-
প্রেমের পদ্য-০৫
প্রেমের পদ্য-০৫ রেজাউল করিম শেখ ছাব্বিশ বহুদিন ও প্রার্থনা মন্দিরে সমবেত হই না আর গাইনা সমস্বরে প্রার্থনা সঙ্গীত! ও প্রেমিকজন-সদর্থক শব্দগুলো তুলে নাও কন্ঠে হাতে তুলে নাও কৃষ্ণের মোহন বাঁশি কাঁধে তুলে নাও কর্মিষ্ঠ কৃষকের লাঙল আমরা আবার সমবেত হবো সমস্বরে গাবো প্রেম-প্রীতি আর রহস্যাবৃত রজনীর রহস্য উন্মোচনী গীত! সাতাশ অরণ্যের ভেতরে অরণ্য নদীর ভেতরে নদী আমি আজ ঘুরিফিরি ফেলে আসা শৈশবের- গলিঘুঁচি। অরণ্যের ভেতরে অরণ্য নদীর ভেতরে নদী আমি আজ খুঁজি শুধু জলরঙে আঁকা এক প্রেমিকার ছবি। অরণ্যের ভেতরে অরণ্য নদীর ভেতরে নদী আমি আজ মগ্ন আছি বুদ্ধের ধ্যান আসনে শান্তিকে ভাবী। বুদ্ধং শরনং গো”ছামি… অং শান্তি…
-
প্রেমের পদ্য-০৪
প্রেমের পদ্য-০৪ রেজাউল করিম শেখ আঠারো আর আমি বেদনাকে ভালোবাসি; বেদনা আমার কাব্য বেদনা আমার গান বেদনা আমার বন্ধু বেদনা আমার প্রেম বেদনা আমার কান্না বেদনা আমার হাসি। (এমনকি) তুমিও আমার বেদনা হবে। ‘তাই আশৈশব শুধু বেদনাকেই ভালোবেসেছি।’ ঊনিশ [সাঁথিয়ায় দীর্ঘ ২৩ দিন আটক থেকে ধর্ষিত এক হিন্দু সতীর্থের প্রতি] শবদেহের সৎকারে এসে ভাবছো নেহায়েৎ ছেলে মানুষী, দু’দশটা কুকুর কামড়ালো— দু’দশ দিন ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকারে, কিছু জল পান করলো—কিছু ফেলে গেলো, অমনি আকাশের সব নক্ষত্র চ’লে গেল কৃষ্ণ গর্ভে? কৃষ্ণের বাঁশি ভেঙে গেল, রাধিকা হারালো পথ বৃন্দাবনের? তোমরা শুধু বিদায় নিবে—আর বিদায় নিবে! চলো না, একবার কোমর সোজা করে…
-
প্রেমের পদ্য-০৩
প্রেমের পদ্য-০৩ রেজাউল করিম শেখ তেরো আর আমার কোনো অসীম বেদনা নাই নিমগ্ন রাতের পাখিরা জানে— সাত রঙা বেদনারা ভেসে বেড়ায় সাম্যহীন পৃথিবীর বুকে… উড়ে উড়ে—ঘুরে ঘুরে—বুনে যায়— রেখে যায়—তাদের পূর্ব পুরুষের ইতিহাস— যে বা যারা পাথরের বুকে জল ঢেলে ফলিয়েছে ফসল; সোনালী—রূপালী ফসল। আর তারা গান গায়— সন্ধ্যায়—আসন্ন ভোরের; সুস্মিত সৌরভের। তারপর ঘুমোয় তারা জল ও জালের চৌকিতে। কারণ বেদনারা জানে— হিংস্র হায়েনার হল্লায় হলাহল হ’লো শুধু জলের গান। আর—তাই শুধু বেদনা উড়াই আর আমার কোনো অসীম বেদনা নাই। চৌদ্দ হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত আমি তবুও হাঁটতে চাই তবুও চলতে চাই— সুষমামন্ডিত সুদীর্ঘ পথ সুরোভিত সময় না আসুক…
-
প্রেমের পদ্য-০২
প্রেমের পদ্য-০২ রেজাউল করিম শেখ নয় কে কবে কার বেদনার ঘর পুঁড়িয়েছে হৃদয়ের নীল আগুনে? বেদনার লেলিহান শিখায় কে তাপ নেয় পৌষের শীতে? চৈত্রের কোনো একদিন- কাঠ ফাটা রোদে দুঃখগুলো শুকিয়েছি। নীল পদ্ম পাতায় জল ঢেলে প্রজাপতি করে উড়িয়েছি দুঃখের ফসিল। সোনালী, আর কত দুঃখ হবে আর কত বেদনা হবে ফড়িংয়ের রঙে? দশ সদ্য ফোটা গোলাপে মূহ্যমান প্রেমিক আলো-আঁধারের ব্যবধান ঘুঁচে যদি বেরিয়ে আসে কোকিলের আর্ত স্বর-হরিণীর আর্ত স্বর কিম্বা ছায়াহীন সমুদ্র তটে ভেসে ওঠে কোনো শুশুক— তুমি কি তোমার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভাসিয়ে নেবে!- ভাসিয়ে নেবে, আমার ডিঙি নাও? এই তো সেদিন, তোমার হাতে হাতটি রেখে, স্বর্ণকমল-পদ্মফুল খোঁপায়…
