উলাট গ্রামের ইতিহাস
উলাট গ্রামের ইতিহাস
উলাট, আবহমান বাংলার আর পাঁচ-দশটা গ্রামের মতোই একটি গ্রাম। ছায়া সুনিবিড় শান্ত নীড়, পাখির কলকাকলিতে মুখর, বিল গাজনার পলিবিধৌত সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলায় ভরপুর একটি উর্বর জনপদ। কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়া, ইন্টারনেট আর শহুরে জীবনযাত্রার প্রভাবে প্রভাবিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ একটি গ্রাম।
ভৌগলিক অবস্থান
পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের সর্বউত্তরে বিল গাজনার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত । উলাট মৌজা ও উলাটের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত বিক্রমাদিত্য মৌজার অর্ধাংশ নিয়ে উলাট গ্রামর অবস্থান। উলাট গ্রাম ২৩.৩৪ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৩.৫৬ উত্তর অক্ষাংশ ২৩.৭৮ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ ২৩.৪৫ পর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। পাবনা শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার এবং সুজানগর উপজেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত, এবং চিনাখড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে ৮ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত।
সীমানা
উত্তরে গাজনার বিল ও পাইকপাড়া, পূর্বে গাজনার বিল ও রানিনগর ইউনিয়ন, দক্ষিণে বিক্রমাদিত্য, দাশপাড়া ও মানিকহাট এবং পশ্চিমে খয়রান গ্রাম অবস্থিত।
জনসংখ্যা
উলাট অংশে ৪৩৭৬ জন, বিক্রমাদিত্য অংশে ৭০০ জন প্রায়। মোট জনসংখ্যা ৫০৭৬ জন; পুরুষ ২৫০৯ জন এবং নারী ২৫৬৭ জন। উলাট অংশে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০৫২ জন; পুরুষ ভোটার ২৫১৩ জন এবং নারী ভোটার ২৫৩৯ জন। বিক্রমাদিত্য অংশে ভোটার সংখ্যা ৩৫৬ জন। ১০০% মুসলিম অধ্যুষিত এ গ্রাম।
আরও পড়ুন ইতিহাস-ঐতিহ্য দ্বারিয়াপুর
অধিবাসীদের পেশা
সরকারি-বেসরকারি চাকুরিজীবী, কৃষক, জেলে, কামার, ব্যবসায়ী, ব্যাংকার, প্রবাসী বিভিন্ন রকম পেশায় নিয়োজিত। বর্তমানে স্বাক্ষরতার হার ৯৫%। চাকুরিজীবী ২৫.৫%, কৃষিজীবী ৭২%, প্রবাসী শ্রমিক ২% এবং অন্যান্য ০.৫%। শতকরা ১০০ ভাগ লোক সুপেয় পানি পান করে, স্যানিটেশন সুবিধা প্রায় শতভাগ।
উলাট নামকরণের ইতিহাস
সতেরো শতকের দিকে এ অঞ্চলে সনাতন হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের বসবাস ছিল। সে সময়কার সনাতন ধর্মের লোকদের বেশির ভাগেরই পেশা হিসেবে ছিল জেলে। এক পাশে নামার বিল অন্যপাশে গাজনার বিলে মাছ ধরে তারা এতদঅঞ্চলের হাটে-বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করত। তখন এ এলাকার নাম জ্যালিপাড়া বা জেলেপাড়া হিসেবেই পরিচিত ছিল। আঠারো শতকের গোড়ার দিকে চন্ডীদাস নামক একজন হিন্দু ভদ্রলোক, স্থানীয় যাঁতা জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ওলট কম্বলের গাছের শিকড় দ্বারা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন তার নিকট চিকিৎসা সেবা গ্রহণের জন্য আসতেন। বিভিন্ন এলাকার লোকজনের আসা-যাওয়ার ফলে এলাকার একটি নাম লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে যে ওলট গাছের ওষুধ নিতে চন্ডীদাসের কাছে যাব। পরবর্তীতে এই নামদ্বয়ের যুগলে ওলট চন্ডীপুর যা পরবর্তীতে উলাট চন্ডীপুর রূপে এ এলাকার নাম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ব্রিটিশ যুগের মানচিত্র ও সরকারি নথিপত্রে এখনও উলাট চন্ডীপুর নাম দেখতে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন বোয়ালিয়া গ্রাম পরিচিতি
