-
ন্যানোবট // ১ম পর্ব // সায়েন্স ফিকশন
ন্যানোবট // ১ম পর্ব // সায়েন্স ফিকশন আলতাব হোসেন ঘুম ভাঙল অদ্ভুত এক শব্দে। যেন কারো মৃদু ফিসফাস, আবার মনে হলো কোথাও পানি পড়ছে ধীরে ধীরে। চোখ খুলেই বুঝতে পারল রিদুয়ান—এই শব্দ বাইরের না, মাথার ভেতরেই। একটা ঠান্ডা শীতল বোধ ঘিরে রেখেছে পুরো শরীর, কানে কানে কেউ যেন বলছে, “তুমি এখন ভেতরে… মানুষের শরীরের গভীরে।” সে ঝাঁকিয়ে উঠল, কিন্তু উঠে বসতে গিয়ে আবিষ্কার করল—সে তো কোথাও শুয়ে নেই, সে যেন ভাসছে। এক অনির্বচনীয় জায়গা, চারপাশে গাঢ় লাল আলো, কোথাও সোনালি স্রোত, কোথাও গাঢ় নীল তন্তু ছড়িয়ে আছে। রিদুয়ান চোখ বন্ধ করে ফেলল। আবার খুলল। তখন ধীরে ধীরে বাস্তবে ফিরে এল।…
-
অভিমান ।। শেষ পর্ব ।। ছোটোগল্প ।। আলতাব হোসেন
অভিমান ।। শেষ পর্ব আলতাব হোসেন ২. মার মুখটা কেমন যেন বদলে যাচ্ছে দিনকে দিন। আগের মতো আর কথা বলেন না। বাড়ি গেলে সকালে রুটি বানিয়ে রেখে দেন, কিন্তু ডাকেন না। টেবিলে বসে থাকেন, মুখ গম্ভীর করে। আমি বুঝি, কিছু একটা পুড়ে যাচ্ছে ভেতরে ভেতরে। একদিন সন্ধ্যাবেলা বারান্দায় বসে ছিলাম, পায়ের কাছে বিছানো শীতলপাটি। মা এসে চুপ করে বসলেন পাশে। তারপর হঠাৎ বললেন— “তোর আব্বা থাকলে বুঝত, মা কেমন করে ভিতরে ভিতরে একা হয়ে যায়।” আমি কোনো উত্তর দিই না। চুপ করে বসে থাকি। মা আবার বললেন, “তুই ছোটো ছিলি তখন। তোর আব্বার মৃত্যুর পর কত নিদ্রাহীন রাত কাটিয়েছি। তোর…
-
অভিমান ।। ১ম পর্ব ।। ছোটোগল্প ।। আলতাব হোসেন
অভিমান ।। ১ম পর্ব আলতাব হোসেন রোজ সকালে উঠেই মা রুটি বানিয়ে দেন, সঙ্গে ডিমভাজি। ছোটোবেলা থেকে এই অভ্যেস। এখন আমি চব্বিশের তরুণ, তবুও সকালে ঘুম ভাঙে মায়ের রুটি-গন্ধে। মনে হয়, ঘড়িটা থেমে থাকুক, আমি যেন আজও সেই স্কুলপড়ুয়া ছেলেটাই থাকি। কিন্তু সময় তো থেমে থাকে না। আমাদের বাড়িটা পাবনার সুজানগর উপজেলার এক প্রান্তে। চারপাশে মাঠঘেরা, শীতে ধোঁয়াটে কুয়াশা, আর বরষায় কাঁদামাখা কাঁচা রাস্তা। বাবা মারা গেছেন চার বছর আগে। হঠাৎ এক বিকেলে হার্ট অ্যাটাক, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই সব শেষ। বাবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আমরা চার ভাইবো— আমি সবার বড়ো, তারপর ছোটো দুই বোন। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের…
-
শেষ অপেক্ষা
শেষ অপেক্ষা আলতাব হোসেন রাত গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। নিস্তব্ধতা যেন সারা পৃথিবীকে গ্রাস করেছে। বিছানায় শুয়ে থাকা তাহিরার চোখে ঘুম নেই। মনের ভেতর এক অজানা অস্থিরতা তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। প্রতিটি শ্বাসে, প্রতিটি মুহূর্তে সে অনুভব করছে যেন কিছু একটা অপূর্ণ রয়ে গেছে, কিছু একটা বলার বাকি আছে। ঘরের আলো নিভিয়ে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায় সে। বাইরে আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন, কোথাও কোথাও চাঁদের ক্ষীণ আলো দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্যের মতোই তার মনের ভেতরেও যেন কিছুটা আলো, কিছুটা অন্ধকার মিশে আছে—অন্ধকারে ঢেকে থাকা, তবু কোথাও এক ফালি আলোর আশা। জীবনের শেষ সময়ে এসে এসব ভাবা উচিত নয়, কিন্তু স্মৃতিরা তাকে…











