-
ফাগুন এসেছে, আমি পথ হারা
ফাগুন এসেছে পথিক জামান এসেছে ফাগুন লেগেছে আগুন শিমুলের ডালে ডালে, দখিনা বাতাস লাগিল আসিয়া রঙিন প্রেমের পালে। এমন হয়নি আগে, কেন যে এমন লাগে, বলিও দখিন হাওয়া, সবই আমার শূন্য লাগে কিছুই হয়নি পাওয়া। ফাগুন দিনের পাখি, আমারে দেয় ফাঁকি, ডাকে কোন সে দূরে, ব্যথার বাঁশি গভীর নিশিতে বাজে করুণ সুরে। এমন মধুর রাতে সঙ্গী নাই যে সাথে গাহিতে আসে না গান, বিরহ ব্যথায় কাঁদিয়া মরি বিষিয়া উঠেছে প্রাণ। আমি তোমাকে চাই কোথায় তোমাকে পাই এই ভাবি মনে মনে, ভাবিতে ভাবিতে তপ্তাশ্রু জমে দুটি আঁখি কোণে। আমি তোমাকে ছাড়া হয়েছি পাগল পারা এমন ফাগুন দিনে, কি করে বল কাটিবে…
-
মনে করি ভুলে যাব
মনে করি ভুলে যাব পথিক জামান সেই কবে হতে মনে করি ভুলে যাব তোমাকে কিন্তু কখনোই তা হয়ে ওঠেনি। যতবার চেষ্টা করেছি পরাজিত হয়েছি ততবারই। জানি না তোমার কোন শক্তি কাজ করে ভিতরে আমার। ওই যে রক্তিম মুখ ঘন কালো কেশ আর ডাগর ডাগর দু’টি চোখ সবই তো অতি প্রিয় আমার। তারপর কোনো এক পড়ন্ত বিকেলের কথা, বাঁধা ঘাটে বসে জলে রেখে পা সে ছিল অসম্ভব এক মুহূর্ত, ভুলিনি তা। তারপর জলে নেমে স্নান, কিছু সময়ের জন্য ভুলে গেলে সব- যৌবনের উন্মত্ততায়। ভেসে গেল লৌকিকতা, অবশ্য তা স্বল্প সময়ের জন্য। ভেজা শরীরে সাদা কাপড় জড়িয়ে ছিল অপূর্ব এক লোভনীয় মমতায়।…
-
তোমাকে পাইনি বলে
তোমাকে পাইনি বলে পথিক জামান তোমাকে পাইনি বলে আমার দুঃখে ভরা প্রাণ, তাইতো আমি সবখানে গাই দুঃখে ভরা গান। তোমাকে পাইনি বলে আমার মনে অনেক জ্বালা, তুমি ছাড়া আমার গলায় কে পরাবে মালা? একুশ বছর পড়ে আছি তোমার প্রেমের ফাঁদে, তাই নিশিতে পরাণ আমার গভীর ব্যথায় কাঁদে। মুক্তি পেতে যতই আমি করি না কেন ফন্দি, শেষ দেখি আমার সকল তোমার প্রেমেই বন্দী। জানি আমি কোনদিন আর তোমায় পাব না, তবু কেন তোমায় নিয়ে এত ভাবনা? এমনি করে তোমায় নিয়ে হয়তো আরো ভাববো, তোমায় নিয়ে হয়তো আরো লিখবো প্রেমের কাব্য। তোমায় নিয়ে ভাবি আমি সকাল দুপুর রাতে, বুকের ব্যথা বাড়ে…
-
একুশ বছর পর
