-
বইমেলা ও সরদার জয়েনউদ্দীন
বইমেলা ও সরদার জয়েনউদ্দীন সাহিত্যকৃতি ছাড়াও ইতিহাসে পাবনার সুজানগরের সন্তান সরদার জয়েনউদ্দীনের নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের বইমেলার আন্দোলনের প্রবর্তক, পথ প্রদর্শক ও প্রধান সংগঠক হিসেবে। বইয়ের অসীম শক্তি যা মানুষের মেধা ও মননকে বিকশিত করে। সরদার জয়েনউদ্দীন যথার্থ উপলব্ধি করেছিলেন যে, দেশের মানুষ যত বই পড়বে দেশ ও জাতি তত উন্নত হবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান একটি নিবন্ধে (একুশে বইমেলার গোড়ার কথা, প্রথম আলো, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭) বাংলাদেশের বইমেলা প্রসঙ্গে যে বিবরণ দিয়েছেন, তা যেমন চমকপ্রদ তেমনি কৌতুহলোদ্দীপক। গত শতাব্দীর ষাট দশকের প্রথম দিকে সরদার জয়েনউদ্দীন বাংলা একাডেমি গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে নিয়োজিত ছিলেন। তখন বাংলা একাডেমিতে প্রচুর…
-
সরদার জয়েনউদ্দীন (৪র্থ পর্ব)
সরদার জয়েনউদ্দীন (৪র্থ পর্ব) সাহিত্য মূল্যায়ন: কথাসাহিত্যিক সরদার জয়েনউদ্দীনের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘নয়ান ঢুলী’। নয়ান ঢুলী, কানা ফকিরের ব্যাটা, ফুলজান গল্প পর্যালোচনা- নয়ান ঢুলী ‘নয়ান ঢুলী’ গল্পের প্রধান চরিত্র নয়ান। সে ঢোল মেরামতের কাজ করে জীবিকা চালায়। তার এ-পেশায় দিনদিন রোজগারপাতি কমে আসছে। কারণ আগে হাতে খুব কাজ আসত। বারোয়ারি মন্দিরের কাজ, চৈত্রসংক্রামিত্মর কাজ, গাঁয়ের যাত্রা পার্টির কাজ। তাছাড়া ভাসান-গাজির গান, তিননাথের মেলা, রামনামের আসর থেকেও তার ডাক আসত। ঢোল মেরামতের বায়না, দিনদিন সব কেমন হয়ে গেল। পরিবর্তন হলে একশ্রেণির মানুষের পেটে যে টান পড়ে তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট দেখা যায়। তাই আজকাল কাজ পেলে নয়ানের মন ভরে। হাতে যেন…
-
সরদার জয়েনউদ্দীন (৩য় পর্ব)
সরদার জয়েনউদ্দীন (৩য় পর্ব) সাহিত্য মূল্যায়ন: কথাসাহিত্যিক সরদার জয়েনউদ্দীনের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘নয়ান ঢুলী’ নিয়ে আলোচনা করলে দেখা যায়, তিনি বাংলা সাহিত্যের কতটা শিখরে উঠেছিলেন, যদিও তাঁকে নিয়ে সেভাবে প্রায় আলোকপাত করা হয় না। নয়ান ঢুলী গল্পগ্রন্থের করালী, ভাবী, কাজী মাস্টার, সবজানের সংসার গল্প পর্যালোচনা- করালী করালী চিরদিনের মতো জামেলাকে হারাল। এভাবেই সরদার জয়েনউদ্দীন ‘করালী’ গল্পের পরিণতি দেখিয়েছেন। জমিদার-সামন্ত বাবুরা কীভাবে সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করেছে এবং ঘরের ইজ্জত নিয়ে বেইজ্জত করেছে তার একটা ছবি এই গল্পে চিত্রায়িত হয়েছে। ঘরে বউ নিয়ে শুয়ে ছিল কিন্তু হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখে জামেলা হাওয়া। কোথায় গেল, বুঝে উঠতে পারে না। দৌড়ে যায় কাছারিতে, তাও…
-
সরদার জয়েনউদ্দীন (২য় পর্ব)
সরদার জয়েনউদ্দীন (২য় পর্ব) সাহিত্য কর্ম: জীবিকা অর্জনের পাশাপাশি সরদার জয়েনউদ্দীন স্বীয় জীবনকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন বিচিত্র প্রেক্ষাপটে। কখনো আনন্দে, কখনো বেদনায়, কখনো অপমান, উপেক্ষায়, আবার কখনো সম্মানের বরমাল্যে। গ্রামে জন্মেছিলেন তিনি, তাই গ্রামের মানুষকে নিয়ে রচিত তাঁর গল্প-উপন্যাস পাঠক হৃদয়কে নিবিড়ভাবে স্পর্শ করে। এ কারণেই পঞ্চাশ দশকে রচিত গ্রামীণ ক্যানভাসে চিত্রিত তাঁর গল্পগুচ্ছ বিপুলভাবে পাঠকনন্দিত। চেনা চরিত্র এবং চেনা কাহিনীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে তাঁর অসাধারণ গল্প সম্ভার। অতি সাধারণ, অতি তুচ্ছ, অতি ক্ষুদ্র অবহেলিত গ্রামের জনমানুষ তাঁর অধিকাংশ গল্পের কুশীলব। তিনি যাদের অন্তরঙ্গ আলোকে দেখেছেন, যাদের নিবিড়ভাবে চিনেছেন, কথাশিল্পে সেসব চরিত্র নিয়ে তাঁর কায়কারবার। গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখ, ব্যথা-বেদনা,…