পৃথিবীর-স্বর্গ-সুইজারল্যান্ডে-শেষ-পর্ব
তাহমিনা খাতুন (ভ্রমণকাহিনি),  দর্শনীয় স্থান,  ভ্রমণকাহিনি,  সাহিত্য

পৃথিবীর স্বর্গ সুইজারল্যান্ডে (শেষ পর্ব)

পৃথিবীর স্বর্গ সুইজারল্যান্ডে (শেষ পর্ব)

তাহমিনা খাতুন 

পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের মতোই সুইজারল্যান্ডের চিকিৎসা এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সে কারণে সাধারণ মানুষের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে সুইজারল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য অনেক সময় বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সহায়তা পাওয়া যায়। সুইজারল্যান্ডের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যবীমা করা বাধ্যতামূলক। এমন কী কোনো বিদেশি ট্যুরিস্ট ভিসায় সুইজারল্যান্ডে বেড়াতে গেলেও তার জন্য স্বাস্থ্যবীমা করা বাধ্যতামূলক! নিম্নতম দুইশত সুইস ফ্রাঁ (যা বাংলাদেশি টাকায় দুই হাজার টাকার সমমানের) থেকে শুরু করে পাঁচশত বা আরও বেশি মূল্যমানের স্বাস্থ্যবীমা করা যায়। তবে কেউ যদি নিম্নতম মূল্যের স্বাস্থ্যবীমা করে, সে প্রথমেই বীমার সুযোগ পায় না। তাকে বীমার প্রিমিয়া দেওয়ার পাশাপাশি নিজ খরচে চিকিৎসা নিতে হয়।

অক্টোবর-মাসে-ফল-কালার-পাতা-ঝরার-সময়
অক্টোবর মাসে ফল কালার (পাতা ঝরার সময়)

আড়াই হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক সমমানের চিকিৎসা নেওয়া পূর্ণ হলেই কেবল বীমা কোম্পানি চিকিৎসা ব্যয়ের ৯০ ভাগ পরিশোধ করে। বাকি ১০ রোগী নিজে বহন করে। কারও যদি একবারের জন্যও চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নাও হয়, প্রতি মাসে নির্ধারিত অঙ্কের বীমার কিস্তি পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক। এখানে আমার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, আমি যেদিন সুইজারল্যান্ডে প্রবেশ করেছি, সেদিন থেকেই আমাকে স্বাস্থ্যবীমার আওতায় আসতে হয়েছে এবং প্রতিমাসেই বীমার প্রিমিয়াম হিসাবে একটি বেশ বড়ো মূল্যের অর্থ বীমার জন্য পরিশোধ করতে হয়। বিভিন্ন মূল্যের স্বাস্থ্যবীমা করার ব্যবস্থা আছে সুইজারল্যান্ডে। কেবল মাত্র সুইজারল্যান্ডেই নয়, আমেরিকাতেও প্রত্যেক নাগরিকের জন্যই স্বাস্থ্যবীমা করা বাধ্যতামূলক।

 

তবে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে থাকাকালীন সময়ে আমাকে স্বাস্থ্যবীমা করতে হলেও আমাকে স্বাস্থ্যবীমার জন্য কোনো প্রিমিয়াম দিতে হয়নি। কারণ বীমাকারীর বয়স ষাট বছর পূর্ণ হলেই তাকে সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে গণ্য করা হয় এবং একজন সিনিয়র সিটিজেনকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়। নিউইয়র্কের বেল ভিউ-যা ১৭৩৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত আমেরিকার সবচেয়ে পুরোনো হাসপাতাল- সেখান থেকে সম্পূর্ন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছ। শুধু তাই নয়, উন্নত দেশে বিশেষত নিউইয়র্ক এবং সুইজারল্যান্ডে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই দুই দেশেই ওষুধের মূল্য অত্যধিক বেশি। এমনও শুনেছি আমেরিকায় ওষুধের দাম অস্বাভাবিক বেশি হওয়ার কারণে অনেকেই ওষুধ কেনার জন্য কানাডায় যায়। তবে বেল ভিউ হাসপাতালের রোগী হওয়ার কারণে আমি বেল ভিউ হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে মাত্র ২ ডলারে তিন মাসের ওষুধ কেনার সুযোগ পেতাম যার দাম অন্য যেকোনো ফার্মেসিতে কমপক্ষে ৯০ ডলার!

