শেকড়ের-সন্ধানে-শেষ-পর্ব
গল্প,  সাহিত্য

শিকড়ের সন্ধানে (শেষ পর্ব)

শিকড়ের সন্ধানে (শেষ পর্ব)

তাহমিনা খাতুন

(সত্য ঘটনা অবলম্বনে)

 

উচ্চ শিক্ষিতা নাবিলা। রাজধানীর একটি স্বনামধন্য স্কুলের শিক্ষিকা। সাত বছর ও পাঁচ বছর বয়সী দুটি শিশু পুত্রের মা। স্বচ্ছল স্বামী এবং দুটি শিশু পুত্র নিয়ে সুখের সংসার। কিন্তু অনেক দিন ধরেই একটি কন্যার মা হওয়ার খুব শখ নাবিলার। গর্ভধারণ করলো মেয়ের আশায়! অল্প দিনের মধ্যেই ডাক্তারের মুখে শুনল সুখবরটি! তার গর্ভের শিশুটি তার বহু কাঙ্খিত মেয়ে! খুশীতে, আনন্দে আত্মহারা নাবিলা। সুখের ডানায়, খুশীর জোয়ারে প্রজাপতির ছন্দে উড়তে শুরু করলো তার দিনগুলি। দেখতে দেখতে প্রসবের দিন এসে গেল। সুস্থ, স্বাস্থ্যবান কন্যার মা হল নাবিলা। বর্ষাকালে, শ্রাবণের এক অঝোর বর্ষণমুখর রাতে জন্ম আদরিনী কন্যার, তাই নাম রাখলো তার বর্ষা। দেখতে দেখতে এক মাস হল বর্ষার বয়স।

হঠাৎ একদিন রাতে প্রচন্ড কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলো। সাথে ভয়ানক কাশি। সাথে সাথেই বর্ষাকে নিয়ে ছুটল ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার পরীক্ষা করে তক্ষুনি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলেন। হাসপাতালে কয়েকদিন ধরে চলল জমে মানুষে টানাটানি! ক্যানোলা, স্যালাইন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলল চার পাঁচ দিন ধরে! সুঁইয়ের খোঁচায় ঝাঁঝড়া হয়ে গেল বর্ষার ছোট্ট শরীরটি। কিন্তু দুর্ভাগ্য নাবিলার, ডাক্তারদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে, বাবা-মা-ভাই দুটিকে কাঁদিয়ে জীবন শুরু হতে না হতেই দুনিয়াকে বিদায় জানালো সবার আদরের বর্ষা। হাহাকারে ভরে গেল পুরো পরিবার।

আরও পড়ুন গল্প সুরেন বাবু

বর্ষার মৃত্যুর পর অন্যেরা নিজেদের সামলে নিলেও নাবিলাকে কোনভাবেই সামলানো যাচ্ছিল না।
অফিসে যাওয়ার আগে নাস্তার টেবিলে দৈনিক পত্রিকার পাতায় নজর বুলানো আতিকের প্রতিদিনের অভ্যাস। বর্ষার চলে যাওয়ার পর সপ্তাহ খানেক পার হয়েছে। বাসাটা যেন মৃত্যুপূরী! হাসি, আনন্দ বিদায় নিয়েছে বর্ষার সাথেই। নাবিলা পরিণত হয়েছে প্রাণহীন এক জড় পদার্থে! ঠিক মত খায় না, ঘুমায় না। ছোট্ট বর্ষার ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে সারাদিন আর কান্নাকাটি করছে। জোর করে খাইয়ে দিলে তবেই খায়। প্রতিদিনের মত সেদিনও অফিসে যাওয়ার আগে পত্রিকা পড়তে গিয়ে একটা ছোট্ট বিজ্ঞাপনের দিকে নজর আটকে গেল আতিকের। কয়েক দিন বয়সের এক কন্যা শিশুর ছবির সাথে একটি খবর, আর তা হলো, “একটি কন্যা শিশু পাওয়া গেছে! বয়স সাতদিন! শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী ব্যক্তিকে নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হলো।”

খবরটা পড়েই আতিকের মনে হল, কন্যা শিশুটি যেন তাদেরই আদরের বর্ষা। খুব মনোযোগ সহকারে বিজ্ঞাপনটা কয়েকবার পড়লো সে। যে প্রতিষ্ঠান থেকে বিজ্ঞাপনটা দেওয়া হয়েছে সেটাও বেশী দূরে নয়। ভাবলো, একবার খোঁজ নেওয়া যাক। অফিস যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে নামতেই চোখে পড়ল, বড় করে লেখা, “আইন সহায়তা ফেডারেশন। দুস্থ, অসহায় নারী ও শিশুদের আইনী সহায়তা ও আশ্রয় প্রদান করা হয়।” ভিতরে প্রবেশ করে রিসেপশনিস্টকে তার উক্ত অফিসে আগমনের কারণ ব্যাখ্যা করলো। জানালো একজন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করে বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত শিশুটিকে নিজেদের সন্তান হিসাবে লালন পালন করার জন্য নিতে চায় সে! আরও জানালো সম্প্রতি তাদের কন্যাকে হারানোর কথা।

