মো: রকিবুল হাসান
মো: রকিবুল হাসান ১৯৯৩ সালের ১৪ এপ্রিল (১লা বৈশাখ ১৪০০ বঙ্গাব্দ), পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত ভায়না ইউনিয়নের মঠপাড়া গ্রামে নানার বাড়ি জন্মগ্রহণ করেন । নানা উপজেলার শিক্ষাবিদ নূরনবী মন্ডল। শিক্ষা সনদপত্র অনুযায়ী তাঁর জন্ম তারিখ ১৫ জুন, ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দ।
পারিবারিক জীবন: মো: রকিবুল হাসান ভায়না ইউনিয়নের ভায়না গ্রামের মো. আব্দুর রশিদ প্রামানিক ও মোছা. রুবি খাতুন এর তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বড় ভাই রবিউল আলম এবং ছোট ভাই রাশেদুল হক।
শিক্ষা জীবন: পারিবারিক ভাবে প্রথম শুরু হলেও গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ব্র্যাক স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত এবং সুজানগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে মাধ্যমিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর পাবনা কলেজ-এ উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন এবং একই সাথে কৃষি কলেজে ভর্তি হন। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষ ডিপ্লোমা পাশাপাশি চালু রাখলেও দ্বিতীয় বর্ষ আর শেষ করতে পারেননি। অবশেষে ডিপ্লোমাতেই সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেন এবং ২০১৪ সালে জাকিয়া হাবিব কৃষি কলেজ থেকে কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী অর্জন করেন এবং চাকরির পাশাপাশি ২০১৮ সালে ঈশ্বরদী সরকারি এটিআই কলেজ থেকে কৃষিতে ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করে আপাতত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি টানেন।
আরও পড়ুন মোহাম্মদ আবিদ আলী
কর্ম জীবন: মো. রকিবুল হাসান ২০১৪ সালে ডিপ্লোমা শেষে করে ফলাফলের পূর্বেই জীবীকার তাগিদের বাড়ি ছাড়তে হয়। একই বছরে ২১ নভেম্বর এ্যাডভান্স ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ এর সেলসম্যান হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ২০১৫ সালে এ্যাডভান্স সোলারের ম্যানেজার পদে যোগদান করেন এবং একই বছরের ১লা আগস্ট মাসে জয়েন করেন ‘ফরচুন ট্রেডিং এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস’ এর সেলস এন্ড মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ পদে। ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে এখনো ঐ একই কোম্পানির সাথে যুক্ত আছেন এবং বর্তমানে কোম্পানির সেলস এন্ড মার্কেটিং ও প্রোডাকশন ইনচার্জ সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন।
সাহিত্য প্রেম: একদম ছোট থেকেই বাবার মুখে পল্লী কবির কবর কবিতা এবং মায়ের কন্ঠে ইসলামিক গান শুনে সাহিত্য ও সংগীতের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয় । একদম ছোট বেলায় মায়ের মুখে শোনা ইসলামিক গান ভাঙা ভাঙা উচ্চারনেই আয়ত্ব করার চেষ্টা করতেন । প্রাথমিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র ব্র্যাক স্কুল হওয়ায় সাহিত্য সংগীতের প্রতি আরো গভীর ভালোবাসা সৃষ্টি হয় । ব্র্যাক স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত আবৃত্তি, নাচ, গান, গল্প বলা ইত্যাদির চর্চা করতেন । প্রাথমিকে পড়াশোনার সময় থেকেই মৌখিক গল্প বা হাস্য কৌতুক বানানো শুরু করেন । অলিখিত গল্প বানিয়ে তা সবাইকে শোনাতেন । শৈশবেই অস্পষ্ট উচ্চারণে বড় ভাই এর পাঠ্য বই থেকে গল্প ও কবিতা পড়্তেন। মসজিদের মাইকে ইসলামিক গান গাওয়া এবং বন্ধু আড্ডায় গান গেয়ে মাতিয়ে রাখেন।