উন্নত দেশে মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে ডাক্তারের সংখ্যা অপ্রতুল। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা সুইজারল্যান্ড-যেখানকার কথাই বলি না কেন লোক সংখ্যার অনুপাতে ডাক্তারের সংখ্যা এত কম যেকোনো জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে গেলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়! একবার নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করে ডাক্তারের স্বল্পতার কারণে চিকিৎসা না নিয়ে ফিরে এসেছিলাম!

জেনেভা-লেকের-পাড়ে-রোদেলের-সাথে-আমরা
জেনেভা লেকের পাড়ে রোদেলের সাথে আমরা

সুইজারল্যান্ডে ডাক্তাররা রোগীর জন্য প্রেসক্রিপশন লিখতে বড়োই কার্পণ্য করেন। পক্ষান্তরে আমাদের দেশের অনেক ডাক্তারই ওষুধ লিখতে পাতার পর পাতা ভরিয়ে ফেলেন। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রদানের ক্ষেত্রে এসব দেশের চিকিৎসকেরা অত্যন্ত সতর্ক। এরা প্রাকৃতিকভাবে নিরাময়কে বেশি গুরুত্ব দেয়। এর ভালো দিক যেমন রয়েছে, অন্যদিকে এর খারাপ দিকও কম নয়। এর বড়ো প্রমাণ করোনাকালীন সময়ের অভিজ্ঞতা। আমি নিজে যখন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলাম এবং অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন হওয়া সত্বেও ডাক্তার ব্যথানাশক ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ প্রেসক্রাইব করেননি। সম্ভবত এ কারণেই সুইজারল্যান্ডের লোকসংখ্যা মাত্র পঁচাশি লাখ কিন্তু করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় পনের হাজার!

তবে সুইজারল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভোগান্তির শিকারও কম হতে হয়নি। এ দেশের ডাক্তারদের চেম্বার সপ্তাহে চারদিনের বেশি খোলা পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে রোগীদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। রোগীর সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ার কারণে উন্নত দেশের ডাক্তারদের রোগ নির্ণয়ে দক্ষতার অভাব রয়েছে বলে মনে হয়। ওষুধ নির্বাচনেও অনেক সময় ভুল করে রোগীদের ভোগান্তিতে ফেলে দেওয়া হয়; এমনকি এতে মৃত্যু ঝুঁকিও তৈরি হয়।

কমপক্ষে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাগ্রহণ সব উন্নত দেশেই বাধ্যতামূলক। স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুলগামী কোনো ছেলেমেয়েকে যদি রাস্তায় ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়, তবে পুলিশ তার অভিভাবককে তলব করে ওই শিক্ষার্থীর স্কুলে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইবে। কোনো শিক্ষার্থী কোনো কারণে স্কুলে না যেতে পারলে তার অভিভাবককে অনুপস্থিতির কারণ স্কুলকে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হয়। যেকোনো শিশুর শিক্ষাগ্রহণ ওই দেশের নিজস্ব ভাষায় করতে হয় এবং সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় শিক্ষাগ্রহণ করতে চাইলে বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়। যেকোনো সরকারি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত-সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক অথবা বিদেশি সবাইকে বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে প্রাইভেট স্কুলে শিক্ষাগ্রহণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

নিওঁ-সুইজারল্যান্ড
নিওঁ সুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ডের মানুষ অত্যন্ত মৃদুভাষী এবং সজ্জন। রাস্তায় চলার পথে, চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতে গেলে এমনকি দোকানে সওদা কিনে মূল্য পরিশোধ করতে গেলে একটু হাসি দিয়ে ফরাসি ভাষায় ‘বঁজু’ অর্থাৎ হ্যালো বলে অভিবাদন জানায়।
উন্নত সব দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই-বয়স্ক, তরুণ নির্বিশেষে- কুকুর বা বিড়াল পোষা সবচেয়ে প্রিয় শ। সুইজারল্যান্ডও এর ব্যতিক্রম নয়! পোষা প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ রীতিমত দন্ডনীয় অপরাধ! পোষা প্রাণীকে নির্দিষ্ট সময় পর পর রোগ প্রতিরোধী টিকা দেওয়া এবং তার প্রমাণ রাখা বাধ্যতামূলক। পোষা প্রাণীর মল যাতে যেখানে সেখানে ফেলে না রাখা হয়, তার জন্য রাস্তার মোড়ে পার্কে সব জায়গাতেই পলিথিন রাখা থাকে। এছাড়া প্রাণীর মালিক তাৎক্ষণিকভাবে মল পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নিজের সাথেই রাখে! তবে এটাও ঠিক উন্নত-অনুন্নত সব দেশের মানুষের মধ্যেই অনিয়ম করার একটা প্রবণতা কাজ করে। শুধু পার্থক্য এটাই, উন্নত দেশে আইনের কঠোর প্রয়োগের কারণে উন্নত দেশের মানুষেরা আইন ভাঙ্গতে ভয় পায়।

