মেয়ের-তকমা
কবিতা,  জিন্নাত আরা রোজী,  সাহিত্য

মেয়ের তকমা, মেঘ বালিকা

মেয়ের তকমা

জিন্নাত আরা রোজী

 

আমি মেয়ে বলে কথা….
সব কিছুই ভেবে চিন্তে করতে হবে।
পা ফেলতে হবে মেপে মেপে
কথা বলতে হবে হিসেব করে,
চললে-বললে মেয়েলিপনা না থাকলে
সমাজ কি বলবে?
মা-বাবার, সম্মান থাকবে তো?
পরিবারের অমর্যাদা হবে নাতো?
লোকে কি বলবে?

হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি না পরলে
আমি মেয়ে হবো কেমন করে!
নাকছাবি, কানপাশা গলার মালা
এ সবই তো মেয়েদের নমুনা
সাথে বড় করে ঘোমটাও টেনে নিতে হবে,
আমি মেয়ে বলে কথা….

শুধু কি তাই?
সাথে আরো কত নিয়ম কানুন আছে
রন্ধনশিল্প না জানলে মেয়ে তকমাটা যে বিফলে যাবে
মিষ্টি স্বরে কথা না বললে মেয়ে হবো কেমন করে?
সবার মন যুগিয়ে চলা এটা যে দায়িত্বের মধ্যে
সারারাত জেগে বাচ্চাকে দেখভাল না করলে
মাতৃত্বের স্বাদে যে অপূর্ণতা রয়ে যাবে,
আমি মেয়ে বলে কথা….

সাত সকালে ডাইনিং টেবিলে নাস্তা রেডি না থাকলে
শ্বশুর আব্বা, স্বামীর অফিসে লেট হয়ে যাবে,
ননদ দেবরের কলেজ, ইউনিভার্সিটির বাসটাও ধরতে হবে।
শ্বাশুড়ি আম্মা যে ভাবে চলতে বলেন
সে ভাবে না চললে স্বামীর যে মন খারাপ হবে।
এই সব না করলে বৈবাহিক জীবনে সুখী হবো কি করে
আমি মেয়ে বলে কথা….
এই তকমাটা জন্মের পর পরিবার থেকেই লেগে যায়।
আমি যে মেয়ে, মেয়ে বলে কথা,
এই কথার শেষ কখনো হবে না শেষ।

আরও পড়ুন জিন্নাত আরা রোজীর কবিতা-
সাধ
ভালোবাসার ঋণ
সন্ধ্যা নামার আগে

 

মেঘ বালিকা

মেঘ বালিকা একলা লেকের ধারে
দাঁড়িয়ে আছে আনমনে,
আকাশ পানে চেয়ে;
ভাবছে সে সকল বাঁধন ছিড়ে,
যাবে মেঘের দেশে।
সোনা ঝরা রোদ্দুর মাখবে সারাগায়ে,
মিতালি আর ভালোবাসায়
আপন করে নেবে আকাশটাকে
তারারা সব ভাব জমাবে
মেঘ বালিকার সাথে।
নীরব নিশীত রাতে
আকাশ পানে সাঁঝের প্রদীপ জ্বেলে
পরীরা সব করবে খেলা
মেঘ বালিকার সাথে।
এটা ভেবে মেঘ বালিকার
জল আসে আঁখিপাতে।
ঊষার আলো জ্বলবে যখন,
পরীরা তখন যাবে আপন দেশে;
ঊষা কুমারী বলবে হেসে,
‘মেঘ বালিকা থাক আমার সাথে।
‘ফুলের দেশে যাবো মোরা
ফুল কুমারীর বেশে, দারুণ মজা হবে’।

আরও পড়ুন কবিতা-
ভালোবাসা
রূপকন্যা
গাজনা বিলের ধান

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

মেয়ের তকমা

Facebook Comments Box

প্রকৌশলী মো. আলতাব হোসেন, সাহিত্য সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত অলাভজনক ও অরাজনৈতিক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সাধারণ সম্পাদক। তিনি ‘আমাদের সুজানগর’ সাহিত্য সংকলনের সম্পাদক এবং ‘আমাদের সুজানগর’ ওয়েব ম্যাগাজিনের সম্পাদক ও প্রকাশক। এছাড়া ‘অন্তরের কথা’ লাইভ অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক তিনি। সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধ, কৃতি ব্যক্তিবর্গ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে ভালোবাসেন। বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করে বর্তমানে একটি স্বনামধন্য ওয়াশিং প্লান্টের রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশনে কর্মরত আছেন। তিনি ১৯৯২ সালের ১৫ জুন, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত হাটখালী ইউনিয়নের সাগতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

error: Content is protected !!