-
নন্দিত নন্দন, আশাহত ব্যথার ঘায়ে
নন্দিত নন্দন জহুরা ইরা একুশ- তুমি নয়কো শুধুই তারিখ পঞ্জিকার তুমি রক্তে রাঙা জয়ধ্বজা নব ফাল্গুনী ঊষার। একুশ- তুমি রক্ত ঝরানো ফাগুনের আগুন তুমি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে গড়ে তোলো বর্ষণ মুখর শ্রাবণ। একুশ- তুমি নয়কো শুধুই সংখ্যার প্রতীক তুমি তো শেখালে প্রতিবাদের ভাষা-অন্যায়ে তীব্র ধিক। একুশ- তুমি জাতির বিবেক-নির্মম উদাহরণ তুমি স্বৈরাচারির সংহারে ঘটাও বিদ্রোহ বিস্ফোরণ। একুশ- তুমি বাঙালির ভাষা-প্রতিবাদের মানদণ্ড তুমি দিয়ে নাকো ঠাঁই দেশ জুড়ে যেথা আছে যত ভেক ভন্ড। একুশ- তুমি ধ্বংস করো লোভীরে-নস্যাৎ করো ঔদ্ধত্ব কাঙালীপনা ঘুচাও বাঙালির, আছে যারা নেশায় মত্ত্ব। একুশ- তুমি নতুন চেতনা জাগাও সবার বুকে অনিয়ম ভেঙে বাঁচাও তাদের-যারা মরছে ধুঁকে ধুঁকে।…
-
নিমগ্ন ভালোবাসার বৃক্ষ
নিমগ্ন ভালোবাসার বৃক্ষ জহুরা ইরা অমর জীবনের প্রত্যাশা নয়, ভালোবেসে অমর হবো সাহারার শূন্যতা বুকে নিয়ে জোৎস্না ভেজা রাতে গা ভেজানো রোদে তীর মাড়িয়ে মাঠ পেরিয়ে ছুটেছি অনেক। শুদ্ধ ভালোবাসার দূর্ভিক্ষে ক্লান্ত হয়ে ডুবে গেছি গহীন কালোর অন্তহীন গহ্বরে। জীবনের ধূসর গোধুলি বেলায় হঠাৎ মন ভেজানো বৃষ্টি হয়ে তুমি এলে ভালোবেসে বন্দি করলে আমাকে বললে ভালোবাসা দাও অমরত্ব দেবো। যে বুকে ব্যবিলনের শূন্যোদ্যান-সেখানে জন্ম দিলে আমাজানের দ্রাবিড় অরণ্য। বিষণ্ন বুকের গভীরে জ্বালিয়ে দিলে হাজার তারার দীপাবলি এখন তুমি চলে যেতে বললেই তো আমি যাব না। আমার কাছে তোমার জন্য সঞ্চিত একটি পবিত্র ভোর উদ্দেশ্য কথা বিনিময়-বিধেয় ভাবিনি কখনো। তোমার প্রতিক্ষায়…
-
অগ্নিঝরা বৈশাখ
অগ্নিঝরা বৈশাখ জহুরা ইরা বৈশাখের নতুন সূর্য হয় যেন জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ড যার তাপদাহে শরীর থেকে নির্গত হোক অজস্র ধারায় ঘাম, জমে থাকা পুঁজ, ভীরুতার ভিত আর দূষিত রক্ত। যে রক্ত ধমনীতে বয়ে মানুষকে করছে সংক্রমিত। বৈশাখ বয়ে আনো, ধরার বুকে এক অগ্নিবান, জ্বালিয়ে দাও যত জরা, অনাকাঙ্ক্ষিত আবর্জনা, অভিশাপ নিভৃতে, গঞ্জে, নগরে, দেশ জুড়ে যেখানে শুদ্ধ হোক বুকের গহীন ক্ষত আর ঘুনে ধরা হৃৎপিন্ড। কালবৈশাখি হয়ে তুমি তান্ডব নৃত্য কর ভূপৃষ্ঠে উড়িয়ে দাও যত ধুলো মরা পাতা, আর সব অমানুষগুলো, পায়ের তলায় থাকবেনা মিথ্যার পাতা ফাঁদ, নির্বিঘ্নে বেড়ে উঠবে নবজাতক পাবে যোগ্য আবাস বৈশাখে বিদ্যুৎ চমকাক থেকে, তীব্র বেগে,…
-
স্মৃতিতে অম্লান, বদল
স্মৃতিতে অম্লান জহুরা ইরা ওগো রফিক, শফিক, ছালাম, বরকত, জব্বার, মোদের স্বশ্রদ্ধ সালাম লহ লক্ষ হাজার বার। দেখিনি তোমাদের তবু মনে হয় কত না যুগের চেনা সকল কাজে কথার মাঝে, তোমাদের দান কভু ফুরাবে না। কে বলে তোমরা মরে গেছ? কে বলে পাশে নাই? আছ মনের গভীরে স্মৃতিতে, লেখনিতে পেয়ে বর্ণমালায় ঠাঁই। অ-আ-ক-খ বর্ণ দিয়ে যখন লিখি মনের কথা, প্রতি বর্ণ তোমাদের মুখচ্ছবি, হেসে বলে মোরা হেথা। গভীর আবেগে হৃদয়ের কথা, যবে লিখি কাগজের বুকে, তোমরাই যে সাহস যোগাও কালিতে মিশে থেকে। দুটি ঠোট ছুঁয়ে বেড়িয়ে আসা মনকাড়া সব ধ্বনি, সে ধ্বনি তোমরা তাই ঠোঁট ছুঁয়ে থাকে তোমাদের মুখখানি।…
