-
অর্চনা, মেঘলাকাশে রঙধনু
অর্চনা ফজলুল হক আর অপেক্ষা না দেখায় না হয় এগিয়ে যাক কথা ব্যথাময় ব্যথার আকাশে ধূসর হোক বেদনার ছাপ, চোখের জলেই বোঝাপড়া হোক বেদনা কার কতটুকু। প্রথাসিদ্ধ নিয়ম ভেঙে হৃদয় পোড়া শব্দ যদি নির্দ্বিধায় ঠোঁটে উচ্চারিত হয় একবার কী করবে তখন, ভেবেছ কি? সময় দিলাম ভাবো,আরো ভাবো…. তারপর না হয় জানিয়ে দিও আর কত অপেক্ষা শেষে ভিড়বে তরী মোহনায়? সুগভীর চোখ থেকে যদি দৃষ্টি সরাতে না পারি নেশাতুর চোখে যদি স্বপ্ন আঁকি, সমাজবিধির বেড়াজাল ভেঙে পারবে কি বেরিয়ে আসতে? বসন্ত বিলাসে যদি কথায় কথায় রাত কেটে যায় রাতের গভীরে ফের রাত সূচনা হয়, জীবনের খোলস বদলে পারবে কি সে রাতের…
-
মানুষ হয়ে উঠা, আলো-আঁধারি
মানুষ হয়ে উঠা ফজলুল হক তুমি তারুণ্য দীপ্ত রুদ্ধ দুয়ার ভেঙে আলোর মশাল জ্বালাতে চাও? একটু পিছনে তাকাও দেখতে পাবে ভুল পথে ছড়িয়ে আছে অমীমাংসিত কিছু বিস্মৃতি। আরো একটু পিছনে দ্যাখো সময়ের কৃষ্ণ গহ্বরে কিছু অনভিপ্রেত অভিজ্ঞতার মৃদু গন্ধ অনুভূত হবে। ব্যর্থতার এসব ভুল গল্প থেকে নির্ভয়ে বেরিয়ে এসো, কী দেখতে পাচ্ছো? চলার পথটা সংকোচিত করা হচ্ছে, তথাকথিত মানুষরুপী দানবেরা দুর্বলদের বাকস্বাধীনতা ও অধিকার আকণ্ঠ গ্রাস করছে জগদ্বাসী অসহায় কাঁদছে; চাওয়া-পাওয়ার মাঝে নিদারুণ অসন্তুষ্টির হাটবাজার বসেছে প্রতারিত হচ্ছে ভাবাবেগ মানচিত্র কে খামছে ধরছে উলঙ্গ সমৃদ্ধ শকুনের দল, নৈতিকতাকে পরাজিত করবার নির্লিপ্ত খায়েশে উদ্যমতার পায়ে শিকল পরানোর অপচেষ্টায় তারা প্রমত্ত,…
-
শিরোনামহীন সম্পর্ক, মনের বীজতলা
শিরোনামহীন সম্পর্ক ফজলুল হক কিছু সম্পর্ক আজীবন শিরোনামহীন থেকে যায় দীর্ঘশ্বাসে পোড়ে ঘরহীন ঘরের আঙিনা; যাপিত জীবনের আয়নায় মুখ দেখে ইদানীং নিজেকে বড্ড অচেনা মনে হয়। বন্ধপ্রায় মনের দরজা খুলে তৃষ্ণার্ত দুপুরে যুবতি জলের ঘ্রাণ হৃদয়ঙ্গম করি, জলকেলি জলে পা ভিজিয়ে স্বপ্ন বোনার স্বপ্ন দেখি। জলসিঁড়ি ভেঙে তুমিতো পারো সমুদ্র অবগাহনে মেতে উঠতে, আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অপরিণামদর্শী প্রেম সীমাহীন সীমানায় বেপরোয়া ছুটে চলে শিরোনামহীন মুহূর্তগুলো সম্পর্কের বাইরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে, যেনো হৃদয়ের কতো কাছে বসবাস। চোখ বন্ধ করে চলে যাই আদিম পথে মনে হয় তুমি আমি ওখানেও পথ হেঁটেছি যুগপৎ। মৃত্যুর পথ ধরে হেঁটে হেঁটে কান্নার ধ্বনি শুনে শিউরে উঠি…
-
