তিতাস নদীর পাড়ে
তিতাস নদীর পাড়ে
তিতাসের পাড়ে কাটায়েছি, খানিক সময়
সবটুকু ভাল লাগায় জুড়ালো হৃদয়,
আদিগন্ত বিস্তারি সবুজ প্রান্তর ভরিয়া দিল মনটি আমার।
অন্তর ছুঁয়েছিল সর্ষে ফুলে ছাওয়া হলুদ মাঠখানি
দোলা দিয়াছিল তিতাসের বুক চিরে ছুটে যাওয়া ছোট ছোট তরীগুলি,
শ্বেত, শুভ্র ঢেউগুলি আছড়িয়া পড়ে কূলেতে তাহার
যেন দেয় হাতছানি! নিয়ে যেতে চায় বুঝি! কোন দূর অজানায়।
তিতাসের বুকে ঝাঁপ দেয় গাঙচিল
উড়ে যায় পলকে,
ঠোঁটে ধরা তার রুপালী কোন মাছ
শুভ্র, বাদামী রঙের পাতি হাঁস
করিতেছে জল কেলী, কেহ বা সবে সাঙ্গ করি সন্তরন,
দিতেছে বুঝি দিবা নিদ্রা পরম পুলকে!
আপন পালকে লুকায়ে হলুদ ঠোঁট খানি তার!
সাধু বেশে সাদা বক, এক পায়ে হয়ে আছে থির!
ছোট্ট কোন ডানকিনার আশায়!
পুড়িতে উদর খানি তার!
কাদা খোঁচা যায় হাঁটি, সাথে নিয়ে ছানাপোনা
খুঁজিতে আহার!
পানকৌড়ি দেয় ডুব, টুব টুব ধ্বনি তার সুদূরে মিলায়!
রাখাল বালক করাইছে স্নান! কৃষ্ণ গাভীটিরে তার পরম যতনে!
গাঁয়ের সরল বালিকা কোলেতে তাহার ছাগ শিশু!
বুলাইছে ছোট্ট হাতখানি শিয়রে তাহার! বুঝিবা করিছে আদর অশেষ মমতায়!
কোথাও বা ধানের ক্ষেতে নুন শাক তুলিতেছে গাঁয়ের বধু!
নাকের নোলক খানি করিয়া আড়াল, আঁচলে তাহার!
চষা ক্ষেতে মই দেয় কোন চাষী, জোয়াল জুড়িয়া তার ষাঁড়ের গলায়!
কেহ বা ছুটিয়াছে নিজ গৃহ পানে, সোনালী ধানের আঁটি মাথায় তাহার!
তিতাসের পাড় হতে খানিক দূরে,
সবুজ বৃক্ষ ছায়ায়!
ছোট গ্রামগুলি যেন শুয়ে আছে খানিক অলসতায়!
নাহি কোলাহল, নাহি কোন তাড়া,
নিস্তরঙ্গ, শান্ত, সমাহিত জীবনের নিবিড় ভালোবাসায়!
হেরিয়া এসব কিছু, মন বুঝি চায়, রয়ে যাই এই খানে, এই মমতার ছোঁয়ায়!!
আরও পড়ুন কবিতা-
বিল গাজনার মাঠে
মাছ-বিল-পাখি-পদাবলি
বিল গাজনার চিল
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
তিতাস নদীর পাড়ে