জলচোখ, নীলজল, রক্তমুখী চাঁদ, উপপাদ্য
জলচোখ
আতুর ঘরের পূর্ণিমা চাঁদ
ইচ্ছের আক্ষেপে রমণীর ভ্রুণ থেকে উঠে আসা আলো
শরীরের গোপনে বেড়ে ওঠা ছায়া
আজ বুঝি সহজেই বিদায়ী ট্রেনের মতো হুইসেল বাজায়।
ভররাত অভিসারে মুগ্ধময়ী
নিয়তির কাঠগড়ায় বাসা বাঁধে শ্লেষ
আলোর বিছানা পড়ে থাকে জলচোখ, তৃষ্ণার ভেতর।
ঝরে কি গেছে ফাগুন পালক?
অথচ অরণ্য কাঁদে
সবুজের ধ্বনিময় বুকভরা ফসলের কোলে।
স্মৃতিগুলো অতৃপ্ত রয়, ভেসে উঠে সেফটিফিনের ফোঁড়
সূর্যের উচ্ছ্বাসে সবুজের গন্ধ জ্বলে
দহনে ভরে উঠে ভরণ কলস, ঘোরের আকাশ।
বাসনার অঙ্গারগুলো মেতে উঠে ধ্বংসের উৎসবে
কোথাও সাজানো নেই; আলোর শিরদাড়ায় ঢুকেছে পেরেক
উড়ন্ত পাখির ঠোঁটে শিঙগুলো গুঁতো মারে আঁধার রাতে।
কীভাবে যে গিলে ফেলি সভ্যতার ঘনকালো আঁধার?
আরও পড়ুন আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা-
কবিতার জমিনে
নৌকোজীবন
স্মৃতিছায়া
নীলজল
আমার সিথান জুড়ে আঁধারের ঢেউ
কেবলই দুটি চোখ অভিমানে জেগে
আলোময় আকাশের কোণা ভেঙে নিয়ে
মেতে উঠে থই থই শরীর দুপুর।
প্রতীক্ষা গভীর হলে পার ভাঙে নদী
সেয়ানা খোঁপার ফুল সুর তোলে রাতে
যমুনার তীর ভাঙে রাধার পিরিত।
কামবর্তী জোছনারা পোড়ে আগুন নেশায়।
তৃষ্ণার দুপুর ভিজে নীল জল ভাঙে।
রক্তমুখী চাঁদ
এই রক্তমুখী চাঁদ আমাকে সন্ধ্যা বিছিয়ে দেয়।
দখিনা বাতাস বয় জীবনের ঘেরে সাপ পথে।
পশ্চিম ঘনিয়ে আসে-তপ্ত সন্ধ্যা, বিষাদের ঢেউ
ক্ষয়িষ্ণু জীবন পাঠে, ভুল করে খেয়ে নিই পুথি।
এই চাঁদ গ্রাস করে উদারা, মুদারা, তারা প্রাণ।
জলোচ্ছ্বাসে নিম্নমুখী; এ কেমন বুদবুদ ফোয়ারা
দখিনের বায়ু এসে-পশ্চিমে যায়, ধীর, নৈঃশব্দ্যে,
শব্দ, লয়ে, ভাষা খোঁজে ঝাঁপ দিই মরাগাঙ জলে।
উপপাদ্য
ও আমার রোদ্র ঢেউ কেনো ডুবে গেছো
কষ্টের অন্তর নিয়ে; জ্বলে উঠে চিতা
ভরাচাঁদ ক্ষয়ে যায়; নীল জল ঠোঁটে-
সন্ধ্যার ভিতর কাঁপে জলে ধোয়া রাত।
আতও সন্ধ্যারা ডোবে ঘুম হারা রাতে
যৌবনা জরায়ুর ভেতর; মেঘ জমা হয়।
ঘুমের শহর কাঁপে নীল জলে ভেসে।
ও হৃদয় কেন কেঁপে ওঠো-
কেন তারা যমুনার জল ভাঙে;
শরীরের তপ্ত উপপাদ্যে-
ঘোর লাগা ঢেউয়ের ভেতর গাঙচিল ডানায়।
আরও পড়ুন কবিতা-
কবির ভালোবাসা
বাংলাদেশ
অবহেলার বৃত্তে
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে
জলচোখ