-
প্রেমের পদ্য-০১
প্রেমের পদ্য-০১ রেজাউল করিম শেখ এক বুকের ভেতর একটি নদী খরস্রোতা গহীন—গহন অন্ধকারে আলোর রেখা মুক্তো মতো জ্বলছে যেন প্রদীপ শিখা। অনিন্দিতা! ঘরটি তোমার পুড়লো ব’লে ডাকছে লোকে হর—হামেশা! অনিন্দিতা! দুই অনিন্দিতা! হাঁটছি দেখো প্রবলবেগে ঝরের মতো তোমার দিকে। বাসছি ভালো আঁধার কালো তোমার বুকে— তোমার মুখের প্রেতচ্ছায়া! শীতল জলে পা ধুয়েছি সামনে দেখি— উষ্ণজলের স্রোতরেখা- অলখ সাঁইয়ের পথরেখা। অনিন্দিতা! তিন নিষিদ্ধ আঁধারের গল্প কে না জানে! কে বা বলে ওসব গোপন কথা জনে-জনে! আঁধারের শবচ্ছেদ যারা করেছে বহুবার বহু কায়ক্লেশে তারাও আজ খড়—কুটো জ্বালায়- তামাকের ধোঁয়ার মতো উড়ায় জীবন পোড়ায় নিজ হাড়—গোড়, মাংশ—পেশি। চার তোমার…
-
শান্তিকাব্য
শান্তিকাব্য রেজাউল করিম শেখ ৫. শান্তি সেন! তোমাকে ভুলিনি, ভোলা যায় না। প্রেমের অপর নাম যে আগুন- সে কথা কে না জানে! তোমার প্রেমে তাই পুড়ে যাচ্ছে- আমাদের ঘর-গৃহস্থালী, যৌবনের ফাগুন মধ্যরাতে মদের বোতল হাতে- কার্পাসের তুলোর মতো উড়াল দিচ্ছে আমাদের পৌরুষেয় মনন। ৬. শান্তি সেন! তোমাকে ভালোবাসার প্রতিদান কে না দিচ্ছে- মৃত শালিক মৃত শকুন মৃত বক মৃত কাক অগণন। এখানে কে কে প্যারিস আর কে কে হেলেন মরে ভূত হয়ে গেলে কে গুনে জানাবে- কে পড়ে শোনাবে- প্রেমের শমন? ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজে শান্তিকাব্য
-
মা ও অন্ধকার
মা ও অন্ধকার রেজাউল করিম শেখ এখন- মা তোমাদের ঘুম পাড়ানি গান শোনাবে আয় ঘুম আয় বুড়োদের চোখে ঘুম আয় আয় ঘুৃম আয়… হ্যাঁ। তোমাদের মায়েদের চোখে আজ তোমরা স্রেফ বুড়ো। আজ মা তোমাদের ঘুম পাড়িয়ে বাইরে বেরুবে মাঝ রাতের আকাশ- জোছনা- অন্ধকার দেখবে। আয় অন্ধকার ঘনিয়ে আয়… হ্যাঁ। মা এখন অন্ধকার ভালোবাসে খুব করে। মা জানেন, তোমাদের মুখ ও বুক, পেট ও চিবুক অন্ধকারের সমার্থক। এবং অন্ধকার নেমে এলে- তোমাদের শরীরে, মায়ের ভীষণ কষ্ট লাগে। অন্ধকারের বেদনায় কাতর- মা তোমাদের ঘুম পাড়ানি গান শোনাবে তোমাদের ঘুম পাড়াবে… ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজে
-
মরে যেতে ইচ্ছে করে
মরে যেতে ইচ্ছে করে রেজাউল করিম শেখ মাঝে মাঝে খুব করে মরে যেতে ইচ্ছে করে বোধের শূন্য জানালায় একটা বুলবুলি- রোজ সন্ধ্যার পর পুচ্ছ নাচিয়ে মিঁহি স্বরে ডেকে ডেকে বলে যেতে থাকে; মাইরি- খুব করে মরে যেতে ইচ্ছে করে। একটা কুকুর মাঝ রাতে ডুকরে কেঁদে ওঠে সস্নেহে কাছে এগিয়ে গেলে- জল ছলছল চোখে মাথা নত করে বলে: খোদার কসম- আমারো বাস কিংবা ট্রামের তলায় মাথা দিয়ে খুব করে মরে যেতে ইচ্ছে করে। এখন এই বৈশাখী রাতে ভয়াল তা-বের মুখে বিষণ্নতার রোগে ভোগা বিপন্ন পৃথিবীর – মানুষের ভোট ও ভাত চোর মানুষের মত ও পথ চোর…