নীল সমীকরণ, মেঠো গন্ধ
নীল সমীকরণ ফজলুল হক আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত রাত ধূসর দৃষ্টির উপত্যকায় নেমেছে নিকষ আঁধার; জানালার গ্রীলে মুখ গুঁজে দাঁড়িয়ে, কদম ফুলের পাপড়ি ধোয়া বৃষ্টিজল টিপটপ শব্দে টিনের চালে অনিবার পড়ছে। নীলহীন বদলে যাওয়া আকাশটা স্থির একা কোথাও নেই জোনাকির আলো না আছে পাখিদের কূজন, সঙ্গী বলতে মাঝেমধ্যে অদূরে ঝিঁঝিপোকার ক্ষীণ ডাক অনুভব করছি। রাত এগিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারের খেয়ায়, একাকিত্বের অতল গহীনে ডুবে যাচ্ছি একটু একটু করে; তৃষ্ণালু চোখের বিদগ্ধ পাতায় স্মৃতিরা সাড়ম্বর কবেই শুকিয়ে গেছে অশ্রু চোয়ানো বেওয়ারিশ লোনা জল, বুকের ভেতর বয়ে যাওয়া বেসামাল উত্তাল ঢেউ মিশে গেছে বার্তাহীন ছেঁড়া পথে। জানি না,সে এখনও আষাঢ়ে বৃষ্টিতে ভিজে কিনা; মুঠোভরা…
-
নির্জলা উপবাস, চন্দ্রমুখী, তোমার ভালোবাসা
নির্জলা উপবাস ফজলুল হক বৃষ্টি থেমে গেছে অনেক আগেই কার্ণিশে জল ঝরছে.. মন করিডোরের অন্ধগলির দেয়াল ভাঙা পথে নিমগ্ন ভাবনার দ্বারে শীস দিয়ে যায় ধূসর স্মৃতিরা। রাত্রির আকাশে হেঁটে হেঁটে ইচ্ছেরা ক্লান্ত চাঁদের দূরত্ব রেখায় আঁকে ক্ষয়িত জীবনের আল্পনা। জানি না গন্তব্য কোথায় তবুও পথ খোঁজার শেষ নেই; অন্তর্গৃহে সুখের ছায়া স্পর্শে নয় মরা নদীর শূন্যতার শেষ ঠিকানা অবধি অবিশ্রাম তোমাকে খুঁজেছি, খুঁজেছি– গাঙচিল ওড়া উদার আকাশের নীচে বুড়িগঙ্গার জোয়ার জলে নায়তে আসা অজস্র রমনীর ভিড়ে। কী এক অদ্ভুত বাসনায় আচমকা গোত্র বদলে ফেলেছো বদলেছে উচ্ছ্বাস, তোমার আকাশেও ভিন্ন রঙের মেলা। হেঁসেলের ধোঁয়া, পোড়া মাটির গন্ধ তাল পাখার বাতাস–…
-
প্রগাঢ় বৈরিতা
প্রগাঢ় বৈরিতা ফজলুল হক নিঃশব্দসঞ্চারীর মতো চলে গেলো আর একটি পূর্ণিমা রাত কী এমন সখ্য তোমার নিরবতার সাথে? যেনো শীতমাখা অলস রাতের শেষ প্রহরের নিমগ্নতা; জোছনা এসে দাঁড়ায়নি আমার অভিমানী কার্ণিশে আমিও খুঁজিনি ফেরারি চাঁদমুখ রাতের আকাশে। ফেরার ছাড়পত্র হাতে থমকে দাঁড়িয়ে কিশোরী নদীর ভুল পাড়ে, লোনা অভিশাপে ছেঁড়া পাল দিশাহীন মাঝি-মাল্লা। ঝরা ফুলের মতো কিছু টুকরো খবরের বাসি গন্ধ অগোচরে বিলীন হলো কালের উঠোনে; যুবতী নদীর মোহনার বাঁকে নোঙর ফেলেছে বণিক সওদাগর সওদার হাতবদল চলছে হরদম। প্রস্ফুটিত যে মুখের অবয়বে লেখা ছিলো জীবন দর্শন নিরবতার মলাট খুলে বুঝিয়ে দিলে কৃত্রিমতার প্রগাঢ় প্রণয় তোমার। এ এক ভিন্ন আকাশ তলে…