-
খুঁজি স্বাধীনতা
খুঁজি স্বাধীনতা জহুরা ইরা একটি স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ আছে যার নিজস্ব পতাকা, মানচিত্র জাতীয় রাষ্ট্রিয় প্রতীক আছে জাতীয় দিবস, সংগীত কিন্তু স্বাধীনতা কোথায়? নারীর চলার পথ আজ কন্টকাকীর্ণ শিশু, কিশোরী, কুমারী, বধু, মাতা হয় বঞ্চিত, লাঞ্ছিত, ধর্ষিত, দূর্বৃত্তদের লোলুপ দৃষ্টির ঘায়, তবে স্বাধীনতা কোথায়? শিশু কিশোরকে হতে হয় অপহরণ হরণ হয় তাদের ন্যায্য অধিকার খর্ব করা হয় বেঁচে থাকার অধিকার অর্থ লোভীদের অশুভ অর্থ লিপ্সায় তবে স্বাধীনতা কোথায়? কর্মশেষে ঘরে ফিরে আসা প্রিয়জনের অধীর প্রতিক্ষার অবসানে এসে পৌছে প্রাণহীন দেহ মানুষ খেকো মানুষের থাবায় তবে স্বাধীনতা কোথায়? কষ্টে অর্জিত কিঞ্চিত ধন সাধ করে কেনা প্রিয়জনের উপহার মানুষ আকৃতির সব…
-
ব্যবধান, অতীত ফিরে দাঁড়াও, হৈমন্তি ভালবাসা
ব্যবধান জহুরা আক্তার ইরা এক মাটিতেই জন্ম সবার এক আকাশ তলে বাস তবু কারো মনে খুশির জোয়ার কেউ ফেলে দীর্ঘশ্বাস। কেউ গড়ে তোলে অট্টালিকা কারো বাস কুঁড়ে ঘরে, বাস্তুহারা হয়ে কেউ কেউ ঘুরে ফেরে দ্বারে দ্বারে। কারো শরীরে বাহারী পোশাক কেউ দামী গাড়িতে ঘোরে যে গাড়ির চাকায় পিষ্ঠ হয়ে কত প্রাণ যে অকালে ঝরে। কারো ঘরে রাখা সুস্বাদু খাবার পোষা কুকুরের তরে আধা পোয়া পেটও পায়না খাবার কেউ অনাহারে ধুকে মরে। আসামিরা সবাই নয়কো পাপী তবু নির্মম বিচারের খেল পাপ করে কেউ পার পেয়ে যায় কেউ বিনা পাপে খাটে জেল। চাবুক ধরেছে রক্তপায়িরা অন্যেরা পিঠ পেতে বিস্ময় জাগে নিষ্ঠুর…
-
নারী, তুলু সোনা
নারী জহুরা ইরা আমি নারী সমাজ আমাকে ভাবতেই পারে তুচ্ছ তাতে আমার অস্তিত্বের বিশ্বাসে যায় আসে না কিছু আমি জড় নই। কেউ পারে না আমায় তার ইচ্ছে মত সাজাতে আমি বিধাতার গড়া, সৃষ্টির সেরা, আমি বাধ্য শুধু তাঁরই বিধান মানতে আমি মৃত লাশ নই নইকো আমি পঙ্গু মূক বধির আমি ধ্বংস করতে পারি সমাজের যত গ্লানিমাখা অনাসৃষ্টির॥ আমি দানবের সাথে লড়তে পারি বিদীর্ণ করতে পারি ভূতল আমি ঝর্ণাধারা হয়ে বইতে পারি মরুপ্রান্তরেও ফোটাতে পারি ফুলদল ৷ চাই না আমি খনিজ হয়ে অতল গহীনে থাকতে অকল্যাণের বিরুদ্ধে মন বিস্ফোরিত হতে চায় পৃথিবীতে আমি মানুষ, আমি নারী আমি উচ্ছ্বল, আমি জ্বলন্ত…
-
ভেজালের সমারোহে,স্মৃতি অনুভবে উজ্জ্বল দিন
ভেজালের সমারোহে জহুরা ইরা পরতে পরতে জড়িত ভেজাল, ভেজালের নেই শেষ, ভেজাল মুক্ত দেখার ইচ্ছে আমার বাংলাদেশ।। উক্তিতে ভেজাল যুক্তিতে ভেজাল বক্তৃতা কোন ছাড়, পরীক্ষায় ভেজাল নিরীক্ষায় ভেজাল ভাঙল শির দাঁড় ।। আশায় ভেজাল ভাষায় ভেজাল বিব্রত মানব জাতি জলেও ভেজাল তেলেও ভেজাল নিভবে জীবন বাতি ।। শিক্ষায় ভেজাল দীক্ষায় ভেজাল ভেজাল জীবন গড়ায় কইতে ভেজাল সইতে ভেজাল ভেজাল জীবন ধারায়।। রক্তে ভেজাল ভক্তে ভেজাল ভেজাল অস্তি মজ্জায় তথ্যে ভেজাল পথ্যে ভেজাল ভেজাল ঔষধ চিকিৎসায়।। অর্থে ভেজাল শর্তে ভেজাল ভেজাল চুক্তি নামায় মন্ত্রে ভেজাল যন্ত্রে ভেজাল জীবন বাঁচা দায়।। খাদ্যে ভেজাল বাদ্যে ভেজাল ভেজাল দেশ গড়ায় চাওয়ায় ভেজাল পাওয়ায়…