-
বিবর্ণ স্বাধীনতা
বিবর্ণ স্বাধীনতা পথিক জামান আজ নিজের ঘরটিকেও নিরাপদ ভাবতে পারছিনা আগের মতো, বর্গীরাতো চলে গেছে কবে কোনকালে – তবুও কেনো আতঙ্ক জনমনে? কেনো অন্ধকার রাতগুলোকে যমের মতে ভয় পায় সাধারণ মানুষ? বর্গীদের তাড়ালাম আমাদের শান্তি, স্বাধীনতা আর স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছিলো বলে। ওরা চলে গেলো ঠিকই, কিন্তু রঙিন স্বপ্ন আর স্বাধীনতা বিবর্ণ হয়ে ধরা দিলো বাংলায়। এমন স্বাধীনতার জন্যে তো রণাঙ্গনে যুদ্ধ করিনি সেদিন, কিন্তু কেনো এ বেহাল দশা? উত্তর তোমাকে দিতেই হবে লীলাবতী। দিন দিন এ স্বাধীন দেশটা কি খুনী সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজদের স্বর্গ রাজ্য হবে? না, না এমনটা হতে দিতে পারি না। ওরাতো সংখ্যায় কম, তবু কেনো ভয়…
-
আমার দুটি হৃৎপিণ্ড, সুখের সন্ধান, একদিন অবশেষে
আমার দুটি হৃৎপিণ্ড পথিক জামান জীবন সায়াহ্নে এসে কতকিছু ভাবি প্রগাঢ় অন্ধকারে একাকী বসে বসে। কী পেলাম কী পেলাম না সে হিসেব মিলাতে পারিনি আজও। ঘুম আসে না আগের মতো, রাত যত গভীর হয় আমার ভাবনাগুলো আরো গভীরে বিচরণ করে অলক্ষ্যে অগোচরে নিশাচর পাখির মতো, তারপর আবার ভোর হয় সূর্য ওঠে, আবার নতুন স্বপ্নবুনি। আমার যে দুটি হৃৎপিণ্ড দুপাশে নড়াচড়া করে একসাথে, মায়া লাগায়,আরো মায়া, ভাবি ওদের অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে, কী হবে কী হবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। ওদের চির মঙ্গল কামনায় শুধু আমার প্রার্থনা যেন দেখে যেতে পারি দুটি উজ্জ্বল মুখের জ্বলজ্বলে হাসি। আরও পড়ুন কবি পথিক জামানের কবিতা-…
-
চাওয়ার কিছু নাই, ঘুষ
চাওয়ার কিছু নাই পথিক জামান নেংটি পরে ঘুরে বড়ায় মুখেতে নাই দাড়ি, বিয়ের সময় পাত্রী খোঁজে পর্দানশীল নারী। মা হেসে কয় আমার ছেলে মাটির মতো শান্ত, আনবো ঘরে ফর্সা মেয়ে জেনে আদ্যোপান্ত। যে জন দেবে মোটা গয়না অনেক টাকা পণ, অনেক ভালোবাসবে তারে আমার আপনজন। মেয়ের বাবা হেসে বলেন নামাজ পড়ে ছেলে? মাঝে মধ্যে পড় নামাজ যদি সময় মেলে। তবে ভাইজান একটা কথা আমার ছেলে ভালো, যদি একটু বাড়িয়ে দেন, হোকনা মেয়ে কালো। ছেলে নেশা করে না- কি?. জান্তেতো নাই মানা, আর কী করে ছেলের বাবা? পারিস যদি জানা। ছেলের মায়ে বললো রেগে মুখটা করে বাঁকা, নামাজ রোজায় ঢিলা…
-
ভালোবাসা রঙ পাল্টায়, শ্রাবণে
