প্রকৃতির-মাঝে-সুখ-খুঁজি
কবিতা,  জিন্নাত আরা রোজী,  সাহিত্য

প্রকৃতির মাঝে সুখ খুঁজি, সাগর কন্যা

প্রকৃতির মাঝে সুখ খুঁজি

জিন্নাত আরা রোজী

 

আমি উদাস হয়ে মুগ্ধ নয়নে
চেয়ে দেখি প্রকৃতির রূপরেখা–
যেন, এই প্রকৃতির মাঝে সুখের পিদিম জ্বলে,
বলাকা মন আমার প্রকৃতি খোঁজে ফিরে
তাইতো ওদের সাথে কত কথা বলি–
নিভৃত নির্জনে একাকী বসে দেখা।

মেঘে ঢাকা একটা দু’টো তারা
যদি খসে পড়ে সবুজ সমারোহে
আমি মুগ্ধ চোখে চেয়ে দেখবো প্রাণ ভরে,
শুধু এদেশকে ভালোবাসার তরে।

আনমনে ভাবী দিবানিশি
তাইতো একটু একটু করে
প্রতিনিয়ত কবিতা লিখি ওদের নিয়ে,
শুধু কাগজে কলমে নয়
এ বুকের মধ্যখানে অতল গহীনে।

বেলা শেষে পাখিরা ফিরে আপন নীড়ে
যখন মাগরিবের আযান পড়ে মসজিদে
কিচিরমিচিরে মুখরিত করে ছোট্ট নীড়
মনের আনন্দে খোদার তাসদীদে।

ওদের দেখে আবার নতুন করে
বাঁচার ইচ্ছে জাগে কাল-কালান্তর,
শ্যামল ছায়া ঘেরা গাঁওগঞ্জে
মন মঞ্জুষার আপন ঘরে।

প্রকৃতি আমারে যদি নেয় আপন করে
তবে বেদনা আমারে করবে না হতাশ–
সারাজীবন প্রকৃতি রাঙা রঙ্গনে রঙ্গনে
বেঁচে রবো সুখেই, পৃথিবীর অঙ্গনে।

আরও পড়ুন জিন্নাত আরা রোজীর কবিতা-
হেমন্তের বিকেল
অবহেলার বৃত্তে
মেয়ের তকমা
সন্ধ্যা নামার আগে

 

সাগর কন্যা

গভীর দৃষ্টিতে একলা চেয়ে থাকি সাগরের নীল জলে।
আমার চোখে সাগরের অনন্ত সৌন্দর্য ভেসে উঠে।
রক্তিম সূর্যটা বুঝি আর কিছুক্ষণ পরে অস্ত যাবে।
সাগরের শরীর জুড়ে রাশি রাশি অথৈ জল।
বর্ষা এলে সাগরের দেহে কি দারুণ যৌবন আসে–
আমি অপার বিস্ময়ে চেয়ে দেখি সাগরের মোহময় অপরূপ দৃশ্য।

উত্তাল সাগরের ঢেউগুলো যখন ঘিরে ফেলে আমায়,
ক্রমাগত ঢেউয়ে আমি হারিয়ে যাই,
যেন নীল সাগরের বুকে–
কতশত গাংচিল ডাকছে দিগন্তে ডানা মেলে উড়তে।
যখন মায়াময় সন্ধ্যায় সাগরের রূপের বদন উথলে ওঠে
মনে হয় আমি সাগর পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখি নাবিকের জাহাজ ফিরে আসা ক্লিপ।
আর নিঃশব্দে গুটিয়ে নিয়েছি প্রাণের যত আবেগ–
ইচ্ছে করে সাগরের নীল জলে ভাসিয়ে দেই কায়িক জীবনের আবেগ।

আর কোন সংশয়ে পিছু তাকাবো না ফিরে তার দিকে
এই ভেবে বলি, নীল সাগরের অথই জলের জীবনে আমাকে নিয়ে যেতে।
সে চলে গেছে বহুদিন আগে-বহুদূরে আমায় ফেলে।
যেখানে তাঁর সুখ পাখি বসত করে ছলনার ছায়াতটে।
কি হবে কাগজের ফুলের মত গন্ধহীন অনুভূতিহীন ভালোবাসা দিয়ে?
তার চেয়ে সেই ভালো অনিন্দ্য সৌরভে থাকবো সাগরের গভীরে।
আমি যতই দেখি সাগরের নীল জল ততই তৃষ্ণা জাগে সাগরের কেউ হতে।

আরও পড়ুন কবিতা-
লিপিকার আমিই তোমার
বিষণ্ন বাসন্তী বাংলা
গোলাপ

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

প্রকৃতির মাঝে সুখ খুঁজি

Facebook Comments Box

জিন্নাত আরা রোজী মূলত একজন কবি। এ ছাড়াও তিনি গল্প ও ছড়া লেখেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: কবিতায় মনে পড়ে, অভিমান বেঁচে থাক, একমুঠো স্বপ্ন। জিন্নাত আরা রোজী ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের ২রা অক্টোবর পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত নাজিরগঞ্জ ইউনিয়নের নওয়াগ্রামের এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারের খান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

error: Content is protected !!