পরবর্তীতে উনিশ শতকের গোড়ার দিকে উলাট চন্ডীপুরে মুসলমান অধ্যুষিত লোকসংখ্যা বেড়ে যায়। তখন ইসলাম প্রচারের কারণে উলাট চন্ডীপুরে পশ্চিমবঙ্গের (বর্তমান ভারতের) ফুরফুরা দরবার শরিফের পিরদের আগমন ঘটে। ফুরফুরা দরবার শরিফের তৎকালীন বড়ো পির সাহেব হজরত মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক রহ. আল কেরাইশীর হাতে উলাট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। সে সময় উলাট চন্ডীপুর থেকে চন্ডীপুর অংশ বাদ দিয়ে তখন থেকে এই গ্রামের নাম হয় উলাট।
আরও একটি সূত্রে কথিত আছে, সম্রাট শাহজাহানের পুত্র সুজা (যার নামে সুজানগর নামকরণ) আরাকান (বর্তমানে মিয়ানমার) পালিয়ে যাওয়ার সময় যে কয়দিন সুজানগরে অবস্থান করেছিলেন; তখন গোরুর গাড়িতে করে এ এলাকার উপর দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাবশত গাড়ি উলটে পড়ে গিয়েছিলেন। তখন থেকে এ গ্রামের নাম হয় উলাট। লোকমুখে প্রচলিত এ সূত্রটির গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যায় না।
আরো পড়ুন বোনকোলা গ্রাম পরিচিতি
উলাটে মুসলমানদের আগমন
সর্বপ্রথম উলাটে মুসলমানদের মধ্যে বসতি স্থাপন করেন তরিপউল্লাহ মোল্লা (মোল্লা পাড়া)। সময়টি আনুমানিক ১৭ শতাব্দীর শেষের দিকে। তারপর ফরিদপুর জেলা হতে করিম উল্লাহ শেখ, পাকশি এলাকা থেকে জাকের শেখ (সেখ পাড়া), হাবাসপুর কুষ্টিয়া জেলা হতে গোরুপ উল্লাহ মোল্লা (মোল্লা পাড়া), সে সময়েই ফরিদ সেখ (উত্তর পাড়ার সেখ বংশ) এই গ্রামে আসেন; কিন্তু তিনি কোথা আসেন সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। মৃধা বংশের বাঙ্গালী মৃধা ১৮ শতকের শুরুর দিকে বনগ্রাম এলাকা হতে আসেন। হাজিপাড়ার মোল্লা বংশ আসে জোড়পুকুরিয়া থেকে আঠারো শতকের শেষের দিকে।
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ
এই গ্রাম হতে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। তন্মধ্যে সরকারি গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তিনজন; যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আনিসুর রহমান সাইদ, মো. আব্দুল আব্বাস জলা মোল্লা ও মো. আব্দুল মান্নান খান। মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রামের আসার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ থাকার কারণে পাকিস্তান বাহিনী এই গ্রামে আসতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক অত্যাচারিত, নিপীড়িত বিভিন্ন গ্রামের মানুষের আশ্রয়স্থল ছিল উলাট গ্রাম। বিশেষ করে সাতবাড়িয়া গণহত্যা ও অগ্নিকান্ডের সময় ঐ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই এই গ্রামে আশ্রয় নেয়।
আরো পড়ুন চরদুলাই গ্রাম পরিচিতি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
এ গ্রামে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে; তন্মধ্যে ১টি ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা, শাহাদত আফরোজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট, ১টি হাফিজিয়া মাদ্রাসা, ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি কিন্ডারগার্টেন (বর্তমানে বন্ধ), এনজিও পরিচালিত স্কুল ২টি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত মসজিদভিত্তিক স্কুল ২টি। পল্লিউন্নয়ন সমিতি ১টি (বিলুপ্তপ্রায়) এবং স্বাস্থ্যসেবার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে ১টি।
উলাট সিদ্দিকীয়া সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা : ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে মরহুম হাজি তমিজ উদ্দিনের প্রচেষ্টায় ফুরফরা শরিফের বড়ো পির কেবলা হজরত মাওলানা মো. আবুবকর সিদ্দিক রহ. মাদ্রাসাটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তাঁর নামানুসারে মাদ্রাসাটির নাম দেওয়া হয় উলাট সিদ্দিকীয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা। মাদ্রাসাার জন্য জমি দান করেন হাজি তমিজ উদ্দিন ও বদিউজ্জামাল। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাজী তমিজ উদ্দিন। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিই সুজানগর উপজেলার সর্বপ্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে দাখিল, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে আলিম, ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ফাজিল (ডিগ্রি) সমমানে উন্নীত করা হয়।