আরও পড়ুন শফিক নহোর
সাহিত্য ও সংগীতের ভিত্তি মূলত তখন থেকে গড়ে উঠেছে । প্রাথমিক পেরিয়ে মাধ্যমিকেও স্কুলের বন্ধু বান্ধব বা শিক্ষক শিক্ষীকাদের গান ও আবৃত্তি শুনাতেন । ধীরে ধীরে সাহিত্যের ভিত্তি আরো শক্ত হতে লাগলো । অলিখিত মৌখিক কথা গুলো লিপিবদ্ধ হতে লাগলো খাতায়। মাধ্যমিকের নব যৌবনে সকল সহপাঠী বন্ধুরা যখন প্রেম মোহে মাতাল হয়ে প্রেম কাব্য বা প্রেম ইতিহাস রচনা ব্যস্ত, রকিবুল হাসান তখন বাস্তবতা রপ্ত করতে মরিয়া । লিখতে শুরু করেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরতে লাগলেন। বাস্তবতা কেন্দ্রিক কবিতার পাশাপাশি গান লিখে নিজের সুরে গাইতেন। উচ্চ মাধ্যমিকের পর থেকে লেখার গতি বাড়তে থাকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় পাঠাতে শুরু করেন। এক সাথে কবিতা, গান, ইসলামিক গান, ছোট গল্প, নাটক কমবেশি সবই লিখতে থাকেন । তার লেখা অসংখ্য কবিতা রয়েছে, রয়েছে অনেক ইসলামিক গান ও আধুনিক গান ।
প্রকাশিত বই :
- গোধূলি মায়া (নভেম্বর ২০২১ খ্রি.)
- সবই শূন্য তবুও মায়া (নভেম্বর ২০২২ খ্রি.)
প্রকাশিত গান: গীতিকার হিসেবেও আত্মপ্রকাশ হয়েছে তার । ইতিমধ্যে তার লেখা গান প্রকাশ পেয়েছে বাংলা গানের যুবরাজ আসিফ আকবরের কন্ঠে। তার লেখা ‘তুই ছাড়া সবই ভুল’ গানে কন্ঠ দিয়েছেন আসিফ আকবর ও নাদিরা মুক্তা। এছাড়াও আরো বেশ কিছু গানের কাজ চলছে।
নাটক: ২০১১ সালে গ্রামের এক অনুষ্ঠানে তাঁর রচনা ও পরিচালনায় ‘ইভটিজিং’ নামক সমাজ সচেতনমূলক নাটক মঞ্চায়িত হয়। এতে সতেচন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয়ও করেন মো. রকিবুল হাসান। বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বেশ কিছু নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ করছেন ।
আরও পড়ুন সাইফুর রহমান
আবৃত্তি : সময় পেলেই কবিতা, গল্প, উপন্যাস পড়েন এবং এর মধ্য থেকে ভালো লাগার অংশ আবৃত্তি করেন । আবৃত্তিতে উপজেলার গ্রুপ প্রতিযোগিতায় পুরষ্কারও পেয়েছেন এবং বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপে আবৃত্তির লাইভ করে সাহিত্য প্রেমিদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন ।
গায়ক: ইসলামিক গান তার খুব প্রিয় এবং লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ইতিমধ্যে তার লেখা ৫টি ইসলামিক গানের কাজ চলমান এবং ঐ গানগুলোতে সুর দিয়েছেন তিনি নিজে এবং ইসলামিক গানে কন্ঠ দেওয়ার মাধ্যমেই কন্ঠশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চান।
পুরস্কার ও সম্মাননা: মো. রকিবুল হাসান কবিতার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ থেকে সম্মাননা স্বারক পেয়েছেন। ভারত বাংলাদেশ পরিচালিত গ্রুপ সাহিত্যাঞ্জলিসহ বেশ কিছু নামকরা ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ থেকে সম্মাননা পেয়েছেন। আবৃত্তির জন্য পেয়েছেন উপজেলার সেরা গ্রুপের সম্মাননা ।
লেখালেখি: বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপে এখনো নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন।
‘সুন্দর একটা পৃথিবী হোক, যে পৃথিবীতে থাকবে না কোন অনাহারী। সর্বদা ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মানুষ এবং ভালো রাখুক সবাইকে।’- রকিবুল হাসান
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে