বিবাগী মন, বিষণ্ণ বাতাসে, উৎসব
বিবাগী মন
বারোয়ারী বসন্ত জীবনের যতোসব সাধ-আহ্লাদ
কোথায় হারিয়েছে সেই দিন
তার বিষণ্নতায় যেন হৃদয়ের চত্বরে
মুঠো মুঠো রোদ্দুর আজ
বিবেকের ক্ষয়িষ্ণু হাটে।
স্বপ্নময় আশান্বিত বৃক্ষেরা উপড়ে গেছে হায়!
কালবৈশাখী ঝড়ে।
স্রোতসিনী যমুনায় জেগে গেছে চর
প্রেমময় রাধার খেয়াঘাটে
প্রসন্ন হৃদয় থেকে গানের পাখিরা উড়ে গেছে
অই বিন্দু বিন্দু জলকণার মন্ত্রিত মেঘমালার কাছে
গভীর আঁধারের জ্বালাময়ী-দুঃসহ দুঃখমালা
শ্রাবণের বৃষ্টি হয়ে
ঝরছে অবিরত।
সবকিছু কেনো আজ ঝাপসা মনে হয়
কেনো উড়ে যায় বিদগ্ধ বিবাগী মন
সর্বহারা বাউলের বিষাদিনী একতারা
করুণ সুরে।
কেন পুনশ্চ গায় হারানো সেই গান ….
আরও পড়ুন আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা-
স্মৃতিছায়া
দেহের ভাঁজে কত পথ
কান্নার কৈলাসে
বিষণ্ণ বাতাসে
নশ্বর প্রকৃতির সাথে মিশে আছে
দিগন্ত বিস্তৃত পথ-ঘাট-মাঠ-প্রান্তর
রোদ-কুয়াশা মাড়িয়ে শিগ্ধ মৌনতায়
শান্ত-স্নিগ্ধ দিনে উদাসী হাওয়ায় হাওয়ায় স্বপ্নের ভিতর
হৃদয়ের চত্বরজুড়ে
অলিখিত প্রত্যাশাগুলো হয়ে ওঠে
অশান্ত চোখের অগ্নিশিখা।
মাতালকরা প্রসন্ন সমীরণে
নিঝুম সন্ধ্যায়
অবিরত ঝরে পরে দু’চোখের পোড়া ছাই
অদূরের মন্দির থেকে ভেসে আসে
ধূপে ভরা বাসি হাওয়ার দমকা।
শোনা যায় বিবর্ণ ঝরাপাতাগুলোর শনশন
কুহুকের স্বরে অন্তরমাঝে বেজে ওঠে সকরুণ সুর
আর আমি-
অনিবার্য আহ্বানে বিষাতুর চেহারায়
একাকী বসে আছি
ধূসর বিকেলের অন্ধকূপে।
উৎসব
রঙিন উৎসবে আজ মেতেছে যৌবনা ধরণী
মধুময় মৌবনের সুবাসিত ফুলেরা
বধূরূপে সেজেছে
প্রকৃতি সেজেছে সজীব পত্রপল্লবে
পাখিদের কলরবে।
অথচ আমার হয়নি কখনো সজ্জা
উড়ানো হয়নি রঙিন ফানুসের বহর
অথবা কণ্ঠে সাধা হয়নি
কোনো গান।
তবুও মননের কোকিলেরা
কুহু কুহু ডেকে যায়
মধু বসন্তের উতলা হাওয়ায় হাওয়ায়
সজ্জিত কুঞ্জবনের বাঁশরীর সুরের তানে তানে
দূর থেকে ভেসে আসে রাগ ভৈরবী
আমার জন্য শুধু অপেক্ষায় থাকে
অশেষ বিরহগাঁথা।
ভোরের স্নিগ্ধ আলোর সাথে সাথে
বকুলের সৌরভের সতেজ প্রাণে-প্রাণে
প্রজাপতির পাখায় পাখায়
ঐ মহুয়ার বনে বনে
প্রণয়ের সুর বেজে যায়
ভরে যায় আনন্দ জোয়ারে
প্রাণবন্ত জাগরণ।
কেবল আমিই একা বসে থাকি
খেয়াহীন নদীঘাটে
পুনর্জাগরণের আশায়।
আরও পড়ুন কবিতা-
অগ্নিশ্বর
তোমার প্রতীক্ষায়
প্রকৃতিতে হবো লীন
প্রেমের পদ্য
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
বিবাগী মন