অগ্নিঝরা-বৈশাখ
কবিতা,  জহুরা ইরা,  সাহিত্য

অগ্নিঝরা বৈশাখ

অগ্নিঝরা বৈশাখ

জহুরা ইরা

 

বৈশাখের নতুন সূর্য হয় যেন জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ড
যার তাপদাহে শরীর থেকে নির্গত হোক
অজস্র ধারায় ঘাম, জমে থাকা পুঁজ, ভীরুতার ভিত
আর দূষিত রক্ত।
যে রক্ত ধমনীতে বয়ে মানুষকে করছে সংক্রমিত।

বৈশাখ বয়ে আনো, ধরার বুকে এক অগ্নিবান,
জ্বালিয়ে দাও যত জরা, অনাকাঙ্ক্ষিত আবর্জনা, অভিশাপ
নিভৃতে, গঞ্জে, নগরে, দেশ জুড়ে যেখানে
শুদ্ধ হোক বুকের গহীন ক্ষত আর
ঘুনে ধরা হৃৎপিন্ড।

কালবৈশাখি হয়ে তুমি তান্ডব নৃত্য কর ভূপৃষ্ঠে
উড়িয়ে দাও যত ধুলো মরা পাতা, আর সব অমানুষগুলো,
পায়ের তলায় থাকবেনা মিথ্যার পাতা ফাঁদ,
নির্বিঘ্নে বেড়ে উঠবে নবজাতক
পাবে যোগ্য আবাস

বৈশাখে বিদ্যুৎ চমকাক থেকে, তীব্র বেগে, অন্ধকার মনে
যার ঘায়ে দৃষ্টি আচ্ছন্ন করা পর্দা যাবে ছিড়ে ।
দৃষ্টিতে ফিরে আসবে তীক্ষ্ণতা, কেটে যাবে তন্দ্রা,
ছিড়ে যাবে গ্রন্থির জড়তা, খুলে যাবে মনের বন্ধ কপাট
বেড়িয়ে আসবে অনাবিল শান্তির পৃথিবী ॥

বৈশাখি মেঘের গর্জনে ছিন্ন হোক শ্রবণ গ্রন্থিতে গজিয়ে
ওঠা পর্দা, বাক গ্রন্থি ফিরে পেয়ে সবাই গর্জে উঠুক
সকল অকল্যাণের বিরুদ্ধে সে গর্জন ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হোক
অভিশাপ মুক্ত দেশ গড়ার প্রেরণায়, নিজেকে
মানুষ হিসেবে প্রমাণ করতে পৃথিবীতে ।

নব বৈশাখে অবিরাম ধারায় বৃষ্টি হোক উত্তপ্ত জীবনে,
ধুয়ে যাক ব্যর্থতার গ্লানি, জমাট রক্ত, অশুভ আত্মার নোংরামি ।
সতেজ হোক মন, বৃক্ষ হোক নতুন পত্র পুষ্প শোভিত।
নতুন বছরে শুরু হোক এক নিষ্কন্টক জীবন।

 

ঘুরে আসুন আমাদের সুজানগর এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলফেসবুক পেইজে

অগ্নিঝরা বৈশাখ

Facebook Comments Box

জহুরা ইরা বাল্যকাল থেকেই কবিতা ও গল্প লিখে চলছেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: স্মৃতির দরজায়, ঝরাপাতা, নিমগ্ন ভালোবাসার বৃক্ষ; উপন্যাস: সায়াহ্ন সমীরণ। তিনি ১৯৬২ সালের ২৪ মে, পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার অন্তর্গত মানিকহাট ইউনিয়নের ভিটবিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

error: Content is protected !!