মো. হাতেম আলী
মো. হাতেম আলী ১৯৭২ সালের ১০ মে, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত মানিকহাট ইউনিয়নের বিলক্ষেতুপাড়া গ্রামে এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
পারিবারিক জীবন: মো. হাতেম আলীর পিতা মৃত সেরাজ উদ্দিন এবং মাতা মৃতা হাজেরা বেগম। তিনি পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে চতুর্থ।
স্ত্রীর মিসেস হোসনেয়ারা বেগম (হাসি)। তাদের সংসারে তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
প্রথম সন্তান মো. হাসানুজ্জামান (টুটুল) সিআরপি সাভার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে ফিজিওথেরাপিতে অনার্স শেষ করে সেখানেই চিকিৎসক হিসাবে যোগদান করে। বর্তমানে পাবনা ডায়েবেটিস হসপিটালে সিআরপি শাখায় চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত আছে। দ্বিতীয় সন্তান মো. হারুন উর রশিদ (ঝন্টু) মেকানিক্যালে বি,এস,সি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে চট্রগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে। বর্তমানে সে ঢাকায় একটি গবেষণা প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। তৃতীয় সন্তান মো. হাসিবুল হাসান (স্বাধীন) পাবনা পলিটেকনিক কলেজে ডিপ্লোমা ইন মেকানিকাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করছে। চতুর্থ সন্তান ফাহমিদা সুলতানা (রিতু) পাবনা সরকারি মহিলা কলেজে পড়াশুনা করছে।
শিক্ষা জীবন:ছোটবেলায় বাবা মারা যাওয়ায় পড়াশোনার প্রতি পরিবারের তেমন কেউ চাপ প্রয়োগ করেনি। তার বড় ভাই ছয়জন মানুষের সংসার সামলাতে বেশ হিমসিম খাচ্ছিল, এজন্য তাদেরক তেমন পড়াশুনার প্রতি উৎসাহ দেয়নি।
মো. হাতেম আলী যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান তখন বয়স প্রায় দশ বছর। নিজের ইচ্ছাতেই বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি পড়াশুনার প্রতি আগ্রহী ছিলেন এবং যে কোনো বিষয় একবার পড়েই বা শুনেই আয়ত্ত করতে পারতেন। তিনি ভিটবিলা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলী হয়ে ক্ষেতুপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। এরপর আবার বদলি শেষে মমিনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। তিনি ঐ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৬৫তম বৎসরে এসে প্রথম প্রাথমিক বৃত্তি পান।
আরও পড়ুন জাহাঙ্গারীর পানু
প্রাথমিক শিক্ষা শেষে বোনকোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এখান থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শেষ করে মালিফা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলি হন। উক্ত বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৭ সালে এসএসসি তে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। সব শ্রেণিতে ফার্স্ট বয় ছিলেন। ১৯৮৯ সালে সাতবাড়িয়া মহাবিদ্যালয় থেকে আইএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর তাঁর লেখাপড়া বন্ধ হয়।
কর্ম জীবন: মো. হাতেম আলীর কর্ম জীবন শুরু হয় ১৯৯৩ সালে পাকিজা গার্ডেন প্রিন্ট শাড়ীর কারখানায় ডিজাইনার হিসাবে। কর্মের ফাঁকে আবার পড়াশুনাও শুরু করেন। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৯৬ সালে বিএসএস পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেন। কিন্তু তখনকার সময়ে পরীক্ষা চলতো প্রায় দেড় থেকে দু’মাস। কর্মস্থল থেকে ছুটি না পাওয়ায় বিএসএস পরীক্ষা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হন। ১৯৯৯ সালে কম্পিউটার গ্রাফিক্স ডিপ্লোমা করেন। সেই থেকে অদ্যবদি চট্রগ্রামস্থ টি কে গ্রুপে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসাবে কর্মরত আছেন।
অভিনয়:তাঁর শখ ছিল নাটক করা,গান গাওয়া, ছবি আঁকা আর মাছ ধরা। গ্রাম্য থিয়েটারে প্রায় পনেরটা মঞ্চ নাটকে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে ভিখারির ছেলে,চাঁদ কুমারী চাষার ছেলে,কাজল রেখা,বেঈমানের চক্রান্ত,আপন দুলাল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
লেখালেখি:গান, কবিতা ও প্রবন্ধ লেখার অভ্যাস ছাত্র জীবন থেকেই। ১৯৯৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাংসারিক ঝামেলায় প্রায় বন্ধই ছিল। এরপর আবার লেখালেখি শুরু করেন।
প্রকাশিত গ্রন্থ:
- লাল সবুজের কাব্য (যৌথ); প্রকাশ: ২০১৯ খ্রি.
- দ্রোহে দৃপ্ত পদাবলী (যৌথ); প্রকাশ: ২০২০ খ্রি.
- আলো ভাঙার খেলা (যৌথ) ; প্রকাশ: ২০২০ খ্রি.
- বৈঠা ঝিলিক (যৌথ); প্রকাশ: ২০২০ খ্রি.
- একক কাব্যগ্রন্থ ‘আলো ছায়া’ নিয়ে কাজ করছেন।
সম্মাননা:
- ২০১৯ সালে ‘বাংলা কাব্য পরিবার’ ঢাকা আয়োজিত কবি লেখক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে ‘কাব্য প্রেমিক’ উপাধি দিয়ে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে।
- ২০২০ সালে ‘কলম সৈনিক সাহিত্য পরিবার’ ঢাকা আয়োজিত কবি লেখক ও সাহিত্যিক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে কবি সম্মাননা ব্যাজ কলম ও ‘কলম সৈনিক’ উপাধি দিয়ে একটি সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে।
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে