শেষ শ্রাবণ
শেষ শ্রাবণ
এ কে আজাদ দুলাল
নির্ভয় নির্ভীক নির্ভুল নির্ভেজাল
সাহসী বংশীবাদক হাতে তার মোহনী বাঁশী
মনের গগনে গহনে বাঁজিয়ে তার সুর
আড়ালে চোখের ইশারায় বলে
মাতৃভূমি তোমায় ডাকে।
মেঘের আড়ালে ছিলো মনে হাজার স্বপ্ন
অজানা সোনালী ভবিষ্যত
তার অপেক্ষায় ঘুমন্ত ছিল হাজার আলো
কে জাগাবে কোথায় সেই বংশীবাদক।
রবীন্দ্র জীবনান্দ আর নজরুল
কার কন্ঠে বাজে তাদের মাতৃভূমির গান
মোহনী বাঁশীর সুরে
নতুন প্রভাতে সোনালী আলো মাখা
অপেক্ষা নতুন সূর্যের আগমনে।
ছয়টি গোলাপ করতলে তার
বজ্রকন্ঠে তর্জনী আঙ্গুলের ইশারায়
ইঙ্গিত দিয়ে যায় ঘুমন্ত বাঙলার
শহর জনপদ মাঠ প্রান্তরে
একটাই উচ্চারণ – “সোনার বাংলা শ্মশান কেন
জবাব চাই”
পদ্মা- মেঘনা যমুনা হাজার নদী আর
মধুমতী কলতানে মুখরিত খোকার ডাকে
নিমেষে আলোয় প্লাবিত হলো সারা বাংলা।
মাঠে ঘাঠে কৃষক আর মাঝি
কলকারখানায় শ্রমিকের মুখে
” সোনার বাংলা শ্মশান কেন
জবাব চাই।” জাগে ছাত্র জাগে জনতা
বজ্র কন্ঠে কেঁপে উঠে সারা বাংলা।
বিজলী বেগে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ
কোটি জনতা অধীর আগ্রহে
শুনবে তারা বংশীবাদকের মোহনী সুর
শোনালেন মহা কাব্য গীতি
“এবারে সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
-
জয় বাংলা।”
হায়নার খাঁচা ভেঙ্গে বীর এলেন তার স্বপ্নের বাংলায়
সোনার বাংলা সোনার মানুষ চাই
হায়রে সোনার মানুষ মুখোশের আড়ালে
দিবারাত্রী মোসাহেব সাধু সেজে
অবশেষে শেষ শ্রাবণে রাত শেষ প্রহরে
মধুর কন্ঠে ভেসেছিল আজানের সুর
নিস্তদ্ধ রাত ঘুমে সারা বাংলা
খোলস পরা গোখড়া আর
কালো আবৃত্ত সামামেয় দল
এক নিমিষে সোনার বাংলায়
নির্মিত হলো সেই প্রভুদের শ্মশান।
একটি মলিন সাদা চাদরে ঢাকা
রক্তাক্ত লাল সবুজ পতাকা
সারা বাংলা বরফ জমাট কফিনে
এই সেই শেষ শ্রাবণে
সেই দিন থেকে বাংলা হলো এতিম।
১৫ আগস্ট,২০২১
৩১ শ্রাবণ, ১৪২৮।
ঘুরে আসুন আমাদের ফেসবুক পেইজে
শেষ শ্রাবণ