ভালোবাসা রঙ পাল্টায় পথিক জামান এখন কী দেখছি বর্তমান হালটায়, ভালোবাসাও রঙ পাল্টায়। প্রেম -পিরীতি ভালোবাসা রবে চিরকাল, ডিজিটাল ভালোবাসা করে নাজেহাল। বেশি রঙে রঞ্জিত হলে ভালোবাসা, ফিকে হয়ে যাবে সব কাঙ্ক্ষিত আশা। পথে ঘাটে দেখি শুধু প্রেম প্রেম খেলা, প্রেম প্রেম খেলে খেলে কেটে যায় বেলা। বহুরূপী প্রেম তুমি বহুরূপ ধরে, প্রেমিককে ধোঁকা দাও সবশেষ করে। প্রেম তুমি অপরূপ রূপের ডালা, ডিজিটাল প্রেমে ভাই অত নাই জ্বালা। ডিজিটাল ছেলেমেয়ে, ডিজিটাল প্রেম, প্রেম নিয়ে খেলে তাই অদ্ভুত গেম। প্রেম তুমি বেঁচে থাকো স্বকীয়তা নিয়ে, ওরা প্রেম করে নাকো, করে শুধু ইয়ে। শুনে রাখো উত্তম পবিত্র যে প্রেম আর নয়…
-
স্বপ্ন দিয়ে ছাওয়া, আশায় বুক বাঁধি
স্বপ্ন দিয়ে ছাওয়া পথিক জামান বাংলা আমার পাখিমুখরিত ভোর হতে কালো সন্ধ্যা, রাত হলে ফোটে শিউলি বকুল শাপলা রজনী গন্ধা। ফুলে আর ফলে ভরে থাকে মাঠ ডালে ডালে নানা পাখি, এত শোভা দেখে ভরে ওঠে মন জলে ভরে দুটি আঁখি। আহা এত রূপ এত যে শোভা আর কি কোথাও আছে? লাল লাল সাজ বাসন্তী রঙ শোভা পায় গাছে গাছে। তুল তুলে ফুল আমের মুকুল মৌমাছি গায় বাগে, রাতে হাসে চাঁদ সুনীল আকাশে প্রেম প্রেম ভাব জাগে। বসন্তকালে বসন্ত দূত শিমুলের রাঙা ডালে, কুহু কুহু গেয়ে বেঁধেছে আমায় অদ্ভুত মায়া জালে। আহারে আমার রূপসী বাংলা এত রূপ সারা গায়, গাংচিল…
-
জ্বালাও তোমার অগ্নি মশাল, তুমিতো তুমি-ই, ঝড়ের পূর্বাভাস, ক্ষণিকের অতিথি
জ্বালাও তোমার অগ্নি মশাল পথিক জামান আমার দু’চোখে বিন্দু বিন্দু জল কখনো তা গড়িয়ে পড়ে নিঃশব্দে নীরবে। সর্বদা অন্তরে তীব্র দহন প্রশ্ন রাখি, এই কি স্বাধীন দেশ? কোথায় তোমার স্বকীয়তা? কোথায় তোমার জাতীয়তাবোধ? আত্মমর্যাদাবোধ ধুলোয় ভূলুণ্ঠিত আজ, সে হুঁশও হারিয়ে বসে আছি বহুকাল আগে। কী আর আছে তোমার আমার। গর্বিত জাতির এ-কি করুণ অবক্ষয়। এমন তোষণ নীতি শোষণের অশনি সংকেত ভয়ে তাই কেঁপে ওঠে বুক, আবার ঘৃণাও ক্ষোভের অগ্নি শিখা পুড়িয়ে মারে কোটি জনতা কিন্তু আমরা আজ বড় অসহায় জেগে ওঠো বীরজনতা জ্বালাও তোমার অগ্নি মশাল বিপথগামী পথযাত্রীকে টেনে আনো আলোর পথে। শোনাও তাদের অতীত ইতিহাস, শোনাও তাদের গোলাভরা…
-
বারবার ফিরে আসি, আহবান
বারবার ফিরে আসি পথিক জামান অত সুখ নাই যত সুখ তুমি আশা করো এইখানে বাহারি বাড়ির রঙিন স্বপ্ন মরীচিকা হয়ে টানে। লাল নীল বাড়ি বড়বড় ঘর শত শত রাঙা পথ, বুকে হাত রেখে বলো তুমি আজ কতটুকু আছো সৎ। কিন্তু আমার গ্রামের চাষা? এতটুকু বলি শোন, জড়াজড়ি করে মিলেমিশে থাকে হিংসা রাখে না কোনো। তথায় আমার জীর্ণ কুটীর শীর্ণ শরীর মা, সেইতো আমার লালিত স্বপ্ন সাধের সবুজ গাঁ। আমার বাড়ির লাগোয়া পালানে কত শত ফুল ফোটে, সকাল সন্ধ্যা দলে দলে অলি মধু আহরণে জোটে। রোদে ঝিলমিল রূপালী শিশির আর শিশুদের হাসি, এসব দেখতে নীরবে নিভৃতে বারবার ফিরে আসি। বিলের…