শাহাদত আফরোজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট : ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে উলাট বিক্রমাদিত্য অংশে ঠিকাদার মো. শাহাদত হোসাইন উক্ত ট্রাস্টTটি প্রতিষ্ঠা করেন। ট্রাস্টের অধীনে ১টি হাফিজিয়া মাদ্রাসা (আবাসিক), ১টি এতিম খানা, ১টি মেডিক্যাল সেন্টার, ১টি মসজিদ কমপ্লেক্স; প্রস্তাবিত আছে ভূমি অফিস ও ১টি স্কুল।
উলাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে উলাট গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন বিল গাজনার ইতিহাস
মসজিদ
এ গ্রামে ওয়াক্তিয়া মসজিদ ৬টি, জুমআ মসজিদ ২টি সহ মোট ৮ টি মসজিদ রয়েছে।
উলাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ : আনুমানিক সতেরো শতাব্দীর শেষের দিকে উলাট গ্রাম হতে একাধিক মুসল্লি প্রতি শুক্রবার পদব্রজে তৎকালীন দুলাই জমিদার আজিম চৌধুরীর বাড়ি মসজিদে জুমআর নামাজ পড়তে যেতেন। বর্ষাকালে তারা কলা গাছের ভেলায় চড়ে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জুমআর নামাজ আদায় করতে যেতেন। এ অবস্থা জমিদার আজিম চৌধুরীর দৃষ্টিগোচর হলে চৌধুরী সাহেব মুসল্লিগণকে ডেকে উলাট গ্রামে মসজিদ তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মসজিদ ঘর নির্মাণের জন্য ১ বিঘা জমি ও মসজিদ পরিচালনা ব্যয় বাবদ আরও চার বিঘা আবাদি জমি মসজিদের নামে লিখে দেন। প্রথমে গিরান শেখের বাড়িতে চারচালা চিনের ঘরের মসজিদ তৈরি করা হয় এবং পরবর্তীতে বর্তমান জায়গায় ছোটো আকারে পাকা দালানসহ মসজিদ ঘর স্থানান্তর করা হয়। মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ার সে পাকা দালানটিও ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে ভেঙে বর্তমান আকারে উলাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালিত হয়ে আসছে।
উলাট কেন্দ্রীয় কবরস্থান
১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে উলাট গ্রামে আলহাজ চাঁদ আলি মৃধার নিরলস প্রচেষ্টায় রজব আলি মোল্লা, দবির মোল্লা, আব্দুল মাবুদ শেখ, আব্বাস আলি শেখ ও গ্রামের প্রধানবর্গ এবং মুরব্বিদের সহযোগিতায় কবরস্থান স্থাপিত হয়। কবরস্থানটি উলাট গ্রামের দক্ষিণ পাশে বিক্রমাদিত্য মৌজায় প্রায় তিন একর জমির উপর অবস্থিত।
আরও পড়ুন আমাদের দ্বারিয়াপুর গ্রাম
উলাট বাজার
সুজানগর উপজেলার মধ্যে গ্রামাঞ্চলে সাতবাড়িয়ার পরে সকাল বেলায় বাজার স্থাপিত হয় ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে উলাট গ্রামে। তখন উপজেলা শহর ও সাতবাড়িয়া ব্যতিত সুজানগর উপজেলার কোথাও সকালে বাজার বসত না। উলাট গ্রামে সে সময় সরকারি চাকু্রিজীবী বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেশি ছিল। এই চাকুরিজীবীগণ ভোর বেলায় গাজনার বিলের টাটকা মাছ কেনার জন্য হাজিপাড়া তেমাথায় সাতবাড়িয়া ও সুজানগর বাজারগামী মাছ বিক্রেতা জেলেদের কাছে ভিড় করত। এরই মধ্যে কেউ একজন উলাট মাদ্রাসা সংলগ্ন আব্দুল হালিম মাস্টার ও আতোয়ার রহমানের যৌথ মালিকাধীন দোকানের সামনে বাজার করার প্রস্তাব দিলে সবাই সর্বসম্মতিক্রমে বাজারের গোড়াপত্তন হয়। মরহুম শহিদুল্লাহ মাস্টার, মাস্টার নসিম উদ্দিন খান, ডা. আব্দুস সালাম, মৌলভী হারুনুর রশিদ, ডা. আব্দুস সুবহান, মরহুম মাস্টার শাহজাহান আলি মোল্লা, মরহুম নূরুল হক মাস্টার, মরহুম আব্দুল হামিদ বাচ্চু মাস্টার বাজার বসাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
শিক্ষাদীক্ষা
উলাট গ্রামে সর্বপ্রথম মেট্রিক পাশ করেন মো. হাকিম উদ্দিন শেখ। তিনি ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে সাতবাড়িয়া হাইস্কুলের প্রথম ব্যাচের ছাত্র হিসেবে কলিকাতা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে মেট্রিক পাশ করেন। প্রথম এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন শ্রীযুক্ত বাবু নরেশ চন্দ্র হালদার। তিনি ব্রিটিশ রাজত্বকালে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সসহ এমএ ডিগ্রি অর্জন করে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়েই লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে কখনো আর উলাটে ফিরে আসেননি তিনি। প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন আবুল খায়ের আহম্মদ আলি। এর আগে তিনি এ গ্রাম থেকে সর্বপ্রথম ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে কামিল পাশ করেন। তিনি ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলো হলো দুই কবরের বাসিন্দা, শেরে বাংলা, ইসা খাঁ, রিয়াদুস সালেহীন, জীবন বাজি রাখলেন যারা প্রভৃতি।
আরও পড়ুন সুজানগর উপজেলার ইতিহাস
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
মরহুম হাজি তমিজ উদ্দিন, মরহুম আলহাজ আব্দুস সামাদ, মরহুম আবুল খায়ের আহম্মদ আলি, মরহুম রমজান আলি সেখ, মরহুম হাজ্বী চাঁদ আলি মৃধা, মরহুম আব্দুর রউফ খান, মরহুম খবির উদ্দিন মৃধা, মরহুম আব্বাস আলি সেখ, মরহুম ফাত্তাহ মাস্টার, মরহুম আফসার আলি মোল্লা, মরহুম মোকসেদ আলি মাস্টার, মরহুম খবির উদ্দিন মৌলভী, মরহুম নায়েব আলি মোল্লা, ডা. আব্দুস সোবহান খান, মরহুম শহিদুল্লাহ মাস্টার, মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এ এস এম আনিসুর রহমান সাইদ, মরহুম শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, অ্যাড. হাতেম আলি, আব্দুল মতিন খান, আশরাফ আলি খান, ওসমান গণি চাদু মোল্লা, প্রফেসর মো. ইদ্রিস আলি সেখ, ডা. আব্দুল মতিন, মাওলানা আ খ ম আহসান উল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা, আব্দুল হালিম সাজ্জাদ, রিপন সেখ (ডিসি), ঠিকাদার মো. শাহাদত হোসাইন প্রমুখ।
দশর্নীয় স্থান
গাজনার বিল, উলাট মাদ্রাসা, উলাট জামে মসজিদ, শাহাদত আফরোজ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট।
আরও পড়ুন দুলাইয়ের জমিদার আজিম চৌধুরী
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
উলাটের ঐতিহ্য বলতে শতাধিক বছরের বয়সি উলাট মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা কর্তৃক আয়োজিত বাৎসরিক জালসা। একসময় উলাট শখের তরী ও উলাট সাইদ ফুটবল একাদশের নামডাক পাবনা জেলা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া ও নাটোর জেলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এখনও সমস্ত গ্রামবাসী একই মসজিদে জুমআর সালাত আদায়।
অর্থনীতি ও ফসল
প্রধান অর্থনৈতিক ফসল পেঁয়াজ ও পাট। এ ছাড়া ধান, গম, কালাই এবং কিছু জমিতে যব, তিল এবং বিভিন্ন প্রকার ফলমূল ও শাক-সবজি উৎপাদিত হয়। পেঁয়াজ আবাদের মৌসুমে শতকরা ৯৫ ভাগ জমিতেই পেঁয়াজ আবাদ করা হয়।
রাস্তা-ঘাট
উলাট গ্রামের অভ্যন্তরে অলিগলি রাস্তা প্রায় সম্পূর্ণ পাকা। (শুধুমাত্র পূর্বপাড়া অর্ধ কি.মি. কাচা রাস্তা রয়েছে) এমনকি গাজনার বিলের মাঠের সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তাটিও পাকা। উলাট গ্রাম হতে দক্ষিণ দিকে মানিকহাট ও গাবগাছি হয়ে এবং উত্তর দিকে চিনাখড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যাতায়াতের জন্য প্রশস্ত পাকা রাস্তা রয়েছে।
আরও পড়ুন সুজানগর উপজেলার নামকরণের ইতিহাস
বাংলাদেশের অন্যান্য গ্রামাঞ্চলের মতো উলাট গ্রামেও অপসংস্কৃতি গ্রাস করেছে। পড়াশোনা বিমুখ নতুন প্রজন্মকে অপসংস্কৃতির হাত আর মুঠোফোনের কুপ্রভাব থেকে দূরে রাখতে গ্রামের সচেতন নেতৃবৃন্দ কাজ করে যাচ্ছে।
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর-এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে
উলাট গ্রামের ইতিহাস