একুশ বছর পর পথিক জামান একুশ বছর পর সেদিন রাতে তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হলো। তুমি ছিলে সিঁড়ি বারান্দায় বসা, মেয়েদের মাঝে গল্পে মশগুল। বিদ্যুতের আলোটা ঠিকরে পড়ছিল বার বার তোমার সুন্দর মুখের উপর। পিছন ফিরে বসেছিলে কিছুটা সামনে ঝুঁকে। বার বার মন বলছিল তুমিই সে, যাকে একটি বারের জন্যও দেখিনি একুশটি বছর। দুরু দুরু বুকে ভীরু পদক্ষেপে একটু একটু করে এগুলাম, ঠিক তোমার পিছনটায়। বুকের মধ্যে হঠাৎ কেমন যেনো করে উঠল, হার্ট বিটটাও বেড়ে গেল অনেক গুনে। ডাকব কি ডাকব না, এমনি করে দ্বিধাহীনতায় ভুগছিলাম অনেকক্ষণ ধরে। তারপর শত ভাগ নিশ্চিত হয়েই ডাক দিলাম তোমার নাম ধরে।…
-
হায়রে মুঠোফোন, একুশ বছর আগেকার কথা বলছি
হায়রে মুঠোফোন পথিক জামান হায়রে মুঠোফোন তোর কারণে হয়নি পাওয়া আমার প্রিয়জন। তোর কেন হয়নি জনম একুশ বছর আগে, মনের ব্যথা উথলে উঠে দুঃখে মরি রাগে। জানিস কি তুই আমার ব্যথা? আমি কত দহি? প্রিয়জনের সুখের লাগি সব নীরবে সহি, কেন এত পরে আইলা আমার তো সব শেষ, আমার প্রিয়া ঘর বাঁধিয়া সুখেই আছে বেশ। আমার প্রিয়ার চোখের কাজল বাঁকা ঠোঁটের হাসি, সবই এখন অতীত স্মৃতি, সবই এখন বাসি। তুই যদি মোর থাকতি ঘরে হইতো যোগাযোগ, তাহলে কি আমার প্রিয়ারে অন্যে করে ভোগ? যোগাযোগের পথ ছিলো না চিঠিপত্র ছাড়া, প্রিয়ার খবর নিব আমি কোন বাহনের দ্বারা? পরে যখন জানতে…
-
ভালোবাসি যারে, কবি ওমর আলী
ভালোবাসি যারে পথিক জামান ভালোবাসি যারে পাইনিকো তারে এই পৃথিবীর মাঝে, তাই ঘুরি ফিরি এখানে-সেখানে মন বসে নাকো কাজে। জানি আমি কি যে করিয়াছি ভুল, তাই বাগিচায় ফুটিল না ফুল, গাহিল না গান পাখি না পেয়ে তোমায় কী করে ঘুমায় আমার তৃষিত আঁখি? তুমি ছিলে মোর নয়নের মনি তোমার কথা ভাবি যখনি মন কাঁদে বারে বার, মানে না বারণ, কাঁদে সারাক্ষণ কী করিব আমি তার? জান না তোমাকে কত ভালোবাসি, তাই শত বার ফিরে ফিরে আসি, তোমাকে দেখার ছলে, তোমার বিহনে বিরহ অনল ধিকি-ধিকি বুকে জ্বলে। কিভাবে বল থাকিব দাঁড়ায়ে? পাগল হয়েছি তোমাকে হারায়ে একুশ বছর আগে, আজও নিশিদিন…
-
প্রেমের পরশ, আমার গানের পাখি
প্রেমের পরশ পথিক জামান তোমার প্রেমের পরশ, আমার বুকে কাঁটা হয়ে ফোঁটে কখনো তা হয় সরস। প্রেমের এ কেমন ধারা, প্রেমের পরশ পেয়েছে যেজন বাঁচিবে না প্রেম ছাড়া। ওগো মোর প্রেম বালা, প্রেম-প্রেম খেলা খেলিও না আর বাড়িও না প্রেম জ্বালা। তোমার প্রেম যে আগুন কখনো বুকে রক্ত ঝরায় কখনো তা হয় ফাগুন। জানো না তোমার প্রেমের দহনে নিশিদিন আমি দহি, সব জ্বালা আমি বুক পেতে নিয়ে চুপ করে সবই সহি। আমার কাব্য রানী, চুপি চুপি মোর মন্দিরে এসে শোনাও মধুর বাণী ওগো প্রেম সুন্দরী, সব কিছু মোর অবহেলা করে মনটা করিলে চুরি। আমার পরাণ পাখি, তোমার ছাড়া ফুল…
