আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকে শুভেচ্ছা বাণী
আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকে শুভেচ্ছা বাণী
আমি জেনে আনন্দিত যে, ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চতুর্থ বছরে পদার্পণ করেছে। সংগঠনটি সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারসহ নতুন প্রজন্ম সাহিত্যপ্রতিভা বিকাশের ক্ষেত্রে ও সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অনন্য ভূমিকা রেখে সকলের নন্দিত দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সুজানগর সংগঠনের এই কল্যাণকর ধারা অব্যাহত থাকবে এবং সংগঠনটির আরও ঐশ্বর্যময় বিস্তার ঘটবে।
বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশ করছে; আমি তার প্রশংসনীয় সাফল্য কামনা করছি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
সর্বোপরি, আমি সংগঠনটির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি এবং সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতা ও সবসময় পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।
‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের চতুর্থ বর্ষে পদার্পণের এই মহতী ক্ষণে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিস্তার ও সংরক্ষণে সংগঠনটি যে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে; তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ‘আমাদের সুজানগর’-এর এই মহতী কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং সংগঠনটি ভবিষ্যতে আরও বড়ো পরিসরে কাজ করবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিক উপলক্ষ্যে ‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের তৃতীয় সংখ্যা প্রকাশিত হচ্ছে, যা সত্যিই খুশির খবর। এই প্রকাশনা আমাদের সাহিত্যজগতকে আরও সমৃদ্ধ করবে বলে আমি আশাবাদী।
‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি এবং সবসময় পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।
যে দেশের সংস্কৃতি যত উন্নত, সে দেশ ততটাই মূল্যবোধ, নীতি ও নৈতিকতায় উন্নত। উদাহরণস্বরূপ, জাপান, চীন এবং মিশরীয় সংস্কৃতি উল্লেখ করা যেতে পারে। ভারতীয় সংস্কৃতি তথা বাংলা সংস্কৃতি পৃথিবীব্যাপী সুপরিচিত ছিল। বাঙালিদের রয়েছে চার হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলা অঞ্চলের রয়েছে স্বকীয় ঐতিহ্য এবং স্বতন্ত্র সংস্কৃতি। বাংলা ছিল তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে ধনী অঞ্চল। এদেশে গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ ছিল যা গর্ব করার মতো। দেশের প্রতিটি মানুষ প্রশান্তির সাথে বসবাস করত। বাউল সঙ্গীত, জারি-সারি গান, পুতুল নাচ, দেহতত্ত্ব, পুথি পাঠসহ নানা বৈচিত্র্যে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখত। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উৎসব, ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মুসলমানদের ইফতার ও ঈদ অন্যতম।
পরবর্তীতে এখানে বিভিন্ন শাসকগোষ্ঠীর হাত ধরে সংস্কৃতির পালাবদল হয়, যেমন ফরাসি, মধ্যপ্রাচ্য এবং মোগলীয় সংস্কৃতি উল্লেখ করা যায়। বর্তমানে, পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব এবং অপসংস্কৃতির প্রভাবে মানুষের মূল্যবোধের দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে, ফলে সমাজ অবক্ষয়ের দ্বারপ্রান্তে।
