সময়ের স্মারকলিপি, হালচাল
সময়ের স্মারকলিপি
আজকাল মুঠোফোন আমাকে
তেমন ব্যস্ত করে না,
সময়ের বিষন্ন প্রচ্ছদ
এখন নিত্যদিনের অবসর সঙ্গী।
মাঝরাতে ভরা জোছনায়
জানালার পাশে বৃদ্ধ ডুমুর গাছটির দিকে অপলক চেয়ে থাকি
রাতজাগা পাখিদের সরবতা আর সেরকম দৃষ্টি কাড়ে না;
স্বপ্নভ্রষ্ট রাত নীরব আকাশ ঘিরে একটু একটু করে ক্ষয়ে যায় ক্লান্ত চোখের পাতায়;
পরিণীতা,সহস্ররাত অপেক্ষার
শেষ গল্পটা তোমাকে শোনানো হলো না।
সময় এক অদ্ভুত যাদুকর
তবুও তোমাকে ভুলতে দেয় নি,
যখন একাকিত্ব আমাকে ঘিরে ধরে তখন অগত্যা নিজের গায়ে বন্ধকী ঘ্রাণটুকু আস্বাদন করি,
হাত দুটো বারবার দু’চোখের সামনে মেলে ধরি
এ হাতেই মাথা রেখে নির্ভার কাটিয়েছো অনেকটা সময়।
হৃদয়কাড়া আঁখি, চুলের সোঁদাগন্ধ,
বাঁকা ঠোঁটের সঞ্চিত স্মৃতি প্রতিক্ষণে মনের গৃহকোণে মিষ্টি সুখের বার্তা রেখে যায়,
চোখ বুজে রোমন্থন করি
যাপনের দিনগুলো, শিহরণের ভাষাগুলো।
প্রায়শ চলার পথে আনমনে ভেবে ভেবে শিল্পিত ছায়ার সাথে হোঁচট খাই,
ফিরে যাই বারবার সে পথে, যে পথের বাঁকে মিশে গেছে দুজনার পথ।
সময়ের পাল তুলে
রংধনুর আবির ধার নিয়ে সাদাকালো জীবনটা রঙিন করেছো,
শূন্য ঝুড়িগুলো ভরে গেছে অনায়াসে প্রাপ্তির কাঙ্খিত সবুজ ফসলে;
শুধু নেই কিছু আমার খবর তোমাদের আনন্দ ভুবনে,
না আছে কোনো অনুশাসন যেমনটা ছিলো ব্যস্ত জীবনে।
আমি মুক্ত, নিয়ন্ত্রণহীন এক উড়নচণ্ডী..
অদ্ভুত শূন্যতার বলয় গ্রাস করেছে চারিদিকে
আমি একা, খুব একা!
আরও পড়ুন ফজলুল হকের কবিতা-
প্রশ্ন তোমাকে
নিরবতার খোলস ভেঙে
সময়ের স্মারকলিপি
হালচাল
চোখ মেললেই দেখি অমানুষ-পশুত্বে সম্প্রীতি
বিবেকের দেয়ালজুড়ে সর্বনাশের গ্রাফিতি।
শোষিতের নোনাজলে ভিজে গ্যাছে রাজপথ
নিগৃহীতা নারীর বিলাপে ক্ষয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতার পতাকা।
বঞ্চনা মুছে দিতে
খোলসপরা নেতার মিথ্যে প্রলাপ,
প্রতারণার ফাঁদে নিরুদ্যম যুবক
পিদিমের মতো জ্বলছে,
ক্ষতির পোয়া পূর্ণ হলে নড়েচড়ে বসে রাষ্ট্রীয় কর্তা-ব্যক্তিরা,
অতঃপর শিরোনাম খবরে
মন্ত্রীপাড়ায় কী দারুণ হৈচৈ,
গঠিত হয় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি,
তারপর হয়ে যায় ইতিহাস।
ঘুষ-দুর্নীতিতে সয়লাব অফিসপাড়া
অর্থলুব্ধ কতিপয় ডাক্তার
অমানবিক হয়ে ওঠে প্রমিত পেশায়,
লোভাতুর গুটিকতক পুলিশ অনুচারী
কলঙ্কিক করে অতন্দ্র প্রহরীর।
বড়কর্তার গাড়িচালক, পিয়ন
অসৎ টাকায় গড়েছে বিলাসী ভবন,
অর্থের কাছে হায়রে বিবেক কীভাবে হয় নতজানু!
এদেশ যেনো অর্থ-নারী পাচারের চারণভূমি।
খুন আর ধর্ষণে বিবর্ণ বাংলার সবুজ ছায়া
প্রকৃতি আজ ভারসাম্যহীন
ভূখণ্ড কেঁপে ওঠে বারবার,
তবুও হয় না আমাদের হুস।
চারিদিকে সন্ত্রাস-লুঠপাট
অস্থির বাজারঘাট,
অনিয়ম আর কালোবাজারির দাপট
থমকে দাঁড়ায় উন্নয়নের চাকা,
তবুও শ্রমিক গায়ের ঘাম মুছে গেয়ে যায় জীবনের জয়গান;
নেশাখোর টোকাই
মিছিলে অগ্রজ
ক্ষমতার দাপট দেখাতে কেউ ফুটপাত নিতে চায় দখলে,
অতঃপর দিনে দিনে সন্ত্রাসের ভ্রুণ বেড়ে ওঠে বস্তির ঝুপড়ি ঘরে।
কী করবে একা দেশের যোগ্য নেত্রী?
এমন দেশ কি হতে পারে স্বাধীনতার ফসল?
এ যেনো ভুল গল্প।
আরও পড়ুন কবিতা-
লাল সূর্যটা নাও
আমার যতো ভালবাসার ঋণ
ঘুরে আসুন আমাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেইজে
সময়ের স্মারকলিপি