একজন মুক্তিযোদ্ধার কষ্ট, ভুল, আত্ম বেদনা
একজন মুক্তিযোদ্ধার কষ্ট
(বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিফা আশরাফকে উৎসর্গকৃত)
আজিজুল কায়সার
মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি।
ভাঙার স্বপ্নে নগ্ন উল্লাসে যেনো
মেতে উঠেছে সকলেই।
মুক্তিযোদ্ধাদের অশ্রু নয়নে নদী।
৭৫ এর নৃশংসতায় অকৃতজ্ঞ জাতি,
নির্বাক দেখেছে সকলেই।
মুক্তিযোদ্ধারা সেদিনই স্তব্ধ হয়ে গেছে।
জেল হত্যার ধৃষ্টতায় ধূর্ত শেয়াল,
চেয়ে দেখেছে সকলেই।
মুক্তিযোদ্ধাদের বন্দুক ছিলো বারুদ হীন।
হঠাৎ উদিত কালো চশমার দৌরাত্ম,
দেখেছে পৃথিবীর সকলেই।
মুক্তিযোদ্ধারা ছিলো নিরস্ত্র দেহে নিথর।
জাতি ধ্বংসে বুদ্ধিজীবীর নৃশংস ইতিবৃত্ত
অপলক দেখেছে সকলেই।
মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন পরাজিত হয়েছে।
হাতে পতাকা দেশদ্রোহীর অট্রহাসি ,
দেখেছে জন্মভূমির সকলেই।
ভুল
ভুলে সব দিন পার, করে গেছি একাকার,
মাটিতে পড়েনি পা, দিয়ে গেছি হুংকার।
অসীম সীমানা নিয়ে চলেছি গা ভাসিয়ে,
যা কিছু করেছি সব গোয়ার গোবিন্দ হয়ে।
অনিয়মে রাজনীতি করে গেছি দুর্নীতি,
নীতিকে দিয়েছি টোপ, কুজনে সজন প্রীতি।
টানা দোটানায় বুঝি, জীবনের শেষ কূলে,
আসে দিন যায় রাত, অজানা অচেনা ভুলে।
বুঝি না করি কিরে, কতকিছু গেছে ছিড়ে,
জীবনের শেষে এসে, দেখিনি পেছন ফিরে,
সময়ে করেছি হেলা এসে গেছে শেষ বেলা,
গোলে আম্বুলে শেষ জীবনের রং মেলা।
ভোলে পড়ে জীবনটা করেছি তো পার,
বুঝিনি সে জীবনটা ছিল যে আমার।
আত্ম বেদনা
কবিতা লিখতে চাই কিন্তু পারি না।
নিবিড় সান্নিধ্য গুলো ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে,
স্বজনেরা সবাই অবিশ্বাসের কাতারে দাঁড়াচ্ছে।
হাড়ানো সম্পর্ক গুলোর আজ নেই কোন খোঁজ।
কবিতা পড়ে কেউ খুশি হয় যদি, কেউবা হয় নাখোশ।
নাখোশ হওয়ার বেদনায় কলমের কি দোষ?
কবিতা লিখতে চাই কিন্তু পারিনা।
মুখোশে আবৃত অবিকল মানুষ, অন্তরে তার ধোকা,
সোজা সাপটা কলম, তবু লেখা হয়ে যায় বাঁকা।
চেনা মুখগুলো অচেনা হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
না চেয়েও হারিয়ে যাচ্ছি আজ অচেনার ভিড়ে,
কেউ হারিয়ে যাচ্ছে একেবারে ওপারে চিরতরে।
কবিতা লিখতে চাই কিন্তু পারিনা।
সৎ ও মানবিক মানুষ গুলোর আত্মসম্মানের ভয়,
অযোগ্য ওস্তাদরা এখন সমাজের অবক্ষয়।
আদর্শ ছাপিয়ে যখন অনাদর্শ চোখে ভাসে।
লেখার ইচ্ছে শক্তিটা তখন কলমে ফিরে আসে,
অনেকেই বলে দারুন হয়েছে, কেউবা আবার হাসে।
আরও পড়ুন কবিতা-
বিবর্ণ স্বাধীনতা
উদাসী মন
অষ্টাদশী মন
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
একজন মুক্তিযোদ্ধার কষ্ট