বিষয়টি অনুধাবন করে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশ এবং সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পাদনের লক্ষ্যে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন ‘আমাদের সুজানগর’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রকৌশলী আলতাব হোসেনের উদ্যোগে এ অঞ্চলের কিছু স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ যেমন─ ড. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, কৃষি বিজ্ঞানী; বিমল কুণ্ডু, বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক, সাবেক জেলা প্রশাসক ও যুগ্মসচিব; খলিফা আশরাফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক যুগ্মসচিব, কবি ও সাহিত্যিক; এ কে আজাদ দুলাল, কথাসাহিত্যিক; এবং মোহাম্মদ আব্দুল বাছেত, অধ্যক্ষ, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ; তাঁদের উপদেশ ও সহযোগিতায় ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠন সমাজ উন্নয়নে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে। সংগঠনটি সুজানগরের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারসহ নতুন প্রজন্মের সাহিত্য বিকাশের ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করে চলছে। তরুণরা আজ মাদক ও আকাশ সংস্কৃতি থেকে দূরে থেকে কবিতা চর্চা, গান, শিক্ষার নানাবিধ ধারায় নিজেদের সম্পৃক্ত রেখেছে।
এ ধরনের উদ্যোগ ইতোমধ্যে সর্বমহলে প্রশংসা অর্জন করেছে। ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি আজ চতুর্থ বছরে পদার্পণ করল। শুরু থেকে নিজেকে এই সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রেখেছি। এজন্য একটু হলেও গর্ববোধ করি। তবে ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
সর্বোপরি আমি ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
আজ ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠন চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ করল। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে অলাভজনক সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। সংগঠনটি সুজানগরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং তা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎকে সমৃদ্ধ করছে। সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে; যা আমাদের সমাজকে আরও সমৃদ্ধ এবং সৃজনশীল করে তুলছে। নবীন লেখকদের জন্য এটি একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে তারা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাচ্ছে।
সংগঠনটি জ্ঞানী ও গুণিজনদের জীবন-আদর্শ প্রচার ও প্রকাশের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে। এটি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে এবং তাদের মধ্যে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা জাগ্রত করছে। সংগঠনটির উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড সমাজে প্রশংসিত হচ্ছে।
মাত্র তিন বছরের সময়ের ব্যাপ্তিকাল একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশের জন্য খুব বেশি সময় নয়। কিন্তু এই অল্প সময়েই সংগঠনটি নিজের অবস্থান ভালোভাবে জানান দিতে সক্ষম হয়েছে বলে আমি মনে করি। আমাদের বিশ্বাস, অচিরেই সংগঠনটি সুজানগর তথা পাবনা জেলার গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচারণা করতে সক্ষম হবে।
‘আমাদের সুজানগর’ ভবিষ্যতে শিল্প, সাহিত্য এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও অবদান রাখার পাশাপাশি এগিয়ে যাক। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকের শুভ লগ্নে আমাদের সুজানগরের প্রতি রইল অশেষ শুভকামনা। আমরা এই সংগঠনের আরও সমৃদ্ধি ও সফলতা কামনা করছি।
আরও পড়ুন আমাদের সুজানগর প্রতিষ্ঠাবার্ষিক
একটা দেশ এবং একটা জাতির সার্বিক উন্নয়নের হাতিয়ার হিসাবে সেই দেশ ও জাতির সাহিত্য-সংস্কৃতি-কৃষ্টির ওপরেই নির্ভর করতে হয়। ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠন সেই পথেরই পথিক। এই সংগঠনটি সুজানগর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি দেশ, জাতি ও সমাজের উন্নয়ন নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সংগঠনের এরূপ কার্যক্রম দেখে অন্যেরা অনুপ্রাণিত হবে এবং এভাবেই পাড়া, মহল্লা, গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা, জেলা এমনকি একসময় জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত হওয়া সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস। ‘আমাদের সুজানগর’-এর কাজ শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি গ্রামীণ জীবনের নানা দিক যেমন লোকসংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাহিত্যকে সংরক্ষণ এবং প্রচারেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তরুণ প্রজন্মকে মাদক ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রেখে সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার প্রয়াস নিয়েছে। সংগঠনটি নানা ধরনের সমাজকল্যাণমূলক কাজেও নিয়োজিত রয়েছে। এসব কাজ সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে।
তাছাড়া, সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ম্যাগাজিন প্রকাশ, প্রকাশনা উৎসব, কবি-সাহিত্যিকদের মিলনমেলা আয়োজন করে আসছে। এসব উদ্যোগের ফলে নতুন লেখকরা তাদের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন এবং সাহিত্যক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারছেন।
‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি আজ চতুর্থ বছরে পদার্পণ করেছে। শুরু থেকে নিজেকে এই সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রেখেছি, এজন্য গর্ববোধ করি। ভবিষ্যতে নতুন প্রজন্মকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি এবং আশা করি সংগঠনটি এভাবেই সুজানগর তথা পাবনা জেলার গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচারণা করবে।
জন্মদিন প্রকৃতই আনন্দের, উৎসবের। ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের জন্মদিনও এর বাইরে নয়। সংগঠনটি সুজানগর উপজেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে চলছে।
‘আমাদের সুজানগর’ ম্যাগাজিনের অবদান অনস্বীকার্য। এটি শুধু একটি ম্যাগাজিন নয়, বরং এটি একটি প্ল্যাটফর্ম যা নতুন প্রজন্মকে তাদের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। ম্যাগাজিনটি স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তরুণ লেখকরা এখানে তাদের সাহিত্য প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর সুযোগ পাচ্ছেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। সুজানগর উপজেলার কীর্তিমান মানুষের জীবনী ও কর্মকে তুলে ধরতে এটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, যা আমাদের গর্বিত করেছে।
এছাড়া, ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে, যা তাদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা আমাদের এলাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি।
আমি এ সংগঠনটির জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের নিরলস পরিশ্রম ও প্রতিশ্রুতি আমাদের সমাজকে আরও সমৃদ্ধ ও সৃজনশীল করে তুলেছে। তাদের প্রচেষ্টায় ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনটি আরও উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় সুজানগর উপজেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতির চেতনা আরও বিস্তার লাভ করবে।
সাহিত্য ভুবন হলো জীবনের দর্পণস্বরূপ। বৈত্র্যিময় জগৎ-জীবনের নিগূঢ় বার্তা রসের আঁধারে ধারণ ও লালন করে সাহিত্য। মানবমনের অতলান্ত ভাবনাকে, প্রকৃতির অন্তর্নিহিত রহস্যকে সাহিত্যিক তার সূক্ষ্মানুভূতিময় অন্তর্দৃষ্টির সাহায্যে অমৃতের রসধারায় সিক্ত করে আমাদের সামনে তুলে ধরে। নতুন লেখক তৈরির ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ‘আমাদের সুজানগর’। সেই সকল লেখকদের লেখাতে আমরা দেখতে পাই জগৎ-জীবনের খবর, তেমনি আমাদের মনোবীণায় সঞ্চারিত হয় আনন্দের অপূর্ব সুরধারা। এককথায় জীবনকে পূর্ণতাদানের জন্য মানুষের কাছে সাহিত্যের আবেদন অপরিসীম। সেই সেতুবন্ধন তৈরি করেছে ‘আমাদের সুজানগর’। শৈল্পিক শব্দের বাতিঘর হয়ে উঠছে ‘আমাদের সুজানগর’; প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী প্রগতিশীল লেখকদের লেখা উঠে এসেছে বিভিন্ন আঙ্গিকে।