আরও পড়ুন গল্প নীরুর মা

আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অসহায় নাবালক শিশু, কিশোর, কিশোরীদের সংস্থায় আশ্রয় দেওয়া হয়। আশ্রয় প্রাপ্ত এসব শিশুকে কোন আগ্রহী ব্যক্তি লালন পালন করার ইচ্ছা পোষণ করলে ঐ ব্যক্তির আর্থিক সংগতি, সামাজিক অবস্থান পারিবারিক ইতিহাস ইত্যাদি সম্মন্ধে খোঁজ খবর নেওয়া হয়। এসব বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য পাওয়া গেলে কোর্টের মাধ্যমে কোন শিশুকে ঐ ব্যক্তির জিম্মায় দেওয়া হয়।
সব তথ্য জেনে সে দিনের মত বিদায় নিল আতিক। অফিস থেকে ফিরে নাবিলার কাছে গেল সে। শোকে মুহ্যমান নাবিলার কাছে গিয়ে ওর হাত দুটি ধরে কিছুক্ষণ বসে থাকল। তারপর ধীরে ধীরে পত্রিকার বিজ্ঞাপনটা ওর হাতে দিল। নাবিলা প্রথমে কোন আগ্রহ দেখাল না।
পরে জিজ্ঞাসা করল,
──কি এটা?
একটু পরে বিজ্ঞাপনটা দেখল। বিজ্ঞাপনটা দেখার পর ওর চেহারায় একটা ভাবান্তর লক্ষ্য করলো আতিক। একটু পরেই উঠে দাঁড়াল নাবিলা। আতিকের দুই হাত ধরে অনুনয়ের স্বরে বলে উঠল,
──এতো আমার বর্ষা! চলো এক্ষুনি নিয়ে আসি আমার বর্ষাকে।
আতিক শান্ত করলো ওকে। বলল,
──এখন তো ঐ সংস্থার অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। কাল সকালেই আমরা ওখানে যাব। আমি গতওকালই ঐ অফিসে গিয়ে কথা বলে এসেছি।

আরও পড়ুন গল্প বড় বাবা

সারা রাতই প্রায় না ঘুমিয়ে ছটফট করে কাটলো নাবিলার। আতিক পর দিনই সকালে ওকে নিয়ে হাজির হলো সংস্থাটির অফিসে। একজন আইনজীবীর সাথে কথা বলল এবং শিশুটিকে একবার দেখতে চাইলো।
ঘন্টা খানেক পরে একটা তোয়ালে জড়ানো কন্যা শিশুকে নিয়ে এলো শিশুটির তত্বাবধানে থাকা হাউস মাদার! শিশুদের দায়িত্বে থাকা নারী কর্মীদের সংস্থা থেকে ‘হাউস মাদার’ পদবী দেওয়া হয়। শিশুটিকে দেখে যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না নাবিলা। গায়ের রঙ, স্বাস্থ্য এমন কি চেহারায় পর্যন্ত মিল খুঁজে পেল সে তার হারিয়ে ফেলা বর্ষার সঙ্গে! হয়তোবা মনের আয়নায় তখনো খুঁজে ফিরছিল তার নাড়ী ছেঁড়া ধনকে।
নাবিলা অধীর আগ্রহে জানতে চাইল আইনজীবীর নিকট,
──আমি কি আজই শিশুটিকে নিজের মেয়ে হিসাবে নিয়ে যেতে পারে?
আইনজীবী জানালেন,
──কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ আদালতের অনুমতি ছাড়া কোন শিশুকে কোন ব্যক্তির নিকট লালন-পালনের জন্য দেওয়ার নিয়ম নাই। আইনজীবী আরও জানালেন যত দ্রুত সম্ভব, সংস্থা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে। নাবিলা আশ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গেল এবং আইনী প্রক্রিয় শেষে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই শিশুটিকে নিজেদের ঘরে নিয়ে গেল।

শ্রাবণের এক বর্ষণ মুখর রাতে নিজের মেয়েটির জন্ম হয়েছিল বলে মেয়ের নাম রেখেছিল বর্ষা। বিধাতার লীলা বোঝা বড় দায়! নাবিলার পালিত মেয়েটির জন্মও এক শ্রাবণের রাতে! সে কারণে নতুন মেয়ের নামও সে রাখল বর্ষা!

নাবিলার সত্যিকার মাতৃস্নেহে দিনে দিনে বেড়ে উঠতে থাকে নাবিলার কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে বর্ষা। কয়েক বছর পরে উন্নত জীবনের সন্ধানে পুরে পরিবারসহ উন্নত দেশে পাড়ি জমাল নাবিলা। উন্নত দেশের ততোধিক উন্নত জীবন ব্যবস্থা!

আরও পড়ুন গল্প সোনালী সকাল

স্কুল শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ ডিগ্রী নিয়েছে বর্ষা। ভাল একটা চাকুরিতে জয়েন করেছে। পালক পিতার নিকট থেকে নিজের আসল পরিচয়টা জানার পর কিছুদিন মানসিক ভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পরেছিল বর্ষা। সব সময় বিমর্ষ হয়ে থাকত। কোন কিছুতেই আগ্রহ নেই। উন্নত দেশে মানসিক স্বাস্থের ব্যাপারটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। নাবিলা আর আতিক যোগাযোগ করলো একজন মানসিক ডাক্তারের সঙ্গে। শুরু হলো বর্ষার মানসিক চিকিৎসা। ধীরে ধীরে উন্নতি হতে শুরু করলো বর্ষার। বছর খানেকের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক একজন মানুষ হয়ে উঠলো সে। কিন্তু এখনও মাঝে মাঝে আনমনা হয় বর্ষা। নিজের অতীতকে খুঁজে বেড়ায়।

একদিন বাবাকে বলে,
──বাবা, চল না একবার বাংলাদেশে যাই। যে প্রতিষ্ঠান থেকে তোমরা আমাকে এনেছিলে, ওরা নিশ্চয়ই আমার ব্যাপারে কোন তথ্য দিতে পারবে। আমি তো আর বাংলাদেশে ফিরে যাব না। তবু একটি বারের জন্যও যদি আমার হারানো অতীতের সন্ধানে যাই, তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে না?
খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে আতিক বলল,
──ঠিক আছে। চল একবার ঘুরে আসা যাক বাংলাদেশ থেকে। যাওয়া হয়নি অনেক বছর। এরপর একদিন পুরো পরিবার বাংলাদেশে হাজির হল।

ঢাকায় পৌঁছে আতিক পরদিনই আইনী সংস্থাটির কার্যালয়ে উপস্থিত হল মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু তারা কোন হদিশ দিতে পারল না। শুধু পরামর্শ দিল, যে থানা থেকে বর্ষাকে আনা হয়েছিল, সেই থানায় যোগাযোগ করতে। মেয়েকে নিয়ে আতিক আবার ছুটলো বরিশালের সেই থানায়।

আরও পড়ুন ভৌতিক গল্প অশরীরী আত্মা

ছুটোছুটিই সার হলো, লাভ হলো না কোন। এত বছর আগের ঘটনা, এত পুরনো ফাইল খুঁজে পাওয়া দুরূহ শুধু নয় অসম্ভব একটি কাজ। এছাড়া সেদিনের সেই ডিউটি অফিসারও মারা গেছেন! একজন কেবল মাত্র বলতে পারলেন, বরিশালের কোন একটি এলাকা থেকে একজন শিশুটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন। তবে তাঁর নাম ঠিকানা কিছুই তাঁর জানা নাই।
বেপরোয়া বর্ষাকে যেন দমাতে পারবে না কোন কিছুই। বাবাকে বলল,
──বাবা তুমি অনেক কষ্ট করেছো। আমি নিজের মতো করে একটু চেষ্টা করতে চাই। ইন্টারনেট থেকে বরিশালের সৈয়দপুর গ্রামের অবস্থান জেনে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল বরিশালের উদ্দেশ্যে। নিরুপায় আতিক তো আর মেয়েকে একা ছাড়তে পারে না। অগত্যা মেয়ের সঙ্গী তাকে হতেই হল। বর্ষাকে সৈয়দপুর গ্রামের কামাল সাহেব নামের এক ভদ্রলোক কুড়িয়ে পেয়েছিলেন, ঐ গ্রামেই বরং খোঁজ করা যাক।

বহু চেষ্টা করে সৈয়দপুর গ্রামে পৌঁছাতে পারলেও লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল, কামাল সাহেব এবং তাঁর স্ত্রী অনেক বছর আগেই মারা গেছেন। তাঁদের ছেলেমেয়েরাও দেশের বাইরে কে কোথায় আছে, কোন তথ্য পাওয়া গেল না। কাজেই হতাশ হয়ে বর্ষাকে বাবার সঙ্গে ঢাকা ফিরতে হল। কয়েক দিন বাংলাদেশে কাটিয়ে ফিরে গেলে পরদেশে নিজেদের আবাসে।

এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ২৩/২৪ বছর। আমি তখন ঐ আইনজীবী সংগঠনের আইনজীবী। একদিন সকালে কেবল মাত্রই অফিসে পৌঁছেছি। অফিসের রিসেপশনিষ্ট জানাল, একজন দেখা করতে চায়। আসার অনুমতি পেয়ে ২৮/২৯ বছর বয়সী এক যুবক হাজির হলো। তার আগমনের কারন জানতে চাইলে সে ২৩/২৪ বছর আগের পত্রিকার বিজ্ঞাপনের কাটিংটি আমার সামনে তুলে ধরল।

আরও পড়ুন গল্প পরাজিত নাবিক

সে জানালো,
-বিজ্ঞাপনে কুড়িয়ে পাওয়া যে মেয়েটির তথ্য জানিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়ছে, তার সাথে দেখা করতে চায় সে।
লোকটিকে বললাম,
──আপনি কে? আপনার সাথে কেন দেখা করতে দেব? আমরা শিশুটিকে থানার মাধ্যমে পেয়েছি। থানার মাধ্যমে জেনেছি শিশুটিকে কোন হৃদয়বান ব্যক্তি কোন গ্রামের কবরস্থান থেকে উদ্ধার করেছিলেন। আপনি নিশ্চয় জানেন তার পিতা-মাতা কোথায়?
লোকটি জানাল,
──যতটুকু জানতে পেরেছি, শিশুটির জন্মের কয়েক মাস আগেই শিশুটির পিতা তার মাকে ছেড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে কোথায় যেন চলে গিয়েছিল, কেউ জানে না! শিশুটিকে জন্ম দিয়েই তার মাও পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে! সম্ভবত শিশুটির কোন নিকট আত্মীয় নিজেদের দায় এড়ানোর জন্যই এমন নিষ্ঠুর, জঘন্য কাজটি করে থাকবে। আমি যখন পত্রিকার খবরটি আমার পরিবারের মাধ্যমে জানতে পারি, তখন আমার বয়স মাত্র সাত/আট বছর। আমাদের পরিবার তখন ছিল অত্যন্ত দরিদ্র। তারপরও আমি এবং আমার পরিবার আশে পাশের গ্রামে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করে উপরের তথ্যটুকু জেনেছি। মেয়েটি চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হয়েও ভাগ্য ক্রমে বেঁচে গেছে এবং একটি সুন্দর, উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা পেয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এটা জেনে খুব ভাল লাগছে। কেবল মাত্র অল্প বয়সের কৌতুহল থেকেই শিশুটিকে দেখার আগ্রহ হয়েছিল! তাই এসেছি!
তাকে জানালাম,
──সেটা সম্ভব নয়।
আরও কয়েকজনের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলাম বিষয়টি নিয়ে। কারণ আমরা চাইনি, বিষয়টা বর্ষার জীবনে নতুন করে ঝড় তুলুক।

আরও পড়ুন গল্প সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা

অনেক বড় হয়ে গেছে বর্ষা। উন্নত দেশের উন্নত জীবন যাপনে অভ্যস্থ হয়ে গেছে সে। নিজের জীবন সঙ্গী খুঁজে পেয়েছে। দুটি সন্তানের মা হয়েছে। স্বামী, সংসার, সন্তান নিয়ে পরিপূর্ণ জীবন। তবু সারাদিনের ব্যস্ততার শেষে কোন নিভৃত মুহূর্তে মনটা উদাস হয়ে যায়। কোথায় যেন মনটা ছুটে যেতে চায়। কিছু না পাওয়ার বেদনায় হাহাকার করে ওঠে বুকের গভীর কোণটি। ভাবে, একটি বার যদি জানতে পারত কে তার জন্মদাতা পিতা, কে তার স্নেহময়ী মা! হয় তো মনটা শান্তি পেত। জীবনের বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই জীবনের বাকী পথটা পাড়ি দিতে হবে-মনকে এভাবেই সান্তনা দেয় বর্ষা।

আরও পড়ুন শেকড়ের সন্ধানে-
১ম পর্ব

ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

শিকড়ের সন্ধানে (শেষ পর্ব)

Facebook Comments Box

তাহমিনা খাতুন একজন বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, ভ্রমণকাহিনি এবং নারীর অধিকার নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। তার পেশাগত জীবনে তিনি নারীদের আইনি সহায়তা প্রদান এবং তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতেন। তাহমিনা খাতুন ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মার্চ পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত আহম্মদপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ও কৈশোর কাটে এই গ্রামেই।

error: Content is protected !!