সুইজারল্যান্ডের মানুষ অত্যন্ত পুষ্পপ্রেমী। এদেশে প্রায় সব বাড়ির সামনে, পিছনে ফুলের বাগান, এছাড়া রাস্তায়, বারান্দায়, ছোট্ট ব্যালকনিতে হরেক রঙের দৃষ্টিনন্দন বাহারি ফুল শোভা পায়। একেকটা ফুলের অসংখ্য রং। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করার মতো, আর তা হলো কেবলমাত্র সুইজারল্যান্ড নয়-যেকোনো শীতের দেশের ফুলই সুবাসহীন। আমাদের গোলাপ, বকুল, গাঁদা, গন্ধরাজ, বেলি, দোলনচাঁপা এবং আরও অসংখ্য ফুলের মাতাল করা সুবাস অনেক দূর থেকে মানুষকে আহ্বান জানায়, সে আহ্বান উপেক্ষা করা যেকোনোও মানুষের পক্ষেই কঠিন। শীতের দেশের ফুলে কখনই কোনো সুবাস পাইনি! চেরি, ক্যামেলিয়া, টিউলিপ, ম্যাগনোলিয়া, ড্যাফোডিল আরও কত নাম না জানা ফুল পথিকের নজর কাড়ে কিন্তু সুবাস নিতে গেলেই হতাশ হতে হয়। এর কারণ হয়তো আবহাওয়া।

সুইজারল্যান্ডসহ যেকোনো উন্নত দেশের চিত্রকলা ও ভাস্কর্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এগুলো এত নিখুঁতভাবে তৈরি যে দেখলে বিস্ময়াভিভূত হতে হয়। রাস্তায়, লেকের পাড়ে, পার্কসহ বিভিন্ন স্থান বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, জীব-জন্তুর ভাস্কর্য অথবা মূর্তি তৈরি করে রেখে দেওয়া হয়েছে। পথচারী অথবা পার্কে বেড়াতে আসা লোকজন এসব ভাস্কর্যের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে।

সুইজারল্যান্ড তথা ইউরোপের মানুষ খুবই স্বাস্থ্য সচেতন। একারণে আবহাওয়া ভালো থাকলে দিনের যেকোনো সময়েই দেখা যায় স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য পার্কে, সাইকেল লেনে, লেক, নদী বা সমুদ্রের ধারে সত্তরোর্ধ নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী নির্বিশেষে সবাই সাইকেল চালাচ্ছে, দৌড়াচ্ছে, সাঁতার কাটছে, জিমে গিয়ে ব্যায়াম করছে, পাহাড়ে উঠছে! এ সব দেশে শিশু হাঁটতে শুরু করলেই তাদেরকে সাইকেল চালানোতে উৎসাহিত করা হয়। পক্ষান্তরে আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় বিশেষত আমেরিকায় যে সংখ্যায় স্থুলকায় মানুষ দেখেছি, ইউরোপের যে কয়টা দেশে ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া কিংবা আমেরিকার মতো স্থুলকায় মানুষ একজনও চোখে পড়েনি।

জেনেভা-লেকে-সূর্যাস্ত
জেনেভা লেকে সূর্যাস্ত

সুইজারল্যান্ডে একটা সমস্যায় পড়তে হয়েছে প্রায়ই, তা হলো ভাষার সমস্যা। চিকিৎসা নিতে গেলে, কোনো কিছু কিনতে গেলে ইশারা ভাষার দ্বারস্থ হতে হয়েছে। কারণ জেনেভার ভাষা ফরাসি। ইংরেজি জানা লোকের সংখ্যা কম। চিকিৎসা নিতে গেলে আগেই ইংরেজি জানা চিকিৎসকের খোঁজ করতে হয়। তবে ইংরেজি জানা চিকিৎসকের অভাব নেই। যদিও ইংরেজি জানা চিকিৎসকও প্রেসক্রিপশন ফরাসি ভাষায়ই লেখেন এবং শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্টও ফরাসি ভাষায়ই লেখা হয়।

