রক্তাক্ত-স্বাধীনতা
কবিতা,  সাহিত্য

রক্তাক্ত স্বাধীনতা

রক্তাক্ত স্বাধীনতা

আনিছুর রহমান মিলন

‘৭১-এ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ডাকে
বাঙালির বিজয়ের স্পৃহা জাগে গিরি, মরু, মাঠ, ঘাট, পথ-প্রান্তর ও নদীর বাঁকে বাঁকে।

৫৬ হাজার বর্গমাইল সমান চওড়া ছিল বঙ্গবন্ধুর বুক
আজও তাই লাল সবুজের পতাকার মাঝে ভেসে উঠে প্রিয় সে মুখ।

দুইশ বছরের ব্রিটিশ শাসন শেষে ১৯৪০-এ ‘লাহোর প্রস্তাব’
মুসলমান অধ্যুষিত দুটি অঞ্চল হবে দুটি ভাগ।

ষড়যন্ত্র ও কূটচালের বীজ হলো বোপন
হিন্দুস্তান ও পাকিস্তান গঠন করল মিটিং হলো গোপন।

পূর্ব পাকিস্তানকে নিয়ে খেলা হলো শুরু
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ছিলেন সকল নাটের গুরু।

১৯৪৮ সালে জিন্নাহ সাহেব চলে এলেন ঢাকা
ঘোষণা দিলেন উর্দু হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।

ক্ষোভে উত্তাল বীর বাঙালি দিলেন আন্দোলনের ডাক
১৯৫২-এর ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রাণ দিলেন তরুণ এক ঝাঁক।

অবশেষে ১৯৫৬ সালে এলো স্বীকৃতি
বাংলা হবে বাঙালির ভাষা রয়ে গেল রক্তাক্ত স্মৃতি।

১৯৫৮-তে আইয়ুব খান নিলেন ক্ষমতা
সব কিছুতেই বৈষম্য, ছিল না সমতা।

শোষণ, নিপীড়ন, বৈষম্য আর বঞ্চনা
বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬-তে দিলেন ৬ দফা ঘোষণা।

পশ্চিমের নেতারা করলেন ষড়যন্ত্র
আগরতলা মামলায় ফাঁসানোর মূলমন্ত্র।

৬৯-এর আন্দোলনে প্রাণ দিলেন মতিউর ও আসাদ
জীবন দিয়ে গড়ে গেলেন আন্দোলনের প্রাসাদ।

অবশেষে বিদায় নিলেন আইয়ুব খান অশ্রু সিক্ত তার হিয়া
ক্ষমতার মসনদে উঠে বসলেন সামরিক জান্তা জেনারেল ইয়াহিয়া।

দিনটি ছিল ১৯৬৯ সালের ২৫শে মার্চ
ঠিক দু’বছর পর নেমে এলো জঘন্যতম কালোরাত।

১৯৭০ সালের ৭ই ডিসেম্বর দিলেন নির্বাচন
সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল বাঙালি, বিজয় করবে উদযাপন।

ইয়াহিয়া লারকানায় পাখি শিকারে ভূট্টোকে নিলেন ডেকে
নতুন ষড়যন্ত্রের নীলনকশা সম্ভবত শুরু সেখান থেকে।

৩রা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ঢাকায়
অধির আগ্রহে বাঙালি তখন আছে উন্মাদনায়।

১লা মার্চ ইয়াহিয়া অধিবেশন করলেন বাতিল
হিসাব নিকাশ উলটে তখন হয়ে গেল জটিল।

বাঙালির চাপা ক্ষোভের আগুন রুপ নিল দাবানলে
পূর্ব বাংলা তখন থেকে বঙ্গবন্ধুর কথায় চলে।

৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু দিলেন স্বাধীনতার ডাক
মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে নামছে মানুষ ঝাঁক ঝাঁক।

৯ই মার্চ মাওলানা ভাষানী দিলেন ঘোষণা
দুই পাকিস্তানে করতে হবে আলাদা শাসনতন্ত্র রচনা।

ইয়াহিয়া টিক্কা খানকে দিয়ে গণহত্যা করলেন সূচনা
২৫শে মার্চ কালো রাত্রির কথা বাঙালি ভুলবে না।

মধ্য রাত্রির পরে ইপিআরে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা
২৬শে মার্চ তাই বাংলার হলো স্বাধীনতার রচনা।

নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে গেল ত্রিশ লক্ষ প্রাণ
দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের দামে এলো কাঙ্খিত বিজয়
বীর বাঙালি রেখেছে বঙ্গবন্ধুর কথা, রেখেছে বাংলাদেশের মান।

আরও পড়ুন কবিতা-
বিষণ্ন বাসন্তী বাংলা
তিতাস নদীর পাড়ে
আকাশে ডানা মেলে
দাঁড়িয়ে আছি ভুল দরজায়

 

ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

রক্তাক্ত স্বাধীনতা

Facebook Comments Box

‘আমাদের সুজানগর’ সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত একটি অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংগঠন। সংগঠনটি সুজানগর উপজেলার কবি-সাহিত্যিকদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে নিয়মিত ম্যাগাজিন প্রকাশ, বইমেলা ও সৃজনশীল মেধা বিকাশে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন আয়োজন করে আসছে। এছাড়া গুণিজনদের জীবন ও কর্ম নিয়ে ধারাবাহিক লাইভ অনুষ্ঠান ‘অন্তরের কথা’ আয়োজন করে থাকে। ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের মুখপত্র হলো ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিন, যা সুজানগরের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ, গুণিজনদের জীবন সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রচার করে থাকে। এছাড়া সুজানগর উপজেলার কবি, সাহিত্যিক ও লেখকদের লেখা কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি প্রকাশ করে থাকে। ওয়েব অ্যাড্রেস: www.amadersujanagar.com মেইল অ্যাড্রেস: editor.amadersujanagar@gmail.com

error: Content is protected !!