-
উপজেলার ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে সুজানগর, মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সাতবাড়িয়া, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ইতিহাস ও ঐতিহ্য
সাতবাড়িয়া গণহত্যা
সাতবাড়িয়া গণহত্যা সাতবাড়িয়া গণহত্যা পাবনার জেলার প্রথম গণহত্যা। নিহতের সংখ্যার দিক থেকে এটি পাবনার দ্বিতীয় বৃহত্তম গণহত্যা। ১৯৭১ সালের ১২ মে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনী পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামবাসীর ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ ও লুটপাট চালায়। স্বাধীনতার পর থেকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসীরা ১২ মে দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। আক্রমণের কারণ: সাতবাড়িয়া এলাকাটি পদ্মা নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় পাবনা ও রাজবাড়ি জেলা শহরের অসংখ্য মানুষ সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল। এমন সংবাদ সেনা ক্যাম্পে দেওয়া হলে পাবনা থেকে বিপুল পরিমাণ পাকিস্তানি সৈন্যরা সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় চৌদ্দটি গ্রামে অভিযান চালায়। বিভিন্ন সূত্র…
-
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস
সুজানগর হানাদার মুক্ত দিবস সুজানগর থানা দখল এবং আমার আহত হওয়া ১৯৭১ সালের ৯ই ডিসেম্বর। রাতে বকুল ভাই আর ইকবাল ভাই সুজানগর এলেন, সঙ্গে আরো ১৫ জন মুজিব বাহিনী এবং মকবুল হোসেন সন্টুসহ কয়েকজন এফএফ মুক্তিযোদ্ধা। থানা আক্রমণের জন্য আমি আর দুলাল ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসার পর থেকেই পরিকল্পনা করছিলাম। সেই পরিকল্পনার সব বিষয় যেমন, ক’টার সময় আক্রমণ করলে ভালো হবে, বাঙ্কার থেকে শত্রুরা কখন বের হয়, হাতে আঁকা ম্যাপে দেখিয়ে কোথায় কোথায় পজিশন নিতে হবে সব বকুল ভাইকে দেখালাম। সুজানগর থানা এবং তার পাশে সুজানগর হাইস্কুলে তখন অবস্থান করছে রাজাকার ও মিলিশিয়া মিলে প্রায় দু’শত শত্রু। সবকিছু…
-
চরদুলাই ফাউন্ডেশন
চরদুলাই ফাউন্ডেশন একটি অরাজনৈতিক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে আত্মপ্রকাশ করা এই সংগঠনটি চরদুলাই গ্রামের ঐতিহ্য রক্ষা, সামাজিক মূল্যবোধ অবক্ষয় রোধ, বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠাতা সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মো. রাকিবুল ইসলাম জনি, যিনি চরদুলাই গ্রামের উন্নয়ন এবং সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এই সংগঠনটি গড়ে তোলেন। প্রধান কার্যালয় চরদুলাই, দুলাই, সুজানগর, পাবনা। সামাজিক কার্যক্রম চরদুলাই ফাউন্ডেশন স্থানীয় সামাজিক উন্নয়ন, ঐতিহ্য রক্ষা এবং সচেতনতা বৃদ্ধির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কার্যক্রম হলো : ত্রাণ বিতরণ : সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় : স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিনামূল্যে রক্তের…
-
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ
সুজানগরের ইতিহাস বই রিভিউ আশরাফ খান কিছুদিন আগেই হাতে পেয়েছি ড. আশরাফ পিন্টু ও মিজান খন্দকার রচিত ২০২১ সালের বই মেলায় পাললিক সৌরভ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘‘সুজানগরের ইতিহাস’’ বইটি। পড়ি পড়ি করে পড়া হয় না। পর্যাপ্ত সময় হয়ে উঠে না। একটু একটু করে পড়ি। ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে। ভালো লাগা বিষয়গুলো আন্ডার লাইন করি। কোনটি নোট নিই। অনেকটা সৌখিন পাঠক আমি। লেখার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। পড়াটা জরুরী। জানার জন্য। না জানলেও ক্ষতি নেই। শিক্ষার প্রধানত দুটি প্রক্রিয়া। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক। আমরা অপ্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়নে বেশি ব্যস্ত। অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দায়বদ্ধতায় বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার একটা সুবিধা হলো নির্দিষ্ট সিলেবাস আছে। সিলেবাস শেষ করতে পারলেই…
-
তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ
তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদ পাবনার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের খয়রান গ্রামটি একটি প্রসিদ্ধ ও ঐহিত্যবাহী গ্রাম। গ্রামের তালুকদাররা ছিল বেশ প্রভাবশালী ও বিত্তশালী। প্রায় ২০০ বছর পূর্বে তালুকদারদের পূর্বপুরুষ খয়রান তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠাতা: তালুকদার বংশের হাজি মো. মহসিন উদ্দিন তালুকদার (মহসিন মুন্সি) এলাকার ইসলাম ধর্মের লোকদের ইবাদতের জন্য খয়রান তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন খয়রান গ্রামের আশেপাশে উলাট, কাদোয়া, গাবগাছি গ্রামে কোনো মসজিদ ছিল না। তাই নামাজ পড়ার জন্য মুসল্লিরা এই মসজিদে আসতেন। পটভূমি: খয়রান মসজিদ স্থাপনের পূর্বে এই এলাকার মুসলমানরা শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য দুলাইয়ের জমিদার আজিম…
-
রাধারমণ মন্দির
রাধারমণ মন্দির পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নের সাগরকান্দি গ্রামে ১৯০৫ সালে অনাদি কৃষ্ণ দত্ত প্রতিষ্ঠা করেন রাধারমণ মন্দির। অনাদি কৃষ্ণ দত্ত সাগরকান্দি গ্রামের জমিদার সুরেন্দ্রনাথ দত্তের ভাই ছিলেন। অনাদি কৃষ্ণ দত্ত মূলত ধর্মীয় দিকে মনযোগী ছিলেন। তিনি জমিদারী বুঝতেন না। তিনি ধর্মীয় রীতিনীতিতেই মগ্ন থাকতেন বলে জানা যায়। ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করার জন্য এই রাধারমণ মন্দিরটি তিনি স্থাপন করেছিলেন। জমিদার বাড়ির আর্থিক সহযোগিতায় মন্দিরটি দ্রুত প্রতিষ্ঠা পায়।জমিদারের আনুকূল্যে মন্দিরটিতে ঝুলনযাত্রা, রাসলীলা, নিত্যপূজা, রাধাকৃষ্ণ, রাধারমণ, জন্মাষ্ঠমী পূজা মহাধুমধামে অনুষ্ঠিত হতো। প্রতিনিয়ত এই মন্দিরটিতে উৎসবের আমেজ লেগেই থাকত। এলাকার হিন্দু ধর্মের অনুসারীরা এই মন্দিরকে ঘিরে তাদের নিত্যদিনের পূজা-অর্জনা করত।…
-
নবজাগরণ পাঠক মেলা (নপম)
সুস্থ ধারার শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সুশিক্ষা চর্চার মাধ্যমে একটি সুশিক্ষিত, আলোকিত সমাজ গঠনে সবার সহযোগিতা প্রদানের নিমিত্ত্বে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুন পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নে নবজাগরণ পাঠক মেলা’র জন্ম। এক নজরে নবজাগরণ পাঠক মেলা- ✪সংক্ষিপ্ত রূপ: নপম। ✪বৈশিষ্ট্য: সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সমাজসেবা ✪মূলক সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। ✪প্রতিষ্ঠাতা: মো: রেজাউল করিম। ✪প্রতিষ্ঠার কাল: ২০১১ খ্রিস্টাব্দ। ✪মূলমন্ত্র: মানবতা আর সত্যের পক্ষে। পটভূমি: দিনটি ছিলো ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুন রবিবার। অত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিম শেখ সহপ্রতিষ্ঠাতা মো. আরিফুল ইসলাম, মো. সুরুজ হোসেন, মো. শরিফ খাঁন, মো. রুবেল বিশ্বাস ও মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বসে ছিলেন সাগরকান্দি রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।…
-
এসো দেশকে ভালবাসি
এসো দেশকে ভালোবাসি একটি অরাজনৈতিক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনটি মূলত দূর্নীতি, মাদক, বাল্য বিবাহ, খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে এবং বন্যপ্রাণী ও ইলিশ মাছ সংরক্ষণে কাজ করে আসছে। সামাজিক বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে এবং বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে এসো দেশকে ভালোবাসি সংগঠনের আত্ম প্রকাশ ঘটে। প্রতিষ্ঠাতা: সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম। প্রধান কার্যালয়: তৈলকুণ্ডু, মানিকহাট, সুজানগর, পাবনা। বর্তমান কমিটি: ১। সভাপতি: আহমেদ ফররুখ কবির (বাবু) ২। সহ-সভাপতি: ক) মো: আব্দুল মান্নান (মানু) খ) প্রফেসর মো: ইশানুর রহমান গ) মো: আলমগীর কবির ৩। সাধারণ সম্পাদক: মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম ৪। সাংগঠনিক সম্পাদক: মো: সাহেব আলী মাস্টার ৫৷…
-
বিল গাজনার ইতিহাস
বিল গাজনার ইতিহাস জাহাঙ্গীর পানু বিল গাজনা বা গাজনার বিল হচ্ছে পাবনা জেলার একটি বৃহত্তম বিল। এটি সুজানগর উপজেলার অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও অন্যতম দর্শনীয় স্থান। অবস্থান: বিলটি সুজানগর উপজেলার মাঝখানে অবস্থিত যা পাবনা শহর থেকে প্রায় ৩৫-৩৬ কিলোমিটার দূরে। সাতবাড়িয়া-চিনাখড়া সড়ক বিলের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে বিখ্যাত খয়রান ব্রিজকে অতিক্রম করে। আয়তন: বিল গাজনার আয়তন প্রায় ১২ বর্গ মাইল বা ৩১০০ হেক্টর। এ বিলে (পানি না থাকা অংশ) আবাদি জমির পরিমান প্রায় ১০ হাজার হেক্টর। বিলের পূর্ব পাশে রানিনগর ও সাগরকান্দি ইউনিয়ন; দক্ষিণে হাটখালি ইউনিয়নের সাগতা, শোলাকুড়া, শ্রীপুর, কামালপুর, সৈয়দপুর; ভায়না ইউনিয়ন ও মানিকহাট ইউনিয়নের বোনকোলা, উলাটসহ অনেকগুলো গ্রাম…
-
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা
বাংলার সুবাদার শাহ সুজা শাহজাদা সুজা ছিলেন সম্রাট শাহজাহান ও সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র। ১৬১৬ সালের ২৩ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শাহজাহান ইসলাম খান শাহ সুজাকে মাত্র ২৪ বছর বয়সে ১৬৩৯ সালে বাংলার সুবাদার নিযুক্ত করেন। ১৬৪২ সালে তাঁকে ঊড়িষ্যা প্রদেশের দায়িত্বও অর্পণ করা হয়। ১৬৩৯-১৬৬০ সাল পর্যন্ত বিশ বছরের কিছু অধিক সময় ধরে তিনি প্রদেশ দুটি শাসন করেন। শাহ সুজার নিযুক্তির সময় ঢাকা সুবাহ-বাংলার রাজধানী ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি রাজধানী রাজমহলে স্থানান্তরিত করেন । শাহ সুজার শাসনকালে বাংলা ও ঊড়িষ্যা প্রদেশ দুটিতে মোটামুটি শান্তি বিরাজ করছিল; কোন অংশেই কোন বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়নি। প্রকৃত পক্ষে জমিদার…