আনন্দের ধারা, হে তরুণ, কান্নার কৈলাসে
আনন্দের ধারা
প্রসন্ন আলোয় আনন্দের ধারা বহিছে অবিরল
বুকে তার ছলছল ছোট বড় ঢেউ অঙ্গে তার আনন্দের উচ্ছল হাসির মুখরতা।
উদাসি রোদ্দুরে কৃষ্ণচূড়ার দল চোখে ভেসে আসে
তার সাথে জেগে ওঠে কামিনী কাঞ্চন আর রাধাচূড়া
অসীম আনন্দে ওড়ে আকাশেতে পাখি।
কতো যে স্বাধীন আজ তাদের আকাশ
খাল বিলে ফোটে শাপলা, শালুক, কলমিলতা
আরও কতো যে ভাগ্যের অলীক লতা
তার পাড়ে মনসার ঝোপে ফোটে লাবণ্যভরা ফুল
আশেপাশে আগাছার ছন্দময় বিস্তারের ছোট ছোট জাল
উজ্জ্বল সোনালি রোদ্দুরে
মেঠো পথও সেখানে পথ হারায়-
উত্তাল বাতাস ডেকে নেয় আনমনা পথের ভাসমান ধূলি
শব্দের পত্রালি আর স্নেহমাখা আদরের সাথে
প্রজাপতিগুলো ঢেউ তুলে নাচে
মিলন মোহনার পথ তাদের কোথায় জানিনা
অনন্ত শূন্যতায় আজ ফুটেছে প্রাণের স্পন্দন
প্রাণে প্রাণে জেগেছে মিলনের বিহ্বলতা।
আরও পড়ুন আদ্যনাথ ঘোষের কবিতা-
শূন্যের নিক্তিরা
কবিতার জমিনে
জলখেলা
হে তরুণ
হে তরুণ, এসো শান্তির পথে-প্রান্তরে
সময়ের বেগবান স্রোতধারায় জীবন অনিমিখে
চিত্রল হরিণের দুর্বার যৌবনের মতো
অগ্নিঝরা বোশেখের ঝঞ্ঝার উত্তাল বেগে
দুরন্ত সিংহের গর্জনে
এসো, যতোসব জঞ্জাল ধুয়ে-মুছে বিশুদ্ধ করি
দুর্বিনীত যৌবন শিখায়।
তোমার আত্মায় ভেসে বেড়ায় নিশি কোলাহল
অসুর-দানবেরা চলেছে অই পথে
পতঙ্গের মতো তারা পুড়ে পুড়ে হয়েছে অঙ্গার
ও পথে যেয়ো না তরুণ, শীষনাগে মারবে ছোবল।
ফিরে এসো, স্মৃতিময় বসন্তের বকুলের সৌরভে
জীবনের সতেজ সকালে-অশুভ শক্তি তাড়িয়ে
উজ্জ্বল আলোর সন্ধানে
অনন্তের ডানা মেলে-মিথ্যাকে পায়ে পিষে
চলে যাই স্বপ্নের কৈলাসে।
এসো, বোধের ঈশ্বরকে জাগরিত করি
অগ্নিবৎ মালকোষের সুরের লহরিতে
মঙ্গলের আবাহনে দীপাবলির উৎসবে
শুভ্র-পবিত্রতার নির্মল বাতাসের ছোঁয়ায়।
গান্ধীজির সত্যাগ্রহ আন্দোলনের অমিয়ধারায়
পঙ্কিলতার সমাজ বিনির্মাণে
নৈতিকতার সজীব দর্শনে
চলো, সবাই মিলে গড়ে তুলি পৃথিবীটাকে।
কান্নার কৈলাসে
সেই বিমুগ্ধ ভালোবাসা আজ কোথায় দাঁড়িয়ে
মনের অগোচরে উকি দিয়ে যায় তার বিদগ্ধতা
সমুখের গহীন গর্ত যেন মনে হয় সৌরকলঙ্ক
নিঃশব্দতার গাঢ় অন্ধকার-
ডাকে আর্তনাদে
হাতছানি দিয়ে।
জলস্রোতে ভেসে যায় দু’চোখের ছলছল নদী
স্নিগ্ধ লাবন্যময় নক্ষত্ররা আজ হয়েছে প্রতারক
প্রাচীন বৃক্ষেরা কেঁদে কেঁদে হয়েছে যুবুথুবু
ময়না, কোকিল, টিয়ার মুখে আর গান আসে না
কাননের ফুলে ফুলে পতঙ্গরা আর বসে না
উদাসী কবির কবিতা আজ বিস্তৃত রোদন কাহিনী
সবুজ প্রকৃতি যেন নিস্তব্ধ মৃতপুরী।
কোন বাঁশি বাজে আজ কালিন্দী বিষাদে
বিষণ্নতায় ডুবে যায়-
একাকীত্বের অন্তহীন আকাশ
স্মৃতির সংরাগ জাগে নিঃসঙ্গ আঙিনায়
বৈরাগ্যের ভালোবাসা আজ বুকে নিয়ে
ভেসে যাই কান্নার কৈলাসে।
আরও পড়ুন কবিতা-
প্রেমের পদ্য
নিরবতার খোলস ভেঙে
প্রকৃতি আমার ভালোবাসা
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে