা রোজী   জগার পিসি নাইকো বাড়ি জল আনতে কলসি কাঁখে গেছে নদীর বাঁকে।   সারা বাড়ি ঘুরে জগা মিছেই বসে কাঁদে। পাশের বাড়ির মিনতি এসে জগার কানে বলে কাঁদছো কেন মিছে? পিসি নদীর বাঁকে।   আলাভোলা জগা তখন ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসে। সারা বাড়ির উঠোন জুড়ে ধান শালিক আর চড়াই পাখি নাচে জগা তাহার পিছে পিছে ছোটে।   পিসি এসে বলে কিরে বাবা কাঁদছিস কেন মিছে? পাশের ঘরেই পিসেমশাই ফঁসফঁসিয়ে নাগ ডেকে ঘুমায় দেখতে পাচ্ছিস না চোখে?   সারাটি কাল এমন বোকা হলে চলবি কেমন করে? বদমাশ আর চতুররেতে জগত গেছে ভরে তাদের মাঝে থাকতে হলে…

  • চাওয়ার-কিছু-নাই
    ছড়া,  পথিক জামান (ছড়া),  সাহিত্য

    চাওয়ার কিছু নাই, ঘুষ

    চাওয়ার কিছু নাই পথিক জামান   নেংটি পরে ঘুরে বড়ায় মুখেতে নাই দাড়ি, বিয়ের সময় পাত্রী খোঁজে পর্দানশীল নারী। মা হেসে কয় আমার ছেলে মাটির মতো শান্ত, আনবো ঘরে ফর্সা মেয়ে জেনে আদ্যোপান্ত। যে জন দেবে মোটা গয়না অনেক টাকা পণ, অনেক ভালোবাসবে তারে আমার আপনজন। মেয়ের বাবা হেসে বলেন নামাজ পড়ে ছেলে? মাঝে মধ্যে পড় নামাজ যদি সময় মেলে। তবে ভাইজান একটা কথা আমার ছেলে ভালো, যদি একটু বাড়িয়ে দেন, হোকনা মেয়ে কালো। ছেলে নেশা করে না- কি?. জান্তেতো নাই মানা, আর কী করে ছেলের বাবা? পারিস যদি জানা। ছেলের মায়ে বললো রেগে মুখটা করে বাঁকা, নামাজ রোজায় ঢিলা…

  • ছড়া,  পথিক জামান (ছড়া),  সাহিত্য

    আষাঢ়ের বৃষ্টি, মশা একটা আজব প্রাণী, যতই বুদ্ধি খাটাস, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি

    আষাঢ়ের বৃষ্টি পথিক জামান   টিপ টিপ ঝমঝম আষাঢ়ের বৃষ্টি, দুই চোখে ঘুম ঘুম অদ্ভুত মিষ্টি। ঘ্যাঙ ঘ্যাঙ ডাকে ব্যাঙ একটানা ধুমছে, ভেজা হাঁস দল বেঁধে তীরে বসে ঝুমছে। ছোটো ছোটো ছেলে মেয়ে জলে ভিজে ছুটছে, মনে হয় তারাগুলো আকাশেতে ফুটছে। কবি মন জেগে ওঠে বৃষ্টির তালেতে, ছোটো মাছ ধরা পড়ে জেলেনীর জালেতে। পাড়া গাঁও মেতে ওঠে নানা রূপ রঙেতে মাঝি গায় ভাটিয়ালি কত রঙে ঢঙেতে।   মশা একটা আজব প্রাণী মশা একটা আজব প্রাণী জ্বালায় সারাক্ষণ, সকাল সাঁঝে কানের কাছে করে যে ভনভন। রাগের চোটে মাঝে মধ্যে দু’ চার থাপড় মারি, প্রবীণ মানুষ এখন কিআর মশার সাথে পারি? লক্ষ্য…

