-
আলতা বানু (৩য় পর্ব)
আলতা বানু (৩য় পর্ব) শাহানাজ মিজান আমাদের সংসারে একের পর এক দূর্যোগ নেমে আসতে লাগল। শাশুড়ি আম্মা তার ছেলের বউদের খুব ভালোবাসতেন। বিশেষ করে বড়ো বুবুকে তিনি নিজে পছন্দ করে বড়ো ছেলের বউ করে ঘরে এনেছিলেন। তার ছেলের সমস্যা, আমাদের দুজনের কষ্ট এসব তিনি সহ্য করতে পারলেন না। ভালো মানুষ রাতে শুয়েছিলেন, ফজরের ওয়াক্তে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন চিরদিনের জন্য। শাশুড়ি আম্মার মৃত্যুর খবরে আমার বাপের বাড়ির সবাই দেখতে এল। আব্বা আমার মুখের দিকে তাকাতে পারলেন না। সবাই সবটা জেনে গেছে। সবার অপরাধবোধ চোখ আমার দিকে। দাদি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। শাশুড়ি আম্মার…
-
আলতা বানু (২য় পর্ব)
আলতা বানু (২য় পর্ব) শাহানাজ মিজান আমাদের বাড়িতে উঠোনে বসে নতুন জামাই সমাজের কিছু গণ্যমান্য লোকজনের সাথে কথা বলছিলেন। আর ঘরের মধ্যে আমি আমার পরিবারের সবাইকে ডেকে নিয়ে এলাম কথা বলার জন্য। আব্বার সাথে কথা বলার সাহস আমার আজো হলো না। কান্না চেপে রাখতে পারলাম না। কাঁদতে কাঁদতে মেজো চাচার পা জড়িয়ে ধরে বললাম, — চাচা, আমি তোমাদের কাছে এত বড়ো বোঝা হয়ে গিয়েছিলাম, আগে কেন বলোনি? তাহলে আমি গলায় দড়ি দিয়ে মরে যেতাম। একজন বিবাহিত পুরুষ যার ঘরে বউ আছে, তার সাথে কেন আমার বিয়ে দিলে? লোকে তো তোমাদের বড়োলোক বলে, তাহলে কীসের এত অভাব পরেছিল যে আমাকে এভাবে…
-
আলতা বানু (১ম পর্ব)
আলতা বানু (১ম পর্ব) শাহানাজ মিজান ১৯৬৫ সাল, তখন আমার বয়স প্রায় সতের। কয়েক বছর আগেই বাংলা লেখাপড়ার পাট চুকে গিয়েছিল। পঞ্চম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়ার পর আমার আব্বা বাড়িতে একজন হুজুর রেখে দিয়েছিলেন;আরবি পড়ানোর জন্য। লেখাপড়ায় একেবারেই খারাপ ছিলাম না। তাই খুব তাড়াতাড়িই কোরআন এবং নামাজ পড়া শিখে গেলাম। আব্বা বলতেন, মেয়েদের এত বেশি বাংলা লেখাপড়া করার দরকার নাই। মেয়েরা ঘরে থাকবে; পর্দার মধ্যে।তবে বাংলা বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগত, ছোটো ভাইদের বই নিয়ে গল্প পড়তাম। আমার বাপ-চাচারা ছিলেন তিন ভাই। আব্বা ছিলেন সবার বড়ো। তার রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে কোনো কথা বলার সাহস কারো ছিল না। তিন ভাইয়ের…