আট ফাল্গুন
আট ফাল্গুন
ভিনদেশি প্রভু চেপে ধরেছিল বাংলার কণ্ঠনালি
বাংলা ভুলে শিখতে হবে তাদের শেখানো বুলি!
‘মা’ বলে ডাকা চলবে না, আর দিল এই ফরমান
উর্দু ভাষা শেখার তরে, হও বাঙালি আগুয়ান।
‘মানি না মানব না’ যতক্ষণ আছে প্রাণ।
গর্জে উঠল বাংলার মানুষ ‘রুখবই রুখব’ মায়ের এ অপমান।
‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ উঠল ধ্বনি সাগরের কূলে কূলে
সে ধ্বনি ক্রমে ছড়িয়ে গেল সকল মর্মমূলে।
গৃহকোণ ছাড়ি পথে নেমে এল বাংলার লাখো তরুণ
তাদের দমাতে ঝলসে উঠল শাসকের সিসার আগুন।
জীবন দিল রফিক-বরকত-জব্বার-শফিউর
বাংলাভাষার সন্মান যেন তখনো খানিক দূর।
জীবন দিল অহিউল্লা, আট বছরের শিশু
মায়ের কোল খালি করে, সে হলো বায়ান্নর যিশু।
সিসার আগুনে জীবন দিল, আরো কত মায়ের সন্তান
জীবন দিয়ে রুখে দিল তারা মায়ের ভাষার অপমান।
রাজপথে যেদিন ঝরে পড়েছিল ভাষা শহিদের খুন
বাংলা পঞ্জিকায় সেদিন তারিখ আছিল আটই ফাল্গুন।
আট ফাল্গুন ফিরেছে আবার বায়ান্নর আট ফাল্গুন
কৃষ্ণচূড়ার ডালে বুঝি তাই লেগেছে আগুন।
কৃষ্ণচূড়ার আগুন তো নয় এত ভাষা শহিদের খুন
সে রঙে বুঝি আজও রাঙা হয়, সকল ভোরের অরুণ।
শিমুল পলাশ আজও রাঙা হয় ভাষা শহিদের লাগি
পাখ-পাখালির দল তাদের জয়গানে আজও নিঁদ হতে ওঠে জাগি।
ভোরের সমীরে আজও শুনি যেন শহিদের জয়গান
তাদেরে স্মরিয়া আজিও তটিনী তোলে বুঝি কলতান।
শহিদের যে খুন মিশে ছিল গিয়ে মেঘনা যমুনায়
রক্ত কমল হয়ে ফুটে উঠে তা ফের সাগরের মোহনায়।
পদ্মা-যমুনা বয়ে যাবে সদা জানাতে এ বারতা
ভাষা শহিদের তরেতে জানাও অসীম কৃতজ্ঞতা।
বিশ্বব্যাপিয়া অযুত মানুষ কহে, ভাষা শহিদের কথা
কোটি কণ্ঠে গীত হয় আজ শহিদের কীর্তিগাথা।
তাই সবে প্রতিদিন প্রতিক্ষণে রেখ বাংলা ভাষার মান
তবেই জানানো হবে, ভাষা শহিদের যথাযথ সন্মান।
ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর-এর অফিসিয়াল ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে
আট ফাল্গুন