মে দিবসের গান
পয়লা মে দিনটি ঘুরে আসে বার বার
দিনটি যে সব দুখী মানুষের, সাহসী হয়ে ওঠার।
যুগ যুগ ধরে কঠিন আঁধারে, জীবন হতো যে পার
সয়ে যেত শুধু, শত অন্যায় আর যত অবিচার।
মানুষ তো নয় শ্রমিক যেন, ভারবাহী কোনো প্রাণী
জনম হতে জনমে টানিত অপমান আর গ্লানি।
কল-কারখানার শ্রমিক মজুর সারা দিনমান খাটে
তবুও তাদের ক্ষুধার অন্ন, অনেক কষ্টে জোটে।
অন্ন নাই বস্ত্র নাই, নাইকো চিকিৎসা
ধুঁকে ধুঁকে মরে তাদের শিশুরা, এমনই দুর্দশা।
সারাটি দিনের খাটুনির পরে, যবে আসে ঘরে ফিরে
ভাঙ্গা ছাউনিতে বৃষ্টির জল, ঘরটি ভাসিয়ে ছাড়ে।
নাইকো শিক্ষা, নাইকো দীক্ষা, নাই আনন্দ কোনো
এ কেমন জীবন ভাবে অনুক্ষণ, দিশা নাহি পায় যেন।
অন্নবিহীন শূন্য পেটে, নিঁদ তো নাহি আসে
কভু কি আসিবে সুদিন তাদের, এই শুধু জিজ্ঞাসে।
শিকাগোর হে মার্কেট, গড়ল যে ইতিহাস
তারই আলোয় উদ্ভাসিত যে, আজকের এই দিবস।
আট ঘন্টার শ্রমের দাবিতে, প্রাণটি দিল যারা
তাদের প্রাণের বিনিময়ে, মুক্তি দিল কি তেমন সাড়া?
আজও শ্রমিক খাটে দিন রাত, কলুর বলদ যেন
কীভাবে চলিবে জীবন তাদের, দিশা তো পায় না কোনো।
কৃষক ফলায় সোনার ফসল, রোদ বৃষ্টিতে ভিজে
সবার ক্ষুধার অন্ন যোগায়, উপবাসী রয় নিজে।
সারা দিনব্যাপী খাটে যে মজুর, ন্যায্য মজুরি কি পায়?
তাহার দুঃখ বোঝাতো যাবে না, বসিয়া অট্টালিকায়।
হে মার্কেটে যে রক্ত ঝড়িল, হবে কি তা বিফল?
মেহনতি মানুষ কি তবে ব্যর্থ হবে, পেতে তার ফলাফল?
সারা দুনিয়ার শ্রমিক মজুর, জেগে ওঠো একতালে
নিজ অধিকার কেড়ে নাও আজি, বাহু শক্তির বলে।
কৃষক তুমি শ্রমিক তুমি, ধরনীর বুকে বল
তোমারে ছাড়া মেকি সভ্যতা, হতেই হবে অচল।
সময় থাকিতে সাড়া দাও আজি, আরাম আয়েশি মানুষ,
যাদের শ্রমে আর ঘামে উড়ায়েছ, বিলাসিতার ঐ ফানুস।
নহিলে তোমার রঙিন ফানুস, নিমেষে যাবে উড়ে
শত যত্নেও রাখিতে পারিবে কি, হাতের মুঠোয় ধরে?
তাই শ্রমিকের আসল পাওনা, বুঝে দাও এই ক্ষণে
সাথে নিয়ে তারে সুখেতে বাঁচো, খোঁজ জীবনের মানে।
আরও পড়ুন কবিতা-
আমার গ্রাম
আত্মবেদনা
প্রমের পরশ
নিমন্ত্রণ
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
মে দিবসের গান