-
মাছ-বিল-পাখি-পদাবলি
মাছ-বিল-পাখি-পদাবলি পথিক জামান বিল আমাদের গর্বের ধন, বুক ভরা ভালোবাসা, জীবন জীবীকার প্রধান উৎস জানে গাজনার চাষা। এ পাড় থেকে ওপাড় শুধু মাঠ ভরা সোনা ধান, কৃষককুলের বুক ভরা সুখ, মুখভরা হাসি গান। শত শত বিল এই খানে আছে হিসেব মেলানো ভার, কিছু কিছু আমি নাম ধরে ধরে বর্ণনা দিব তার। সহিবাজ আর গমগাড়া বিল গ্রামের পূর্ব দিকে, পারলে তুমি এই নাম গুলো ডায়েরিতে নিও লিখে। রামার বিলের কইমাছ গুলো ইয়া বড় বড় হতো,, হাজার মাছের ভাণ্ডার বিল বর্ণনা দিব কত? বোয়াল-বেলে টাকি আর শোল নয়না চাপলে পুঁটি, যতটুকু পারি কষ্ট করে বলে দিব মোটামুটি। নওলা-কাতল খলশে চাঁদা বিল…
-
আষাঢ়ের বৃষ্টি, মশা একটা আজব প্রাণী, যতই বুদ্ধি খাটাস, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি
আষাঢ়ের বৃষ্টি পথিক জামান টিপ টিপ ঝমঝম আষাঢ়ের বৃষ্টি, দুই চোখে ঘুম ঘুম অদ্ভুত মিষ্টি। ঘ্যাঙ ঘ্যাঙ ডাকে ব্যাঙ একটানা ধুমছে, ভেজা হাঁস দল বেঁধে তীরে বসে ঝুমছে। ছোটো ছোটো ছেলে মেয়ে জলে ভিজে ছুটছে, মনে হয় তারাগুলো আকাশেতে ফুটছে। কবি মন জেগে ওঠে বৃষ্টির তালেতে, ছোটো মাছ ধরা পড়ে জেলেনীর জালেতে। পাড়া গাঁও মেতে ওঠে নানা রূপ রঙেতে মাঝি গায় ভাটিয়ালি কত রঙে ঢঙেতে। মশা একটা আজব প্রাণী মশা একটা আজব প্রাণী জ্বালায় সারাক্ষণ, সকাল সাঁঝে কানের কাছে করে যে ভনভন। রাগের চোটে মাঝে মধ্যে দু’ চার থাপড় মারি, প্রবীণ মানুষ এখন কিআর মশার সাথে পারি? লক্ষ্য…
-
মো. নুরুজ্জামান
মো. নুরুজ্জামান কবিতা ও ছোট গল্প লেখেন। জন্ম: মো. নুরুজ্জামান ১৯৬৮ সালের ৩০ অক্টোবর, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত মানিকহাট ইউনিয়নের বোনকোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবন: মো. নুরুজ্জামানের পিতা প্রয়াত কবি লোকমান হাকিম এবং মা নূরজাহান বেগম। ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তিনি ১৯৯২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুলতানা আক্তার কল্পনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বড় মেয়ে নুসরাত জাহান আর ছোট ছেলে আবদুল আহাদ শোয়েব। শিক্ষা জীবন: মো. নুরুজ্জামান বোনকোলা ২ন. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর ১৯৮৪ সালের মাসুমদিয়া ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৮৬ সালে সাতবাড়িয়া কলেজ থেকে…