  • প্রণোদনা
    ছড়া,  সাহিত্য

    প্রণোদনা

    প্রণোদনা জাহাঙ্গীর পানু   সকাল বেলা চেয়ারম্যান সাহেব বলল সবার শানে। প্রণোদনা দেবো আমি বিলিয়ে সবার মাঝে। কেউবা পাবে নগদ টাকা কেউবা পাবে চাল। কেউবা আবার কাপড় চোপর কেউবা পাবে ডাল। মনির বাপ শুনিয়া কহে প্রণোদনা কী? সব বুঝিয়া বলল শেষে রিলিফের মতোনই। চামচারা কয় কাগজপত্র লাগবে সবারই। ভোটার আইডি বয়স্ক কার্ড যার যা আছে নি। কাগজপত্র দিল সবাই চেয়ারম্যানের হাতে। খরচাখরচ হলো কিছু ফটোকপিতে। চামচারা কয় উপজেলায় খরচাপাতি আছে। একশত করে টাকা সবাই দাও আমার কাছে। সপ্তাহ গিয়ে মাস এলো দুই মাস গত হলো। প্রণোদনা পায় না কেহ ক্ষুধায় কষ্ট পেলো। চামচারা কয় অফিসে কাজ যে আছে খুব। দেরি…

  • কাঁচা-আমের-যাদুর-খেলা
    ছড়া,  রাতুল হাসান জয় (ছড়া),  সাহিত্য

    কাঁচা আমের যাদুর খেলা, মায়ের আদর, পুতুল বিয়ে

    কাঁচা আমের যাদুর খেলা ~ রাতুল হাসান জয়   একটা ছড়া লিখবো বলে কলম নিতেই হাতে, খোকন এসে কান্না ধরে করছে ব্যথা দাঁতে। ক’দিন হলো দাঁত নড়েছে নেয়না কিছু পাতে, নামতা পড়া আটকে আছে সাত এক্কে সাতে। কি করা যায় মস্ত বিপদ কান্না লাগে আঁতে, হঠাৎ করেই পড়লো মনে আম এনেছি রাতে। কাঁচা আমের যাদুর খেলা তুলে দিতেই মুখে ফোকলা দাঁতে বললো খোকন আমটা ভীষণ চুকে।   মায়ের আদর দোলনা মাঝে কাগজ ফুল ঘূর্ণি ঘোড়া ঘুরছে বেশ, ঝুনঝুনিটা হাতের পাশে খোকার তবু নেই আয়েশ। দিদির কোলে যাচ্ছে না সে খাচ্ছে না তো দুধ পানি, দাদি এসেই গল্প বলে এক যে…

  • রোদ-বৃষ্টির-খেলা
    ছড়া,  জাহাঙ্গীর পানু (ছড়া),  সাহিত্য

    রোদ বৃষ্টির খেলা

    রোদ বৃষ্টির খেলা জাহাঙ্গীর পানু   আষাঢ় শ্রাবণ বর্ষা আসে           গ্রীষ্ম নেয় বিদায়।খালবিল ভরে উঠে       পানির ঝর্ণা ধারায়।। বাদল মুখর সারাটি দিন        চুপটি ঘরের কোণে।।কাজলা দিদি বসে একা          নকশীকাঁথা বুনে।। এ পাড়াতে মেঘ গুড়গুড়           নামছে কত বৃষ্টি।ও পাড়াতে চঞ্চলা মন            রঙধনুতে দৃষ্টি।। ঝনাঝনাঝন বৃষ্টি নামে        একটু নেমেই শেষ।হঠাৎ আবার ঝলমলে রোদ    আহা! কি মজা বেশ।। হঠাৎ করেই বৃষ্টি আসে        ঘর বাড়িহীন পথে।চলতে পথে পথচারী       থামছে গাছের তলে।। কদম ফুলের পাপড়ি ছিড়ে      ছিটিয়ে পথের ধারে।আলতা মেখে বালিকারা         নাচে ঘুঙুর পায়ে।। খোকা বাবু ছাতা মাথায়        চলছে পথের বাঁকেডোবায় জলে ব্যাঙের দল        সুর মিলিয়ে ডাকে।। কাঁদা মাখা ফাঁকা মাঠে            নামছে বৃষ্টি ঢল।ফুটবল খেলায়…

error: Content is protected !!