চার বছর। সময়ের ব্যাপ্তিতে হয়তো বা তেমন দীর্ঘ নয়, তবু এই স্বল্প সময়েকালের মধ্যেই স্বদেশি এবং ভিনদেশি কিছু মানুষের আন্তরিকতা, হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ মনকে মুগ্ধতায় ভরিয়ে দিয়েছে। যাদের কথা না লিখলে সুইজারল্যান্ডে থাকাকালীন সময়ের কথা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এদের মধ্যে একজন ফিলিপাইনের নাগরিক রোদেল বাউতিস্তা; আরেক জন শ্রীলঙ্কার নাগরিক উপুল ওয়ান্নাহ কুরাকাকচি। ভিন্ন দেশ, ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ হয়েও দুজন মানুষই জানি না কীভাবে, কখন আমাকে এত আপন করে নিয়েছিল। যখন সুইজারল্যান্ড ছেড়ে চলে আসি, অনেক ব্যস্ততার মাঝেও রোদেল এবং উপুল ওর পরিবারসহ জেনেভা এয়ারপোর্টে আমাকে বিদায় জানাতে এসেছিল। ওদের বিদায় জানাতে গিয়ে নিজেও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। দুজনেই এখনো প্রায়ই আমাকে ফোন করে খোঁজ নেয়। এই দুজন ভালো মানুষের কথা হয়তো কোনোদিনও ভুলতে পারব না।

রোদেল এবং উপুলের স্মৃতির সাথে আরও একজন প্রবাসী বাংলাদেশির কথা মনে থাকবে আজীবন। ওর নাম জোনায়েদ। বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব বাজারের মানুষ। অত্যন্ত অল্পবয়সে পিতৃহীন হয়ে ভাগ্যান্বেষনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। জেনেভায় চার বছর থাকাকালীন সময়ে নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়েছে। এমনকি করোনা মহামারী চলাকালীন সময়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে সাহায্য করেছে। এমন একজন বড়ো মনের মানুষের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে যাওয়া ছাড়া ঋণ পরিশোধের হয়তো আর কোনো সুযোগ নেই।

ন্যুনতম অপরাধ প্রবণতা, একটি দেশের স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, সাংস্কৃতিক উৎকর্ষতা, শিক্ষা, নিরাপত্তা, অসাধারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা, দুর্নীতিমুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা, আইনের শাসন ইত্যাদির ভিত্তিতে কোনো দেশকে সুখী দেশের তালিকাভুক্ত করা হয়। উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যগুলোর কারণে সুইজারল্যান্ড বার বারই পৃথিবীর অন্যতম সুখী দেশের তালিকার প্রথম দুই-তিনটি দেশের দিকেই স্থান করে নিচ্ছে।

গ্রীষ্মকালে জেনেভা লেকে সাঁতার কাটা, লেকের পাড়ে বসে ভোরের সূর্যোদয় এবং সন্ধার সূর্যাস্ত উপভোগ করা, লেকের পানিতে রাজহাঁস, পাতিহাঁসের ছানা-পোনাসহ সাঁতার কাটা দেখা, পানকৌড়ির ডুব সাঁতার, গাংচিলের উড়াউড়ি বা ঝুপ করে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে ঠোঁটে মাছ নিয়ে দ্রুত উড়াল দেওয়া কিংবা দ্রত গতির কোনো জলযানের ছুটে চলার দৃশ্য দেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়া যায়। এমন একটা দেশে চার বছরের বেশি সময়, বসবাসের সুযোগ পেয়ে আনন্দে মনটা কানায় কানায় ভরে গেছে।

আরও পড়ুন পৃথিবীর স্বর্গ সুইজারল্যান্ডে-
১ম পর্ব
শেষ পর্ব

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর-এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও  ইউটিউব চ্যানেলে

পৃথিবীর স্বর্গ সুইজারল্যান্ডে (শেষ পর্ব)

Facebook Comments Box

তাহমিনা খাতুন একজন বহুমুখী প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব। তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, ভ্রমণকাহিনি এবং নারীর অধিকার নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। তার পেশাগত জীবনে তিনি নারীদের আইনি সহায়তা প্রদান এবং তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করতেন। তাহমিনা খাতুন ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মার্চ পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত আহম্মদপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ও কৈশোর কাটে এই গ্রামেই।

error: Content is protected !!