-
রবে শুধু রব, হঠাৎ দেখা
রবে শুধু রব পথিক জামান একদিন এ পথে আর কেউ হাঁটবে না কোনোদিন চিরতরে বন্ধ হবে আনাগোনা – তারকা খচিত রাত জোছনার শুভ্র আলো ভোরের পাখির সুরেলা গান বসন্তের রঙিন আভা এবং ভোমরের মধু গুঞ্জন সব নীরব হয়ে যাবে – ফুলের রঙিন হাসি শিশুদের তালহীন নাচ সাগরের তরঙ্গমালা মাছখেকো শিয়ালের হুক্কা হুয়া, হিমালয়ের শীতল হাওয়া শিল্পীর গজল গাওয়া গবাদি পশুর অবাধ বিচরণ কৃষকের ভাটিয়ালি গান চির অম্লান রবে না কিছু- মেয়েদের খোঁপায় পরা রজনী গন্ধা ফুল লাল আলতা পরা চরণ যুগল দৃশ্যমান হবে না ধরায় সব অন্ধকারে বিলীন হবে গাঢ় অন্ধকারে, রবে শুধু রব,পবিত্র মহান। আরও পড়ুন কবি পথিক…
-
টুনটুনি, একটি স্বপ্নের মৃত্যু
টুনটুনি পথিক জামান টুনটুনি তোমার টুনটুন শব্দ আমার ঘুমঘুম ভাবকে দূর করে দেয় ধীরে ধীরে – তোমার অদ্ভুত চঞ্চলতা আমাকে মুগ্ধ করে সারাক্ষণ, সবুজ পাতার আড়ালে তোমার বাসার সন্ধান আমি জানি, চিকচিক যুগল ছানার ক্ষুধার্ত চিৎকারে তুমি পাগল প্রায়, তাই দূরন্ত ছুটাছুটি ডাল হতে ডালে, সবুজ পাতায় নরম তুলার শৈল্পিক বুননি পরম আরাম দেয় চরম শীতেও নিশ্চয়। অবুঝ শিশুটি বারবার হাত বাড়ায় তোমার স্পর্শ পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষায়- কাঁদে,আবার মাকে ডাকে ইশারায় ধরে দিতে তোমাকে, সন্তানের অপূর্ণ সাধ মেটাতে শিশু মাতা তোমাকে মুষ্ঠিবদ্ধ করতে চায়, নিজের শিশুর মুখে হাসি দেখার জন্যে, কখনো ভাব না তুমিও মা, বাসায় যুগল ছানা তখনো…
-
কেশবতী প্রিয়ংগনা, আমার কবিতার রাণী
কেশবতী প্রিয়ংগনা পথিক জামান কেশবতী প্রিয়ংগনা, তুমিতো সন্ধ্যাকাশের শুকতারার চেয়েও সুন্দর। তুমি অসীম আকাশে একাকী জেগে থাকা পূর্ণিমার চাঁদের মতোই উজ্জ্বল, কিন্তু আমার আকাশতো এখনো ঘোর অন্ধকার। এখানে আর চাঁদ ওঠেনা, তারাও ফোটেনা বহেনা মৃদুমন্দ বাতাস, ডাকেনা বসন্তের কোকিল ফোটেনা লাল কৃষ্ণচূড়ার ফুল ভরা বসন্তেও। বারান্দায় দাঁড়িয়ে এদিক সেদিক চাই, কত লোক আসে কত লোক যায়, শুধু তুমি নাই তাদের ভিড়ে। প্রতীক্ষার প্রহরগুলো হতাশায় শুধু দীর্ঘতরই হয়, আশার আলো ফোটেনা আর এ প্রতীক্ষিত জীবনে আমার! আরও পড়ুন কবি পথিক জামানের কবিতা- বারবার ফিরে আসি ঝড়ের পূর্বাভাস ভালোবাসি যারে সুখের সন্ধান আমার কবিতার রাণী কোন এক ফাগুনে তুমি এসেছিলে…