বহুমান নদীর স্রোতের মতোই মানব জনম এখানে ভাঙাগড়া, পিছুটান, মায়া মমতা, প্রতারণা, প্রেম, বিরহ, ব্যথা, বেদনার শৈল্পিক এক মায়ার সেলাইবিহীন কামিজ তৈরি হয়েছে। জাগতিক পৃথিবীর মায়াকে উপেক্ষা করে জীবন প্রাণবন্ত ও সজীব হয়ে উঠেছে। গ্রামীণ জীবনের হারিয়ে যাওয়া শব্দের অলৌকিক গঠন শৈলীতে বাংলার বিশুদ্ধ শব্দের তরুণ কারিগর তাদের ভেতর থেকে কেউ কেউ কবি হয়ে উঠবে সদ্য প্রস্ফুটিত গোলাপের ন্যায়। সেই প্রত্যাশা করা স্বাভাবিক। ‘আমাদের সুজানগর’ মূলত একটি শিল্প-সাহিত্য-ইতিহাস ও তরুণ ছেলেমেয়েদেরকে বইমুখী করার প্রত্যয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন সামাজিক কাজ করছে; সেই সঙ্গে সমাজকে জাগিয়ে তোলার দুর্বার এক প্রত্যয়ে নেমেছে।
মানব জনম হলো গল্পের দরজার চৌকাঠ পেরিয়ে গোপনে নিজের সঙ্গে দেখা করা এক ক্লান্ত দুপুর। এই গল্পের কোনো রাজসাক্ষী থাকে না। একাকীত্বের দুর্বিষহ যন্ত্রণায় নিজেকে খুন করা হয়তো সহজ, তবুও মানুষ বেঁচে থাকে আশায় কেউ একজন ফিরে আসবে। মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে নিতে হয় মানুষ মূলত একা। তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে একজন বিশ্বস্ত মানুষ খোঁজে সবাই। কেউ কাউকে এড়িয়ে গেলে সে নিজেই হারিয়ে যায় মনের উঠোন থেকে চিরতরে। মানব প্রেমের সুতা সেলাইয়ে আন্তরিক, বিনয়ের সঙ্গে ‘আমাদের সুজানগর’ কাজ করে যাচ্ছে।
‘আমাদের সুজানগর’ অনেকখানি এগিয়ে তার সৃষ্টিশীল কাজের ভেতর দিয়ে। মানুষের অন্তরে বিশুদ্ধ শব্দের কারিগরদের নিয়ে এই সুপথে আগামীর সংগীত গেয়ে দলবেঁধে এগিয়ে যাবে আমার বিশ্বাস।
সাহিত্য এমন এক সেতুবন্ধ যা লেখকের সঙ্গে পাঠককের নিবিড় সম্পর্কে গড়ে তুলে। যে লেখার মাধ্যমে লেখকের ভাবনা, কল্পনা, অনুভূতি অকৃত্রিম ভালোবাসা সংবেদ্যতায় পাঠকের মনকে রসসিক্ত করে; তখনই সে লেখাটি সাহিত্য পদবাচ্যের মর্যাদা লাভ করে। মানুষ সমাজ গড়েছে শুধু বস্তুগত প্রয়োজন মেটানোর তাগিদে নয়; বরং সমাজগঠনে মানুষের সবচেয়ে বড়ো তাগিদটি ছিল নিজেকে অন্যের সঙ্গে মেলানো: নিজের চিন্তা-ভাবনা, কল্পনা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার বিচিত্র অন্তর্ময় অনুভূতিগুলোকে অন্যের কাছে গভীরতর তাড়না। ব্যক্তি নিজেকে সমর্পণ করতে চায় সমষ্টির মধ্যে; নিজের ভাবকে সঞ্চারিত করতে চায় অন্যের ভাবের মধ্যে; নিজের প্রাণের মধ্যে অনুভব করতে চায় অন্যের প্রাণের সাড়া। পারস্পরিক সাহচর্য মানবসভ্যতাকে দান করেছে বিশিষ্টরূপ। আর মানুষে মানুষে সাহচর্যলাভের সবচেয়ে প্রভাবসঞ্চারী ও নান্দনিক মাধ্যম হচ্ছে সাহিত্য। সেই সাহিত্যের গ্রামীন থেকে পরবাসী মানুষের সেতুবন্ধন তৈরি করে দিয়েছে ‘আমাদের সুজানগর’। আমাদের সুজানগর সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং মানুষের কাছে তা চরম জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিছু কুটিল কঠিন মানুষ সমাজে থাকবেই। তাছড়া ভালো করতে গেলে সবাইকে সমান তালে খুশি রাখা সম্ভব না। একটি গানের কলি মনে পড়ল।
“নিন্দার কাঁটা যদি না বিঁধিল গাঁয়ে
প্রেমের কী স্বাদ আছে বলো
আঁধার না থাকে যদি কী হবে আলোর?”
(গীতিকার : আবু জাফর)
দ্রুত সময়ের মধ্যে কিছু উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের কাছে দাবি রাখছি,
ক) দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান।
খ) অসহায়-দুস্থদের স্বাবলম্বী করার প্রয়াস গ্রহণ।
গ) দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
ঘ) গুণিজন সম্মাননা পদক প্রদান।
ঙ) সুজানগর উপজেলায় একটি ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা। এছাড়া বিভিন্ন মোড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা।
চ) অন্য লেখকের বই নিয়ে আলোচনা করার জন্য, অনুষ্ঠানগুলোতে আলাদা সময় রাখা।
ছ) সামাজিক সচেতনতায় বিভিন্ন সভা, সেমিনার আয়োজন করা।
‘আমাদের সুজানগর’ সংগঠনের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর-এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে